পুরুষেরা তাদের কন্যা সন্তানকে ধর্ষণ করছে, খুন করছে by তসলিমা নাসরিন
বাবা
মেয়েকে ধর্ষণ করছে, মেয়ের পেটে বাবার বাচ্চা, আবার বাবার বাচ্চা জন্ম
দিচ্ছে মেয়ে। যখন একটি কন্যা-সন্তানের কথা ভাবি, তার সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা
তার বাবা মা। বাবা তার মেয়েকে নিরাপত্তা দেবে, মেয়ে সেরকমই জানে। পরিবার,
সমাজ সে রকমই জানে। কিন্তু বাস্তবটা বড় কুৎসিত, বড় ভয়ংকর। বাস্তবে এগারো
বারো বছর বয়সী কন্যাকে তো বটেই, তিন চার বছর বয়সী কন্যাকেও রেহাই দেয় না
বাবা। নিম্নবিত্তের এইসব খবর আমরা পেয়ে যাই। কিন্তু ধনী ধর্ষক পিতার খুব
কম কীর্তিকলাপই বাইরে প্রকাশ পায়।
ধর্ষক-স্বামীদের খবরও আমাদের কাছে আসে না। যে সমাজের পুরুষেরা মেয়েদের কী করে ‘সম্পূর্ণ মানুষ’ হিসেবে দেখতে হয়, সেটা জানে না, তারা আবার কোনও মেয়ের সঙ্গে ভালোবেসে যৌন সম্পর্ক কী করে করতে হয় জানবে কী করে! যৌনতার সঙ্গে সম্পর্ক থাকা উচিত প্রেম ভালোবাসার, সেখানে আমাদের সমাজে যৌনতার সঙ্গে সম্পর্ক গায়ের জোরের। মেয়েদের ওপর পুরুষের এই গায়ের জোর খাটানোকে সমাজ এক রকম মেনেই নিয়েছে।
পুরুষই দেখায় এই গায়ের জোর, কারণ মেয়েদের চেয়ে গায়ের জোর সাধারণত পুরুষের বেশি, অনেক সময় পুরুষের চেয়ে গায়ের জোর, বুদ্ধির জোর মেয়েদের বেশি হলেও, পুরুষেরা ‘সম্পর্কের জোর’ দেখায়। সম্পর্কের জোরেই মেয়েদের দাবিয়ে রাখে তারা। স্বামীর জোর, ভাইয়ের জোর, বাবার জোর, মামার জোর, কাকার জোর, প্রেমিকের জোর। তারা ভেবেই নিয়েছে মেয়েদের ওপর যা কিছু করার অধিকার তাদের আছে।
জরিপে বার বার দেখা যাচ্ছে, মেয়েদের ধর্ষণ, অপমান, মারধোর ইত্যাদি পরিবারের লোক, বা কাছের পুরুষই করে। অথচ কাছের পুরুষদের মেয়েরা সবচেয়ে বেশি আপন ভাবে, তারা কাছে থাকলেই সবচেয়ে বেশি নিরাপদ বোধ করে মেয়েরা, তাদের সান্নিধ্যেই সবচেয়ে বেশি নিশ্চিন্ত তারা। পৃথিবীতে মেয়েরা যারা এ যাবৎ ধর্ষণের শিকার হয়েছে, তাদের ধর্ষকদের লিস্টে ধর্ষিতার বাবা,ভাই, মামা, কাকা, প্রেমিক, স্বামী, শ্বশুর, ভাসুর, দেবর, প্রতিবেশি, বন্ধু, শিক্ষক আছে। অপরিচিত, অচেনা লোক যত আছে, তারও চেয়ে বেশি। কী ভয়ঙ্কর রোমহর্ষক এইসব তথ্য।
মেয়েদের সত্যি বলতে কী, কোথাও কোনও নিরাপত্তা নেই। ধর্মীয় আইন তাকে নিরাপত্তা দেয় না অর্থাৎ রাষ্ট্র তাকে নিরাপত্তা দেয় না, বিদ্যালয় দেয় না, রাস্তাঘাট দেয় না অর্থাৎ সমাজ তাকে নিরাপত্তা দেয় না, ঘর তাকে নিরাপত্তা দেয় না অর্থাৎ পরিবার তাকে নিরাপত্তা দেয় না। কোথায় যাবে একটা মেয়ে? নিজের শরীর নিয়ে তাকে সর্বদা লজ্জা এবং ভয় নিয়ে বাঁচতে হয়। যে কোনও সময়, যে কোনও জায়গায় ঘরে অথবা বাইরে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে যে কেউ। প্রতিনিয়ত এই আশঙ্কা একটি মেয়েকে বহন করতে হয়। সব পুরুষের যৌনদাসি সে। এমনকী আপন বাবাও তাকে তার যৌনদাসি হিসেবে ভোগ করতে পারে।
বাংলাদেশের অধিকাংশ পুরুষ মেয়েদের যৌনদাসিই মনে করে। শৈশব থেকে তাদের এই ধারণা দিয়েই বড় করা হয়েছে মেয়েরা পুরুষের চেয়ে বুদ্ধিতে কম, বিদ্যায় কম, শক্তিতে কম, শৌর্যে কম, তাদের কাজ শারীরিক অর্থনৈতিক সামাজিক নিরাপত্তার জন্য পুরুষের কাছে নিজেকে সমর্পণ করা, পুরুষের সেবা করা, পুরুষের যৌনক্ষুধা মেটানো, আর পুরুষের সন্তান প্রসব করা, আর সেই সন্তানদের লালন পালন করা। নারী নামের এই ইতর শ্রেণির প্রাণীকে প্রাণী হিসেবে শ্রদ্ধা করার, বা মানুষ হিসেবে সম্মান করার কোনও কারণ তারা দেখে না। সে কারণে ধর্ষণ ঘটায়।
সে কারণে মেয়েদের কাপড় চোপড় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, সে কারণে বোরখা হিজাবের ব্যবহার বাড়ে। মেয়েরা কোনও না কোনও পুরুষের সম্পত্তি। সেই পুরুষ চায় না তার সম্পত্তির ওপর লোভ করুক অন্য কোনও পুরুষ, সে কারণেই মেয়েদের হিজাব বোরখা দিয়ে ঢেকে রাখতে হয় নিজের শরীর। শরীরটাই মেয়েদের মূলধন। শরীরটা স্বামীর ভোগের জন্য, সুতরাং একে অক্ষত রাখতে চায় স্বামীরা। তাহলে সেই বৃদ্ধাকেও কেন শরীর ঢেকে রাখতে হয়, যার মালিক নেই, মরে গেছে? সেই মালিকের সম্মানেই ঢেকে রাখতে হয়। স্বামী মৃত হলেও স্বামী। স্ত্রী সতীত্ব বজায় রাখলে স্বামীর পূণ্য হবে। সুতরাং যা কিছু মেয়েরা করে, সবই স্বামীর আরামের জন্য, সুখের জন্য, ভোগের জন্য, মঙ্গলের জন্য।
আসলে আমাদের সংস্কৃতিটাই ধর্ষণের। ধর্ষণের বলেই রাস্তাঘাটে, অলিতে গলিতে, পাহাড়ে সমুদ্রে, বাসে- ট্রেনে-নৌকোয়, ভিড়ে নির্জনে, রাতে অন্ধকারে একা মেয়েদের দেখা মেলে না, কারণ মেয়েরা একা যায় না ওসব জায়গায়, যায় না ধর্ষণের ভয়ে। কোনও অচেনা পুরুষকে ঘরে ঢুকতে দেয় না ধর্ষণের ভয়ে। কোনও পুরুষের ঘরে একলা ঢোকে না ধর্ষণের ভয়ে। ছাত্রীনিবাসগুলোকে ছাত্রাবাস থেকে আলাদা করা হয় ধর্ষণের ভয়ে। কিছুটা বড় হওয়ার পর পরিবারের পুরুষ থেকে সরিয়ে আলাদা বিছানায় মেয়েদের ঘুমোতে দেওয়া হয়, ধর্ষণের ভয়। এই ধর্ষণের ভয় একটু একটু করে একটি মেয়ে যখন বড় হতে থাকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় তার সমস্ত অস্তিত্বে। স্বাভাবিক জামা কাপড়ের ওপর বাড়তি কাপড়– ওড়না, হিজাব, বোরখা ইত্যাদি পরতে হয় ধর্ষণের ভয়ে। ধর্ষণের ভয়েই যে মেয়েদের চাল চলন পুরুষের চেয়ে ভিন্ন, তা, ধর্ষণ যদি সংস্কৃতির অংশ না হত, চোখে পড়তো। সংস্কৃতির অংশ বলেই ধর্ষণের হাত থেকে শরীরকে বাঁচানোর জন্য মেয়েরা যা যা পদক্ষেপ করে, তা স্বাভাবিক বলেই মনে হয় সবার কাছে।
ধর্ষণ কখনও মেয়েদের সমস্যার কারণে ঘটে না। ঘটে পুরুষের সমস্যার কারণে। আজ পর্যন্ত পুরুষেরা এটি বন্ধ করতে পারেনি। অবশ্য বন্ধ করতে চাইলে করতে পারতো।
বাবুল মিয়া নামের একটি বিবাহিত দু’ সন্তানের জনক হবিগঞ্জের কিশোরী বিউটিকে অপহরণ করে দু’ সপ্তাহ ধর্ষণ করেছে। এতে নাকি বিউটি ‘নষ্ট’ হয়ে গেছে, যেহেতু নষ্ট মেয়েকে কেউ বিয়ে করে না, তাই নিজের বাবা তাকে কুপিয়ে মেরে ফেলেছে । আমরা কিন্তু বিউটির ধর্ষক বাবুল মিয়া আর বিউটির বাবা সায়েদ আলীরই প্রজাতি। এই অতীব কদাকার এবং ভয়ঙ্কর মানুষ প্রজাতি নিয়ে আমরা কত কাব্য রচনা করি। আমাদের আদিখ্যেতার শেষ নেই। মানুষের যত মঙ্গলই কামনা করি না কেন, মানুষ মূলত এমন, এমন ভয়ঙ্কর। এই প্রজাতির পুরুষেরা যতটা নারীবিরোধী, জগতে আর কোনও প্রজাতি নেই যে প্রজাতির পুংলিঙ্গ স্ত্রী লিঙ্গকে এভাবে নৃশংস ভাবে ধর্ষণ করে করে হত্যা করে।
আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা মনুষ্য সমাজে মেয়ে হয়ে জন্মেছি। এর চেয়ে মানবেতর জন্ম বোধ হয় আর কোথাও নেই।
লেখক: কবি, সাহিত্যিক, মুক্তচিন্তক, নারীবাদী, মানববাদী, ডাক্তার
ধর্ষক-স্বামীদের খবরও আমাদের কাছে আসে না। যে সমাজের পুরুষেরা মেয়েদের কী করে ‘সম্পূর্ণ মানুষ’ হিসেবে দেখতে হয়, সেটা জানে না, তারা আবার কোনও মেয়ের সঙ্গে ভালোবেসে যৌন সম্পর্ক কী করে করতে হয় জানবে কী করে! যৌনতার সঙ্গে সম্পর্ক থাকা উচিত প্রেম ভালোবাসার, সেখানে আমাদের সমাজে যৌনতার সঙ্গে সম্পর্ক গায়ের জোরের। মেয়েদের ওপর পুরুষের এই গায়ের জোর খাটানোকে সমাজ এক রকম মেনেই নিয়েছে।
পুরুষই দেখায় এই গায়ের জোর, কারণ মেয়েদের চেয়ে গায়ের জোর সাধারণত পুরুষের বেশি, অনেক সময় পুরুষের চেয়ে গায়ের জোর, বুদ্ধির জোর মেয়েদের বেশি হলেও, পুরুষেরা ‘সম্পর্কের জোর’ দেখায়। সম্পর্কের জোরেই মেয়েদের দাবিয়ে রাখে তারা। স্বামীর জোর, ভাইয়ের জোর, বাবার জোর, মামার জোর, কাকার জোর, প্রেমিকের জোর। তারা ভেবেই নিয়েছে মেয়েদের ওপর যা কিছু করার অধিকার তাদের আছে।
জরিপে বার বার দেখা যাচ্ছে, মেয়েদের ধর্ষণ, অপমান, মারধোর ইত্যাদি পরিবারের লোক, বা কাছের পুরুষই করে। অথচ কাছের পুরুষদের মেয়েরা সবচেয়ে বেশি আপন ভাবে, তারা কাছে থাকলেই সবচেয়ে বেশি নিরাপদ বোধ করে মেয়েরা, তাদের সান্নিধ্যেই সবচেয়ে বেশি নিশ্চিন্ত তারা। পৃথিবীতে মেয়েরা যারা এ যাবৎ ধর্ষণের শিকার হয়েছে, তাদের ধর্ষকদের লিস্টে ধর্ষিতার বাবা,ভাই, মামা, কাকা, প্রেমিক, স্বামী, শ্বশুর, ভাসুর, দেবর, প্রতিবেশি, বন্ধু, শিক্ষক আছে। অপরিচিত, অচেনা লোক যত আছে, তারও চেয়ে বেশি। কী ভয়ঙ্কর রোমহর্ষক এইসব তথ্য।
মেয়েদের সত্যি বলতে কী, কোথাও কোনও নিরাপত্তা নেই। ধর্মীয় আইন তাকে নিরাপত্তা দেয় না অর্থাৎ রাষ্ট্র তাকে নিরাপত্তা দেয় না, বিদ্যালয় দেয় না, রাস্তাঘাট দেয় না অর্থাৎ সমাজ তাকে নিরাপত্তা দেয় না, ঘর তাকে নিরাপত্তা দেয় না অর্থাৎ পরিবার তাকে নিরাপত্তা দেয় না। কোথায় যাবে একটা মেয়ে? নিজের শরীর নিয়ে তাকে সর্বদা লজ্জা এবং ভয় নিয়ে বাঁচতে হয়। যে কোনও সময়, যে কোনও জায়গায় ঘরে অথবা বাইরে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে যে কেউ। প্রতিনিয়ত এই আশঙ্কা একটি মেয়েকে বহন করতে হয়। সব পুরুষের যৌনদাসি সে। এমনকী আপন বাবাও তাকে তার যৌনদাসি হিসেবে ভোগ করতে পারে।
বাংলাদেশের অধিকাংশ পুরুষ মেয়েদের যৌনদাসিই মনে করে। শৈশব থেকে তাদের এই ধারণা দিয়েই বড় করা হয়েছে মেয়েরা পুরুষের চেয়ে বুদ্ধিতে কম, বিদ্যায় কম, শক্তিতে কম, শৌর্যে কম, তাদের কাজ শারীরিক অর্থনৈতিক সামাজিক নিরাপত্তার জন্য পুরুষের কাছে নিজেকে সমর্পণ করা, পুরুষের সেবা করা, পুরুষের যৌনক্ষুধা মেটানো, আর পুরুষের সন্তান প্রসব করা, আর সেই সন্তানদের লালন পালন করা। নারী নামের এই ইতর শ্রেণির প্রাণীকে প্রাণী হিসেবে শ্রদ্ধা করার, বা মানুষ হিসেবে সম্মান করার কোনও কারণ তারা দেখে না। সে কারণে ধর্ষণ ঘটায়।
সে কারণে মেয়েদের কাপড় চোপড় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, সে কারণে বোরখা হিজাবের ব্যবহার বাড়ে। মেয়েরা কোনও না কোনও পুরুষের সম্পত্তি। সেই পুরুষ চায় না তার সম্পত্তির ওপর লোভ করুক অন্য কোনও পুরুষ, সে কারণেই মেয়েদের হিজাব বোরখা দিয়ে ঢেকে রাখতে হয় নিজের শরীর। শরীরটাই মেয়েদের মূলধন। শরীরটা স্বামীর ভোগের জন্য, সুতরাং একে অক্ষত রাখতে চায় স্বামীরা। তাহলে সেই বৃদ্ধাকেও কেন শরীর ঢেকে রাখতে হয়, যার মালিক নেই, মরে গেছে? সেই মালিকের সম্মানেই ঢেকে রাখতে হয়। স্বামী মৃত হলেও স্বামী। স্ত্রী সতীত্ব বজায় রাখলে স্বামীর পূণ্য হবে। সুতরাং যা কিছু মেয়েরা করে, সবই স্বামীর আরামের জন্য, সুখের জন্য, ভোগের জন্য, মঙ্গলের জন্য।
আসলে আমাদের সংস্কৃতিটাই ধর্ষণের। ধর্ষণের বলেই রাস্তাঘাটে, অলিতে গলিতে, পাহাড়ে সমুদ্রে, বাসে- ট্রেনে-নৌকোয়, ভিড়ে নির্জনে, রাতে অন্ধকারে একা মেয়েদের দেখা মেলে না, কারণ মেয়েরা একা যায় না ওসব জায়গায়, যায় না ধর্ষণের ভয়ে। কোনও অচেনা পুরুষকে ঘরে ঢুকতে দেয় না ধর্ষণের ভয়ে। কোনও পুরুষের ঘরে একলা ঢোকে না ধর্ষণের ভয়ে। ছাত্রীনিবাসগুলোকে ছাত্রাবাস থেকে আলাদা করা হয় ধর্ষণের ভয়ে। কিছুটা বড় হওয়ার পর পরিবারের পুরুষ থেকে সরিয়ে আলাদা বিছানায় মেয়েদের ঘুমোতে দেওয়া হয়, ধর্ষণের ভয়। এই ধর্ষণের ভয় একটু একটু করে একটি মেয়ে যখন বড় হতে থাকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় তার সমস্ত অস্তিত্বে। স্বাভাবিক জামা কাপড়ের ওপর বাড়তি কাপড়– ওড়না, হিজাব, বোরখা ইত্যাদি পরতে হয় ধর্ষণের ভয়ে। ধর্ষণের ভয়েই যে মেয়েদের চাল চলন পুরুষের চেয়ে ভিন্ন, তা, ধর্ষণ যদি সংস্কৃতির অংশ না হত, চোখে পড়তো। সংস্কৃতির অংশ বলেই ধর্ষণের হাত থেকে শরীরকে বাঁচানোর জন্য মেয়েরা যা যা পদক্ষেপ করে, তা স্বাভাবিক বলেই মনে হয় সবার কাছে।
ধর্ষণ কখনও মেয়েদের সমস্যার কারণে ঘটে না। ঘটে পুরুষের সমস্যার কারণে। আজ পর্যন্ত পুরুষেরা এটি বন্ধ করতে পারেনি। অবশ্য বন্ধ করতে চাইলে করতে পারতো।
বাবুল মিয়া নামের একটি বিবাহিত দু’ সন্তানের জনক হবিগঞ্জের কিশোরী বিউটিকে অপহরণ করে দু’ সপ্তাহ ধর্ষণ করেছে। এতে নাকি বিউটি ‘নষ্ট’ হয়ে গেছে, যেহেতু নষ্ট মেয়েকে কেউ বিয়ে করে না, তাই নিজের বাবা তাকে কুপিয়ে মেরে ফেলেছে । আমরা কিন্তু বিউটির ধর্ষক বাবুল মিয়া আর বিউটির বাবা সায়েদ আলীরই প্রজাতি। এই অতীব কদাকার এবং ভয়ঙ্কর মানুষ প্রজাতি নিয়ে আমরা কত কাব্য রচনা করি। আমাদের আদিখ্যেতার শেষ নেই। মানুষের যত মঙ্গলই কামনা করি না কেন, মানুষ মূলত এমন, এমন ভয়ঙ্কর। এই প্রজাতির পুরুষেরা যতটা নারীবিরোধী, জগতে আর কোনও প্রজাতি নেই যে প্রজাতির পুংলিঙ্গ স্ত্রী লিঙ্গকে এভাবে নৃশংস ভাবে ধর্ষণ করে করে হত্যা করে।
আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা মনুষ্য সমাজে মেয়ে হয়ে জন্মেছি। এর চেয়ে মানবেতর জন্ম বোধ হয় আর কোথাও নেই।
লেখক: কবি, সাহিত্যিক, মুক্তচিন্তক, নারীবাদী, মানববাদী, ডাক্তার
No comments