বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারতের ছায়া, হাসিনা সরকারের দুর্নীতি, বিএনপি’কে দমন by পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী
আগামী
কয়েক মাসের মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচনী ডামাডোল বাজতে শুরু করবে। ১৯৯০ সালে
সামরিক স্বৈরাচার জেনারেল এইচ এম এরশাদের উৎখাতের পর থেকে বাংলাদেশে
গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর রীতিতে পরিণত হয়েছে। ২০০৭-২০০৮ সময়ে
সেনা-সমর্থিত তত্ত্ববধায়ক সরকার ছিল বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শাসনের
ব্যতিক্রম। ২০১৪ সাল ছাড়া বাংলাদেশ কখনো ক্ষমতাসীন সরকারকে ক্ষমতায় ফিরতে
ভোট দেয়নি। সেবার বিএনপি নির্বাচন বয়কট করায় শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ (এএল)
ওয়াক-ওভার পেয়ে যায়। চলতি বছরের শেষ দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াই আবারো
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পদক্ষেপকে নির্বাচনী-প্রক্রিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ এবং এর মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের নীলনক্সা হিসেবে দেখা হয়েছে। অথচ নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে এই আওয়ামী লীগই নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার বিক্ষোভ করেছিল। এর জের ধরে বিএনপি সরকার সংবিধানে বিধিটি অন্তর্ভুক্ত করেছিল। সেনা-সমর্থিত কেয়ারটেকার সরকার আয়োজিত ২০০৮ সালের নির্বাচনে পার্লামেন্টে তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করার পর ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে থাকা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থাটি বাতিল করে।
সামরিক স্বৈরাচার আমলে বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের সংবিধানে থাকা স্বাধীনতা যুদ্ধের সেক্যুলার মূলনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। বাংলাদেশী সমাজে ইসলামিকরণ উৎসাহিত করা হয় সামরিক স্বৈরাচারদের আমলে, যারা ছিলেন পাকিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাদের শাসনকাজের মডেল পাকিস্তানি অভিজ্ঞতা থেকে গ্রহণ করা হয়, ইসলামি দলগুলোর সাথে জোট গঠন করে। এসব দলের নেতারা পরবর্তীকালে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত হয়েছিলেন।
সরকারি চাকরির কোটার মতো ঘরোয়া ইস্যু এবং ঢাকার অবাধ্য ও বিশৃঙ্খল যানবাহন নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নে শিক্ষার্থীদের ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে ওঠা আন্দোলন অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ক্ষমতা রাখে। বিভিন্ন ইস্যুতে হাসিনার সরকারের ছন্দপতন ঘটেছে, যথাযথভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো ঢাকার অবাধ্য যানবাহন চালকদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। এসব চালক দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের কাছ থেকে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে থাকে। দুই ছাত্রের মৃত্যুর ফলে দেশব্যাপী ছাত্রদের ক্রোধ উষ্কে দেয়া ও এই ইস্যুতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নস্যাতের অভিযোগে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এক ফটোগ্রাফারকে গ্রেফতার ছিল বেপরোয়া সিদ্ধান্ত। এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি করে। কিন্তু শেখ হাসিনা কোনো ধরনের নমনীয়তা প্রদর্শন করেননি।
হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন, বিরোধী দলকে দলন ও ব্যাপক দুর্নীতি। নির্বাচনী প্রচারণায় এসব ইস্যু ও ভারত ফ্যাক্টর প্রাধান্য পাবে। রাজনৈতিক বিরোধীদের অব্যাহতভাবে হয়রানি করার ফলে জনগণের বিভিন্ন অংশের মধ্যে নীরব ক্ষোভ বেড়েই চলেছে এবং ব্যাপকভাবে এই ধারণার সৃষ্টি করেছে যে আওয়ামী লীগ সরকার পরিকল্পিতভাবে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করছে। ক্রমেই এমন অভিমত জোরালো হচ্ছে যে, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হলে আওয়ামী লীগ আগামী সংসদ নির্বাচনে লজ্জাজনক সংখ্যালঘুতে পরিণত হবে। অনেক সমালোচক বিশ্বাস করেন, হাসিনা সরকার নির্বাচন ‘ম্যানেজ’ করবে। দক্ষিণ এশিয়ায় একে বলা হয় ‘নির্বাচনী জালিয়াতি’।
সমালোচকেরা অভিযোগ করছেন যে প্রতিটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে আপস করে সেগুলো দলের প্রতি সহানুভূতিশীলদের দিয়ে বোঝাই করা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে কথিত জাতীয় অভিযানটি ‘গুলি করে হত্যার’ নীতিতে পর্যবেশিত হয় বলে মানবাধিকার অ্যাক্টিভিস্টরা জানিয়েছেন। এতে অনেক নিরপরাধ মারা যায়। হিন্দু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য সুপ্রিম কোর্টের সাবেক এক প্রধান বিচারপতি সরকারের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পদত্যাগ করতে ও বিদেশে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন। সাধারণভাবে আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থনসূচক থাকা হিন্দু সংখ্যালঘুরাও ক্ষুব্ধ, কারণ আওয়ামী লীগ নেতারা দায়মুক্তির সাথে হিন্দু সম্পত্তি জবরদখল করেছে। আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, আওয়ামী লীগকে সমর্থন করা ছাড়া ভারতের কাছে আর কোনো বিকল্প নেই এবং হিন্দু সংখ্যালঘুদের হয়রানি ও বৈষম্য করা হলেও কিছু বলবে না।
ইতিবাচক দিক হলো, জঙ্গি ধর্মীয় চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপ ছিল কার্যকর। হাসিনা সরকারের নেতৃত্বে অর্থনীতিও খুব ভালো করেছে। অবশ্য দুর্নীতি ও যোগসাজশমূলক পুঁজিবাদ অর্থনৈতিক দৃশ্যপটকে কলুসিত করে ফেলেছে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র চেয়ারম্যান, দু’বারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির অভিযোগে জেলে যাওয়ায় দলটি বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক জিয়া লন্ডনে প্রবাসী। কয়েকটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না। দেশে ফিরলে তাকে বেশ কয়েক বছর কারাগারে থাকতে হতে পারে। তবে দেয়াল পিঠ ঠেকে যাওয়ায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারে বিএনপি। এতে করে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ করার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকলেও তা বিএনপির দাবি – ক্ষমতাসীনরা বাদে অন্য যেকেউ নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বে আসুক – পূরণ করতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থার অভাব বিপুল ও তাদের একমতে পৌঁছা অসম্ভব। বিরোধীদের সাথে কোনো ধরনের সংলাপে অনীহার কথা বারবার জোর দিয়ে বলছেন হাসিনা।
বিএনপি আসন্ন নির্বাচন বয়কট করার ঝুঁকি গ্রহণ করবে না কারণ এটা করলে তারা নিবন্ধন হারাতে পারে। বিএনপির মিত্র, প্রধান ইসলামি দল জামায়াতে ইসলামীও বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছে। পাকিস্তানের পঞ্চম বাহিনী হিসেবে পরিচিত দলটির শীর্ষ নেতাদের ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে যুদ্ধাপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে। দলটির গঠনতন্ত্র সংবিধান-পরিপন্থী হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে সে তার নিবন্ধন হারিয়েছে। শরিয়া আইন জারি ও মুসলিম উম্মাহর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখার সাধারণ ইসলামি লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে বিশ্বাস করে জামায়াতে ইসলামী।
তারেক রহমানের সমর্থনপুষ্ট মধ্যপন্থী বিএনপি নেতারা ভারতের সাথে যোগাযোগ করেছেন। ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উৎসাহ দিয়েছেন তারেক। কয়েক দিনের মধ্যেই আদালত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় দিবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান উভয়কেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে। তা ঘটলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই ব্যাপক বিক্ষোভে ফেটে পড়বে। হাসিনা যদিও সামরিক বাহিনীর পরিচর্যায় খুবই যত্নবান, এর নেতৃত্ব বাছাই করেন যত্নের সাথে, কিন্তু তবুও সামরিক হস্তক্ষেপের বিপদ সবসময়ই ওঁত পেতে থাকে।
বিএনপির প্রবীণ নেতারা তারেককে অপছন্দ করেন, তারা নেতা হিসেবে খালেদাকেই অগ্রাধিকার দেবেন। বিএনপির মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা রয়েছে, এমন গুঞ্জনও রয়েছে যে ভাঙনের মাধ্যমে নতুন দলের আবির্ভাব ঘটতে পারে। সম্ভাব্য ভাঙনে আওয়ামী লীগের হাত আছে বলেও গুঞ্জন রয়েছে। বিএনপির নির্বাচনী প্লাটফর্মের মধ্যে রয়েছে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের দাবি। দলটি অভিযোগ করছে, আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন কমিশন ও বিচার বিভাগকে অবদমিত করে রেখেছে। ভোট জালিয়াতি ও কারচুপির উদ্বেগ প্রশমন করতে হাসিনা ২০১৩ সালে বিএনপির নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বিএনপি প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে জোর দিয়ে বলেছিল যে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে হাসিনাকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের হাতে সরকারের দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে।
এদিকে রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাসের মধ্যেই যুক্তফ্রন্ট নামে একটি নতুন গ্রুপের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। এর নেতৃত্বে রয়েছেন গণফোরামের ড. কামাল হোসেন ও সাবেক রাষ্ট্রপতি বি চৌধুরী। তারেক রহমানের সাথে মতবিরোধের পর বি চৌধুরী বিএনপি ত্যাগ করেন, রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরে তিনি রাজনৈতিক দল ‘বিকল্প ধারা’ গঠন করেন। ড. কামাল ছিলেন আওয়ামী লীগে, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনিও হাসিনার সাথে বিরোধে জড়িয়ে আওয়ামী লীগ ত্যাগ করেছিলেন। আরো কয়েকটি ছোট দলও যুক্তফ্রন্টে যোগ দিতে পারে। বিএনপি একে স্বাগত জানিয়েছে। তারা যে আসন্ন নির্বাচনের সময় একটি জোট গঠনের আশা করছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। প্রত্যাশা মতোই এই ফ্রন্ট নিয়ে বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য করেছেন হাসিনা।
বাংলাদেশ প্রায় ১৭ কোটি লোক নিয়ে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম দেশ এবং ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম প্রতিবেশী। পিপিপি’র বিবেচনায় ২৫০ বিলিয়ন ডলার জিডিপি নিয়ে দেশটি বৈশ্বিক জিডিপি র্যাংকিংয়ে ৩৪তম। বাংলাদেশ গত দশকে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের ঘনিষ্ঠতম ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-অর্থনৈতিক অংশীদারে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন সরকারের আমলে বদলে যাওয়া রাজনৈতিক ঘটনাবলী ও ধারার ফলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে। বিচক্ষণ নীতিগত সিদ্ধান্ত সফলভাবে দীর্ঘ দিন ধরে ঝুলে থাকা বিরোধগুলোর সমাধান করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি চুক্তি ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টিতে উৎসাগ যুগিয়েছিল। এ দুটি হচ্ছে সমুদ্র সীমা নির্ধারণ চুক্তি এবং স্থল সীমান্ত চুক্তি।
বাংলাদেশ ও ভারতে যথাক্রমে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ফলে বিএনপি’র হাসিনাকে ভারতের প্রতি অতিরিক্ত নতজানু দেখানোর সম্ভাবনা থাকায় ভারত ফ্যাক্টর হবে বিপুল। প্রধান সমালোচনা হবে, হাসিনা ভারতকে খুব বেশি ছাড় দিয়েছেন, কিন্তু বিনিময়ে পেয়েছেন অতি সামান্য। আসামের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) প্রকাশের ফলে ইস্যুটি ভারতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ফলে দীর্ঘ দিন ঝুলে থাকা অবৈধ অভিবাসী ইস্যুটি বাংলাদেশকে অব্যাহতভাবে উদ্বিগ্ন করবে। বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এনআরসি থেকে সৃষ্ট অনিবার্য প্রভাব থেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। নদীর পানিবণ্টন এখনো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেলেও তা কাটিয়ে ওঠা যাবে না এমন নয়।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক পূর্ণ বিকশিত পর্যায়ে উপনীত হয়েছে এবং পরিকাঠামোর আরো একীভূতকরণ, সীমান্ত বাণিজ্য কেন্দ্র আরো আধুনিকায়ন, মটরযান চুক্তি, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ভবিষ্যতে আরো জোরালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ঢাকায় যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন ভারত তার সাথে কাজ করবে। তাই বলে কোন হাসিনা-বিরোধীকে ভারত বিকল্প মনে করছে, এমনকিছু ভাবা হবে কষ্টকর কল্পনা। অবশ্য, হাসিনার স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা ও তার প্রতি ভারতের সমর্থন অনিবার্য মনে করাটা ভারতের স্বার্থের অনুকূল নয় – ভারতের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ক্রমেই এমন অনুভূতিও জোরালো হচ্ছে।
[লেখক: দিল্লিভিত্তিক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডিস্টিঙগুইশড ফেলো। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব, বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার ২০০৭-২০০৯ ও ডেপুটি হাই কমিশনার ১৯৯৯-২০০২। লেখাটি সাউথ এশিয়ান মনিটরে প্রকাশিত ]
আওয়ামী লীগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পদক্ষেপকে নির্বাচনী-প্রক্রিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ এবং এর মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের নীলনক্সা হিসেবে দেখা হয়েছে। অথচ নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে এই আওয়ামী লীগই নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার বিক্ষোভ করেছিল। এর জের ধরে বিএনপি সরকার সংবিধানে বিধিটি অন্তর্ভুক্ত করেছিল। সেনা-সমর্থিত কেয়ারটেকার সরকার আয়োজিত ২০০৮ সালের নির্বাচনে পার্লামেন্টে তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করার পর ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে থাকা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থাটি বাতিল করে।
সামরিক স্বৈরাচার আমলে বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের সংবিধানে থাকা স্বাধীনতা যুদ্ধের সেক্যুলার মূলনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। বাংলাদেশী সমাজে ইসলামিকরণ উৎসাহিত করা হয় সামরিক স্বৈরাচারদের আমলে, যারা ছিলেন পাকিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাদের শাসনকাজের মডেল পাকিস্তানি অভিজ্ঞতা থেকে গ্রহণ করা হয়, ইসলামি দলগুলোর সাথে জোট গঠন করে। এসব দলের নেতারা পরবর্তীকালে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত হয়েছিলেন।
সরকারি চাকরির কোটার মতো ঘরোয়া ইস্যু এবং ঢাকার অবাধ্য ও বিশৃঙ্খল যানবাহন নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নে শিক্ষার্থীদের ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে ওঠা আন্দোলন অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ক্ষমতা রাখে। বিভিন্ন ইস্যুতে হাসিনার সরকারের ছন্দপতন ঘটেছে, যথাযথভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো ঢাকার অবাধ্য যানবাহন চালকদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। এসব চালক দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের কাছ থেকে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে থাকে। দুই ছাত্রের মৃত্যুর ফলে দেশব্যাপী ছাত্রদের ক্রোধ উষ্কে দেয়া ও এই ইস্যুতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নস্যাতের অভিযোগে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এক ফটোগ্রাফারকে গ্রেফতার ছিল বেপরোয়া সিদ্ধান্ত। এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি করে। কিন্তু শেখ হাসিনা কোনো ধরনের নমনীয়তা প্রদর্শন করেননি।
হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন, বিরোধী দলকে দলন ও ব্যাপক দুর্নীতি। নির্বাচনী প্রচারণায় এসব ইস্যু ও ভারত ফ্যাক্টর প্রাধান্য পাবে। রাজনৈতিক বিরোধীদের অব্যাহতভাবে হয়রানি করার ফলে জনগণের বিভিন্ন অংশের মধ্যে নীরব ক্ষোভ বেড়েই চলেছে এবং ব্যাপকভাবে এই ধারণার সৃষ্টি করেছে যে আওয়ামী লীগ সরকার পরিকল্পিতভাবে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করছে। ক্রমেই এমন অভিমত জোরালো হচ্ছে যে, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হলে আওয়ামী লীগ আগামী সংসদ নির্বাচনে লজ্জাজনক সংখ্যালঘুতে পরিণত হবে। অনেক সমালোচক বিশ্বাস করেন, হাসিনা সরকার নির্বাচন ‘ম্যানেজ’ করবে। দক্ষিণ এশিয়ায় একে বলা হয় ‘নির্বাচনী জালিয়াতি’।
সমালোচকেরা অভিযোগ করছেন যে প্রতিটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে আপস করে সেগুলো দলের প্রতি সহানুভূতিশীলদের দিয়ে বোঝাই করা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে কথিত জাতীয় অভিযানটি ‘গুলি করে হত্যার’ নীতিতে পর্যবেশিত হয় বলে মানবাধিকার অ্যাক্টিভিস্টরা জানিয়েছেন। এতে অনেক নিরপরাধ মারা যায়। হিন্দু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য সুপ্রিম কোর্টের সাবেক এক প্রধান বিচারপতি সরকারের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পদত্যাগ করতে ও বিদেশে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন। সাধারণভাবে আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থনসূচক থাকা হিন্দু সংখ্যালঘুরাও ক্ষুব্ধ, কারণ আওয়ামী লীগ নেতারা দায়মুক্তির সাথে হিন্দু সম্পত্তি জবরদখল করেছে। আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, আওয়ামী লীগকে সমর্থন করা ছাড়া ভারতের কাছে আর কোনো বিকল্প নেই এবং হিন্দু সংখ্যালঘুদের হয়রানি ও বৈষম্য করা হলেও কিছু বলবে না।
ইতিবাচক দিক হলো, জঙ্গি ধর্মীয় চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপ ছিল কার্যকর। হাসিনা সরকারের নেতৃত্বে অর্থনীতিও খুব ভালো করেছে। অবশ্য দুর্নীতি ও যোগসাজশমূলক পুঁজিবাদ অর্থনৈতিক দৃশ্যপটকে কলুসিত করে ফেলেছে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র চেয়ারম্যান, দু’বারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির অভিযোগে জেলে যাওয়ায় দলটি বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক জিয়া লন্ডনে প্রবাসী। কয়েকটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না। দেশে ফিরলে তাকে বেশ কয়েক বছর কারাগারে থাকতে হতে পারে। তবে দেয়াল পিঠ ঠেকে যাওয়ায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারে বিএনপি। এতে করে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ করার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকলেও তা বিএনপির দাবি – ক্ষমতাসীনরা বাদে অন্য যেকেউ নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বে আসুক – পূরণ করতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থার অভাব বিপুল ও তাদের একমতে পৌঁছা অসম্ভব। বিরোধীদের সাথে কোনো ধরনের সংলাপে অনীহার কথা বারবার জোর দিয়ে বলছেন হাসিনা।
বিএনপি আসন্ন নির্বাচন বয়কট করার ঝুঁকি গ্রহণ করবে না কারণ এটা করলে তারা নিবন্ধন হারাতে পারে। বিএনপির মিত্র, প্রধান ইসলামি দল জামায়াতে ইসলামীও বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছে। পাকিস্তানের পঞ্চম বাহিনী হিসেবে পরিচিত দলটির শীর্ষ নেতাদের ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে যুদ্ধাপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে। দলটির গঠনতন্ত্র সংবিধান-পরিপন্থী হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে সে তার নিবন্ধন হারিয়েছে। শরিয়া আইন জারি ও মুসলিম উম্মাহর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখার সাধারণ ইসলামি লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে বিশ্বাস করে জামায়াতে ইসলামী।
তারেক রহমানের সমর্থনপুষ্ট মধ্যপন্থী বিএনপি নেতারা ভারতের সাথে যোগাযোগ করেছেন। ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উৎসাহ দিয়েছেন তারেক। কয়েক দিনের মধ্যেই আদালত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় দিবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান উভয়কেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে। তা ঘটলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই ব্যাপক বিক্ষোভে ফেটে পড়বে। হাসিনা যদিও সামরিক বাহিনীর পরিচর্যায় খুবই যত্নবান, এর নেতৃত্ব বাছাই করেন যত্নের সাথে, কিন্তু তবুও সামরিক হস্তক্ষেপের বিপদ সবসময়ই ওঁত পেতে থাকে।
বিএনপির প্রবীণ নেতারা তারেককে অপছন্দ করেন, তারা নেতা হিসেবে খালেদাকেই অগ্রাধিকার দেবেন। বিএনপির মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা রয়েছে, এমন গুঞ্জনও রয়েছে যে ভাঙনের মাধ্যমে নতুন দলের আবির্ভাব ঘটতে পারে। সম্ভাব্য ভাঙনে আওয়ামী লীগের হাত আছে বলেও গুঞ্জন রয়েছে। বিএনপির নির্বাচনী প্লাটফর্মের মধ্যে রয়েছে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের দাবি। দলটি অভিযোগ করছে, আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন কমিশন ও বিচার বিভাগকে অবদমিত করে রেখেছে। ভোট জালিয়াতি ও কারচুপির উদ্বেগ প্রশমন করতে হাসিনা ২০১৩ সালে বিএনপির নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বিএনপি প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে জোর দিয়ে বলেছিল যে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে হাসিনাকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের হাতে সরকারের দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে।
এদিকে রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাসের মধ্যেই যুক্তফ্রন্ট নামে একটি নতুন গ্রুপের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। এর নেতৃত্বে রয়েছেন গণফোরামের ড. কামাল হোসেন ও সাবেক রাষ্ট্রপতি বি চৌধুরী। তারেক রহমানের সাথে মতবিরোধের পর বি চৌধুরী বিএনপি ত্যাগ করেন, রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরে তিনি রাজনৈতিক দল ‘বিকল্প ধারা’ গঠন করেন। ড. কামাল ছিলেন আওয়ামী লীগে, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনিও হাসিনার সাথে বিরোধে জড়িয়ে আওয়ামী লীগ ত্যাগ করেছিলেন। আরো কয়েকটি ছোট দলও যুক্তফ্রন্টে যোগ দিতে পারে। বিএনপি একে স্বাগত জানিয়েছে। তারা যে আসন্ন নির্বাচনের সময় একটি জোট গঠনের আশা করছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। প্রত্যাশা মতোই এই ফ্রন্ট নিয়ে বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য করেছেন হাসিনা।
বাংলাদেশ প্রায় ১৭ কোটি লোক নিয়ে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম দেশ এবং ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম প্রতিবেশী। পিপিপি’র বিবেচনায় ২৫০ বিলিয়ন ডলার জিডিপি নিয়ে দেশটি বৈশ্বিক জিডিপি র্যাংকিংয়ে ৩৪তম। বাংলাদেশ গত দশকে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের ঘনিষ্ঠতম ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-অর্থনৈতিক অংশীদারে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন সরকারের আমলে বদলে যাওয়া রাজনৈতিক ঘটনাবলী ও ধারার ফলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে। বিচক্ষণ নীতিগত সিদ্ধান্ত সফলভাবে দীর্ঘ দিন ধরে ঝুলে থাকা বিরোধগুলোর সমাধান করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি চুক্তি ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টিতে উৎসাগ যুগিয়েছিল। এ দুটি হচ্ছে সমুদ্র সীমা নির্ধারণ চুক্তি এবং স্থল সীমান্ত চুক্তি।
বাংলাদেশ ও ভারতে যথাক্রমে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ফলে বিএনপি’র হাসিনাকে ভারতের প্রতি অতিরিক্ত নতজানু দেখানোর সম্ভাবনা থাকায় ভারত ফ্যাক্টর হবে বিপুল। প্রধান সমালোচনা হবে, হাসিনা ভারতকে খুব বেশি ছাড় দিয়েছেন, কিন্তু বিনিময়ে পেয়েছেন অতি সামান্য। আসামের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) প্রকাশের ফলে ইস্যুটি ভারতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ফলে দীর্ঘ দিন ঝুলে থাকা অবৈধ অভিবাসী ইস্যুটি বাংলাদেশকে অব্যাহতভাবে উদ্বিগ্ন করবে। বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এনআরসি থেকে সৃষ্ট অনিবার্য প্রভাব থেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। নদীর পানিবণ্টন এখনো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেলেও তা কাটিয়ে ওঠা যাবে না এমন নয়।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক পূর্ণ বিকশিত পর্যায়ে উপনীত হয়েছে এবং পরিকাঠামোর আরো একীভূতকরণ, সীমান্ত বাণিজ্য কেন্দ্র আরো আধুনিকায়ন, মটরযান চুক্তি, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ভবিষ্যতে আরো জোরালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ঢাকায় যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন ভারত তার সাথে কাজ করবে। তাই বলে কোন হাসিনা-বিরোধীকে ভারত বিকল্প মনে করছে, এমনকিছু ভাবা হবে কষ্টকর কল্পনা। অবশ্য, হাসিনার স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা ও তার প্রতি ভারতের সমর্থন অনিবার্য মনে করাটা ভারতের স্বার্থের অনুকূল নয় – ভারতের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ক্রমেই এমন অনুভূতিও জোরালো হচ্ছে।
[লেখক: দিল্লিভিত্তিক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডিস্টিঙগুইশড ফেলো। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব, বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার ২০০৭-২০০৯ ও ডেপুটি হাই কমিশনার ১৯৯৯-২০০২। লেখাটি সাউথ এশিয়ান মনিটরে প্রকাশিত ]
No comments