এবার পর্বত চূড়ায় কিম জং উন
উত্তর
কোরিয়ার নেতা কিম জং উন শনিবার সকালে দেশটির সর্বোচ্চ পর্বত চূড়ায় ওঠেন।
দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যম রোববার এ কথা জানিয়েছে। উত্তর কোরিয়ার ২,৭৪৪
মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট পায়েকতু পর্বতে তুষারের স্তরের ওপর দিয়ে হেঁটে
বেড়িয়েছেন তৃতীয় প্রজন্মের এ নেতা। এসময় তার গায়ে ছিল কালো রঙের চিরাচরিত
পোশাক ও পায়ে চামড়ার কালো জুতা। খবর দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের। উত্তর কোরিয়ার
সরকারি পত্রিকা রোদং সিনমুনে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, কিম জং উন বরফাবৃত
পর্বতের চূড়ায় হাস্যোজ্জ্বল দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন
কর্মকর্তাও ছিলেন। পাহাড়ের চূড়ায় উঠে তিনি এর কাছে একটি স্মৃতিস্তম্ভ, একটি
শিক্ষা স্থাপনা, একটি নতুন হোটেল ও কয়েকটি বিশ্রামস্থল বানানোর নির্দেশ
দিয়েছেন। পায়েকতু ২,৭৪৪ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট একটি আগ্নেয় পর্বত। চীন
সীমান্তে এর অবস্থান। কোরীয় লোকগাথায় একে পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচনা করা
হয়। কিম পরিবারের বীরত্ব প্রচারেও এটি মূল ভূমিকা পালন করে আসছে। যেমন
রাষ্ট্রীয়ভাবে কিম জং উনের বাবা কিম জং ইলের যে জীবনী রয়েছে তাতে বলা আছে,
পায়েকতু পর্বতের চূড়ায় তার জন্ম। অনেক ইতিহাসবিদের মতে তার জন্ম রাশিয়ায়।
রোদং সিনমুনে জানায়, কিম জং উন প্রায়ই এ পর্বতের চূড়ায় ওঠেন। কিন্তু
শীতকালের মাঝামাঝি সময়ে তার এ পর্বতারোহন বিরল। উত্তর কোরিয়া ৩ সেপ্টেম্বর
তাদের ষষ্ঠ ও সর্ববৃহত্তম পরমাণু বোমার পরীক্ষা চালায়। দেশটির এ
ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রভাবে শনিবার দেশটিতে ভূমিকম্প হয়েছে বলে জানিয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস)। এদিন ক্ষুদ্রমাত্রার দুটি
ভূমিকম্প হয়েছে। ভিয়েনাভিত্তিক কম্প্রেহেনসিভ টেস্ট ব্যান ট্রিইটি
অর্গানাইজেশনের নির্বাহী প্রধান লাসিনা জারবো বলেন, ভূমিকম্প দুটি ছিল ২.৯ ও
২.৪ মাত্রার। ইউএসজিএস জানায়, উত্তর কোরিয়ার পুনগিয়ি-রি পরমাণু পরীক্ষা
কেন্দ্রের কাছে ভূমিকম্প দুটি অনুভূত হয়েছে। সেপ্টেম্বরের পরমাণু বোমা
পরীক্ষার প্রভাবে এ ভূ-কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের
ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের কর্মকর্তারা। এদিকে যুদ্ধ ঝুঁকি এড়াতে উত্তর
কোরিয়ার সঙ্গে সংলাপের দরজা খোলা রাখার প্রস্তাব দিয়েছে জাতিসংঘ। শনিবার
জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ায় বিরল সফরকালে দেশটির উচ্চপদস্থ
কর্মকর্তাদের কাছে এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন জাতিসংঘের রাজনীতিবিষয়ক
উপদেষ্টা জেফরি ফেল্টম্যান। জবাবে উত্তর কোরিয়াও জাতিসংঘের সঙ্গে নিয়মিত
যোগাযোগ স্থাপনে সম্মত হয়েছে। ফেল্টম্যান বলেন, ‘যুদ্ধ এড়াতে নিয়মিত
যোগাযোগ চালুর বিকল্প নেই। সাম্প্রতিক উত্তেজনা আন্তর্জাতিক মহলে আতঙ্ক
ছড়াচ্ছে এবং এটি শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। সবাই এর
শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়।’ ৫ ডিসেম্বর শুরু হওয়া চারদিনের বিরল সফরে
ফেল্টম্যান উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়ংসহ উচ্চপর্যায়ের
কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ৬ বছরের মধ্যে বিচ্ছিন্ন থাকা উত্তর কোরিয়ায়
জাতিসংঘের জ্যেষ্ঠ কোনো নেতার প্রথম সফর এটি। জানা গেছে, সফর শেষে
ফেল্টম্যান চীনের সঙ্গেও আলোচনা করেন।
No comments