‘তাণ্ডবের প্রতিটি মুহূর্তে বারবার মৃত্যু ভয়ে আঁতকে উঠেছি’ by নুরুজ্জামান লাবু
রাতভর
তাণ্ডবের প্রতিটি মুহূর্ত মৃত্যু ভয়ে কেটেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের স্ত্রী সালমা জামান। তিনি বলেন, ‘হামলার সময়
মেয়েকে নিয়ে বাসার মধ্যেই লুকিয়ে ছিলাম। মেয়ে ভয়ে কাঁদছিল। তখন মেয়ের হাত
শক্ত করে ধরেছিলাম। তাণ্ডবের প্রতিটি মুহূর্তে বারবার মৃত্যু ভয়ে আঁতকে
উঠেছি।’
রবিবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া ‘সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে’ আন্দোলনের একপর্যায়ে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালায় আন্দোলনকারীর। এ সময় উপাচার্যের বাসার ফ্রিজ, আলমারি থেকে শুরু করে সব ধরনের আসবাবপত্র ভেঙে ফেলা হয়। ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডবের সময় বাসার মধ্যেই লুকিয়ে ছিলেন উপাচার্যের পরিবারের সদস্যরা। হামলার সময় বাসায় ছিলেন উপাচার্যসহ তার স্ত্রী সালমা জামান, ছেলে আশিক খান, মেয়ে আফিয়া খান।
ঘটনা প্রসঙ্গে উপাচার্যের স্ত্রী সালমা জামান বলেন, ‘রাত একটায় বাসায় হামলা হয়, সে সময় বাসভবনের প্রধান ফটক ভেঙে কয়েকশ’ ছেলে ও মেয়ে আন্দোলনকারী ভেতরে ঢুকে পড়ে। তখন পুলিশ ডাকতে বললেও উপাচার্য পুলিশ ডাকতে চাননি। তখন তিনি (উপাচার্য) বারবার বলেছেন, পুলিশ ডাকলে ওরা ছাত্রদের ওপর হামলা করবে। ছাত্রদের মেরে ফেলবে। তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। আমাদের ওপর হামলা হবে না। আমি ওদের বোঝাচ্ছি।’
সালমা জামান আরও বলেন, ‘তারা (আন্দোলনকারীরা) ভাঙচুর করতে শুরু করলে তিনি (উপাচার্য) তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা। স্যার (উপাচার্য) ছেলেকে নিয়ে নিচে নেমে যান, আমি মেয়েকে নিয়ে লুকিয়ে থাকি। এ সময় তারা বাসার সবকিছু ভেঙে লুটপাট করে নিয়ে গেছে। তখন চোখে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘সন্ধ্যা থেকেই আন্দোলন চলছিল। সন্ধ্যায় একবার বাসার সামনে বসেছিল আন্দোলনকারীরা। পরে তারা চলে গেছে। এরপর বাসার কেউ ঘুমায় নাই। কারণ, উত্তেজনা চলছিল। স্যারের (উপাচার্যের) ফোনে বারবার ফোন আসছিল। তিনি বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। রাত ৯টার দিকে বাসা ছেড়ে রাতের জন্য অন্য কোথাও গিয়ে থাকতে চাইলেও স্যার বাসা ছেড়ে যেতে চাননি।’
সরেজমিনে দেখা যায়, উপাচার্যের বাসার আসবাবপত্র থেকে শুরু করে ব্যবহার্য এমন কোনও জিনিসপত্র নাই যা ভাঙেনি। টিভি-ফ্রিজ সব ভাঙা। বিভিন্ন জিনিসপত্র এখানে-ওখানে ছড়িয়ে আছে।
উপাচার্যের ভবনে হামলার ব্যাপারে শিক্ষক ও স্বজনদের বক্তব্য:
সোমবার সকালে উপাচার্যের বাসভবন ঘুরে দেখার পরে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক শামীম রেজা বলেন, ‘আমরা অনেক আন্দোলন দেখেছি, এরশাদের সময়কার আন্দোলনও দেখেছি, কিন্তু কখনও এমন দৃশ্য দেখিনি। এমন ভয়াবহ তাণ্ডব কারা করেছে, তাদের খুঁজে বের করা জরুরি।’
সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘হামলার সময় মুখোশধারী লোকজন ছিল। আমরা শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে চাই বৃহত্তর তদন্ত কমিটি গঠন করে এই হামলাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হোক।’
উপাচার্যের স্ত্রী সালমা জামানের বোন খাদিজা খুশবু বলেন, ‘রাতে আমার ভাগ্নি আফিয়া খান ফোন করে আমাকে বলে, খালামনি, আমরা বোধহয় আর বাঁচবো না, আমাদের ভবনে ভাঙচুর-লুটপাট চলছে। আমরা লুকিয়ে আছি। আমাদের পেলে হয়তো মেরে ফেলবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ও ফিসফিসিয়ে কথা বলছিল। ওরা মা-মেয়ে এক জায়গায় লুকিয়ে ছিল, ফলে জোরে কথাও বলতে পারছিল না। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো বর্বর হামলা চালানো হয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম পরিবারের সবাইকে শেষ করে ফেলা হয়েছে। এখন আল্লাহর কাছে হাজার শোকর, ওদের প্রাণে মারেনি। জীবনটা বেঁচেছে এই আমাদের বড় পাওয়া।’
রবিবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া ‘সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে’ আন্দোলনের একপর্যায়ে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালায় আন্দোলনকারীর। এ সময় উপাচার্যের বাসার ফ্রিজ, আলমারি থেকে শুরু করে সব ধরনের আসবাবপত্র ভেঙে ফেলা হয়। ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডবের সময় বাসার মধ্যেই লুকিয়ে ছিলেন উপাচার্যের পরিবারের সদস্যরা। হামলার সময় বাসায় ছিলেন উপাচার্যসহ তার স্ত্রী সালমা জামান, ছেলে আশিক খান, মেয়ে আফিয়া খান।
ঘটনা প্রসঙ্গে উপাচার্যের স্ত্রী সালমা জামান বলেন, ‘রাত একটায় বাসায় হামলা হয়, সে সময় বাসভবনের প্রধান ফটক ভেঙে কয়েকশ’ ছেলে ও মেয়ে আন্দোলনকারী ভেতরে ঢুকে পড়ে। তখন পুলিশ ডাকতে বললেও উপাচার্য পুলিশ ডাকতে চাননি। তখন তিনি (উপাচার্য) বারবার বলেছেন, পুলিশ ডাকলে ওরা ছাত্রদের ওপর হামলা করবে। ছাত্রদের মেরে ফেলবে। তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। আমাদের ওপর হামলা হবে না। আমি ওদের বোঝাচ্ছি।’
সালমা জামান আরও বলেন, ‘তারা (আন্দোলনকারীরা) ভাঙচুর করতে শুরু করলে তিনি (উপাচার্য) তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা। স্যার (উপাচার্য) ছেলেকে নিয়ে নিচে নেমে যান, আমি মেয়েকে নিয়ে লুকিয়ে থাকি। এ সময় তারা বাসার সবকিছু ভেঙে লুটপাট করে নিয়ে গেছে। তখন চোখে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘সন্ধ্যা থেকেই আন্দোলন চলছিল। সন্ধ্যায় একবার বাসার সামনে বসেছিল আন্দোলনকারীরা। পরে তারা চলে গেছে। এরপর বাসার কেউ ঘুমায় নাই। কারণ, উত্তেজনা চলছিল। স্যারের (উপাচার্যের) ফোনে বারবার ফোন আসছিল। তিনি বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। রাত ৯টার দিকে বাসা ছেড়ে রাতের জন্য অন্য কোথাও গিয়ে থাকতে চাইলেও স্যার বাসা ছেড়ে যেতে চাননি।’
সরেজমিনে দেখা যায়, উপাচার্যের বাসার আসবাবপত্র থেকে শুরু করে ব্যবহার্য এমন কোনও জিনিসপত্র নাই যা ভাঙেনি। টিভি-ফ্রিজ সব ভাঙা। বিভিন্ন জিনিসপত্র এখানে-ওখানে ছড়িয়ে আছে।
উপাচার্যের ভবনে হামলার ব্যাপারে শিক্ষক ও স্বজনদের বক্তব্য:
সোমবার সকালে উপাচার্যের বাসভবন ঘুরে দেখার পরে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক শামীম রেজা বলেন, ‘আমরা অনেক আন্দোলন দেখেছি, এরশাদের সময়কার আন্দোলনও দেখেছি, কিন্তু কখনও এমন দৃশ্য দেখিনি। এমন ভয়াবহ তাণ্ডব কারা করেছে, তাদের খুঁজে বের করা জরুরি।’
সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘হামলার সময় মুখোশধারী লোকজন ছিল। আমরা শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে চাই বৃহত্তর তদন্ত কমিটি গঠন করে এই হামলাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হোক।’
উপাচার্যের স্ত্রী সালমা জামানের বোন খাদিজা খুশবু বলেন, ‘রাতে আমার ভাগ্নি আফিয়া খান ফোন করে আমাকে বলে, খালামনি, আমরা বোধহয় আর বাঁচবো না, আমাদের ভবনে ভাঙচুর-লুটপাট চলছে। আমরা লুকিয়ে আছি। আমাদের পেলে হয়তো মেরে ফেলবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ও ফিসফিসিয়ে কথা বলছিল। ওরা মা-মেয়ে এক জায়গায় লুকিয়ে ছিল, ফলে জোরে কথাও বলতে পারছিল না। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো বর্বর হামলা চালানো হয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম পরিবারের সবাইকে শেষ করে ফেলা হয়েছে। এখন আল্লাহর কাছে হাজার শোকর, ওদের প্রাণে মারেনি। জীবনটা বেঁচেছে এই আমাদের বড় পাওয়া।’
No comments