হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ: আইসিডিডিআর,বি’তে তিন বছরের রেকর্ড ছাড়িয়েছে by ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
আইসিডিডিআর,বি
হাসপাতালের সিটে ৯ বছরের শিশু আবু বকর সিদ্দিকের পাশে গালে হাত দিয়ে বসে
আছেন মা রুবিনা বেগম। শিশুটি সাত-আট ঘণ্টা পাতলা পায়খানা করতে করতে চোখ-মুখ
ছোট হয়ে এসেছে। একপর্যায়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি খারাপ দেখে গতকাল
দুপুরের দিকে কেরানীগঞ্জ কদমতলী থেকে দ্রুত আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে চলে
আসেন তার স্বজনরা। হাসপাতালে ভর্তির পর দেয়া হয় স্যালাইন। এতে শিশুটির
শারীরিক অবস্থা ধীরে ধীরে একটু উন্নত হচ্ছিল বলে তার মা জানিয়েছেন। আরেক
রোগী মিয়া চাঁন বেপারি। বয়স ৫০। শরীয়তপুর থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে একই
হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শুধু শিশু আবু বকর বা বয়স্ক চাঁন বেপারী নন,
ডায়রিয়া রোগীর আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত আন্তর্জাতিক
উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র’ বাংলাদেশে (আইসিডিডিআর’বি) প্রতিদিনই শত শত রোগী
আসছে। অন্যান্য হাসপাতালেও ভিড় বাড়ছে। এতে হিমশিম খাচ্ছেন আইসিডিডিআর’বি
কর্তৃপক্ষ। প্রতি ঘণ্টায় আসছে ৩১ জন রোগী। হাসপাতালটির তথ্য মতে, গতকাল
বিকাল ৪টা পর্যন্ত (১৬ ঘণ্টায়) ভর্তি হয়েছে ৪৯৭ জন রোগী। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ
রোগী বয়স্ক এবং ৩০ শতাংশ শিশু। হাসপাতালের তথ্য মতে, ৭ই এপ্রিল ভর্তি
হয়েছে ৭৩৫ জন, ৬ই এপ্রিল ৭৮৮ জন, ৫ই এপ্রিল ৬৬২ জন, ৪ঠা এপ্রিল ৬৪২ জন, ৩রা
এপ্রিল ৭৫২ জন এবং ২রা এপ্রিল ৬২৯ ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী আইসিডিডিআর‘বিতে
ভর্তি হয়। হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিন রোগী বাড়ছেই।
গড়ে দৈনিক যে রোগী আসছে, তা গত তিন বছরের মধ্যে দেখা যায়নি। বেশি রোগী আসছে
যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, দক্ষিণ খান, বাড্ডা, রামপুরা, লালবাগ, মিরপুর,
মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে। সেসব এলাকায় ওয়াসার সুয়ারেজের নির্মাণ কাজ হচ্ছে;
ওইসব এলাকা থেকে বেশি রোগী আসছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্য মতে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়া রোগীর আক্রান্তের সংখ্যা ৯৮০ জন। আর সাত দিনের ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ৩৭৬২ জন। এর আগের সপ্তাহে এই সংখ্যা ছিল ২৯৮৭ জন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওয়াসার সুয়ারেজের কাজের কারণে পাইপ দিয়ে অপরিষ্কার পানি ঢুকে। ফলে দূষিত পানি খেয়ে ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। তাছাড়া বেড়েছে গরমের তীব্রতা। আর এ গরমের সঙ্গে বাড়ছে রাজধানীতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আইসিডিডিআর’বির তথ্যানুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে প্রতিদিন গড়ে ৪শ’ থেকে সোয়া ৪শ’ ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। তবে মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে এ সংখ্যা ছাড়িয়েছে। মার্চের শুরুতে আক্রান্ত শিশু রোগী বেশি ছিল এবং সবাই ভাইরাল ডায়রিয়াতে আক্রান্ত। ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ। বর্তমানে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময় বিশুদ্ধ পানির অভাবে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে। তারা আরও বলেন, তীব্র গরমে ঘন ঘন পিপাসা পাওয়ায় রাস্তাঘাটে আইসক্রিম বা বিভিন্ন ধরনের শরবত পান করা হয়। এসব খাদ্যে যে খাবার পানি বা বরফ ব্যবহৃত হয় তা বিশুদ্ধ না হলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ছাড়া বেশি গরমে বিভিন্ন ধরনের নষ্ট খাবার খেলেও ডায়রিয়া হয়। প্রতি বছর মার্চ থেকে মে মাসে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. আয়েশা আকতার মানবজমিনকে জানান, বিভিন্ন জায়গায় ওয়াসার সুয়ারেজের কাজের কারণে পাইপ দিয়ে দূষিত পানি ঢোকার কারণে ওইসব এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এটি পানিবাহিত রোগ। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাস পর্যন্ত ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। তারপর কমে আসে। তিনি আরো বলেন, আমাদের বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। রাস্তার খাবার ও পানির শরবত গ্রহণের ক্ষেত্রে অধিক সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। চিকিৎসকরা জানান, মূলত বিশুদ্ধ পানির অভাব বা ভালোভাবে হাত না ধৌত করে খাবার গ্রহণই ডায়রিয়ার মূল কারণ। ডায়রিয়া থেকে মুক্ত থাকতে বিশুদ্ধ পানি পান ও সবাইকে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করে খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন তারা। একই সঙ্গে কেউ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে স্যালাইন খাওয়ান। বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান। এই বিষয়ে ডায়রিয়ার আইসিডিডিআর’বির বিশেষজ্ঞ এবং সংস্থাটির হাসপাতালের প্রধান ডা. আজহারুল ইসলাম খান মানবজমিনকে বলেন, রাজধানীতে ডায়রিয়া বেশি। ঢাকার বাইরে কম। এটি পানিবাহিত রোগ। মূলত পানিবাহিত জীবাণু থেকেই ডায়রিয়া ও কলেরা দেখা দেয়। রাস্তার খোঁড়াখুঁড়িতে কোথায় পাইপ দিয়ে দূষিত পানি ঢুকে যেতে পারে। আর এটা থেকে ওইসব এলাকায় এই রোগ হলেও হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেখার পরামর্শ দেন তিনি। নিরাপদ ও জীবাণুমুক্ত পানি পানের ব্যাপারে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। একই সঙ্গে রাস্তা-ঘাটে পানি শরবত ও খাবার খাওয়ার গ্রহণের আগে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্য মতে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়া রোগীর আক্রান্তের সংখ্যা ৯৮০ জন। আর সাত দিনের ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ৩৭৬২ জন। এর আগের সপ্তাহে এই সংখ্যা ছিল ২৯৮৭ জন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওয়াসার সুয়ারেজের কাজের কারণে পাইপ দিয়ে অপরিষ্কার পানি ঢুকে। ফলে দূষিত পানি খেয়ে ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। তাছাড়া বেড়েছে গরমের তীব্রতা। আর এ গরমের সঙ্গে বাড়ছে রাজধানীতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আইসিডিডিআর’বির তথ্যানুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে প্রতিদিন গড়ে ৪শ’ থেকে সোয়া ৪শ’ ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। তবে মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে এ সংখ্যা ছাড়িয়েছে। মার্চের শুরুতে আক্রান্ত শিশু রোগী বেশি ছিল এবং সবাই ভাইরাল ডায়রিয়াতে আক্রান্ত। ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ। বর্তমানে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময় বিশুদ্ধ পানির অভাবে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে। তারা আরও বলেন, তীব্র গরমে ঘন ঘন পিপাসা পাওয়ায় রাস্তাঘাটে আইসক্রিম বা বিভিন্ন ধরনের শরবত পান করা হয়। এসব খাদ্যে যে খাবার পানি বা বরফ ব্যবহৃত হয় তা বিশুদ্ধ না হলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ছাড়া বেশি গরমে বিভিন্ন ধরনের নষ্ট খাবার খেলেও ডায়রিয়া হয়। প্রতি বছর মার্চ থেকে মে মাসে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. আয়েশা আকতার মানবজমিনকে জানান, বিভিন্ন জায়গায় ওয়াসার সুয়ারেজের কাজের কারণে পাইপ দিয়ে দূষিত পানি ঢোকার কারণে ওইসব এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এটি পানিবাহিত রোগ। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাস পর্যন্ত ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। তারপর কমে আসে। তিনি আরো বলেন, আমাদের বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। রাস্তার খাবার ও পানির শরবত গ্রহণের ক্ষেত্রে অধিক সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। চিকিৎসকরা জানান, মূলত বিশুদ্ধ পানির অভাব বা ভালোভাবে হাত না ধৌত করে খাবার গ্রহণই ডায়রিয়ার মূল কারণ। ডায়রিয়া থেকে মুক্ত থাকতে বিশুদ্ধ পানি পান ও সবাইকে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করে খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন তারা। একই সঙ্গে কেউ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে স্যালাইন খাওয়ান। বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান। এই বিষয়ে ডায়রিয়ার আইসিডিডিআর’বির বিশেষজ্ঞ এবং সংস্থাটির হাসপাতালের প্রধান ডা. আজহারুল ইসলাম খান মানবজমিনকে বলেন, রাজধানীতে ডায়রিয়া বেশি। ঢাকার বাইরে কম। এটি পানিবাহিত রোগ। মূলত পানিবাহিত জীবাণু থেকেই ডায়রিয়া ও কলেরা দেখা দেয়। রাস্তার খোঁড়াখুঁড়িতে কোথায় পাইপ দিয়ে দূষিত পানি ঢুকে যেতে পারে। আর এটা থেকে ওইসব এলাকায় এই রোগ হলেও হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেখার পরামর্শ দেন তিনি। নিরাপদ ও জীবাণুমুক্ত পানি পানের ব্যাপারে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। একই সঙ্গে রাস্তা-ঘাটে পানি শরবত ও খাবার খাওয়ার গ্রহণের আগে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
No comments