কেউ ভাবেনি ওরা এভাবে ফিরবে
কেউ
ভাবেনি ওরা এভাবে ফিরবে। পরিবার, পরিজন, স্বজন সবার স্বপ্নকে কবর দিয়ে ওরা
ফিরেছে লাশ হয়ে। অথচ ওরা নিজে যেমন স্বপ্ন দেখেছিলেন, তেমন স্বপ্ন দেখতে
পরিবারকেও ভাবিয়েছেন। কোথা থেকে কি হয়ে গেল। সন্ত্রাস তাদের জীবন কেড়ে নিল।
গোটা বিশ্ব তা তাকিয়ে দেখলো। নারায়ণগঞ্জ বন্দরের ওমর ফারুক ও নরসিংদীর
পলাশের জাকারিয়া ভুঁইয়া। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ আল নূর মসজিদে
শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত ৫০ জনের ২ জন।
মঙ্গলবার রাতে তাদের লাশ বহনকারী বিমান শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ল্যান্ড করে। শোকে কাতর স্বজনরা অপেক্ষা করছিলেন লাশ গ্রহণে। রাতেই লাশ গ্রহণ করে তাদের নিজ নিজ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। গতকাল তাদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে তাদের লাশ বহনকারী বিমান শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ল্যান্ড করে। শোকে কাতর স্বজনরা অপেক্ষা করছিলেন লাশ গ্রহণে। রাতেই লাশ গ্রহণ করে তাদের নিজ নিজ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। গতকাল তাদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
গত
বুধবার সকাল ১০টায় বন্দর উপজেলার সিরাজদ্দৌলা মাঠে জানাজা শেষে পৌনে ১১টায়
বন্দর কবরস্থানে ওমর ফারুকের দাফন সম্পন্ন হয়। ওমর ফারুকের পরিবারের
স্বজনরা ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শত শত এলাকাবাসী এতে অংশ নেন।
মঙ্গলবার রাতে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হলে মধ্যরাতে বন্দর উপজেলার রাজবাড়ী এলাকায় নিজ বাড়িতে আনা হয়। তখন থেকেই নিকট আত্মীয়স্বজনরা বাড়িতে আসতে শুরু করেন। সকালে গোসল শেষে ওমর ফারুকের মরদেহ বাড়ির সামনে রাখা হলে এলাকাবাসী ও দূর-দূরান্ত থেকে তার বন্ধুবান্ধব এবং স্বজনরা বাড়িতে এসে ভিড় জমান শেষবারের মতো ওমর ফারুকের মুখটি দেখতে। জানাজার আগ মুহূর্তে কফিনের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওমর ফারুকের মা রহিমা বেগম, তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সানজিদা জামান নিহা ও তিন বোনসহ শোকার্ত স্বজনরা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তারা বলতে থাকেন, কেউই আশা করেন নি ওমর ফারুক এভাবে লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরবে। একমাত্র উপার্জনকারী ওমর ফারুককে হারিয়ে পরিবারের অসহায় অবস্থার কথাও তারা তুলে ধরেন।
নিহত ওমর ফারুকের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সানজিদা জাহান নিহা বলেন, আমার স্বামীকে তো আর আমি ফিরে পাবো না। কোনোভাবেই তার শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। সে ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। তাকে হারিয়ে এই পরিবারে আমি, আমার বৃদ্ধা শাশুড়ি এবং অবিবাহিত একটি ননদ এখন নিঃস্ব। তিনি বলেন, সরকারের কাছে আমার একটাই দাবি, সরকার যেন আমাদের এই পরিবারটির কথা ভুলে না যায়। এর বেশি আমার আর কিছু বলার নেই।
সকাল সাড়ে ৯টায় জানাজার লক্ষ্যে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সিরাজদ্দৌলা মাঠের উদ্দেশে। ১০টায় জানাজা শেষে পৌনে এগারোটায় দাফন সম্পন্ন হয় বন্দর কবরস্থানে। সেখানে ছেলেবেলার বন্ধুরা ও এলাকাবাসী ওমর ফারুকের স্মৃতিচারণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। জানাজায় অংশ নেন বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহম্মেদ, কাউন্সিলর হান্নান সরকার, বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম সহ স্থানীয় বিশিষ্টজনেরা।
এদিকে জানাজার পর পরিবারের স্বজনদের সমবেদনা জানাতে নিহত ফারুকের বাড়িতে যান নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। এসময় তিনি নিউজিল্যান্ডের এ ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বলে উল্লেখ করেন। নিউজিল্যান্ড সরকারের তাৎক্ষণিক ভূমিকার ব্যাপারে সে দেশের সরকারকে ধন্যবাদও জানান আইভী। আইভী বলেন, ওমর ফারুক নিশ্চিত শহীদের মৃত্যুবরণ করেছে। আমি দোয়া করি আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করবেন। এই ধরনের মৃত্যু আমরা কখনোই আশা করিনি।
মেয়র আইভীকে কাছে পেয়ে এলাকাবাসী বন্দর এলাকায় ওমর ফারুকের নামে একটি সড়কের নামকরণ করার দাবি জানালে আইভী গণমাধ্যমকে বলেন, এ ব্যাপারে আমি স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলবো। কাউন্সিলর বিষয়টি নিয়ে অফিসিয়ালি প্রস্তাব করবে। তারপর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য বিবেচনা করা হবে।
গত ১৫ই মার্চ শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ আল-নূর মসজিদে জুমার নামাজের সময় বন্দুকধারী সন্ত্রাসীর গুলিতে ৫০ জন নিহত ও ৪৭ জন আহত হন। এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশি ছিলেন ৫ জন। এদের মধ্যে একজন নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার রাজবাড়ী এলাকার ওমর ফারুক। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতার জন্য ২০১৫ সালে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমান পিতাহারা তিন বোনের একমাত্র ভাই ওমর ফারুক। ২০১৭ সালে দেশে এসে বিয়ে করেন একই এলাকায়। গেল বছরের ১৬ই নভেম্বর আবারো দেশে এসে বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে কিছুদিন কাটিয়ে গত ১৮ই জানুয়ারি ফিরে যান নিউজিল্যান্ডে। এটাই ছিল পরিবারের সঙ্গে ওমর ফারুকের শেষ দেখা।
জাকারিয়া ভূঁইয়ার লাশ নরসিংদীর পলাশের জয়পুরা গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে রাতেই। সকাল সাড়ে ১১টায় স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে মরহুমের নামাজের জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্তানে দাদা-দাদির কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। নিহত জাকারিয়াকে শেষবারের মতো দেখতে বাড়িতে শত শত লোক ভিড় জমায়। এ সময় শিবপুর আসনের সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা ইয়াসমিন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান ভূঁইয়া বদিসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংসারের সচ্ছলতা আনতে প্রায় আড়াই বছর আগে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়ার ইউনিয়নের জয়পুরা গ্রামের আবদুল বাতেন ভূঁইয়ার বড় ছেলে জাকারিয়া ভূঁইয়া নিউজিল্যান্ড পাড়ি জমায়। জুমার নামাজ আদায় করতে স্থানীয় মসজিদে যায়। এ সময় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয় জাকারিয়া। লাশ গ্রামের বাড়িতে ফেরার পর হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বাড়ি জুড়ে শুরু হয় শোকের মাতম। স্বজনদের আহাজারি আর কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে আশপাশের পরিবেশ।
নিহত জাকারিয়ার স্ত্রী রীনা বেগম বলেন, আমার তো সবই শেষ। স্বামীও শেষ। সংসারও শেষ। বেঁচে থাকার সম্বল শেষ। চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। স্বামী যেন বেহেস্ত নসিব হয় সেই জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
নিহতের বাবা আবদুল বাতেন ভূঁইয়া বলেন, পৌনে ১১টায় আমরা লাশ বুঝে পেয়েছি। তারপর গ্রামের বাড়ি নিয়ে আসি। লাশের সঙ্গে কিছু আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে বলে আমাদের নিউজিল্যান্ড থেকে জানিয়েছিল। কিন্তু কিছুই পাইনি।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লাল মিয়া বলেন, পরিবারের সচ্ছলতা আনতে ধারদেনা করে নিউজিল্যান্ড পাড়ি জমায় জাকারিয়া। কিন্তু এভাবে তার মৃত্যু হবে তা জানতাম না। তার মৃত্যুতে পুরো পরিবারের ওপর একটা আর্থিক চাপ পড়ে গেছে। এখন বাংলাদেশ সরকার ও নিউজিল্যান্ডের সরকার পরিবারটিকে আর্থিক সহায়তা করে পুরো পরিবারটিকে মৃত্যুর হাত থেকে যেন বাঁচায়।
পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা ইয়ামিন বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে মরদেহ গ্রহণ করে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিধিবিধান অনুযায়ী নিহতের পরিবারকে সকল ধরনের সহায়তার করা হবে।
মঙ্গলবার রাতে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হলে মধ্যরাতে বন্দর উপজেলার রাজবাড়ী এলাকায় নিজ বাড়িতে আনা হয়। তখন থেকেই নিকট আত্মীয়স্বজনরা বাড়িতে আসতে শুরু করেন। সকালে গোসল শেষে ওমর ফারুকের মরদেহ বাড়ির সামনে রাখা হলে এলাকাবাসী ও দূর-দূরান্ত থেকে তার বন্ধুবান্ধব এবং স্বজনরা বাড়িতে এসে ভিড় জমান শেষবারের মতো ওমর ফারুকের মুখটি দেখতে। জানাজার আগ মুহূর্তে কফিনের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওমর ফারুকের মা রহিমা বেগম, তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সানজিদা জামান নিহা ও তিন বোনসহ শোকার্ত স্বজনরা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তারা বলতে থাকেন, কেউই আশা করেন নি ওমর ফারুক এভাবে লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরবে। একমাত্র উপার্জনকারী ওমর ফারুককে হারিয়ে পরিবারের অসহায় অবস্থার কথাও তারা তুলে ধরেন।
নিহত ওমর ফারুকের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সানজিদা জাহান নিহা বলেন, আমার স্বামীকে তো আর আমি ফিরে পাবো না। কোনোভাবেই তার শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। সে ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। তাকে হারিয়ে এই পরিবারে আমি, আমার বৃদ্ধা শাশুড়ি এবং অবিবাহিত একটি ননদ এখন নিঃস্ব। তিনি বলেন, সরকারের কাছে আমার একটাই দাবি, সরকার যেন আমাদের এই পরিবারটির কথা ভুলে না যায়। এর বেশি আমার আর কিছু বলার নেই।
সকাল সাড়ে ৯টায় জানাজার লক্ষ্যে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সিরাজদ্দৌলা মাঠের উদ্দেশে। ১০টায় জানাজা শেষে পৌনে এগারোটায় দাফন সম্পন্ন হয় বন্দর কবরস্থানে। সেখানে ছেলেবেলার বন্ধুরা ও এলাকাবাসী ওমর ফারুকের স্মৃতিচারণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। জানাজায় অংশ নেন বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহম্মেদ, কাউন্সিলর হান্নান সরকার, বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম সহ স্থানীয় বিশিষ্টজনেরা।
এদিকে জানাজার পর পরিবারের স্বজনদের সমবেদনা জানাতে নিহত ফারুকের বাড়িতে যান নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। এসময় তিনি নিউজিল্যান্ডের এ ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বলে উল্লেখ করেন। নিউজিল্যান্ড সরকারের তাৎক্ষণিক ভূমিকার ব্যাপারে সে দেশের সরকারকে ধন্যবাদও জানান আইভী। আইভী বলেন, ওমর ফারুক নিশ্চিত শহীদের মৃত্যুবরণ করেছে। আমি দোয়া করি আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করবেন। এই ধরনের মৃত্যু আমরা কখনোই আশা করিনি।
মেয়র আইভীকে কাছে পেয়ে এলাকাবাসী বন্দর এলাকায় ওমর ফারুকের নামে একটি সড়কের নামকরণ করার দাবি জানালে আইভী গণমাধ্যমকে বলেন, এ ব্যাপারে আমি স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলবো। কাউন্সিলর বিষয়টি নিয়ে অফিসিয়ালি প্রস্তাব করবে। তারপর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য বিবেচনা করা হবে।
গত ১৫ই মার্চ শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ আল-নূর মসজিদে জুমার নামাজের সময় বন্দুকধারী সন্ত্রাসীর গুলিতে ৫০ জন নিহত ও ৪৭ জন আহত হন। এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশি ছিলেন ৫ জন। এদের মধ্যে একজন নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার রাজবাড়ী এলাকার ওমর ফারুক। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতার জন্য ২০১৫ সালে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমান পিতাহারা তিন বোনের একমাত্র ভাই ওমর ফারুক। ২০১৭ সালে দেশে এসে বিয়ে করেন একই এলাকায়। গেল বছরের ১৬ই নভেম্বর আবারো দেশে এসে বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে কিছুদিন কাটিয়ে গত ১৮ই জানুয়ারি ফিরে যান নিউজিল্যান্ডে। এটাই ছিল পরিবারের সঙ্গে ওমর ফারুকের শেষ দেখা।
জাকারিয়া ভূঁইয়ার লাশ নরসিংদীর পলাশের জয়পুরা গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে রাতেই। সকাল সাড়ে ১১টায় স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে মরহুমের নামাজের জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্তানে দাদা-দাদির কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। নিহত জাকারিয়াকে শেষবারের মতো দেখতে বাড়িতে শত শত লোক ভিড় জমায়। এ সময় শিবপুর আসনের সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা ইয়াসমিন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান ভূঁইয়া বদিসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংসারের সচ্ছলতা আনতে প্রায় আড়াই বছর আগে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়ার ইউনিয়নের জয়পুরা গ্রামের আবদুল বাতেন ভূঁইয়ার বড় ছেলে জাকারিয়া ভূঁইয়া নিউজিল্যান্ড পাড়ি জমায়। জুমার নামাজ আদায় করতে স্থানীয় মসজিদে যায়। এ সময় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয় জাকারিয়া। লাশ গ্রামের বাড়িতে ফেরার পর হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বাড়ি জুড়ে শুরু হয় শোকের মাতম। স্বজনদের আহাজারি আর কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে আশপাশের পরিবেশ।
নিহত জাকারিয়ার স্ত্রী রীনা বেগম বলেন, আমার তো সবই শেষ। স্বামীও শেষ। সংসারও শেষ। বেঁচে থাকার সম্বল শেষ। চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। স্বামী যেন বেহেস্ত নসিব হয় সেই জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
নিহতের বাবা আবদুল বাতেন ভূঁইয়া বলেন, পৌনে ১১টায় আমরা লাশ বুঝে পেয়েছি। তারপর গ্রামের বাড়ি নিয়ে আসি। লাশের সঙ্গে কিছু আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে বলে আমাদের নিউজিল্যান্ড থেকে জানিয়েছিল। কিন্তু কিছুই পাইনি।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লাল মিয়া বলেন, পরিবারের সচ্ছলতা আনতে ধারদেনা করে নিউজিল্যান্ড পাড়ি জমায় জাকারিয়া। কিন্তু এভাবে তার মৃত্যু হবে তা জানতাম না। তার মৃত্যুতে পুরো পরিবারের ওপর একটা আর্থিক চাপ পড়ে গেছে। এখন বাংলাদেশ সরকার ও নিউজিল্যান্ডের সরকার পরিবারটিকে আর্থিক সহায়তা করে পুরো পরিবারটিকে মৃত্যুর হাত থেকে যেন বাঁচায়।
পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা ইয়ামিন বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে মরদেহ গ্রহণ করে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিধিবিধান অনুযায়ী নিহতের পরিবারকে সকল ধরনের সহায়তার করা হবে।
No comments