টানা বৃষ্টিতে পচে গেল সয়াবিন ক্ষেত
কয়েকদিনের
টানা বৃষ্টিতে লক্ষ্মীপুরে পাকা সয়াবিনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইতিমধ্যে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার সয়াবিন ক্ষেতে পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সোনার
ফসল ঘরে তুলতে না পারায় ঋণের টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ও হতাশ হয়ে পড়েছেন
সয়াবিন চাষিরা। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরো ক্ষতির পরিমাণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন
কৃষিবিভাগ জানা যায়, দেশের উৎপাদিত সয়াবিনের ৮০ ভাগ উৎপাদিত হয় এ জেলায়।
সয়াবিন চাষের সঙ্গে জড়িত রয়েছে প্রায় ৭০ হাজার কৃষক। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে
সপ্তাহ খানেক পর মাঠের সয়াবিন ঘরে তুলতে প্রস্তুতি নিচ্ছিল কৃষকরা। কিন্তু
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে লক্ষ্মীপুর-সদর, রামগতি, কমলনগর ও রায়পুর
উপজেলার চরাঞ্চলের পাকা সয়াবিন ক্ষেত পানিতে ডুবে পচন ধরেছে। সয়াবিন পচা
দুর্গন্ধে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে কিভাবে সামনের দিন
কাটবে সে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সয়াবিন চাষিরা। ইতিমধ্যে প্রায় ৬শ’ হেক্টর
সয়াবিন ক্ষেত পানিতে ডুবে পচে গেছে। যার বাজার মূল্যে প্রায় অর্ধ কোটি
টাকা। কিন্তু ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়ার আশঙ্কা করছেন জেলা কৃষি বিভাগ। কৃষি
সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে জেলায় সয়াবিনের
লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫০ হাজার ৫৭৫ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত
হয়েছে ৪১ হাজার ২৭০ হেক্টর। গত বছরের তুলনায় ৯ হাজার হেক্টর কম। উৎপাদন
লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার টন। যার বাজার মূল্য প্রায়
৭শ’ কোটি টাকা। তোরাবগঞ্জ বাজারের সয়াবিন ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন চৌধুরী,
মোসলেহ উদ্দিন, মোল্লারহাট বাজারের ব্যবসায়ী মনির হোসেন মোল্লাসহ কয়েকজন
চাষি জানান, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে পাকা সয়াবিন ক্ষেত পচে যাচ্ছে।
ফসল তুলতে পারছে না চাষিরা। সয়াবিনের পচা দুর্গন্ধে বাসাবাড়ি ও রাস্তা দিয়ে
চলাচল করা যাচ্ছে না। স্বপ্নের সয়াবিন ঘরে তুলতে না পারায় পরিবার পরিজন
নিয়ে কিভাবে দিন কাটবে সে দুঃচিন্তায় আছে সয়াবিন চাষিরা। ঋণের টাকা নিয়ে
দুঃচিন্তায় ও হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা। গত বছরের টানা বৃষ্টির কারণেও লোকসানের
মুখে পড়তে হয়েছে চাষিদের। তাদের অভিযোগ, খাল বিল সংস্কার না করায় বৃষ্টির
পানি জমে তাদের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। গত তিন বছরের টানা লোকসানে আগামীতে
ফসল ছেড়ে দেয়ার কথাও বলেন অনেকে। লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের
উপ-পরিচালক বেলাল হোসেন খাঁন জানান, টানা বৃষ্টির কারণে ইতিমধ্যে প্রায় ৩৮
কোটি টাকার সয়াবিন নষ্ট হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে হিসেব করা হচ্ছে। এভাবে
বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরো ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষি
বিভাগ। তবে, ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের নানান পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে
জানালেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা।
No comments