ভারতে ‘ব্রেইন ফিভার’ ছড়িয়ে পড়ার আসল কারণ দারিদ্র, লিচু নয়
চলতি
মাসে ভারতের পূর্বাঞ্চলে প্রায় ১২০ শিশু মারা গেছে। তাদের মারা যাওয়ার
কারণ বিভিন্ন। লিচু খাওয়া থেকে নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত তাপপ্রবাহে মারা গেছে
তারা। কিন্তু এগুলোর মূলে রয়েছে দুটো প্রধান কারণ, যেগুলো প্রতিরোধ করা
সম্ভব – সেগুলো হলো দারিদ্র আর সুশাসনের অভাব।
বিহারের হিছাড়ার কথায় ধরুন। রোগের প্রাদুর্ভাব এখনও রয়েছে সেখানে। সেখানকার গ্রামগুলোর কুঁড়ে ঘরগুলোতে যারা থাকেন, তাদের কোন টয়লেট নেই, পানির ব্যবস্থা নেই এবং এমনকি রান্নার গ্যাসও নেই।
অর্ধনগ্ন একটা শিশু সর্দি নিয়েও খেলছে। বিদ্যুৎ আছে, কিন্তু ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থেকে বাঁচার জন্য কোন ফ্যান নেই, এয়ার কন্ডিশনের কথা তো কল্পনাই করা যাবে না।
তিন সন্তানের মা ৩৬ বছর বয়সী শাকিলা খাতুন এএফপিকে বলেন, “আমাদের পান করার মতো বিশুদ্ধ পানি নেই। অন্য গ্রামের ট্যাপ থেকে পানি নিয়ে আসি আমরা। স্বাস্থ্যকর খাবার আমরা পাবো কোথায়?”
তিনি বলেন, “সরকার আমাদের কথা ভাবে না। তারা শুধু ভোটের জন্য আসে আমাদের কাছে। এরপরই আমাদের কথা ভুলে যায় তারা”।
বিহারে যারা মারা গেছে, তাদের রোগকে বলা হচ্ছে অ্যাকিউট এনসিফ্যালাইটিস সিনড্রোম (এইএস)। ১০ বছরের কম বয়সী অপুষ্ট শিশুদের ব্রেনের যেটা ক্ষতি করছে এবং আতঙ্কজনকভাবে দ্রুত ঘটছে এটা।
রোগের মূল কেন্দ্র মুজাফফরপুর জেলা। এই জেলাতেই লিচুর চাষ হয় বেশি, গ্রীষ্মে যেটা পাকে। এবং এ সময়টাতেই ভয়ঙ্কর এই রোগটা বাড়ে।
১৮ জুন এইএস রোগে আক্রান্ত এক শিশু চিকিৎসা নিচ্ছিল সরকার পরিচালিত শ্রী কৃষ্ণ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় বিহার রাজ্যে এই হাসপাতালটি অবস্থিত।
ওই এলাকায় লিচু গাছ চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এবং সেগুলোতে তখন প্রচুর লিচু ঝুলছে। ক্ষুধার্ত স্থানীয় শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই প্রলুব্ধ হয়েছে সেগুলো খাওয়ার জন্য।
রোগ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করেছেন শিশু বিশেষজ্ঞ অরুণ শাহ। তিনি বললেন, “লিচুগুলো কাঁচা হওয়ার কারণেই সমস্যাটা হয়েছে”।
শাহ এএফপিকে বলেন, “এতে একটা টক্সিন রয়েছে। অপুষ্ট শিশুরা যদি এটা খায়, তাহলে তাদের শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ হঠাৎ করে কমে যায় যেটা তাদের ব্রেনের ক্ষতি করে”।
কপর্দকশূণ্য ও ক্ষমতাহীন
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লিচুকে যদি দোষ দেয়াও হয় এবং এখন পর্যন্ত সেটাই করা হচ্ছে, এর পরও এই মৃত্যু এড়ানো যেতো যদি মানুষের আরও ভালো স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ থাকতো।
গত বছরের গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সে ১১৯টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান ছিল ১০৩তম। জাতীয় আয়ের মাত্র এক শতাংশ তারা স্বাস্থ্যসেবার পেছনে খরচ করে – যে হারটা বিশ্বের নিম্নতম হারের একটি।
ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে জানিয়েছে, মুজাফফরপুরের পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের প্রায় অর্ধেকেরই শারীরিক বিকাশ অস্বাভাবিক কম। প্রায় ৬০ শতাংশ শিশু রক্তস্বল্পতায় ভুগছে, এবং ৪০ শতাংশেরও বেশি শিশুর ওজন কম।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জরিপে দেখা গেছে যে, মুজাফফরপুরের ১০৩টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র – যেগুলো সেখানকার একমাত্র স্বাস্থ্যসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান – সেগুলোর একটিও এমনকি মানের দিক দিয়ে বিবেচনা করার উপযুক্তও নয়। টাইমস অব ইন্ডিয়া তাদের রিপোর্টে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত এক দশকে এই রাজ্যে এই রোগে ১,৩৫০ শিশু মারা গেছে। এর মধ্যে ২০১৪ সালেই মারা গেছে ৩৫৫ জন। হিন্দুস্তান টাইমসের রিপোর্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিহারের হিছাড়ার কথায় ধরুন। রোগের প্রাদুর্ভাব এখনও রয়েছে সেখানে। সেখানকার গ্রামগুলোর কুঁড়ে ঘরগুলোতে যারা থাকেন, তাদের কোন টয়লেট নেই, পানির ব্যবস্থা নেই এবং এমনকি রান্নার গ্যাসও নেই।
অর্ধনগ্ন একটা শিশু সর্দি নিয়েও খেলছে। বিদ্যুৎ আছে, কিন্তু ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থেকে বাঁচার জন্য কোন ফ্যান নেই, এয়ার কন্ডিশনের কথা তো কল্পনাই করা যাবে না।
তিন সন্তানের মা ৩৬ বছর বয়সী শাকিলা খাতুন এএফপিকে বলেন, “আমাদের পান করার মতো বিশুদ্ধ পানি নেই। অন্য গ্রামের ট্যাপ থেকে পানি নিয়ে আসি আমরা। স্বাস্থ্যকর খাবার আমরা পাবো কোথায়?”
তিনি বলেন, “সরকার আমাদের কথা ভাবে না। তারা শুধু ভোটের জন্য আসে আমাদের কাছে। এরপরই আমাদের কথা ভুলে যায় তারা”।
বিহারে যারা মারা গেছে, তাদের রোগকে বলা হচ্ছে অ্যাকিউট এনসিফ্যালাইটিস সিনড্রোম (এইএস)। ১০ বছরের কম বয়সী অপুষ্ট শিশুদের ব্রেনের যেটা ক্ষতি করছে এবং আতঙ্কজনকভাবে দ্রুত ঘটছে এটা।
রোগের মূল কেন্দ্র মুজাফফরপুর জেলা। এই জেলাতেই লিচুর চাষ হয় বেশি, গ্রীষ্মে যেটা পাকে। এবং এ সময়টাতেই ভয়ঙ্কর এই রোগটা বাড়ে।
১৮ জুন এইএস রোগে আক্রান্ত এক শিশু চিকিৎসা নিচ্ছিল সরকার পরিচালিত শ্রী কৃষ্ণ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় বিহার রাজ্যে এই হাসপাতালটি অবস্থিত।
ওই এলাকায় লিচু গাছ চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এবং সেগুলোতে তখন প্রচুর লিচু ঝুলছে। ক্ষুধার্ত স্থানীয় শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই প্রলুব্ধ হয়েছে সেগুলো খাওয়ার জন্য।
রোগ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করেছেন শিশু বিশেষজ্ঞ অরুণ শাহ। তিনি বললেন, “লিচুগুলো কাঁচা হওয়ার কারণেই সমস্যাটা হয়েছে”।
শাহ এএফপিকে বলেন, “এতে একটা টক্সিন রয়েছে। অপুষ্ট শিশুরা যদি এটা খায়, তাহলে তাদের শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ হঠাৎ করে কমে যায় যেটা তাদের ব্রেনের ক্ষতি করে”।
কপর্দকশূণ্য ও ক্ষমতাহীন
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লিচুকে যদি দোষ দেয়াও হয় এবং এখন পর্যন্ত সেটাই করা হচ্ছে, এর পরও এই মৃত্যু এড়ানো যেতো যদি মানুষের আরও ভালো স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ থাকতো।
গত বছরের গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সে ১১৯টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান ছিল ১০৩তম। জাতীয় আয়ের মাত্র এক শতাংশ তারা স্বাস্থ্যসেবার পেছনে খরচ করে – যে হারটা বিশ্বের নিম্নতম হারের একটি।
ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে জানিয়েছে, মুজাফফরপুরের পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের প্রায় অর্ধেকেরই শারীরিক বিকাশ অস্বাভাবিক কম। প্রায় ৬০ শতাংশ শিশু রক্তস্বল্পতায় ভুগছে, এবং ৪০ শতাংশেরও বেশি শিশুর ওজন কম।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জরিপে দেখা গেছে যে, মুজাফফরপুরের ১০৩টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র – যেগুলো সেখানকার একমাত্র স্বাস্থ্যসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান – সেগুলোর একটিও এমনকি মানের দিক দিয়ে বিবেচনা করার উপযুক্তও নয়। টাইমস অব ইন্ডিয়া তাদের রিপোর্টে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত এক দশকে এই রাজ্যে এই রোগে ১,৩৫০ শিশু মারা গেছে। এর মধ্যে ২০১৪ সালেই মারা গেছে ৩৫৫ জন। হিন্দুস্তান টাইমসের রিপোর্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
No comments