যুক্তরাষ্ট্র সরে গেলে বিশ্ব ধ্বংসের মুখে পড়বে
পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি থেকে নাম প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত পৃথিবীকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে। জলবায়ুর পরিবর্তন এমনভাবে ঘটতে পারে যে, পরিস্থিতি হবে ‘অপরিবর্তনীয়’। ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্ত পৃথিবীকে শুক্র গ্রহের মতো উত্তপ্ত গ্রহে পরিণত করবে। সোমবার যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর স্টিফেন হকিংয়ের ৭৫তম জন্মদিন পালন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। বিখ্যাত এই বিজ্ঞানী বলেন, ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্ত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আমরা বৈশ্বিক উষ্ণতার এমন এক পর্যায়ে আছি যা আরেকটু বেশি হলে সেখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব নয়। ট্রাম্পের এমন ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত পৃথিবীকে আরেকটি শুক্র গ্রহে রূপান্তরিত করতে পারে, যেখানে থাকবে ২৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রা এবং সালফিউরিক এসিডের বৃষ্টিপাত। জলবায়ু পরিবর্তনকে তিনি পৃথিবীতে বিদ্যমান ‘সবচেয়ে বড় বিপদ’ বলে উল্লেখ করেন। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য তিনি পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলেন। হকিং বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের বড় বিপদগুলোর মধ্যে একটি এবং এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিলে আমরা ক্ষতি রোধ করতে পারি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রমাণ অস্বীকার করে এবং প্যারিস চুক্তি থেকে বের হয়ে ট্রাম্প পরিবেশের ক্ষতি সাধনের মাধ্যমে আমাদের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর পৃথিবীটাকে বিপজ্জনক করে তুলেছেন। এদিকে জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আলোচকদের প্যানেল আইপিসিসিতে পৃথিবীতে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ও এর সম্ভাব্য ঝুঁকি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে। আইপিসিসি লেখকদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের সুনির্দিষ্ট মাত্রাটি (অচলাবস্থান বা অপরিবর্তনীয় অবস্থার সর্বোচ্চ মান) নিশ্চিত করতে অনিশ্চয়তা রয়েছে। কিন্তু পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে অচলাবস্থার দিকেই যাচ্ছে, যা মানুষ এবং প্রাকৃতিক কারণেই হচ্ছে। আমরা কি কখনও আমাদের পরিবেশগত সমস্যা ও মানবসংঘাত সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হতে পারব? এমন প্রশ্নের উত্তরে হকিং বলেন, পৃথিবীতে আমাদের দিন হিসাবের। আমার মনে হয় বিবর্তন মানুষের মনের লোভ ও সহিংসতা জাগিয়ে তুলছে। মানবসংঘাত কমার কোনো লক্ষণ নেই। যুদ্ধক্ষেত্রে প্রযুক্তির বিকাশ এবং মারাত্মক অস্ত্রগুলো মানুষের জন্য ধ্বংসাত্মক হতে পারে যেকোনো সময়। মানবজাতির বেঁচে থাকার সবচেয়ে ভালো উপায় হতে পারে মহাকাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে স্বাধীনভাবে উপনিবেশ স্থাপন।
No comments