প্রয়োজনে জেরুজালেমে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত মালয়েশিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের জবাবে জেরুজালেমে সেনা পাঠাতে
প্রস্তুত মালয়েশিয়া। এমন ঘোষণা দিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী
হিশামউদ্দিন হোসেন। বুধবার জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন
ট্রাম্প। এর প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে বাংলাদেশ সহ মুসলিম বিশ্ব। শুধু মুসলিম
বিশ্বই নয়, ইউরোপের অনেক দেশও প্রতিবাদে শরিক হয়েছে। তাই দৃশ্যত জেরুজালেম
যে ফিলিস্তিনের, মুসলিমদের ঐতিহ্য ধারণ করে তার পক্ষে সেখানে স্বেচ্ছায়
সেনা পাঠানোর জন্য প্রস্তুতির কথা জানিয়ে দিয়েছেন মালয়েশিয়ার
প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনবিসি। তারা দ্য মালয় মেইল
অনলাইনকে উদ্ধৃত করে এমন খবর প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, শনিবার এক বক্তব্যে
হিশামউদ্দিন হোসেন বলেছেন, প্রয়োজন হলে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার
ইন চিফের যেকোনো নির্দেশে সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত। অর্থাৎ প্রয়োজন হলে
তারা জেরুজালেমে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত এমনটাই জানান দিয়েছেন। উল্লেখ্য,
মালয়েশিয়া একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। দীর্ঘ সময় তারা স্বাধীন ফিলিস্তিন
রাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন দিয়ে আসছে। এই ফিলিস্তিন তাদের ভবিষ্যত রাষ্ট্রের
রাজধানী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে জেরুজালেমকে। এ নিয়েই ইসরাইলের সঙ্গে তাদের
দ্বন্দ্ব ঘোরতর। ফলে ফিলিস্তিন-ইসরাইল শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করা সম্ভব
হচ্ছে না। এই জেরুজালেম মুসলিমদের কাছে যেমন পবিত্র, ইহুদি, খ্রিস্টানদের
কাছেও তেমনি পবিত্র। ইসরাইলও তাদের রাজধানী দাবি করে জেরুজালেমকে। এ
ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন সহ বড় বড় শক্তিধর দেশগুলো সমাধানের সূত্র
খুঁজেতে গিয়ে গলদঘর্ম। কিন্তু কোনো সমাধানই বের করে আনা যায় নি।
যুক্তরাষ্ট্র দশকের পর দশক এ ইস্যুতে যে অবস্থান নিয়েছে তা হলো এ সমস্যা
সমাধান হতে হবে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে। কিন্তু গত
বুধবার সেই বৃত্ত ভেঙে ফেললেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি এতদিনের মার্কিন
নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে একতরফাভাবে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা
দিলেন। কিন্তু তার এ ঘোষণার প্রতি শুধু ইসরাইল বাদে অন্য কোনো দেশের
সমর্থন দৃশ্যত এখনও পাওয়া যায় নি। বিশেষ করে আরব লীগ, ওআইসি, মুসলিম বিশ্ব
সহ বড় বড় সংস্থা এমন ঘোষণা বাতিল করতে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আহ্বান
জানিয়েছে। তারা এ ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এরই প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়ার
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিশামউদ্দিন হোসেন ওই মন্তব্য করেছেন। এ ছাড়া ট্রাম্পের
ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক।
যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বোদ্ধা, বিশ্লেষক মনে করছেন ট্রাম্পের ওই ঘোষণায়
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সহিংসতা দেখা দেবে। অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে
পরিস্থিতি। পুরো অঞ্চলে দেখা দিতে পারে উগ্রপন্থার বিস্তার। এমন কি এর
প্রভাব পড়তে পারে বিশ্বজুড়ে। এতে মার্কিন স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
No comments