কুঠিবাড়িতে অচিরেই নির্মিত হচ্ছে রবীন্দ্রভবন
সচিবালয়ে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বৈঠক করেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ছবি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে |
ভারত বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অবকাঠামো, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, ব্যবসা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, গণমাধ্যম প্রভৃতি পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দুই দেশ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ভারতের আর্থিক সহযোগিতায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে রবীন্দ্রভবন ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ রকম আরও বিভিন্ন ইস্যুতে সম্মিলিতভাবে কাজ করার মাধ্যমে দেশ দুটি বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সংস্কৃতিমন্ত্রী মঙ্গলবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে তাঁর অফিস কক্ষে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বৈঠক করেন। এতে দুই দেশের সংস্কৃতি বিনিময়সহ সংস্কৃতি–সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আক্তারী মমতাজ, অতিরিক্ত সচিব মাহমুদা আখতার ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলতাফ হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনারকে স্বাগত জানিয়ে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘এ দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি হাজার বছরের প্রাচীন। আমাদের আবহমান সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের উন্নয়ন ও বিকাশে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। স্বাধীনতা–পরবর্তী সময় থেকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তি বিদ্যমান রয়েছে। এ চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক দল বিভিন্ন সময় ভারত সফর করেছে ও ভারতের সাংস্কৃতিক দল বাংলাদেশ সফর করেছে এবং তা চলমান আছে। সংস্কৃতির এ বিনিময় দুই দেশের জনগণকে পরস্পরের আরও কাছে এনেছে।’ তিনি বলেন, সংস্কৃতি বিনিময় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভারতের কলকাতায় সীমাবদ্ধ। অন্যান্য প্রদেশেও তা বিস্তৃত করার ব্যাপারে মন্ত্রী বৈঠকে গুরুত্বারোপ করেন এবং এ ক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতা কামনা করেন। সৌজন্য সাক্ষাতে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, পারস্পরিক সম্পর্ক দৃঢ়করণে সংস্কৃতি বিনিময় অপরিহার্য একটি বিষয়। বাংলাদেশ ও ভারতের সংস্কৃতির মধ্যে ব্যাপক সাদৃশ্য বিদ্যমান। সংস্কৃতি বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের জনগণ পরস্পরের সংস্কৃতিকে আরও জানতে পারছে। এর মাধ্যমে দুই দেশের মৈত্রীর বন্ধন আরও দৃঢ় হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অনেক শিল্পী ভারতে যান। ভারত থেকেও বাংলাদেশে আসে। কিন্তু বেসরকারিভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার ক্ষেত্রে তাদের অনেক সময় দীর্ঘ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। এটি সহজীকরণের ব্যাপারে তিনি মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কুষ্টিয়ার শিলাইদহে রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে নির্মিতব্য রবীন্দ্রভবন ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামোর নকশা দেখে তিনি বলেন, এটি নির্মাণের ব্যাপারে অর্থসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে তাঁর দেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অচিরেই এর নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বৈঠকে দুই দেশের প্রত্নসম্পদ নিয়েও আলোচনা করা হয়। বাংলাদেশের সমৃদ্ধ প্রত্নসম্পদের খনন, পুনরুদ্ধার, রক্ষণাবেক্ষণ ও সংরক্ষণের ব্যাপারে অর্থ, বিশেষজ্ঞ ও পর্যাপ্ত জনবলের অপ্রতুলতার বিষয়টি উল্লেখ করে এ ক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতা কামনা করা হয়।
No comments