ইতিহাস গড়ল সিটি
কেভিন ডি ব্রুইনের ৭৬ মিনিটের গোলটিই গড়ে দিল ইতিহাস। প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ চারে শামিল হলো ম্যানচেস্টার সিটি। গত চার মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দুটো শিরোপাজয়ী সিটি যেন নিজেদের নামটাকে নতুন করে প্রতিষ্ঠিত করল বিশ্ব ফুটবলে প্যারিস সেন্ট জার্মেইকে (পিএসজি) টপকে শেষ চারের টিকিট পেতে অবশ্য বেশি কিছুর দরকার ছিল না। প্যারিসে আগের লেগে ২-২ গোলে ড্র করেই ইতিহাসযাত্রা অনেকটাই এগিয়ে রেখেছিল ম্যানুয়াল পেলেগ্রিনির দল। ড্র হলেও চলত। কিন্তু একটি গোল হলে আরও নিশ্চিত হয়। সেই হিসেবি ফুটবলটাই সিটিকে ইতিহাস লেখাল। ফরাসি ক্লাবটির বিরুদ্ধে হোম-অ্যাওয়ে মিলিয়ে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই প্রথমবারের মতো বড় স্বপ্নের পথে ম্যানচেস্টার সিটি। ডি ব্রুইনের গোলটির আগে ম্যাচটি অবশ্য ইতিহাদ স্টেডিয়ামে যথেষ্ট উত্তেজনাই ছড়িয়েছে। ৩০ মিনিটের মাথায় প্রাপ্ত পেনাল্টি কাজে লাগাতে পারেননি সিটির সার্জিও আগুয়েরো। পিএসজির জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ বেশ কয়েকবার ভীতি ছড়িয়েছিলেন সিটির রক্ষণে, কিন্তু কাজের কাজটি করতে পারেননি। অফ সাইডের খাঁড়ায় গোলও বাতিল হয়েছে। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ লম্বা সময় পিএসজির কাছে থাকলেও পেলেগ্রিনির অভিজ্ঞতা আর কৌশলের কাছে বারবারই হোঁচট খেতে হয়েছে লঁরা ব্লাঁর দলকে। ৭৬তম মিনিটে ফার্নান্দোর পাস থেকে বল পেয়ে করা ডি ব্রুইনের গোলটির পরেও সিটি সমর্থকদের কেটেছে উৎকণ্ঠিত কিছু সময়। এডিনসন কাভানির একটি শট একটু বাদেই বুক কাঁপিয়ে দিয়েছিল তাদের। ম্যাচের ৮৫ মিনিটে ইব্রাহিমোভিচও বল জালে জড়িয়ে গ্যালারি ক্ষণিকের জন্য স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য রিপ্লেতে দেখা গেছে, ইব্রা অফসাইডেই ছিলেন। শেষ পর্যন্ত অনেক স্নায়ু ক্ষরণের পরে প্রথমবারের মতো ফাইনাল থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে পৌঁছে গেল সিটিজেনরা। এত দিন শুধু ম্যানচেস্টার শহরের ওপর প্রান্তের প্রতিদ্বন্দ্বীদেরই ইউরোপ সেরার এই টুর্নামেন্ট নিয়ে হাসিকান্নায় মাততে দেখেছে। এবার তাদের পালা। ২০১১-১২ মৌসুমে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগে নাম লেখালেও গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় হয়েছিল সিটির। পরের দুইবার শেষ ষোলোর গণ্ডি পেরোনো হয়নি। এবার নতুন কিছু করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে ইউরোপ-সেরা লড়াইয়ে অবতীর্ণ সিটি শেষ চারে উঠে রুপালি ট্রফিতে চোখ রাখার সাহস কিন্তু দেখাতেই পারে। গার্দিওলার হাতে কি আরেকটি ইউরোপ-চ্যাম্পিয়ন দলই উঠতে যাচ্ছে? সময়ই বলে দেবে।
No comments