ভাগ্য ফেরাবে ভুট্টা by রফিকুল ইসলাম
মাঠের পর মাঠ জমিতে সবুজ পাতার আড়ালে হাসছে হলুদ রঙের ভুট্টা। মাথায় লাল
ফুল ও গায়ে হলুদ বর্ণের এসব ভুট্টা দোল খাচ্ছে বাতাসে। অনেক চাষির জমিতে
ভুট্টা গাছে মোচা বাঁধতে শুরু করেছে। এতে চাষিরাও লাভের স্বপ্ন দেখছেন।
ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় এবার প্রথমবারের মতো ভুট্টা চাষ করেছেন চাষিরা।
উপজেলার মির্জানগর, চিথলিয়া ও বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের ৮ গ্রামে ৩৪ বিঘা জমিতে
ভুট্টা চাষ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সিরাজুল ইসলাম জানান, চাষিদের ভুট্টা চাষে আগ্রহী
করে তুলতে কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। এখানকার মাটি
ভুট্টা চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। প্রথমবারের মতো ভুট্টার চাষ হওয়ায় ‘ভাগ্য
ফেরার স্বপ্ন’ দেখছেন কৃষকরা।
তিনি
আরও বলেন, ‘কৃষি বিভাগের পরামর্শে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শেষদিকে উচ্চ
ফলনশীল ইয়েন জাতের ভুট্টার বীজ রোপণ করেন চাষিরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না
হলে মে মাসের শেষদিকে ক্ষেত থেকে ভুট্টা ঘরে তোলা যাবে। রোপণের মাত্র ৪
মাসের মধ্যেই ফসল ঘরে তোলা সম্ভব বলে কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’
বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের দক্ষিণ টেটেশ্বর গ্রামের ভুট্টাচাষী জালাল আহমেদ
বলেন, ‘ভুট্টা চাষে সেচ কম লাগে। খরচ কম ও স্বল্প সময়ে এ ফসল হয়ে থাকে বলে ৮
বিঘা জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছি। ফলনও ভালো হয়েছে।’
বাংলাদেশ মৃত্তিকা সম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এসআরডিআই) এক গবেষণায়
দেখা গেছে, মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদী বিধৌত পরশুরামের অধিকাংশ মাটি
বেলে-দোঁআশ প্রকৃতির, যা ভুট্টা-মাসকলাইসহ দানাদার ফসল চাষের জন্য বিশেষ
উপযোগী।
উপজেলা
উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা উত্তম মজুমদার জানান, চাষিদের ভুট্টা চাষে
উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সিরাজুল ইসলাম জানান, পানি সংকটের কারণে বোরো ফসল
অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভুট্টা চাষে পানির তেমন প্রয়োজন হয় না। বোরো
ফসলের বিকল্প হিসেবে এখানে ভুট্টা চাষের উজ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।
No comments