১৬ দিন পর মায়ের কোলে তনুর ভাইয়ের বন্ধু
‘নিখোঁজের’ ১৬ দিন পর অক্ষত অবস্থায় মায়ের কোলে ফিরেছেন সোহাগী জাহান তনুর ছোট ভাইয়ের বন্ধু মিজানুর রহমান সোহাগ। গতকাল মঙ্গলবার ভোর ছয়টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাড়ির কাছের একটি ফিলিং স্টেশনের সামনে পাওয়া যায় তাঁকে। গত ২০ মার্চ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী তনুর মরদেহ উদ্ধারের পর ২৭ মার্চ রাত দেড়টায় একদল লোক মিজানুরকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরিবারের অভিযোগ, ওই লোকেরা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়েছিলেন। গতকাল সকাল নয়টার দিকে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের নারায়ণসার গ্রামের নিজ বাড়িতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন মিজানুর। তাঁর কথাবার্তা ছিল এলোমেলো। তাঁকে কিছুটা ভীত-সন্ত্রস্ত মনে হয়। বারবার বলছিলেন, কারা, কোথায় তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল বুঝতে পারেননি। মিজানুর বলেন, ‘বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পর আমাকে মাইক্রোবাসে বসানো হয়। এরপর চোখ গামছাজাতীয় কিছু দিয়ে বেঁধে ফেলে। দুই হাতও পেছনে নিয়ে বেঁধে ফেলে। হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় একটি ঘরে টানা ১৫ দিন রাখা হয়। ওই ঘরের মেঝেতেই খাওয়া ও ঘুমানো হতো। খাওয়ার সময় চোখ থেকে গামছা একটু ওপরে উঠিয়ে রাখা হতো। ডান হাত খুলে দেওয়া হতো। খাওয়া শেষে আবার বেঁধে ফেলত। আমার সঙ্গে আরও চারজন ছিল। তাদের পৃথক কক্ষেই রাখা হতো।’ মিজানুর আরও বলেন, ‘২৭ মার্চ গভীর রাতে তুলে নেওয়ার সময় আমার পরনে লুঙ্গি ও গেঞ্জি ছিল। ওই পোশাকেই টানা ১৫ দিন ছিলাম। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২৩ ঘণ্টাই চোখ বন্ধ থাকত। মাঝেমধ্যে অজ্ঞান হয়ে পড়তাম। তিন বেলাই খাবার দিত। সঙ্গে সার্বক্ষণিক একজন থাকত। কোনো মারধর করেনি। তবে কিছু বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। এখন আমার মনে নেই। আমার মাথা ঘোরে।’ তনু হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধনে গিয়েছিলেন কি না, জানতে চাইলে মিজানুর বলেন, ‘সেনানিবাস-সংলগ্ন নাজিরাবাজার এলাকায় একটি মানববন্ধন হয়। ওই মানববন্ধনে গিয়ে বিচার চাইছি। আমার তো মা-বোন আছে, তাই মানববন্ধনে অংশ নিয়েছি।’ কীভাবে ফিরে আসা হলো এবং এর পরের অনুভূতি প্রসঙ্গে মিজানুর বলেন, ‘পাপ তো আর করিনি, তাই ফিরে এসেছি। সবার দোয়ায় ফিরে এসেছি। আল্লাহ বাঁচায়ে এনেছে। ভোরে নিজেকে দেখলাম মহাসড়কের আইল্যান্ডে। এরপর দেখি, চাচা আমাকে ধরেছেন। তারপর আর বলতে পারব না। চাচা জানেন তিনি কীভাবে দেখেছেন।’এ প্রসঙ্গে মিজানুরের চাচা মো. সেলিম বলেন, ‘ফজরের নামাজ পড়ে হাঁটতে বেরিয়েছি। ওই সময় দেখলাম, ফিলিং স্টেশনের কাছে আইল্যান্ডের মধ্যে মিজানুর ঘোরাঘুরি করছে। এ সময় তাঁর চোখ ও হাত বাঁধা ছিল না। পরে বাড়িতে নিয়ে এলাম।’ তবে ঘটনা সম্পর্কে মিজানুর তাঁর নিকট আত্মীয়দের আরও কিছু বলেছেন বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করে আত্মীয়দের কয়েকজন বলেন, ২৭ মার্চ রাতেই মিজানুরকে ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে একটি ঘরের মেঝেতে রাখা হয় তাঁকে। ওই ঘরে ছিলেন আরও চারজন। সেখানে মিজানুরকে তনু প্রসঙ্গে কয়েক দফা জিজ্ঞাসা করা হয়। গত রোববার রাতে তাঁকে বলা হয়, ‘দুই দিনের মধ্যেই তোকে ছেড়ে দেব।’ এরপর সোমবার রাত দেড়টার দিকে তাঁকে চোখ বেঁধে ঢাকার সায়েদাবাদ এনে কুমিল্লাগামী একটি বাসে তুলে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে কাউকে কিছু না বলার জন্য তাঁকে হুঁশিয়ার করা হয়। মিজানুরের বাবা নুরুল ইসলাম ও মা সাহিদা আক্তার বলেন, ছেলে ফিরে এসেছে, এতেই তাঁরা খুশি। বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘মিজানুরের বাড়িতে গিয়ে আমরা পুরো বিষয়টি জানব। নিখোঁজের পর ৩০ মার্চ মিজানুরের পরিবার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিল।’তনু গত ২০ মার্চ খুন হন। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের একটি ঝোপ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেন বাবা মো. ইয়ার হোসেন। এ ঘটনায় কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন-বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি অব্যাহত আছে।
মানববন্ধন: তনু হত্যার বিচারের দাবিতে গতকাল বিকেল পাঁচটায় কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণে সমাজচেতনা মঞ্চ নামের একটি সংগঠন মানববন্ধন করে। এ ছাড়া বিকেল সাড়ে পাঁচটায় কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে মানববন্ধন করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কুমিল্লা জেলা শাখা।‘নিখোঁজের’ ১৬ দিন পর অক্ষত অবস্থায় মায়ের কোলে ফিরেছেন সোহাগী জাহান তনুর ছোট ভাইয়ের বন্ধু মিজানুর রহমান সোহাগ। গতকাল মঙ্গলবার ভোর ছয়টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাড়ির কাছের একটি ফিলিং স্টেশনের সামনে পাওয়া যায় তাঁকে। গত ২০ মার্চ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী তনুর মরদেহ উদ্ধারের পর ২৭ মার্চ রাত দেড়টায় একদল লোক মিজানুরকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরিবারের অভিযোগ, ওই লোকেরা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়েছিলেন। গতকাল সকাল নয়টার দিকে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের নারায়ণসার গ্রামের নিজ বাড়িতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন মিজানুর। তাঁর কথাবার্তা ছিল এলোমেলো। তাঁকে কিছুটা ভীত-সন্ত্রস্ত মনে হয়। বারবার বলছিলেন, কারা, কোথায় তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল বুঝতে পারেননি। মিজানুর বলেন, ‘বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পর আমাকে মাইক্রোবাসে বসানো হয়। এরপর চোখ গামছাজাতীয় কিছু দিয়ে বেঁধে ফেলে। দুই হাতও পেছনে নিয়ে বেঁধে ফেলে। হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় একটি ঘরে টানা ১৫ দিন রাখা হয়। ওই ঘরের মেঝেতেই খাওয়া ও ঘুমানো হতো। খাওয়ার সময় চোখ থেকে গামছা একটু ওপরে উঠিয়ে রাখা হতো। ডান হাত খুলে দেওয়া হতো। খাওয়া শেষে আবার বেঁধে ফেলত। আমার সঙ্গে আরও চারজন ছিল। তাদের পৃথক কক্ষেই রাখা হতো।’ মিজানুর আরও বলেন, ‘২৭ মার্চ গভীর রাতে তুলে নেওয়ার সময় আমার পরনে লুঙ্গি ও গেঞ্জি ছিল। ওই পোশাকেই টানা ১৫ দিন ছিলাম। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২৩ ঘণ্টাই চোখ বন্ধ থাকত। মাঝেমধ্যে অজ্ঞান হয়ে পড়তাম। তিন বেলাই খাবার দিত। সঙ্গে সার্বক্ষণিক একজন থাকত। কোনো মারধর করেনি। তবে কিছু বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। এখন আমার মনে নেই। আমার মাথা ঘোরে।’ তনু হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধনে গিয়েছিলেন কি না, জানতে চাইলে মিজানুর বলেন, ‘সেনানিবাস-সংলগ্ন নাজিরাবাজার এলাকায় একটি মানববন্ধন হয়। ওই মানববন্ধনে গিয়ে বিচার চাইছি। আমার তো মা-বোন আছে, তাই মানববন্ধনে অংশ নিয়েছি।’ কীভাবে ফিরে আসা হলো এবং এর পরের অনুভূতি প্রসঙ্গে মিজানুর বলেন, ‘পাপ তো আর করিনি, তাই ফিরে এসেছি। সবার দোয়ায় ফিরে এসেছি। আল্লাহ বাঁচায়ে এনেছে। ভোরে নিজেকে দেখলাম মহাসড়কের আইল্যান্ডে। এরপর দেখি, চাচা আমাকে ধরেছেন। তারপর আর বলতে পারব না। চাচা জানেন তিনি কীভাবে দেখেছেন।’ এ প্রসঙ্গে মিজানুরের চাচা মো. সেলিম বলেন, ‘ফজরের নামাজ পড়ে হাঁটতে বেরিয়েছি। ওই সময় দেখলাম, ফিলিং স্টেশনের কাছে আইল্যান্ডের মধ্যে মিজানুর ঘোরাঘুরি করছে। এ সময় তাঁর চোখ ও হাত বাঁধা ছিল না। পরে বাড়িতে নিয়ে এলাম।’ তবে ঘটনা সম্পর্কে মিজানুর তাঁর নিকট আত্মীয়দের আরও কিছু বলেছেন বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করে আত্মীয়দের কয়েকজন বলেন, ২৭ মার্চ রাতেই মিজানুরকে ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে একটি ঘরের মেঝেতে রাখা হয় তাঁকে। ওই ঘরে ছিলেন আরও চারজন। সেখানে মিজানুরকে তনু প্রসঙ্গে কয়েক দফা জিজ্ঞাসা করা হয়। গত রোববার রাতে তাঁকে বলা হয়, ‘দুই দিনের মধ্যেই তোকে ছেড়ে দেব।’ এরপর সোমবার রাত দেড়টার দিকে তাঁকে চোখ বেঁধে ঢাকার সায়েদাবাদ এনে কুমিল্লাগামী একটি বাসে তুলে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে কাউকে কিছু না বলার জন্য তাঁকে হুঁশিয়ার করা হয়। মিজানুরের বাবা নুরুল ইসলাম ও মা সাহিদা আক্তার বলেন, ছেলে ফিরে এসেছে, এতেই তাঁরা খুশি। বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘মিজানুরের বাড়িতে গিয়ে আমরা পুরো বিষয়টি জানব। নিখোঁজের পর ৩০ মার্চ মিজানুরের পরিবার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিল।’ তনু গত ২০ মার্চ খুন হন। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের একটি ঝোপ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেন বাবা মো. ইয়ার হোসেন। এ ঘটনায় কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন-বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি অব্যাহত আছে। মানববন্ধন: তনু হত্যার বিচারের দাবিতে গতকাল বিকেল পাঁচটায় কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণে সমাজচেতনা মঞ্চ নামের একটি সংগঠন মানববন্ধন করে। এ ছাড়া বিকেল সাড়ে পাঁচটায় কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে মানববন্ধন করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কুমিল্লা জেলা শাখা।
মানববন্ধন: তনু হত্যার বিচারের দাবিতে গতকাল বিকেল পাঁচটায় কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণে সমাজচেতনা মঞ্চ নামের একটি সংগঠন মানববন্ধন করে। এ ছাড়া বিকেল সাড়ে পাঁচটায় কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে মানববন্ধন করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কুমিল্লা জেলা শাখা।‘নিখোঁজের’ ১৬ দিন পর অক্ষত অবস্থায় মায়ের কোলে ফিরেছেন সোহাগী জাহান তনুর ছোট ভাইয়ের বন্ধু মিজানুর রহমান সোহাগ। গতকাল মঙ্গলবার ভোর ছয়টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাড়ির কাছের একটি ফিলিং স্টেশনের সামনে পাওয়া যায় তাঁকে। গত ২০ মার্চ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী তনুর মরদেহ উদ্ধারের পর ২৭ মার্চ রাত দেড়টায় একদল লোক মিজানুরকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরিবারের অভিযোগ, ওই লোকেরা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়েছিলেন। গতকাল সকাল নয়টার দিকে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের নারায়ণসার গ্রামের নিজ বাড়িতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন মিজানুর। তাঁর কথাবার্তা ছিল এলোমেলো। তাঁকে কিছুটা ভীত-সন্ত্রস্ত মনে হয়। বারবার বলছিলেন, কারা, কোথায় তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল বুঝতে পারেননি। মিজানুর বলেন, ‘বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পর আমাকে মাইক্রোবাসে বসানো হয়। এরপর চোখ গামছাজাতীয় কিছু দিয়ে বেঁধে ফেলে। দুই হাতও পেছনে নিয়ে বেঁধে ফেলে। হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় একটি ঘরে টানা ১৫ দিন রাখা হয়। ওই ঘরের মেঝেতেই খাওয়া ও ঘুমানো হতো। খাওয়ার সময় চোখ থেকে গামছা একটু ওপরে উঠিয়ে রাখা হতো। ডান হাত খুলে দেওয়া হতো। খাওয়া শেষে আবার বেঁধে ফেলত। আমার সঙ্গে আরও চারজন ছিল। তাদের পৃথক কক্ষেই রাখা হতো।’ মিজানুর আরও বলেন, ‘২৭ মার্চ গভীর রাতে তুলে নেওয়ার সময় আমার পরনে লুঙ্গি ও গেঞ্জি ছিল। ওই পোশাকেই টানা ১৫ দিন ছিলাম। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২৩ ঘণ্টাই চোখ বন্ধ থাকত। মাঝেমধ্যে অজ্ঞান হয়ে পড়তাম। তিন বেলাই খাবার দিত। সঙ্গে সার্বক্ষণিক একজন থাকত। কোনো মারধর করেনি। তবে কিছু বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। এখন আমার মনে নেই। আমার মাথা ঘোরে।’ তনু হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধনে গিয়েছিলেন কি না, জানতে চাইলে মিজানুর বলেন, ‘সেনানিবাস-সংলগ্ন নাজিরাবাজার এলাকায় একটি মানববন্ধন হয়। ওই মানববন্ধনে গিয়ে বিচার চাইছি। আমার তো মা-বোন আছে, তাই মানববন্ধনে অংশ নিয়েছি।’ কীভাবে ফিরে আসা হলো এবং এর পরের অনুভূতি প্রসঙ্গে মিজানুর বলেন, ‘পাপ তো আর করিনি, তাই ফিরে এসেছি। সবার দোয়ায় ফিরে এসেছি। আল্লাহ বাঁচায়ে এনেছে। ভোরে নিজেকে দেখলাম মহাসড়কের আইল্যান্ডে। এরপর দেখি, চাচা আমাকে ধরেছেন। তারপর আর বলতে পারব না। চাচা জানেন তিনি কীভাবে দেখেছেন।’ এ প্রসঙ্গে মিজানুরের চাচা মো. সেলিম বলেন, ‘ফজরের নামাজ পড়ে হাঁটতে বেরিয়েছি। ওই সময় দেখলাম, ফিলিং স্টেশনের কাছে আইল্যান্ডের মধ্যে মিজানুর ঘোরাঘুরি করছে। এ সময় তাঁর চোখ ও হাত বাঁধা ছিল না। পরে বাড়িতে নিয়ে এলাম।’ তবে ঘটনা সম্পর্কে মিজানুর তাঁর নিকট আত্মীয়দের আরও কিছু বলেছেন বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করে আত্মীয়দের কয়েকজন বলেন, ২৭ মার্চ রাতেই মিজানুরকে ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে একটি ঘরের মেঝেতে রাখা হয় তাঁকে। ওই ঘরে ছিলেন আরও চারজন। সেখানে মিজানুরকে তনু প্রসঙ্গে কয়েক দফা জিজ্ঞাসা করা হয়। গত রোববার রাতে তাঁকে বলা হয়, ‘দুই দিনের মধ্যেই তোকে ছেড়ে দেব।’ এরপর সোমবার রাত দেড়টার দিকে তাঁকে চোখ বেঁধে ঢাকার সায়েদাবাদ এনে কুমিল্লাগামী একটি বাসে তুলে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে কাউকে কিছু না বলার জন্য তাঁকে হুঁশিয়ার করা হয়। মিজানুরের বাবা নুরুল ইসলাম ও মা সাহিদা আক্তার বলেন, ছেলে ফিরে এসেছে, এতেই তাঁরা খুশি। বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘মিজানুরের বাড়িতে গিয়ে আমরা পুরো বিষয়টি জানব। নিখোঁজের পর ৩০ মার্চ মিজানুরের পরিবার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিল।’ তনু গত ২০ মার্চ খুন হন। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের একটি ঝোপ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেন বাবা মো. ইয়ার হোসেন। এ ঘটনায় কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন-বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি অব্যাহত আছে। মানববন্ধন: তনু হত্যার বিচারের দাবিতে গতকাল বিকেল পাঁচটায় কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণে সমাজচেতনা মঞ্চ নামের একটি সংগঠন মানববন্ধন করে। এ ছাড়া বিকেল সাড়ে পাঁচটায় কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে মানববন্ধন করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কুমিল্লা জেলা শাখা।
No comments