স্কুলছাত্র রিয়াদ হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা by মতিউল আলম
চুরির
অপবাদে গফরগাঁওয়ে অষ্টম শ্রেণির স্কুলছাত্র রিয়াদ (১৪)কে গাছে বেঁধে
পিটিয়ে হত্যার পর থেকে বাকপ্রতিবন্ধী রিয়াদের মা মাবিয়া আক্তার ও তার
পরিবারের আহাজারি থামছে না। সরজমিন তাদের বাড়িতে গেলে রিয়াদের প্রতিবন্ধী
মা মাবিয়া কখনো ছেলের বই দেখিয়ে, কখনো ছেলের ব্যবহৃত সাইকেল, আবার কখনো
ছেলের খেলার জিনিসপত্র ও কাপড় চোপড় বুকে জড়িয়ে আহাজারি করছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের ছোট ভাই ৫ম শ্রেণির ছাত্র রিফাত জানায়, ‘তার চোখের
সামনেই তার ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় তার ভাই বাঁচার জন্য আকুতি
করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।
রিয়াদের কলেজ পড়ুয়া বোন নীলফুল নাহার শান্তা জানায়, নির্যাতনকারীদের কাছে গিয়ে আমার ভাইয়ের প্রাণ ভিক্ষা চাইলেও তারা নির্যাতন বন্ধ করেনি। এদের সবার হাতে দা-লাঠি থাকায় ভয়ে কাছে যেতে পারেনি পরিবারের কেউ। যারা আমার ভাইকে পৈশাচিক নির্যাতন করে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ফাঁসি চাই। প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, শিশু রিয়াদকে আটক করা হয় ভোর পাঁচটার পরে। আর নির্যাতন চলে দেড় ঘণ্টারও বেশি। সকাল ৭টার দিকে ছেলেটির মৃত্যুর পর ক্ষান্ত দেয় নির্যাতনকারীরা। আর এরপর ঘটনাস্থল নয়, এলাকাও ছেড়ে পালিয়ে যায় তারা। রিয়াদ ঘাগড়া-উথুরী-ছিপান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে উথুরী গ্রামের সৌদি প্রবাসী সাইদুর রহমান শাহীনের ছেলে।
চুরির অপবাদ দিয়ে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া শিশু রিয়াদকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে নির্মম, পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। স্থানীয় ৩য় শ্রেণির ছাত্র ইয়াছিন, ৫ম শ্রেণির ছাত্র শাকিবুল, ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ফাহাদ, নাসিমা (৫০), ফালানী খাতুন (৬০), আহাদ মিয়া (৫২), কাঁচামাল ব্যবসায়ী জাকির (৪০) এরা সবাই প্রত্যক্ষদর্শী। এদের সামনেই সব হয়েছে। ফলে ঘটনার এক সপ্তাহ পরও প্রত্যক্ষদর্শী শিশু, নারী-পুরুষদের চোখে-মুখে এখনো আতঙ্কের ছাপ। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী শিশুরা মাঝে মাঝেই আঁতকে উঠছিল। চোখের সামনে হত্যার দৃশ্য কিছুতেই ভুলতে পারছে না নিহতের ছোট ভাই রিফাত, ইয়াছিন ও শাকিল।
গত ৩০শে আগস্ট বৃহস্পতিবার ঘটনার সময় নিহত রিয়াদের বাক প্রতিবন্ধী মা বাড়িতে ছিলেন না। বাবার বাড়ি থেকে তাকে ফোন করে ডেকে আনা হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছেই তিনি বুঝে যান তার সহজ-সরল ছেলাটাকে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় বাক প্রতিবন্ধী মায়ের গগনবিদারী কান্না ও ভাই-বোনের চিৎকারে আকাশ ভারী হয়ে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শী ছিপান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র শাকিবুল জানায়, সে ভোরে ঘুম থেকে উঠে পাকা তাল সংগ্রহের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে ঘাগড়া টাওয়ারের মোড় বাজারের কাছে গেলে রিয়াদের চিৎকার শুনে এগিয়ে গিয়ে শোনে একজন বলছে এক ঘণ্টা হয়ে গেছে এখনো পা ভাঙতে পারলি না কেন? তখন রাশিদ পেটাতে শুরু করে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সোহেল নামে আরেকজন পেটায়। পরে রিয়াদ পানি পানি করে চিৎকার করছিল। কেউ পানি না দেয়ায় রিয়াদ আবারো চিৎকার করে বলছিল আমাকে পাশের ক্ষেতে ফেলে দেন। সেখান থেকে আমি একটু পানি খাই। এভাবে বার বার মিনতি করতে করতে রিয়াদ নিস্তেজ হয়ে পড়লে নির্যাতনকারীরা কাঠের মাচানে করে পাশের একটি পতিত জমিতে ফেলে দেয়।
স্থানীয় উথুরী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ফাহাদ জানায়, ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি রিয়াদ পানির জন্য কাকুতি মিনতি করছে। তখনও তার উপর নির্যাতন চলেছে।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ফালানী খাতুন বলেন, জীবনে এমন নিষ্ঠুর, নির্মম, পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড আর দেখেনি। রিয়াদকে বেদম মারধরের এক পর্যায়ে সে বলতে থাকে ও বাবারে আমারে আপনেরা মাইরা ফেলেন, তবুও আমারে একটু পানি দেন। আমি পানি নিয়ে এগিয়ে গেলে নির্যাতনকারীরা আমাকে মারতে উদ্যত হয়। তবু ছেলেটাকে পানি খাওয়াতে অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু ওদের কারণে পারিনি। জান ভিক্ষা চেয়েও বাঁচাতে পারিনি। মুমূর্ষু অবস্থায় পিপাসা মেটাতে এক ফোঁটা পানি পর্যন্ত দেয়নি পাষণ্ড হত্যাকারীরা।
নিহত শিশু রিয়াদ হত্যার ঘটনাস্থল উপজেলার গফরগাঁও ইউনিয়নের ঘাগড়া টাওয়ার মোড় বাজারে সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে- স্তব্ধ, সুনসান নীরব। এ হত্যাকাণ্ডের পর কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলেনি। সারা গ্রামজুড়ে শোকের পরিবেশ। রিয়াদের বাড়িতে ও ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের খুঁজে বের করে হত্যার বর্ণনা শোনার সময় সবার চোখে-মুখেই আতঙ্ক বিরাজ করছিল। বিশেষ করে প্রত্যক্ষদর্শী শিশুরা ছিল বেশি আতঙ্কিত।
হত্যাকাণ্ডের পর পরেই গা-ঢাকা দেয় অপরাধীরা। গত ৩০শে আগস্ট বৃহস্পতিবার রাতেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৯ জনকে আসামি করে নিহত রিয়াদের ফুফা আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে গফরগাঁও থানায় মামলা দায়ের করলেও এখনো পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। এদিকে হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে রিয়াদের সহপাঠী, শিক্ষক, পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী। গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ খান বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে র্যাব ও পুলিশের যৌথ জোরালো অভিযান চলছে।
রিয়াদের কলেজ পড়ুয়া বোন নীলফুল নাহার শান্তা জানায়, নির্যাতনকারীদের কাছে গিয়ে আমার ভাইয়ের প্রাণ ভিক্ষা চাইলেও তারা নির্যাতন বন্ধ করেনি। এদের সবার হাতে দা-লাঠি থাকায় ভয়ে কাছে যেতে পারেনি পরিবারের কেউ। যারা আমার ভাইকে পৈশাচিক নির্যাতন করে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ফাঁসি চাই। প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, শিশু রিয়াদকে আটক করা হয় ভোর পাঁচটার পরে। আর নির্যাতন চলে দেড় ঘণ্টারও বেশি। সকাল ৭টার দিকে ছেলেটির মৃত্যুর পর ক্ষান্ত দেয় নির্যাতনকারীরা। আর এরপর ঘটনাস্থল নয়, এলাকাও ছেড়ে পালিয়ে যায় তারা। রিয়াদ ঘাগড়া-উথুরী-ছিপান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে উথুরী গ্রামের সৌদি প্রবাসী সাইদুর রহমান শাহীনের ছেলে।
চুরির অপবাদ দিয়ে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া শিশু রিয়াদকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে নির্মম, পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। স্থানীয় ৩য় শ্রেণির ছাত্র ইয়াছিন, ৫ম শ্রেণির ছাত্র শাকিবুল, ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ফাহাদ, নাসিমা (৫০), ফালানী খাতুন (৬০), আহাদ মিয়া (৫২), কাঁচামাল ব্যবসায়ী জাকির (৪০) এরা সবাই প্রত্যক্ষদর্শী। এদের সামনেই সব হয়েছে। ফলে ঘটনার এক সপ্তাহ পরও প্রত্যক্ষদর্শী শিশু, নারী-পুরুষদের চোখে-মুখে এখনো আতঙ্কের ছাপ। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী শিশুরা মাঝে মাঝেই আঁতকে উঠছিল। চোখের সামনে হত্যার দৃশ্য কিছুতেই ভুলতে পারছে না নিহতের ছোট ভাই রিফাত, ইয়াছিন ও শাকিল।
গত ৩০শে আগস্ট বৃহস্পতিবার ঘটনার সময় নিহত রিয়াদের বাক প্রতিবন্ধী মা বাড়িতে ছিলেন না। বাবার বাড়ি থেকে তাকে ফোন করে ডেকে আনা হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছেই তিনি বুঝে যান তার সহজ-সরল ছেলাটাকে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় বাক প্রতিবন্ধী মায়ের গগনবিদারী কান্না ও ভাই-বোনের চিৎকারে আকাশ ভারী হয়ে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শী ছিপান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র শাকিবুল জানায়, সে ভোরে ঘুম থেকে উঠে পাকা তাল সংগ্রহের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে ঘাগড়া টাওয়ারের মোড় বাজারের কাছে গেলে রিয়াদের চিৎকার শুনে এগিয়ে গিয়ে শোনে একজন বলছে এক ঘণ্টা হয়ে গেছে এখনো পা ভাঙতে পারলি না কেন? তখন রাশিদ পেটাতে শুরু করে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সোহেল নামে আরেকজন পেটায়। পরে রিয়াদ পানি পানি করে চিৎকার করছিল। কেউ পানি না দেয়ায় রিয়াদ আবারো চিৎকার করে বলছিল আমাকে পাশের ক্ষেতে ফেলে দেন। সেখান থেকে আমি একটু পানি খাই। এভাবে বার বার মিনতি করতে করতে রিয়াদ নিস্তেজ হয়ে পড়লে নির্যাতনকারীরা কাঠের মাচানে করে পাশের একটি পতিত জমিতে ফেলে দেয়।
স্থানীয় উথুরী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ফাহাদ জানায়, ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি রিয়াদ পানির জন্য কাকুতি মিনতি করছে। তখনও তার উপর নির্যাতন চলেছে।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ফালানী খাতুন বলেন, জীবনে এমন নিষ্ঠুর, নির্মম, পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড আর দেখেনি। রিয়াদকে বেদম মারধরের এক পর্যায়ে সে বলতে থাকে ও বাবারে আমারে আপনেরা মাইরা ফেলেন, তবুও আমারে একটু পানি দেন। আমি পানি নিয়ে এগিয়ে গেলে নির্যাতনকারীরা আমাকে মারতে উদ্যত হয়। তবু ছেলেটাকে পানি খাওয়াতে অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু ওদের কারণে পারিনি। জান ভিক্ষা চেয়েও বাঁচাতে পারিনি। মুমূর্ষু অবস্থায় পিপাসা মেটাতে এক ফোঁটা পানি পর্যন্ত দেয়নি পাষণ্ড হত্যাকারীরা।
নিহত শিশু রিয়াদ হত্যার ঘটনাস্থল উপজেলার গফরগাঁও ইউনিয়নের ঘাগড়া টাওয়ার মোড় বাজারে সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে- স্তব্ধ, সুনসান নীরব। এ হত্যাকাণ্ডের পর কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলেনি। সারা গ্রামজুড়ে শোকের পরিবেশ। রিয়াদের বাড়িতে ও ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের খুঁজে বের করে হত্যার বর্ণনা শোনার সময় সবার চোখে-মুখেই আতঙ্ক বিরাজ করছিল। বিশেষ করে প্রত্যক্ষদর্শী শিশুরা ছিল বেশি আতঙ্কিত।
হত্যাকাণ্ডের পর পরেই গা-ঢাকা দেয় অপরাধীরা। গত ৩০শে আগস্ট বৃহস্পতিবার রাতেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৯ জনকে আসামি করে নিহত রিয়াদের ফুফা আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে গফরগাঁও থানায় মামলা দায়ের করলেও এখনো পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। এদিকে হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে রিয়াদের সহপাঠী, শিক্ষক, পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী। গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ খান বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে র্যাব ও পুলিশের যৌথ জোরালো অভিযান চলছে।
No comments