৫ মিনিটে শনাক্ত হবে ক্যানসার: বাংলাদেশি গবেষকদের যুগান্তকারী উদ্ভাবন
রক্ত
পরীক্ষার মাধ্যমেই আগে থেকে শনাক্ত করা যাবে ক্যানসার। এই পরীক্ষায় খরচ
হবে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা আর সময় লাগবে মাত্র পাঁচ মিনিট। ক্যানসার শনাক্তকরণে
অন্য যেকোনো পরীক্ষার চেয়ে এই পদ্ধতিই ইউনিক। এমনকি রক্তের অন্য কোনো
পরীক্ষা করার সময়ও জানা যাবে তার ক্যানসার আছে কিনা? আগামী এক বছরের মধ্যে
এই প্রযুক্তির ডিভাইস তৈরি করা সম্ভব হবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায়
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) উদ্ভাবিত ক্যানসার শনাক্তকরণ প্রযুক্তি
সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এই প্রযুক্তি উদ্ভাবনে ২৫
সদস্যের গবেষণা টিম কাজ করছে। এর নেতৃত্বে ছিলেন শাবিপ্রবির পদার্থবিজ্ঞান
বিভাগের অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন হক। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে ‘নন-লিনিয়ার অপটিক্স
ব্যবহার করে বায়োমার্কার নির্ণয়’ শীর্ষক প্রকল্পটি উচ্চ শিক্ষার
মানোন্নয়নের প্রকল্প হেকেপের আওতায় গৃহীত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি
কমিশনের (ইউজিসি) সহায়তায় এই হেকেপ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। সংবাদ
সম্মেলনে জানানো হয়, প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রথমেই শাবিপ্রবির
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে নন-লিনিয়ার বায়ো-অপটিক্স রিসার্চ ল্যাবরেটরি গড়ে তোলা
হয়। এই ল্যাবরেটরিতে ক্যানসার আক্রান্ত মানুষের রক্তের সিরামে শক্তিশালী
লেজার রশ্মি পাঠিয়ে নন-লিনিয়ার সূচক পরিমাপ করার কাজ শুরু হয়।
বায়ো-কেমিক্যাল প্রক্রিয়ায় যে বাড়তি রি-এজেন্ট ব্যবহার করতে হয় উদ্ভাবিত
নতুন পদ্ধতিতে তা প্রয়োজন হয় না। প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে নতুন একটি পদ্ধতিতে
রক্ত পরীক্ষা করে সম্ভাব্য ক্যানসারের ভবিষ্যদ্বাণী করার একটি সম্ভাবনা
উন্মোচিত হয়েছে। এটি অল্প খরচে এবং কম সময়ে করা সম্ভব হবে। এই উদ্ভাবনী
প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে শুধু ক্যানসার রোগাক্রান্ত
রোগীদের রক্ত নয়, অন্য যেকোনো স্যাম্পলের নন-লিনিয়ার ধর্মী পরীক্ষা খুবই
সহজে ও সূক্ষ্মভাবে পরিমাপ করা সম্ভব হবে। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, এটি যুগান্তকারী উদ্ভাবন। বাংলাদেশের জন্য এটা
ঐতিহাসিক ঘটনা। সংবাদ সম্মেলনে উদ্ভাবন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন
করেন গবেষক দলের প্রধান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ইয়াসমীন হক। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড.
নাস কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর রক্তের সিরামে একটা
চেঞ্জ আসে, সেটা নন-লিনিয়ার অপটিক্স ব্যবহার করে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে আগে
ভাগেই পূর্বাভাস পাওয়া যাবে। সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন শাহজালাল
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমদ, ইউজিসির সদস্য
প্রফেসর ড. ইউসুফ আলী মোল্লা, হেকেপ প্রকল্প পরিচালক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র
মোহান্ত, বিশ্ব ব্যাংকের চিফ অপরেশনস অফিসার ড. মোখলেছুর রহমান প্রমুখ।
No comments