‘নাটক’ প্রমাণ করতে পুলিশই নাটক করছে
কবি-প্রাবন্ধিক
ফরহাদ মজহারের স্ত্রী ফরিদা আখতার বলেছেন, পুলিশ তাদের (ফরহাদ মজহার
দম্পতি) নিয়ে তামাশা করছে। স্বামী ফরহাদ মজহারের অপহরণের ঘটনাটি নাটক এবং
সাজানো প্রমাণ করতে গিয়ে উল্টো পুলিশই ‘নাটক’ করছে বলে দাবি করেন তিনি।
রোববার যুগান্তরের সঙ্গে আলাপকালে ফরিদা আখতার এ দাবি করেন। তিনি বলেন,
আদালতে দেয়া পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রিপোর্ট) প্রত্যাখ্যান করে
তিনি আদালতে আবেদন দিয়েছিলেন। কিন্তু আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়ায় এখন
তিনি উচ্চ আদালতে অন্য কোনো সংস্থাকে দিয়ে নতুন করে তদন্তের দাবি জানাবেন।
উচ্চ আদালতে তিনি সুবিচার পাবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন। তবে এসব অভিযোগ
অস্বীকার করেছে পুলিশ সদর দফতর।
রোববার পুলিশ সদর দফতরের সহকারী
মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস বলেন, সংবাদ সম্মেলন করে ফরহাদ
মজহার দম্পতি ঢাহা মিথ্যা বলেছেন। জোর করে স্বীকারোক্তি আদায়ের কোনো সুযোগ
নেই দাবি করে তিনি বলেন, আদালতে হাজিরের পর সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট
কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি রেকর্ডের সময়
সেখানে পুলিশ থাকে না। এছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে লিখে দেয়া কোনো কাগজ
জবানবন্দি হিসেবে আদালত গ্রহণ করার প্রশ্নই ওঠে না। সহকারী মহাপরিদর্শক
(এআইজি-মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস আরও বলেন, সরকারকে বিব্রত করার জন্য ফরহাদ
মজহার স্বেচ্ছায় ঘর ছেড়েছিলেন এবং অপহরণের গল্প রটিয়েছিলেন। শনিবার নিজ
বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কবি-প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমি নাটক
করিনি, আমাকে যা বলা হয়েছে, তাই করেছি। আদালতে দেয়া জবানবন্দি তার নয় দাবি
করে তিনি বলেন, ‘একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তারা নিজেরাই সেটি আমার
জবানবন্দি বলে চালিয়ে দিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়ার
জন্য তাকে লিখিত কপিসহ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়। ‘গুম’ করার
উদ্দেশ্যেই তাকে অপহরণ করা হয়েছিল দাবি করে ফরহাদ মজহার বলেন, আইনশৃঙ্খলা
বাহিনীর জোরালো ভূমিকার কারণে তিনি জীবন রক্ষা পেয়েছেন। চলতি বছরের ৩ জুলাই
ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শ্যামলীর রিং রোডের ১নং হক গার্ডেনের বাসা থেকে বের
হওয়ার পর নিখোঁজ হন ফরহাদ মজহার। ১৯ ঘণ্টা পর যশোরের অভয়নগরে হানিফ
পরিবহনের বাস থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। প্রায় ৩ মাস তদন্ত শেষে গোয়েন্দা
পুলিশ (ডিবি) ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করে চাঁদা দাবি করার অভিযোগে করা মামলার
চূড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রিপোর্ট) দাখিল করে। একই সঙ্গে মিথ্যা তথ্য দিয়ে
বিভ্রান্ত ও হয়রানির অভিযোগ এনে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের কছে
দণ্ডবিধির ২১১ ও ১০৯ ধারায় ফরহাদ মজহার ও তার স্ত্রী ফরিদা আক্তারের
বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের অনুমতি চান। বৃহস্পতিবার পুলিশের দেয়া প্রতিবেদন
প্রত্যাখ্যান করে মামলাটি পুনরায় তদন্তের আবেদন জানান ফরহাদ মজহারের স্ত্রী
ফরিদা আখতার। দু’পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ওই আবেদন নাকচ করে দেয়ার পর
শনিবার ওই ঘটনায় মুখ খোলেন ফরহাদ মজহার। নিজ বাসায় সাংবাদিকদের ডেকে
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি।
No comments