৮০ হাজার আসামি: আরো হার্ডলাইনে যাচ্ছে সরকার by দীন ইসলাম ও কাফি কামাল
জাতীয়
নির্বাচন সামনে রেখে আরো কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার। বিরোধীপক্ষের জোরালো
কোনো কর্মসূচি না থাকলেও সারা দেশে চলছে ধরপাকড়। ঈদুল আজহার কয়েক দিন আগে
থেকে এ পর্যন্ত শুধু বিএনপি ও অঙ্গ দলের দেড় হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার
করা হয়েছে বলে দলটির দাবি। এই সময়ে নতুন করে ১২ শতাধিক মামলা দায়ের হয়েছে।
এতে আসামি করা হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের জামিনও মিলছে না সহজে। জামিন পেলেও কারাফটক থেকে শ্যোন এরেস্ট দেখানো হচ্ছে। পুরনো মামলাগুলো সক্রিয় করা হচ্ছে। অসমর্থিত সূত্রের দাবি, নির্বাচন সামনে রেখে ভোটকেন্দ্রভিত্তিক সক্রিয় নেতাকর্মীদেরও তালিকা হচ্ছে। ধরপাকড় ও পুলিশের অভিযানের কারণে অনেক নেতাকর্মী বাসায় থাকছেন না।
কঠোর অবস্থানে সরকার: ভবিষ্যৎ নির্বাচন ‘অনুকূলে’ রাখতে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএনপিসহ সরকারের বিরুদ্ধে থাকা দলগুলোর নেতাদের নামে দায়ের করা পুরনো মামলা সচল করার ওপর বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বিরোধী নেতাদের নামে দায়ের করা মামলার গতি-প্রকৃতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
একই সঙ্গে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সারা দেশে অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গত ১লা সেপ্টেম্বর বিএনপি’র জনসভা শেষ হওয়ার পর রাজধানীসহ থানায় থানায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীদের টার্গেট করেই এসব ঘটনাহীন মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে মনে করা হয়। বিস্ফোরক দ্রব্য ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা এসব মামলায় এখন চলছে গ্রেপ্তার। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো এজন্য অভিযান পরিচালনা করছে।
গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের জামিন বাতিল হতে পারে- এমন খবর চাউর হয়েছে ক’দিন আগেই। জননিরাপত্তা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ প্রশাসনে শেষ মুহূর্তের গোছানোর কাজ চলছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশালের মতো বিভাগীয় শহরগুলোতে বিশ্বস্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ঢাকার উপ-কমিশনার পদে সবচেয়ে বিশ্বস্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এদিকে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরা তাদের নিজেদের এলাকায় পছন্দের ওসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিতে চান। এ জন্য তারা আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) দিচ্ছেন। অনেকে ফোনে যোগাযোগ করে তদবির করছেন।
মামলা ও গ্রেপ্তারের হিড়িক: রাজপথে উত্তাপ সৃষ্টিকারী রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি নেই বিরোধী রাজনৈতিক জোটের। বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে বিএনপি। রাজনীতিতে যখন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজপথ উত্তপ্ত করার চেয়ে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির প্রয়াস জোরদার তখন হঠাৎ করেই ধরপাকড় শুরু হয়েছে সারা দেশে। ঈদুল আজহার পর থেকে প্রতিরাতেই জেলায় জেলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
প্রতিদিনই বিএনপি ও ২০দলীয় জোটের শরিক জামায়াতের শতাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থক গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। মামলা দায়ের করা হচ্ছে শত শত অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে। সারা দেশে হিড়িক চলছে মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তারের। বিএনপি ও অঙ্গদলের নেতাকর্মীদের বাসায় না পেলে তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এমন অভিযোগও আসছে।
পরিবারের লোকজনের ওপর চাপ প্রয়োগ করে সংগ্রহ করা হচ্ছে নেতাকর্মীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট নম্বর। কোনো কোনো এলাকায় নেতাদের আত্মীয়স্বজনের ঠিকানাও জোগাড় করছেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা কারাগারে রয়েছেন তাদের জামিন মিলছে না সহজে। যারা মুক্ত রয়েছেন তাদের জামিনের মেয়াদ না বাড়িয়ে পাঠানো হচ্ছে কারাগারে।
বিএনপির নীতিনির্ধারক ফোরামের সদস্য থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা এসব তথ্য জানিয়েছেন। বিএনপি নেতারা জানান, ঈদের পর নানা জেলায় টুকটাক ধরপাকড় শুরু হয়েছিল। কিন্তু ১লা সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিশাল জনসভা করার পর থেকে বেড়ে গেছে ধরপাকড়। গত চারদিনে ধরপাকড়ের সংখ্যা বেড়েছে জ্যামিতিক হারে।
প্রতিদিন রাতেই পোশাকধারী ও সাদা পোশাকধারীরা নেতাদের বাসা-বাড়িতে হানা দিচ্ছে। নেতাকর্মীদের না পেয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে করা হচ্ছে দুর্ব্যবহার। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গিন হয়ে উঠেছে যে, ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাড়িছাড়া হয়ে পড়েছেন। বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, ঈদের পর থেকে প্রতিদিনই সারা দেশে বিএনপি ও অঙ্গদলের শত শত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ।
নেতাকর্মীদের কয়েকজনের নাম উল্লেখ ও বিপুলসংখ্যক অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা কারাগারে রয়েছেন তাদের জামিন দেয়া হচ্ছে না। যারা জামিনে মুক্ত রয়েছেন তারা পরবর্তী দিনে আদালতে গেলেই নতুন মামলায় শ্যোন এরেস্ট দেখানো হচ্ছে।
বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন- ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম ৫ দিনে সারা দেশে বিএনপি ও অঙ্গদলের দেড় হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নতুন করে দায়ের হয়েছে প্রায় ১২ শতাধিক মামলা। এসব মামলায় ১১ হাজারের বেশি বিএনপি নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার।
রুহুল কবির রিজভী জানান, মধ্যযুগে ইউরোপের ডাইনি শিকারের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপিসহ বিরোধী দল শিকারের অভিযান চালাচ্ছে। ঘটনা না ঘটলেও বিভিন্ন থানায় অগ্রিম মামলা দায়ের করে হাজার হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করছে পুলিশ। সারা দেশে চলছে মামলার ছড়াছড়ি, গ্রেপ্তার ও আসামি করার হিড়িক। বিদেশে অবস্থানরত বা পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরবে অবস্থানকারী নেতাদের নামও যুক্ত করা হচ্ছে আসামির তালিকায়।
সারা দেশে কয়েকদিনের মামলা ও গ্রেপ্তারের চিত্র তুলে ধরে রিজভী বলেন, রাজধানীর রূপনগরে বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক ও বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হকের নিজ বাড়িতে এলাকার মুরব্বিদের নিয়ে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে হানা দিয়ে পুলিশ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে।
পরে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি নতুন মামলা করে আদালতে পাঠিয়ে একদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ১১৮ জন, সুনামগঞ্জে ৩২ জন, কুষ্টিয়ায় বিএনপি ও জামায়াতের মিলিয়ে ৫৮ জন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নেত্রকোনা জেলায় ১লা সেপ্টেম্বরের পর থেকে ৩২০০ জনের নাম উল্লেখসহ অসংখ্য অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দিয়েছে পুলিশ। এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ১০০ জনকে।
এছাড়া মেহেরপুর জেলা বিএনপি ও অঙ্গদলের ৬৫ জন নেতাকর্মী, ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা ছাত্রদলের ৯ নেতাকর্মী, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজীবসহ ছাত্রদলের ১৪ জন নেতাকর্মী, নাটোরের বড়াইগ্রাম পৌর বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মজিদ সরকার, বড়াইগ্রাম উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক সরকার, ছাত্রদলের সভাপতি শাহাদত হোসেন শামীমসহ ১৪ জন নেতাকর্মী, কুষ্টিয়ার মিরপুরে ৬ জন, পিরোজপুরে ১০ জন, নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা বিএনপির ১৩ জন নেতাকর্মী, বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আইয়ুব খান, বরিশালের গৌরনদী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভিপি জাকির হোসেন রাজাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এছাড়া সারা দেশে অন্তত কয়েক হাজার নেতাকর্মীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। তিনি জানান, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, যুববিষয়ক সহ-সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, ডিসিসির সাবেক কমিশনার মীর আশরাফ আলী আজম, ইঞ্জিনিয়ার এসএম আবদুল আজিজ ও মোশাররফ হোসেন খোকনসহ ৩৬ জন নেতাকর্মীর নামে গত ৩রা সেপ্টেম্বর বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা করেছে লালবাগ থানা পুলিশ।
রাজধানীর সূত্রাপুরে বিএনপির ২০ জনের নামে গতকাল ২টি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। কুষ্টিয়ার বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে পুলিশ দায়ের করেছে নতুন ১০টি মামলা। নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৭ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী রব্বানসহ ২৭ জন, বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাফতুন আহমেদ খান রুবেলসহ ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বগুড়া সদর থানায় বিস্ফোরক আইনে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করে পুলিশ।
ঝিনাহদহের শৈলকুপা উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শত শত নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হচ্ছে। পুলিশ খুলনা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ৩০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার ও ৩০০ জনের বেশির নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করেছে। সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সেলিম রেজাসহ ১৬ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে ৩০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
তিনি জানান, বিএনপির সহ-বন ও পরিবেশ সম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপুকে গ্রেপ্তারের জন্য তার বাসায় বারবার তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। স্বাস্থ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামের সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় গিয়ে তাকে না পেয়ে পরিবারের লোকজনদের কাছে তার জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট চায়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর জানায়, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পরদিন রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার ও জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামানসহ ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে পুলিশ নাশকতার অভিযোগে মামলা করে। একই দিন বগুড়ার শাজাহানপুরে উপজেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে বিস্ফোরক ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার ও এ ঘটনায় ৩০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা করে পুলিশ।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ থানা বিএনপি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল করার পর পুলিশ ৩৫ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগ এনে মামলা করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা জানান, মিলাদটি পুলিশের উপস্থিতিতেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর জানায়, ঈদের পর থেকে সংগঠনের একজন সহ-সভাপতিসহ অন্তত ২৫০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রতিদিনই ৪০-৫০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিএনপির সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেও গ্রেপ্তারের জন্য তালিকা তৈরির খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিএনপি ও অঙ্গদলের কর্মীদের মধ্যে যারা অনলাইনে সক্রিয় তাদের বিষয়েই প্রশাসনের তরফে বেশি খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করলেও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।
এতে আসামি করা হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের জামিনও মিলছে না সহজে। জামিন পেলেও কারাফটক থেকে শ্যোন এরেস্ট দেখানো হচ্ছে। পুরনো মামলাগুলো সক্রিয় করা হচ্ছে। অসমর্থিত সূত্রের দাবি, নির্বাচন সামনে রেখে ভোটকেন্দ্রভিত্তিক সক্রিয় নেতাকর্মীদেরও তালিকা হচ্ছে। ধরপাকড় ও পুলিশের অভিযানের কারণে অনেক নেতাকর্মী বাসায় থাকছেন না।
কঠোর অবস্থানে সরকার: ভবিষ্যৎ নির্বাচন ‘অনুকূলে’ রাখতে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএনপিসহ সরকারের বিরুদ্ধে থাকা দলগুলোর নেতাদের নামে দায়ের করা পুরনো মামলা সচল করার ওপর বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বিরোধী নেতাদের নামে দায়ের করা মামলার গতি-প্রকৃতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
একই সঙ্গে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সারা দেশে অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গত ১লা সেপ্টেম্বর বিএনপি’র জনসভা শেষ হওয়ার পর রাজধানীসহ থানায় থানায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীদের টার্গেট করেই এসব ঘটনাহীন মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে মনে করা হয়। বিস্ফোরক দ্রব্য ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা এসব মামলায় এখন চলছে গ্রেপ্তার। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো এজন্য অভিযান পরিচালনা করছে।
গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের জামিন বাতিল হতে পারে- এমন খবর চাউর হয়েছে ক’দিন আগেই। জননিরাপত্তা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ প্রশাসনে শেষ মুহূর্তের গোছানোর কাজ চলছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশালের মতো বিভাগীয় শহরগুলোতে বিশ্বস্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ঢাকার উপ-কমিশনার পদে সবচেয়ে বিশ্বস্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এদিকে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরা তাদের নিজেদের এলাকায় পছন্দের ওসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিতে চান। এ জন্য তারা আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) দিচ্ছেন। অনেকে ফোনে যোগাযোগ করে তদবির করছেন।
মামলা ও গ্রেপ্তারের হিড়িক: রাজপথে উত্তাপ সৃষ্টিকারী রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি নেই বিরোধী রাজনৈতিক জোটের। বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে বিএনপি। রাজনীতিতে যখন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজপথ উত্তপ্ত করার চেয়ে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির প্রয়াস জোরদার তখন হঠাৎ করেই ধরপাকড় শুরু হয়েছে সারা দেশে। ঈদুল আজহার পর থেকে প্রতিরাতেই জেলায় জেলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
প্রতিদিনই বিএনপি ও ২০দলীয় জোটের শরিক জামায়াতের শতাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থক গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। মামলা দায়ের করা হচ্ছে শত শত অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে। সারা দেশে হিড়িক চলছে মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তারের। বিএনপি ও অঙ্গদলের নেতাকর্মীদের বাসায় না পেলে তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এমন অভিযোগও আসছে।
পরিবারের লোকজনের ওপর চাপ প্রয়োগ করে সংগ্রহ করা হচ্ছে নেতাকর্মীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট নম্বর। কোনো কোনো এলাকায় নেতাদের আত্মীয়স্বজনের ঠিকানাও জোগাড় করছেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা কারাগারে রয়েছেন তাদের জামিন মিলছে না সহজে। যারা মুক্ত রয়েছেন তাদের জামিনের মেয়াদ না বাড়িয়ে পাঠানো হচ্ছে কারাগারে।
বিএনপির নীতিনির্ধারক ফোরামের সদস্য থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা এসব তথ্য জানিয়েছেন। বিএনপি নেতারা জানান, ঈদের পর নানা জেলায় টুকটাক ধরপাকড় শুরু হয়েছিল। কিন্তু ১লা সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিশাল জনসভা করার পর থেকে বেড়ে গেছে ধরপাকড়। গত চারদিনে ধরপাকড়ের সংখ্যা বেড়েছে জ্যামিতিক হারে।
প্রতিদিন রাতেই পোশাকধারী ও সাদা পোশাকধারীরা নেতাদের বাসা-বাড়িতে হানা দিচ্ছে। নেতাকর্মীদের না পেয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে করা হচ্ছে দুর্ব্যবহার। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গিন হয়ে উঠেছে যে, ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাড়িছাড়া হয়ে পড়েছেন। বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, ঈদের পর থেকে প্রতিদিনই সারা দেশে বিএনপি ও অঙ্গদলের শত শত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ।
নেতাকর্মীদের কয়েকজনের নাম উল্লেখ ও বিপুলসংখ্যক অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা কারাগারে রয়েছেন তাদের জামিন দেয়া হচ্ছে না। যারা জামিনে মুক্ত রয়েছেন তারা পরবর্তী দিনে আদালতে গেলেই নতুন মামলায় শ্যোন এরেস্ট দেখানো হচ্ছে।
বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন- ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম ৫ দিনে সারা দেশে বিএনপি ও অঙ্গদলের দেড় হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নতুন করে দায়ের হয়েছে প্রায় ১২ শতাধিক মামলা। এসব মামলায় ১১ হাজারের বেশি বিএনপি নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার।
রুহুল কবির রিজভী জানান, মধ্যযুগে ইউরোপের ডাইনি শিকারের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপিসহ বিরোধী দল শিকারের অভিযান চালাচ্ছে। ঘটনা না ঘটলেও বিভিন্ন থানায় অগ্রিম মামলা দায়ের করে হাজার হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করছে পুলিশ। সারা দেশে চলছে মামলার ছড়াছড়ি, গ্রেপ্তার ও আসামি করার হিড়িক। বিদেশে অবস্থানরত বা পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরবে অবস্থানকারী নেতাদের নামও যুক্ত করা হচ্ছে আসামির তালিকায়।
সারা দেশে কয়েকদিনের মামলা ও গ্রেপ্তারের চিত্র তুলে ধরে রিজভী বলেন, রাজধানীর রূপনগরে বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক ও বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হকের নিজ বাড়িতে এলাকার মুরব্বিদের নিয়ে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে হানা দিয়ে পুলিশ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে।
পরে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি নতুন মামলা করে আদালতে পাঠিয়ে একদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ১১৮ জন, সুনামগঞ্জে ৩২ জন, কুষ্টিয়ায় বিএনপি ও জামায়াতের মিলিয়ে ৫৮ জন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নেত্রকোনা জেলায় ১লা সেপ্টেম্বরের পর থেকে ৩২০০ জনের নাম উল্লেখসহ অসংখ্য অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দিয়েছে পুলিশ। এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ১০০ জনকে।
এছাড়া মেহেরপুর জেলা বিএনপি ও অঙ্গদলের ৬৫ জন নেতাকর্মী, ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা ছাত্রদলের ৯ নেতাকর্মী, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজীবসহ ছাত্রদলের ১৪ জন নেতাকর্মী, নাটোরের বড়াইগ্রাম পৌর বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মজিদ সরকার, বড়াইগ্রাম উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক সরকার, ছাত্রদলের সভাপতি শাহাদত হোসেন শামীমসহ ১৪ জন নেতাকর্মী, কুষ্টিয়ার মিরপুরে ৬ জন, পিরোজপুরে ১০ জন, নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা বিএনপির ১৩ জন নেতাকর্মী, বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আইয়ুব খান, বরিশালের গৌরনদী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভিপি জাকির হোসেন রাজাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এছাড়া সারা দেশে অন্তত কয়েক হাজার নেতাকর্মীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। তিনি জানান, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, যুববিষয়ক সহ-সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, ডিসিসির সাবেক কমিশনার মীর আশরাফ আলী আজম, ইঞ্জিনিয়ার এসএম আবদুল আজিজ ও মোশাররফ হোসেন খোকনসহ ৩৬ জন নেতাকর্মীর নামে গত ৩রা সেপ্টেম্বর বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা করেছে লালবাগ থানা পুলিশ।
রাজধানীর সূত্রাপুরে বিএনপির ২০ জনের নামে গতকাল ২টি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। কুষ্টিয়ার বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে পুলিশ দায়ের করেছে নতুন ১০টি মামলা। নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৭ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী রব্বানসহ ২৭ জন, বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাফতুন আহমেদ খান রুবেলসহ ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বগুড়া সদর থানায় বিস্ফোরক আইনে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করে পুলিশ।
ঝিনাহদহের শৈলকুপা উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শত শত নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হচ্ছে। পুলিশ খুলনা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ৩০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার ও ৩০০ জনের বেশির নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করেছে। সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সেলিম রেজাসহ ১৬ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে ৩০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
তিনি জানান, বিএনপির সহ-বন ও পরিবেশ সম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপুকে গ্রেপ্তারের জন্য তার বাসায় বারবার তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। স্বাস্থ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামের সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় গিয়ে তাকে না পেয়ে পরিবারের লোকজনদের কাছে তার জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট চায়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর জানায়, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পরদিন রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার ও জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামানসহ ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে পুলিশ নাশকতার অভিযোগে মামলা করে। একই দিন বগুড়ার শাজাহানপুরে উপজেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে বিস্ফোরক ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার ও এ ঘটনায় ৩০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা করে পুলিশ।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ থানা বিএনপি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল করার পর পুলিশ ৩৫ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগ এনে মামলা করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা জানান, মিলাদটি পুলিশের উপস্থিতিতেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর জানায়, ঈদের পর থেকে সংগঠনের একজন সহ-সভাপতিসহ অন্তত ২৫০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রতিদিনই ৪০-৫০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিএনপির সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেও গ্রেপ্তারের জন্য তালিকা তৈরির খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিএনপি ও অঙ্গদলের কর্মীদের মধ্যে যারা অনলাইনে সক্রিয় তাদের বিষয়েই প্রশাসনের তরফে বেশি খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করলেও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।
No comments