যেভাবে নিখোঁজ যেভাবে পাওয়া গেল, সব সময় চোখ বেঁধে রাখা হতো সালাহউদ্দিনের
১০ই
মার্চ গভীর রাত। উত্তরার একটি বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বিএনপির যুগ্ম
মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদকে। তার পরিবারের সদস্যরা এত দিন দাবি করে
আসছিলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাই তাকে ধরে নিয়ে গেছেন। ওই
বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীরাও একই তথ্য জানান। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী
বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল।
১২ই মে সকাল। মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতাল থেকে একটি ফোন আসে হাসিনা আহমেদের কাছে। তাকে বলা হয়, তার স্বামী সালাহউদ্দিন আহমেদ তার সঙ্গে কথা বলবেন। দুই মাস ধরে নিখোঁজ স্বামীর কণ্ঠ শুনতে পেরে আনন্দে উদ্বেল হাসিনা আহমেদ ছুটে যান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসায়। দলীয়প্রধানকে সালাহউদ্দিন আহমেদের খোঁজ পাওয়ার কথা জানিয়ে ওই বাসা থেকে বেরিয়ে আসেন। সাংবাদিকদেরও বলেন, স্বামীকে ফিরে পাওয়ার কথা। মুহূর্তের মধ্যে এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। তৈরি হয় চাঞ্চল্য। প্রশ্ন দেখা দেয়, এত দিন কোথায় ছিলেন তিনি। কিভাবেইবা গেলেন মেঘালয়ে। অমিতাভ ভট্টশালীর প্রতিবেদনে বিবিসি বাংলা জানায়, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তিনি কিভাবে মেঘালয়ে গিয়ে পৌঁছালেন সেই বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। ভারতের পুলিশ বলছে, মি. আহমেদকে শিলং শহরের বাসিন্দারা উদভ্রান্তের মতো ঘুরতে দেখার পর তারা বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন। কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথমে তাকে সেখানকার পোলো গ্রাউন্ড গলফ লিংক এলাকায় দেখা যায়। পরে তার মানসিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে তাকে একটি সরকারি মানসিক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। শিলং শহরের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট বিবেক সিয়াম বলেন, এক ব্যক্তি উদভ্রান্তের মতো ঘুরছেন- এ খবর পেয়েই তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও তিনি গুছিয়ে দিতে পারছিলেন না। তাই তাকে একটি মানসিক হাসপাতালে নেয়া হয়। পুলিশের ওই কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, তার ভারতে আসার কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। এখানে তিনি কি উদ্দেশ্যে এসেছেন, সেটা তাকে জেরা করার পরেই বোঝা যাবে। এখন তিনি অসুস্থ বলে জেরা করতে পারিনি।
এদিকে, অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউন, তাদের দিল্লি প্রতিনিধি রঞ্জন বসুর বরাতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলছে, আসলে সোমবার ভোর থেকেই এ এক অচেনা ব্যক্তি শিলংয়ের পুলিশকে যেভাবে নাজেহাল করে রেখেছেন, তেমন অভিজ্ঞতা তাদের আগে হয়নি বললেই চলে। যখন গলফ ক্লাবের সামনে অচেনা লোককে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন, তখন সেখান দিয়েই যাচ্ছিল পুলিশ পেট্রলের একটি জিপ। টহলদার বাহিনী লোকটিকে ধরে নিয়ে কাছেই শিলংয়ের প্যাসটিওর বিট হাউস থানাতে নিয়ে যাওয়ার পরেই নাটকের শুরু!
নাটক, কারণ ওই ভদ্রলোক থানায় গিয়েই বলতে শুরু করেন, ‘দেখুন আমি কিন্তু বাংলাদেশের একজন ভিআইপি। আমি সে দেশে ক্যাবিনেট মিনিস্টারও ছিলাম!’ এদিকে ভদ্রলোকের পকেটে একটা কাগজ পর্যন্ত নেই। কোন টাকা-পয়সা দূরে থাক, পকেটে একটা মানিব্যাগও নেই, ফলে যথারীতি শিলংয়ের পুলিশ প্রথমে তার কথা একেবারেই বিশ্বাস করেনি, পাগলের প্রলাপ বলেই উড়িয়ে দিয়েছিল। ‘আচ্ছা বুঝলাম আপনি বাংলাদেশে মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু বর্ডার পেরিয়ে আপনি শিলং অবধি এলেন কি করে?’ পুলিশের এ প্রশ্নের জবাবে ভদ্রলোক আবার ফ্যালফ্যাল করে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন, মুখে কোন কথা জোগায় না। ওনার অবস্থা দেখে থানাতেই সিদ্ধান্ত হয় ইনি নিশ্চয় মানসিক ভারসাম্যহীন আর তার পরই পুলিশ তাকে শিলংয়ের মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল অ্যান্ড নিউরোলজিক্যাল সায়েন্সেসে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করে। মিমহ্যানস শিলংয়ে মানসিক প্রতিবন্ধীর হাসপাতাল বলেই পরিচিত। সালাহউদ্দিন আহমেদের গতি হয় সেখানেই।
‘তবে একটা কথা কি, ভদ্রলোক বাংলাদেশী কি-না কিংবা সালাহউদ্দিন আহমেদ কিনা সেটা কিন্তু আমরা এখনও নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না। ওনার কাছে কোন কাগজপত্র নেই। ওর কোন আত্মীয়-পরিজন এসে ওকে এখনও চিহ্নিতও করেননি। ফলে আপাতত ওনাকে একজন বিদেশী নাগরিক বলে চিহ্নিত করে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করার জন্য ফরেনার্স অ্যাক্টে আমরা রীতিমাফিক মামলা রুজু করেছি’, জানাচ্ছিলেন পুলিশপ্রধান এম খারক্রাং।
তাহলে কিভাবে জানা গেল সালাহউদ্দিন আহমেদ শিলংয়ের হাসপাতালে ভর্তি আছেন? আসলে মিমহ্যানসে ডাক্তারদের চিকিৎসায় গতকাল রাত থেকেই অল্প অল্প করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার লক্ষণ দেখাতে শুরু করেন তিনি। তারপর গতকাল সকালে তিনি মিমহ্যানসের ডাক্তারদের জানান, ঢাকায় থাকা স্ত্রীর টেলিফোন নম্বর তার মনে পড়েছে, সেখানে তিনি ফোন করে কথা বলতে চান। এর পরই তিনি ঢাকায় স্ত্রী হাসিনা আহমেদকে ফোন করে জানান, তিনি ভাল আছেন, মেঘালয়ের একটি হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।
সোমবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ যখন শিলং গলফ ক্লাবের সামনে থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে, তখন তিনি কপর্দকশূন্য অবস্থায় থাকলেও তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তবে মিমহ্যানসের চিকিৎসকরা এদিন তাকে পরীক্ষা করে দেখেছেন তার হৃদযন্ত্রে কিছু দুর্বলতার লক্ষণ আছে। ফলে মানসিক হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নিয়ে এদিন বিকালে তাকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
কিন্তু সালাহউদ্দিন আহমেদকে উদ্ধারের রহস্যটা যে এখনও ধোঁয়াশায় ঘেরা, তা হলো তিনি শিলংয়ে উদয় হলেন কিভাবে? পুলিশ সুপার আমার কাছে স্বীকার করেছেন, ব্যাপারটা তাদেরও ধন্দে রেখেছে। আসলে শিলংয়ের সবচেয়ে কাছে বাংলাদেশ সীমান্তের ডাউকী সেটাও প্রায় চল্লিশ-বিয়াল্লিশ মাইল দূরে। প্রাথমিকভাবে মেঘালয় পুলিশ অনুমান করছে, রোববার রাতে সেই ডাউকীর কাছে সীমান্ত পেরিয়েই ভারতে ঢোকেন সালাহউদ্দিন আহমেদ কিংবা তাকে ঢুকিয়ে দেয়া হয়! তারপর সেখান থেকে কোন বাস বা ভাড়ার টেম্পোয় চেপে তিনি সোমবার ভোরে শিলংয়ে পৌঁছান এবং কিছুক্ষণ পর পুলিশের কাছে ধরা পড়েন।
কিন্তু এ সময়টাও তিনি আদৌ স্বাভাবিক বা প্রকৃতিস্থ অবস্থায় ছিলেন না। খুব জোরালো ইলেকট্রিক শক খেলে বা অন্য কোন শক থেরাপির মানুষের যেমন সাময়িক মস্তিষ্ক বৈকল্য হয়, তার মধ্যেও সে রকমই লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। মিমহ্যানসের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না-করার শর্তে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলেন, ওই রোগীকে সমপ্রতি ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়েছে বলেই তারা অনুমান করছেন। এখন সালাহউদ্দিন আহমেদের ব্যাপারটি নিয়ে মেঘালয়ের পুলিশ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। কিভাবে মামলা এগোবে এবং তাকে নিয়ে কি করা হবে মেঘালয় সরকার বিষয়টি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও কথাবার্তা বলছেন। তার পরিচয় সম্বন্ধে পুরোপুরি নিশ্চিত হলেই যোগাযোগ করা হবে বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গেও। খুব সহজে যে এ মামলার জট খুলবে না তা বোঝাই যাচ্ছে।
১২ই মে সকাল। মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতাল থেকে একটি ফোন আসে হাসিনা আহমেদের কাছে। তাকে বলা হয়, তার স্বামী সালাহউদ্দিন আহমেদ তার সঙ্গে কথা বলবেন। দুই মাস ধরে নিখোঁজ স্বামীর কণ্ঠ শুনতে পেরে আনন্দে উদ্বেল হাসিনা আহমেদ ছুটে যান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসায়। দলীয়প্রধানকে সালাহউদ্দিন আহমেদের খোঁজ পাওয়ার কথা জানিয়ে ওই বাসা থেকে বেরিয়ে আসেন। সাংবাদিকদেরও বলেন, স্বামীকে ফিরে পাওয়ার কথা। মুহূর্তের মধ্যে এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। তৈরি হয় চাঞ্চল্য। প্রশ্ন দেখা দেয়, এত দিন কোথায় ছিলেন তিনি। কিভাবেইবা গেলেন মেঘালয়ে। অমিতাভ ভট্টশালীর প্রতিবেদনে বিবিসি বাংলা জানায়, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তিনি কিভাবে মেঘালয়ে গিয়ে পৌঁছালেন সেই বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। ভারতের পুলিশ বলছে, মি. আহমেদকে শিলং শহরের বাসিন্দারা উদভ্রান্তের মতো ঘুরতে দেখার পর তারা বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন। কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথমে তাকে সেখানকার পোলো গ্রাউন্ড গলফ লিংক এলাকায় দেখা যায়। পরে তার মানসিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে তাকে একটি সরকারি মানসিক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। শিলং শহরের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট বিবেক সিয়াম বলেন, এক ব্যক্তি উদভ্রান্তের মতো ঘুরছেন- এ খবর পেয়েই তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও তিনি গুছিয়ে দিতে পারছিলেন না। তাই তাকে একটি মানসিক হাসপাতালে নেয়া হয়। পুলিশের ওই কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, তার ভারতে আসার কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। এখানে তিনি কি উদ্দেশ্যে এসেছেন, সেটা তাকে জেরা করার পরেই বোঝা যাবে। এখন তিনি অসুস্থ বলে জেরা করতে পারিনি।
এদিকে, অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউন, তাদের দিল্লি প্রতিনিধি রঞ্জন বসুর বরাতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলছে, আসলে সোমবার ভোর থেকেই এ এক অচেনা ব্যক্তি শিলংয়ের পুলিশকে যেভাবে নাজেহাল করে রেখেছেন, তেমন অভিজ্ঞতা তাদের আগে হয়নি বললেই চলে। যখন গলফ ক্লাবের সামনে অচেনা লোককে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন, তখন সেখান দিয়েই যাচ্ছিল পুলিশ পেট্রলের একটি জিপ। টহলদার বাহিনী লোকটিকে ধরে নিয়ে কাছেই শিলংয়ের প্যাসটিওর বিট হাউস থানাতে নিয়ে যাওয়ার পরেই নাটকের শুরু!
নাটক, কারণ ওই ভদ্রলোক থানায় গিয়েই বলতে শুরু করেন, ‘দেখুন আমি কিন্তু বাংলাদেশের একজন ভিআইপি। আমি সে দেশে ক্যাবিনেট মিনিস্টারও ছিলাম!’ এদিকে ভদ্রলোকের পকেটে একটা কাগজ পর্যন্ত নেই। কোন টাকা-পয়সা দূরে থাক, পকেটে একটা মানিব্যাগও নেই, ফলে যথারীতি শিলংয়ের পুলিশ প্রথমে তার কথা একেবারেই বিশ্বাস করেনি, পাগলের প্রলাপ বলেই উড়িয়ে দিয়েছিল। ‘আচ্ছা বুঝলাম আপনি বাংলাদেশে মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু বর্ডার পেরিয়ে আপনি শিলং অবধি এলেন কি করে?’ পুলিশের এ প্রশ্নের জবাবে ভদ্রলোক আবার ফ্যালফ্যাল করে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন, মুখে কোন কথা জোগায় না। ওনার অবস্থা দেখে থানাতেই সিদ্ধান্ত হয় ইনি নিশ্চয় মানসিক ভারসাম্যহীন আর তার পরই পুলিশ তাকে শিলংয়ের মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল অ্যান্ড নিউরোলজিক্যাল সায়েন্সেসে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করে। মিমহ্যানস শিলংয়ে মানসিক প্রতিবন্ধীর হাসপাতাল বলেই পরিচিত। সালাহউদ্দিন আহমেদের গতি হয় সেখানেই।
‘তবে একটা কথা কি, ভদ্রলোক বাংলাদেশী কি-না কিংবা সালাহউদ্দিন আহমেদ কিনা সেটা কিন্তু আমরা এখনও নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না। ওনার কাছে কোন কাগজপত্র নেই। ওর কোন আত্মীয়-পরিজন এসে ওকে এখনও চিহ্নিতও করেননি। ফলে আপাতত ওনাকে একজন বিদেশী নাগরিক বলে চিহ্নিত করে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করার জন্য ফরেনার্স অ্যাক্টে আমরা রীতিমাফিক মামলা রুজু করেছি’, জানাচ্ছিলেন পুলিশপ্রধান এম খারক্রাং।
তাহলে কিভাবে জানা গেল সালাহউদ্দিন আহমেদ শিলংয়ের হাসপাতালে ভর্তি আছেন? আসলে মিমহ্যানসে ডাক্তারদের চিকিৎসায় গতকাল রাত থেকেই অল্প অল্প করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার লক্ষণ দেখাতে শুরু করেন তিনি। তারপর গতকাল সকালে তিনি মিমহ্যানসের ডাক্তারদের জানান, ঢাকায় থাকা স্ত্রীর টেলিফোন নম্বর তার মনে পড়েছে, সেখানে তিনি ফোন করে কথা বলতে চান। এর পরই তিনি ঢাকায় স্ত্রী হাসিনা আহমেদকে ফোন করে জানান, তিনি ভাল আছেন, মেঘালয়ের একটি হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।
সোমবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ যখন শিলং গলফ ক্লাবের সামনে থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে, তখন তিনি কপর্দকশূন্য অবস্থায় থাকলেও তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তবে মিমহ্যানসের চিকিৎসকরা এদিন তাকে পরীক্ষা করে দেখেছেন তার হৃদযন্ত্রে কিছু দুর্বলতার লক্ষণ আছে। ফলে মানসিক হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নিয়ে এদিন বিকালে তাকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
কিন্তু সালাহউদ্দিন আহমেদকে উদ্ধারের রহস্যটা যে এখনও ধোঁয়াশায় ঘেরা, তা হলো তিনি শিলংয়ে উদয় হলেন কিভাবে? পুলিশ সুপার আমার কাছে স্বীকার করেছেন, ব্যাপারটা তাদেরও ধন্দে রেখেছে। আসলে শিলংয়ের সবচেয়ে কাছে বাংলাদেশ সীমান্তের ডাউকী সেটাও প্রায় চল্লিশ-বিয়াল্লিশ মাইল দূরে। প্রাথমিকভাবে মেঘালয় পুলিশ অনুমান করছে, রোববার রাতে সেই ডাউকীর কাছে সীমান্ত পেরিয়েই ভারতে ঢোকেন সালাহউদ্দিন আহমেদ কিংবা তাকে ঢুকিয়ে দেয়া হয়! তারপর সেখান থেকে কোন বাস বা ভাড়ার টেম্পোয় চেপে তিনি সোমবার ভোরে শিলংয়ে পৌঁছান এবং কিছুক্ষণ পর পুলিশের কাছে ধরা পড়েন।
কিন্তু এ সময়টাও তিনি আদৌ স্বাভাবিক বা প্রকৃতিস্থ অবস্থায় ছিলেন না। খুব জোরালো ইলেকট্রিক শক খেলে বা অন্য কোন শক থেরাপির মানুষের যেমন সাময়িক মস্তিষ্ক বৈকল্য হয়, তার মধ্যেও সে রকমই লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। মিমহ্যানসের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না-করার শর্তে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলেন, ওই রোগীকে সমপ্রতি ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়েছে বলেই তারা অনুমান করছেন। এখন সালাহউদ্দিন আহমেদের ব্যাপারটি নিয়ে মেঘালয়ের পুলিশ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। কিভাবে মামলা এগোবে এবং তাকে নিয়ে কি করা হবে মেঘালয় সরকার বিষয়টি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও কথাবার্তা বলছেন। তার পরিচয় সম্বন্ধে পুরোপুরি নিশ্চিত হলেই যোগাযোগ করা হবে বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গেও। খুব সহজে যে এ মামলার জট খুলবে না তা বোঝাই যাচ্ছে।
সব সময় চোখ বেঁধে রাখা হতো সালাহউদ্দিনের
দুই
মাস কোথায় ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ, কিভাবেই মেঘালয়ে গেলেন তিনি। এ প্রশ্ন
এখন সর্বত্র। নানা আলোচনা, নানা খবর। সাংবাদিকদের সঙ্গে এ পর্যন্ত খুব
বেশি কথা বলতে পারেননি ভারতে গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপির এই নেতা। একটি কথা
অবশ্য তিনি পরিষ্কার করেই বলেছেন, দুই মাস আগে তাকে উত্তরার একটি বাড়ি থেকে
অপহরণ করা হয়। কারা অপহরণ করেছে তাদের পরিচয়ের ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে
পারেননি। তবে দৈনিক প্রথম আলো’তে শিলং থেকে মানস চৌধুরীর লেখা প্রতিবেদনে
বলা হয়, পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কী করে এখানে
এলাম কিছুই জানি না। কিছু লোক চোখ বাঁধা অবস্থায় গাড়িতে করে আমাকে এখানে
ফেলে গেল। তারা কারা তা-ও জানি না।
সালাহউদ্দিন পুলিশকে বলেন, আমাকে ঢাকার উত্তরার বাসা থেকে অপহরণ করা হয়। তারা আমাকে বন্দী করে রেখেছিল। যারা আমাকে বন্দী করেছিল, তারা সব সময় চোখ বেঁধে রেখেছে। আমি কিছুই দেখতে পাইনি। তারা একটি গাড়িতে করে আমাকে নিয়ে আসে। এরপর ফেলে যায়। আমি কোথায় তার কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার কাছে সব অচেনা মনে হচ্ছে।
সালাহউদ্দিন পুলিশকে বলেন, আমাকে ঢাকার উত্তরার বাসা থেকে অপহরণ করা হয়। তারা আমাকে বন্দী করে রেখেছিল। যারা আমাকে বন্দী করেছিল, তারা সব সময় চোখ বেঁধে রেখেছে। আমি কিছুই দেখতে পাইনি। তারা একটি গাড়িতে করে আমাকে নিয়ে আসে। এরপর ফেলে যায়। আমি কোথায় তার কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার কাছে সব অচেনা মনে হচ্ছে।
No comments