সেই নৌসেনা এখন মুসলিম
নৌসেনা
হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে একটি উন্নতমানের বিস্ফোরক ডিভাইস
তৈরি করেন রিচার্ড ম্যাকিনি। ডিভাইসটি ব্যবহার করে কাছের এক মসজিদ উড়িয়ে
দিতে চেয়েছিলেন তিনি। লক্ষ্য ছিল ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটানোর। কিন্তু তিনিই
এখন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে একজন আদর্শ মুসলিম হিসেবে জীবন-যাপন করছেন বলে
কানাডিয়ানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা স্টেটের নাগরিক রিচার্ড জানান, ছোটবেলায় হলিউড ছবি ‘র্যাম্বো’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নায়কে মতো হতে চেয়েছিলেন। তাই পরে তিনি মার্কিন নৌবাহিনীতে যোগদান করেন। এরপর মধ্যপ্রাচ্যসহ একাধিক যুদ্ধক্ষেত্রে দায়িত্বরত ছিলেন। নৌসেনা হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে রিচার্ড বলেন, ‘শিশুদের মৃত্যু দেখা সবচেয়ে ভয়ানক ছিল।’
তবে এই করুণ বাস্তবতা এড়িয়ে নিজের সহকর্মীদের সঙ্গ দিতে বলা হয় তাকে। তার গায়ে চোখের পানির ফোটা সদৃশ ২৬টি ট্যাটু করা আছে। প্রতিটি ট্যাটু তার হত্যা করা মানুষের সংখ্যা প্রকাশ করে। তবে রিচার্ড যুদ্ধক্ষেত্রে বেশিদিন প্রতিপক্ষকে হত্যা করা মেনে নিতে পারেননি। তিনি চাকরি ছেড়ে দেন।
রিচার্ড বলেন, ‘একদিন আমার দোকানে দুজন বোরকাপরা নারী আসেন। আমি তাদের দেখে কান্নায় ভেঙে পরলাম এবং প্রার্থনা করতে লাগলাম, আমি যেন একটুকু শক্তি পাই যেন তাদের দুজনের ঘাড় মটকে দিতে পারি। আমি খুব রাগান্বিত ছিলাম এবং তাদের খুব ঘৃণা করতাম।’
‘সে সময় প্রতি দুদিনে আমি হাফ গ্যালন ভদকা পান করতাম। তখনই আমি বাসায় বসে আইইডি (বাসায় নির্মিত বোমা) বানিয়ে ফেলি। আমি চেয়েছিলাম ইন্ডিয়ানা স্টেটের মুন্সি শহরের একটি মুসলিম সেন্টারে এর বিস্ফোরণ ঘটাতে। এতে কমপক্ষে দুশতাধিক মানুষ নিহত হতে পারতো। আমি চেয়েছিলাম, এই হামলার মধ্য দিয়ে শেষবারের মতো আমার দেশের জন্য কিছু করতে। এটাই ছিলো আমার হামলার যুক্তির ব্যাখ্যা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানতাম এই হামলার জন্য আমাকে কারাদন্ড দেওয়া হতো এবং সর্বশেষ আমার হাতে সুঁই ফুটানো হতো। কিন্তু এতে আমার কিছু আসে যায় না। ইসলামের প্রতি ঘৃণাই যেন আমাকে জীবিত রেখেছিলো।’
মার্কিন এই নাগরিক বলেন, ‘একদিন আমার ছোট মেয়ে বাসায় এসে আমাকে বললো, সে স্কুল থেকে আসার সময় একটা ছেলেকে দেখেছে যার মা মুখে স্কার্ফ পরে সারা শরীর আবদ্ধ করে তাকে নিতে এসেছিলেন। তার কেবল চক্ষুগোলক ব্যতীত কিছুই দেখা যাচ্ছিলো না।’
মেয়ের মুখ থেকে হিজাবি নারীর কথা শুনে রিচার্ড খুব রেগে যান। এক পর্যায়ে সন্তানদের সামনে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন তিনি। তবে বাবার এমন ব্যবহার দেখে কিছু বলেনি ছোট মেয়ে। কেবল মেয়েটি রিচার্ডের দিকে তাকিয়ে এমন একটা ভঙ্গিমা দিলেন যেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিংস্র মানব হচ্ছেন তার বাবা।
রিচার্ড বলেন, ‘তার এই চাহনি দেখেই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, এই মুসলিম স¤প্রদায়কে আরও একটি সুযোগ দিবো। এরপর আমি নিকটস্থ একটি মসজিদে গেলাম এবং দেখলাম, একজন মুসলিম ব্যক্তি নিজের জুতো খুলে সেখানে প্রবেশ করলেন। সে আমার দিকে তাকিয়ে একটি হাসি দিলেন। আমাকে প্রশ্ন করলেন, “আমি কি আপনাকে সাহায্য করতে পারি?”
জবাবে রিচার্ড বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি চাই আপনি আমাকে ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা দিন। এরপর তিনি আমাকে কোরআন দিলেন। ওই ব্যক্তি আমাকে বলেন, “আপনি এটি পড়েন এবং পড়া শেষে কোনো প্রশ্ন থাকলে বলুন।”’
‘বইটি পড়ে একের পর এক প্রশ্ন পাই আমি এবং তাদের কাছে ব্যখ্যা চাই। তারাও আমাকে ব্যাখ্যা করছিলেন। এটা ছিল এক ধরনের সজাগ হওয়া। মসজিদে প্রবেশের ঠিক আট সপ্তাহ পর আমি মুসলমান হই।’
এ ঘটনার তিন বছর পর মুনসি ইসলামিক সেন্টারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন রিচার্ড।
সর্বশেষে রিচার্ড বলেন, ‘আমি একজন মুসলিম। একজন দক্ষ সেনা ও গর্বিত মার্কিন নাগরিক। আমি শিখেছি যে, আমার ধারণাগুলো পুরোপুরি ভ্রান্ত ছিলো। আপনি জানেন, ইহুদী ধর্মে একটি বার্তা আছে, খ্রিস্টান ধর্মেও বার্তা আছে একইসঙ্গে ইসলাম ধর্মেও একটি বার্তা আছে। তবে বিষয়টি হাস্যকর হলেও সত্য যে, প্রত্যেক ধর্মের বার্তাই এক। সব ধর্মেই বলা হয়েছে শান্তি-ভালোবাসার কথা।’
তিনি বলেন, ‘আমার এখন একটাই লক্ষ্য, ঘৃণা বন্ধ করা। ঘৃণা থেকে ভালো কিছু আসে না। আমি অনেক কিছু করেছি। আমি অনেক মানুষের ক্ষতি করেছি এবং এই বোঝা নিয়েই আমাকে বেঁচে থাকতে হবে। তবে আমি যদি অন্য কাউকে থামাতে পারি তাহলেই আমি জিতে যাবো।’
যুক্তরাষ্ট্রে একজন মুসলিম নাগরিক হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতার কথা এভাবেই জানালেন রিচার্ড।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা স্টেটের নাগরিক রিচার্ড জানান, ছোটবেলায় হলিউড ছবি ‘র্যাম্বো’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নায়কে মতো হতে চেয়েছিলেন। তাই পরে তিনি মার্কিন নৌবাহিনীতে যোগদান করেন। এরপর মধ্যপ্রাচ্যসহ একাধিক যুদ্ধক্ষেত্রে দায়িত্বরত ছিলেন। নৌসেনা হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে রিচার্ড বলেন, ‘শিশুদের মৃত্যু দেখা সবচেয়ে ভয়ানক ছিল।’
তবে এই করুণ বাস্তবতা এড়িয়ে নিজের সহকর্মীদের সঙ্গ দিতে বলা হয় তাকে। তার গায়ে চোখের পানির ফোটা সদৃশ ২৬টি ট্যাটু করা আছে। প্রতিটি ট্যাটু তার হত্যা করা মানুষের সংখ্যা প্রকাশ করে। তবে রিচার্ড যুদ্ধক্ষেত্রে বেশিদিন প্রতিপক্ষকে হত্যা করা মেনে নিতে পারেননি। তিনি চাকরি ছেড়ে দেন।
রিচার্ড বলেন, ‘একদিন আমার দোকানে দুজন বোরকাপরা নারী আসেন। আমি তাদের দেখে কান্নায় ভেঙে পরলাম এবং প্রার্থনা করতে লাগলাম, আমি যেন একটুকু শক্তি পাই যেন তাদের দুজনের ঘাড় মটকে দিতে পারি। আমি খুব রাগান্বিত ছিলাম এবং তাদের খুব ঘৃণা করতাম।’
‘সে সময় প্রতি দুদিনে আমি হাফ গ্যালন ভদকা পান করতাম। তখনই আমি বাসায় বসে আইইডি (বাসায় নির্মিত বোমা) বানিয়ে ফেলি। আমি চেয়েছিলাম ইন্ডিয়ানা স্টেটের মুন্সি শহরের একটি মুসলিম সেন্টারে এর বিস্ফোরণ ঘটাতে। এতে কমপক্ষে দুশতাধিক মানুষ নিহত হতে পারতো। আমি চেয়েছিলাম, এই হামলার মধ্য দিয়ে শেষবারের মতো আমার দেশের জন্য কিছু করতে। এটাই ছিলো আমার হামলার যুক্তির ব্যাখ্যা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানতাম এই হামলার জন্য আমাকে কারাদন্ড দেওয়া হতো এবং সর্বশেষ আমার হাতে সুঁই ফুটানো হতো। কিন্তু এতে আমার কিছু আসে যায় না। ইসলামের প্রতি ঘৃণাই যেন আমাকে জীবিত রেখেছিলো।’
মার্কিন এই নাগরিক বলেন, ‘একদিন আমার ছোট মেয়ে বাসায় এসে আমাকে বললো, সে স্কুল থেকে আসার সময় একটা ছেলেকে দেখেছে যার মা মুখে স্কার্ফ পরে সারা শরীর আবদ্ধ করে তাকে নিতে এসেছিলেন। তার কেবল চক্ষুগোলক ব্যতীত কিছুই দেখা যাচ্ছিলো না।’
মেয়ের মুখ থেকে হিজাবি নারীর কথা শুনে রিচার্ড খুব রেগে যান। এক পর্যায়ে সন্তানদের সামনে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন তিনি। তবে বাবার এমন ব্যবহার দেখে কিছু বলেনি ছোট মেয়ে। কেবল মেয়েটি রিচার্ডের দিকে তাকিয়ে এমন একটা ভঙ্গিমা দিলেন যেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিংস্র মানব হচ্ছেন তার বাবা।
রিচার্ড বলেন, ‘তার এই চাহনি দেখেই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, এই মুসলিম স¤প্রদায়কে আরও একটি সুযোগ দিবো। এরপর আমি নিকটস্থ একটি মসজিদে গেলাম এবং দেখলাম, একজন মুসলিম ব্যক্তি নিজের জুতো খুলে সেখানে প্রবেশ করলেন। সে আমার দিকে তাকিয়ে একটি হাসি দিলেন। আমাকে প্রশ্ন করলেন, “আমি কি আপনাকে সাহায্য করতে পারি?”
জবাবে রিচার্ড বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি চাই আপনি আমাকে ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা দিন। এরপর তিনি আমাকে কোরআন দিলেন। ওই ব্যক্তি আমাকে বলেন, “আপনি এটি পড়েন এবং পড়া শেষে কোনো প্রশ্ন থাকলে বলুন।”’
‘বইটি পড়ে একের পর এক প্রশ্ন পাই আমি এবং তাদের কাছে ব্যখ্যা চাই। তারাও আমাকে ব্যাখ্যা করছিলেন। এটা ছিল এক ধরনের সজাগ হওয়া। মসজিদে প্রবেশের ঠিক আট সপ্তাহ পর আমি মুসলমান হই।’
এ ঘটনার তিন বছর পর মুনসি ইসলামিক সেন্টারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন রিচার্ড।
সর্বশেষে রিচার্ড বলেন, ‘আমি একজন মুসলিম। একজন দক্ষ সেনা ও গর্বিত মার্কিন নাগরিক। আমি শিখেছি যে, আমার ধারণাগুলো পুরোপুরি ভ্রান্ত ছিলো। আপনি জানেন, ইহুদী ধর্মে একটি বার্তা আছে, খ্রিস্টান ধর্মেও বার্তা আছে একইসঙ্গে ইসলাম ধর্মেও একটি বার্তা আছে। তবে বিষয়টি হাস্যকর হলেও সত্য যে, প্রত্যেক ধর্মের বার্তাই এক। সব ধর্মেই বলা হয়েছে শান্তি-ভালোবাসার কথা।’
তিনি বলেন, ‘আমার এখন একটাই লক্ষ্য, ঘৃণা বন্ধ করা। ঘৃণা থেকে ভালো কিছু আসে না। আমি অনেক কিছু করেছি। আমি অনেক মানুষের ক্ষতি করেছি এবং এই বোঝা নিয়েই আমাকে বেঁচে থাকতে হবে। তবে আমি যদি অন্য কাউকে থামাতে পারি তাহলেই আমি জিতে যাবো।’
যুক্তরাষ্ট্রে একজন মুসলিম নাগরিক হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতার কথা এভাবেই জানালেন রিচার্ড।
No comments