শান্তি প্রতিষ্ঠায় আলুর ‘অবদান’
বেচারা
আলু! খরা সহিষ্ণু, বহু ধরনের মাটিতে উৎপাদিত হয়। সিদ্ধ, আধা সিদ্ধ এবং
সেঁকে এর স্বাদ গ্রহণ করা যায়। তবে সস্তায় পাওয়া যায় বলে অনেকেই একে
হেলফেলা করেন। কিন্তু এই শস্যটিই ষোড়শ শতাব্দীর পর ইউরোপে সংঘাতের অবসান
ঘটিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশাল অবদান রাখে আর মহাদেশটিকে ধাবিত করে শান্তির
পথে। আলুর এত গুণ শুনে আপনি হয়তো অবাক হচ্ছেন। কিন্তু ব্যাপকভিত্তিক এক
গবেষণায় এমন তথ্যই মিলেছে। খবর এএফপির। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ব্যুরো অব
ইকোনমিক রিসার্চ বলছে, চতুর্দশ শতাব্দীতে ল্যাটিন আমেরিকায় আবিষ্কৃত হয়
আলু। এরপর ইউরোপজুড়ে এর চাষাবাদ শুরু হয়। ব্যাপকভাবে এর চাষাবাদ হওয়ার ফলে
জমির জাম কমতে শুরু করে। এতে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয় আর কৃষক থেকে শাসক
শ্রেণি সবার আয় বেড়ে যায়। সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলু চাষের মাধ্যমে
কৃষিতে বিপ্লব আসে। এতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক চাপ কমে যায়। এর ফলে কমে
ব্যয়বহুল ও প্রাণঘাতী যুদ্ধের অবসান ঘটে।
আলু চাষের প্রবর্তন এবং ব্যাপক
উৎপাদনের কারণে দুই শতাব্দী সময়কালজুড়ে ‘নাটকীয়ভাবে সংঘাত কমে গিয়েছিল’ বলে
প্রতিবেদনে বলা হয়। গবেষকরা ৫০০ বছরে ৮৯৯টি যুদ্ধের ২,৪৭৭টি লড়াই বিশ্লেষণ
করে দুটি উপসংহারে পৌঁছেছেন। প্রথমটি হচ্ছে, যেসব এলাকায় আলুর চাষ হতো
সেখানে জমির দাম কমে যায়। আলুও উৎপাদন হয় ব্যাপকভাবে। ফলে জমিতে আলু চাষ
করেই জনগণ খাবারের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হয়। গবেষণায় বলা হয়, খাবারের
সংস্থান করতেই যুদ্ধ হতো। ফলে সেটি যখন সহজলভ্য হয়ে গেল তখন সংঘাতও কমে
এলো। অন্যদিকে আলু চাষে ফসলহানির আশঙ্কা না থাকায় কৃষকের আয় বেড়ে যায়। এতে
দেশের আয়ও বেড়ে যায়। ফলে সরকার স্থিতিশীল হয় যা শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক
হয়। আলু চাষের জেরে কৃষক বিদ্রোহ ও গৃহযুদ্ধ কমে আসে। সবাই মনে করতে থাকে
যুদ্ধ আসলেই ব্যয়বহুল। বরং আলু চাষ করাই শ্রেয়। আধুনিক যুগের অস্ট্রিয়া,
ফ্রান্স, রাশিয়া ও তুরস্ক সীমান্তে এই গবেষণা চালানো হয়।
No comments