কোটা সংস্কারের দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভ: শাহবাগে পুলিশি অ্যাকশন, টিয়ার শেল, জলকামান
কোটা
সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও
সংঘর্ষের ঘটনায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রাজধানীর শাহবাগ ও আশেপাশের এলাকা।
পূর্বনির্ধারিত পদযাত্রা কর্মসূচি শেষে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী শাহবাগে সড়ক
অবরোধ করে অবস্থান নিলে তাদের সরানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কয়েক দফা চেষ্টার
পর লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও ফাঁকা গুলি ছুড়লে শিক্ষার্থীরাও পাল্টা
ইটপাটকেল ছুড়ে। প্রথম দফায় শিক্ষার্থীদের শাহবাগ মোড় থেকে সরিয়ে দেয়ার পর
টিএসসিতে তারা আবার সংগঠিত হয়ে শাহবাগে যাওয়ার চেষ্টা করলে আবার সংঘর্ষ
বাধে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের ছোড়া
রাবার বুলেটে এক শিক্ষার্থী চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন
আন্দোলনকারীরা।
এদিকে একই দাবিতে ঢাকার বাইরে ময়মনসিংহ, বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়।
সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে সারাদেশে সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে এ পদযাত্রা পালিত হয়। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুরে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশে জড়ো হন। পরে টিএসসি, ভিসি চত্বর, শহীদমিনার, পলাশী, নীলক্ষেত, কাঁটাবন হয়ে পদযাত্রা শাহবাগ মোড়ে এসে সড়ক অবরোধ করেন। বেলা তিনটা থেকে টানা সাড়ে চার ঘণ্টা সড়ক আটকে রাখায় আশপাশের রাস্তায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ আন্দোলনকারীদের তুলে দিতে কয়েক দফা চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। বঙ্গবন্ধুর ছবি হাতে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান লেখা ফেস্টুন হাতে শিক্ষার্থী কোটা সংস্কারের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিকালে রায়ট কার ও জলকামান নিয়ে শিক্ষার্থীদের তুলে দেয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। তখন শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর ছবি বুকে নিয়ে রায়টকারের সামনে শুয়ে পড়েন। এতে পুলিশ পিছু হটে। সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা জাতীয় সংসদ থেকে কোটা সংস্কারের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। রাত পৌনে আটটার দিকে প্রস্তুতি নিয়ে পুলিশ অ্যাকশনে নামে। ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল ছুড়ে পুলিশ সামনে এগোলে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর চারুকলা ও টিএসসি এলাকায় সংগঠিত হয়ে তারা আবার শাহবাগের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ আবার টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এসময় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। সংঘর্ষে দুজন পুলিশ সদস্য ও একজন সাংবাদিক আহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় আন্দোলনকারীরা ভাঙচুর করেছেন শাহবাগের পুলিশবক্স। এর আগে পুলিশ তাদের রাস্তা ছেড়ে দেয়ার জন্য বেশ কয়েকবার অনুরোধ করেন। আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক হাসান আল মামুন মানবজমিনকে বলেন, ‘পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নির্বিচারে হামলা করেছে। পুলিশের টিয়ারশেল, ফাঁকা গুলিতে আমাদের শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে ৫ জনকে। আমরা এ হামলার নিন্দা জানাই।’ তিনি বলেন, ‘পুলিশ শুধু আমাদের ওপর হামলা করে ক্ষান্ত হয়নি। বঙ্গবন্ধুর ছবিকেও অবমাননা করেছে।’ রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে অবস্থানে ছিল।
এদিকে পুলিশের লাঠিচার্জের পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দিকে যাওয়ার সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। রাত সোয়া ৮টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ হামলা হয়। এতে আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন ছাত্রলীগকর্মী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালান। এতে অংশ নেন কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়, প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবুসহ বিভিন্ন হলের পদধারী নেতারা। এসময় তারা সেখান থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে চান। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা প্রতিরোধ করতে চাইলে ছাত্রলীগ কর্মীরা সেখান থেকে চলে যান। এসময় দায়িত্বপালনরত অবস্থায় এক সাংবাদিকের মোবাইলও ভাঙচুর করে ছাত্রলীগ।
এর আগে কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে দুপুর দেড়টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন। এসময় তারা ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই,’ ‘আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মেনে নাও,’ ‘কোটা দিয়ে কামলা নয়, মেধা দিয়ে আমলা চাই,’ ‘১০% এর বেশি কোটা নয়’সহ বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন। মিছিলে মিছিলে মুখরিত হয়ে ওঠে আশপাশের এলাকা। দুপুর আড়াইটায় আন্দোলনকারী ছাত্ররা পদযাত্রা শুরু করেন। পদযাত্রাটি টিএসসি, ভিসি চত্বর, কেন্দ্রীয় শহীদমিনার, পলাশী, নীলক্ষেত, কাঁটাবন হয়ে শাহবাগে মোড়ে এসে অবস্থান নেয়।
শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি কাজে নিয়োজিত যান ছেড়ে দেয়া হয়। এসময় আন্দোলনকারীরা চলমান সংসদ অধিবেশন থেকে কোটা সংস্কারের আশ্বাস চান। আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘সংসদ অধিবেশন থেকে কোটা সংস্কারের সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দিতে হবে, তাহলে আমরা রাস্তা ছাড়বো। নতুবা ছাত্র-জনতার এ বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে হলে কোটার সংস্কার করতে হবে। আর আমাদের এই দাবি যৌক্তিক। আমরা চাই সরকার আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেবে। সেজন্য আমরা অহিংস এ আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি।’
বিকাল ৪টার দিকে পুলিশ শাহবাগ থানা থেকে একটি সাঁজোয়া যান ও একটি জলকামান বের করতে চাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এর সামনে শুয়ে পড়েন। পরে পুলিশ বাধ্য হয়ে পুনরায় সেগুলো সরিয়ে নেয়। এরপর আন্দোলনকারীরা ‘সহিংসতা নয়, অহিংস আন্দোলন করতে চাই’- বলে আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের গোলাপ ফুল দিতে চান। কিন্তু পুলিশ সদস্যরা সেগুলো গ্রহণ না করে উল্টো তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে পুলিশ নিজেরাই কিছুটা সরে দাঁড়ায়। এদিকে বিকাল ৫টা থেকে আন্দোলনকারীরা দেশাত্মবোধক গানে গানে কর্মসূচিকে চাঙা করে তোলে। গানে গানে কোটার সংস্কার চাচ্ছেন তারা। সন্ধ্যায়ও এ অবস্থা দেখা যায়। এছাড়া কোটা সংস্কারের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগানে শাহবাগের রাস্তায় আঁকা হয়েছে আলপনা। ঢাকা বিবিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যমান ৫৬ শতাংশ কোটা পদ্ধতি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় বড় ধরনের অন্তরায়। আমরা চাই সরকার আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে মেধাবীরাই কাজ করবেন। আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ অহিংস আন্দোলন করে যাচ্ছি, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।’
সরকারি চাকরিতে কোটার সংস্কার চেয়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন আন্দোলনকারীরা। পাঁচ দফা দাবিতে তাদের এ কর্মসূচি চলছে। দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে- সরকারি নিয়োগে কোটার পরিমাণ ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা; কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পেলে শূন্যপদে মেধায় নিয়োগ করা; কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেয়া; সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অভিন্ন বয়সসীমা এবং নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিকবার কোটার সুবিধা ব্যবহার না করা।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার দুপুর আড়াইটা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাইপাস মোড়ে রাস্তায় বসে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা দুপুর থেকেই শহরের বাইপাস মোড়ে জড়ো হতে থাকেন। তাদের দাবি, কোটা বিলুপ্ত নয় যৌক্তিক সংস্কার। এদিকে অবরোধের ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ব্যাপক যানজট দেখা দেয়। আন্দোলনকারীরা জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তাদের এই অবরোধ চলবে।
গণপদযাত্রা ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, রংপুর বিভাগীয় কমিটির ব্যানারে এ পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রংপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী রোববার দুপুর ২টায় বেরোবি ক্যাম্পাসের শেখ রাসেল চত্বর থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে গণ পদযাত্রাটি নগরীর লালবাগে গেলে কারমাইকেল কলেজের আরেকটি গণপদযাত্রার সঙ্গে মিলিত হয়। সম্মিলিত গণপদযাত্রাটি লালবাগ ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্কের মোড়ে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে শেষ হয়।
পাঁচদফা দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। রোববার বিকাল সোড়া ৪টায় থেকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের মহাসড়ক অবরোধ করেন রেখেছেন। কর্মসূচিতে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দুই পাশে তীব্র যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা ব্যবস্থা সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে সড়ক আবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। রোবাবর সন্ধ্যা পৌনে ৬টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কে অবরোধ করেন তারা। ঘণ্টাব্যাপী এ আবরোধ কর্মসূচিতে মহাসড়কের উভয় পাশে প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে গাড়িচালক এবং গাড়িতে থাকা যাত্রীরা। এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন ব্যানার, প্লাকার্ড, টি-শার্ট পরে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। এসময় ঘটনাস্থলে ইবি থানা পুলিশের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়।
সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারসহ ৫ দফা দাবিতে গণপদযাত্রা করেছে ‘সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। রোববার ২টায় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে একটি গণপদযাত্রা শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। এতে প্রায় তিন শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী অংশ নেন।
এদিকে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে জাহাঙ্গীরনরগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েক নেতার বিরুদ্ধে। তারা আন্দোলনকারীদের লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতে না দেয়া ও হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। রোববার সন্ধ্যায় লাইব্রেরির সামনে তারা এ হুমকি দিয়েছেন।
এদিকে একই দাবিতে ঢাকার বাইরে ময়মনসিংহ, বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়।
সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে সারাদেশে সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে এ পদযাত্রা পালিত হয়। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুরে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশে জড়ো হন। পরে টিএসসি, ভিসি চত্বর, শহীদমিনার, পলাশী, নীলক্ষেত, কাঁটাবন হয়ে পদযাত্রা শাহবাগ মোড়ে এসে সড়ক অবরোধ করেন। বেলা তিনটা থেকে টানা সাড়ে চার ঘণ্টা সড়ক আটকে রাখায় আশপাশের রাস্তায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ আন্দোলনকারীদের তুলে দিতে কয়েক দফা চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। বঙ্গবন্ধুর ছবি হাতে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান লেখা ফেস্টুন হাতে শিক্ষার্থী কোটা সংস্কারের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিকালে রায়ট কার ও জলকামান নিয়ে শিক্ষার্থীদের তুলে দেয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। তখন শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর ছবি বুকে নিয়ে রায়টকারের সামনে শুয়ে পড়েন। এতে পুলিশ পিছু হটে। সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা জাতীয় সংসদ থেকে কোটা সংস্কারের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। রাত পৌনে আটটার দিকে প্রস্তুতি নিয়ে পুলিশ অ্যাকশনে নামে। ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল ছুড়ে পুলিশ সামনে এগোলে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর চারুকলা ও টিএসসি এলাকায় সংগঠিত হয়ে তারা আবার শাহবাগের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ আবার টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এসময় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। সংঘর্ষে দুজন পুলিশ সদস্য ও একজন সাংবাদিক আহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় আন্দোলনকারীরা ভাঙচুর করেছেন শাহবাগের পুলিশবক্স। এর আগে পুলিশ তাদের রাস্তা ছেড়ে দেয়ার জন্য বেশ কয়েকবার অনুরোধ করেন। আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক হাসান আল মামুন মানবজমিনকে বলেন, ‘পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নির্বিচারে হামলা করেছে। পুলিশের টিয়ারশেল, ফাঁকা গুলিতে আমাদের শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে ৫ জনকে। আমরা এ হামলার নিন্দা জানাই।’ তিনি বলেন, ‘পুলিশ শুধু আমাদের ওপর হামলা করে ক্ষান্ত হয়নি। বঙ্গবন্ধুর ছবিকেও অবমাননা করেছে।’ রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে অবস্থানে ছিল।
এদিকে পুলিশের লাঠিচার্জের পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দিকে যাওয়ার সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। রাত সোয়া ৮টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ হামলা হয়। এতে আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন ছাত্রলীগকর্মী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালান। এতে অংশ নেন কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়, প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবুসহ বিভিন্ন হলের পদধারী নেতারা। এসময় তারা সেখান থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে চান। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা প্রতিরোধ করতে চাইলে ছাত্রলীগ কর্মীরা সেখান থেকে চলে যান। এসময় দায়িত্বপালনরত অবস্থায় এক সাংবাদিকের মোবাইলও ভাঙচুর করে ছাত্রলীগ।
এর আগে কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে দুপুর দেড়টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন। এসময় তারা ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই,’ ‘আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মেনে নাও,’ ‘কোটা দিয়ে কামলা নয়, মেধা দিয়ে আমলা চাই,’ ‘১০% এর বেশি কোটা নয়’সহ বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন। মিছিলে মিছিলে মুখরিত হয়ে ওঠে আশপাশের এলাকা। দুপুর আড়াইটায় আন্দোলনকারী ছাত্ররা পদযাত্রা শুরু করেন। পদযাত্রাটি টিএসসি, ভিসি চত্বর, কেন্দ্রীয় শহীদমিনার, পলাশী, নীলক্ষেত, কাঁটাবন হয়ে শাহবাগে মোড়ে এসে অবস্থান নেয়।
শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি কাজে নিয়োজিত যান ছেড়ে দেয়া হয়। এসময় আন্দোলনকারীরা চলমান সংসদ অধিবেশন থেকে কোটা সংস্কারের আশ্বাস চান। আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘সংসদ অধিবেশন থেকে কোটা সংস্কারের সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দিতে হবে, তাহলে আমরা রাস্তা ছাড়বো। নতুবা ছাত্র-জনতার এ বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে হলে কোটার সংস্কার করতে হবে। আর আমাদের এই দাবি যৌক্তিক। আমরা চাই সরকার আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেবে। সেজন্য আমরা অহিংস এ আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি।’
বিকাল ৪টার দিকে পুলিশ শাহবাগ থানা থেকে একটি সাঁজোয়া যান ও একটি জলকামান বের করতে চাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এর সামনে শুয়ে পড়েন। পরে পুলিশ বাধ্য হয়ে পুনরায় সেগুলো সরিয়ে নেয়। এরপর আন্দোলনকারীরা ‘সহিংসতা নয়, অহিংস আন্দোলন করতে চাই’- বলে আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের গোলাপ ফুল দিতে চান। কিন্তু পুলিশ সদস্যরা সেগুলো গ্রহণ না করে উল্টো তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে পুলিশ নিজেরাই কিছুটা সরে দাঁড়ায়। এদিকে বিকাল ৫টা থেকে আন্দোলনকারীরা দেশাত্মবোধক গানে গানে কর্মসূচিকে চাঙা করে তোলে। গানে গানে কোটার সংস্কার চাচ্ছেন তারা। সন্ধ্যায়ও এ অবস্থা দেখা যায়। এছাড়া কোটা সংস্কারের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগানে শাহবাগের রাস্তায় আঁকা হয়েছে আলপনা। ঢাকা বিবিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যমান ৫৬ শতাংশ কোটা পদ্ধতি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় বড় ধরনের অন্তরায়। আমরা চাই সরকার আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে মেধাবীরাই কাজ করবেন। আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ অহিংস আন্দোলন করে যাচ্ছি, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।’
সরকারি চাকরিতে কোটার সংস্কার চেয়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন আন্দোলনকারীরা। পাঁচ দফা দাবিতে তাদের এ কর্মসূচি চলছে। দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে- সরকারি নিয়োগে কোটার পরিমাণ ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা; কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পেলে শূন্যপদে মেধায় নিয়োগ করা; কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেয়া; সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অভিন্ন বয়সসীমা এবং নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিকবার কোটার সুবিধা ব্যবহার না করা।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার দুপুর আড়াইটা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাইপাস মোড়ে রাস্তায় বসে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা দুপুর থেকেই শহরের বাইপাস মোড়ে জড়ো হতে থাকেন। তাদের দাবি, কোটা বিলুপ্ত নয় যৌক্তিক সংস্কার। এদিকে অবরোধের ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ব্যাপক যানজট দেখা দেয়। আন্দোলনকারীরা জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তাদের এই অবরোধ চলবে।
গণপদযাত্রা ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, রংপুর বিভাগীয় কমিটির ব্যানারে এ পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রংপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী রোববার দুপুর ২টায় বেরোবি ক্যাম্পাসের শেখ রাসেল চত্বর থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে গণ পদযাত্রাটি নগরীর লালবাগে গেলে কারমাইকেল কলেজের আরেকটি গণপদযাত্রার সঙ্গে মিলিত হয়। সম্মিলিত গণপদযাত্রাটি লালবাগ ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্কের মোড়ে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে শেষ হয়।
পাঁচদফা দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। রোববার বিকাল সোড়া ৪টায় থেকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের মহাসড়ক অবরোধ করেন রেখেছেন। কর্মসূচিতে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দুই পাশে তীব্র যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা ব্যবস্থা সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে সড়ক আবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। রোবাবর সন্ধ্যা পৌনে ৬টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কে অবরোধ করেন তারা। ঘণ্টাব্যাপী এ আবরোধ কর্মসূচিতে মহাসড়কের উভয় পাশে প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে গাড়িচালক এবং গাড়িতে থাকা যাত্রীরা। এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন ব্যানার, প্লাকার্ড, টি-শার্ট পরে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। এসময় ঘটনাস্থলে ইবি থানা পুলিশের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়।
সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারসহ ৫ দফা দাবিতে গণপদযাত্রা করেছে ‘সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। রোববার ২টায় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে একটি গণপদযাত্রা শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। এতে প্রায় তিন শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী অংশ নেন।
এদিকে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে জাহাঙ্গীরনরগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েক নেতার বিরুদ্ধে। তারা আন্দোলনকারীদের লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতে না দেয়া ও হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। রোববার সন্ধ্যায় লাইব্রেরির সামনে তারা এ হুমকি দিয়েছেন।
No comments