ভোটের পরে বিহুর ঢোলে নাচছে আসাম by তরুণ চক্রবর্তী
ভারতের আসাম রাজ্যের বিধানসভার দ্বিতীয় তথা শেষ দফার নির্বাচনে সোমবার রেকর্ডসংখ্যক ৮৭ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। ভোটের কারণে আসামের প্রধান উৎসব বিহুর প্রস্তুতি কিছুটা ঝিমিয়ে ছিল। কিন্তু ভোটপর্ব মিটতেই দল-মতনির্বিশেষে অসমিয়ারা বিহুর প্রস্তুতিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। সোমবার রাত থেকেই শুধু ঢোলের বোল আর ‘পেঁপারের’ (বিশেষ ধরনের বাঁশি) সুরে মাতোয়ারা রাজ্য। আজ বুধবার থেকে উৎসবের আনুষ্ঠানিক শুরু। বাঙালিদের নববর্ষের মতোই অসমিয়াদের বিহু। তরুণ-তরুণীরা প্রস্তুত টানা এক মাস ধরে বিহুর ছন্দে মেতে উঠতে। পৌষ সংক্রান্তিতে ‘ভোগালী’, কার্তিক সংক্রান্তির ‘কাঙালী’ আর এই চৈত্র সংক্রান্তিতে ‘রঙালী’ বিহু উদ্যাপিত হয়। রঙালী শব্দ থেকেই স্পষ্ট, রঙ্গে মেতে ওঠার এ উৎসব। বিহু উপলক্ষে ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তরফে উৎসবকালীন বোনাস ইতিমধ্যেই দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠেছে বিহু মঞ্চ। নাচ-গানের পাশাপাশি এরই মধ্যে চলছে পিঠাসহ ঐতিহ্যবাহী খাওয়াদাওয়ার আয়োজন। সেই সঙ্গে চলছে বিশেষ ধরনের গামছা, ‘গামোচা’ কেনার পালাও। সাদার ওপর লাল সুতার কাজ করা এই গামোচা বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ অসমিয়াদের কাছে। সম্মানীয়দের উপহার হিসেবে দেওয়া হয় এটি। রাজ্যের বিশিষ্ট বিহু বিশারদ নীল বরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিটি অসমিয়ার কাছেই বিহু প্রাণের উৎসব। তাই সেই উৎসবকে সফল করতে প্রস্তুত সকলেই।’ বিহুর আরেক বিশেষজ্ঞ জীনা রাজকুমারীর মতে, ‘অসমিয়াদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি লুকিয়ে আছে এর সুরে-ছন্দে।’ উইলিয়াম ও কেট আসামে: বিহুর এই আনন্দের মধ্যে গতকালই আসামে আসার কথা ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য ডিউক ও ডাচেস অব কেমব্রিজ প্রিন্স উইলিয়াম ও কেট মিডলটনের। মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ তাঁদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য সকাল থেকেই উপস্থিত তেজপুরে। সেখানেই বিশেষ বিমানে নামবেন তাঁরা। একশৃঙ্গ গন্ডারদের বিচরণভূমি বিখ্যাত কাজিরাঙা অভয়ারণ্যে থাকবেন এই দম্পতি।
No comments