রোহিঙ্গাদের জন্য দুই সন্তান নীতি মানবাধিকারের লঙ্ঘন
মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি বলেছেন, দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের কর্তৃপক্ষ মুসলিম রোহিঙ্গাদের সর্বোচ্চ দুটি সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে যে বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে, তা মানবাধিকারের পরিপন্থী। নতুন নীতি অনুযায়ী, ওই রাজ্যের মুসলিম পরিবারগুলো দুটির বেশি সন্তান নিতে পারবে না। বৌদ্ধদের সঙ্গে দফায় দফায় ভয়াবহ সহিংসতার পর উত্তেজনা কমাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। অং সান সু চি এই নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে বলেছেন, ‘এটি মানবাধিকারের পরিপন্থী।’ তিনি বলেন, ‘এ রকম বৈষম্য থাকা ভালো নয়। তা ছাড়া এটি মানবাধিকারের সঙ্গে যায় না।’ মিয়ানমারের মুসলিম সম্প্রদায়ের অধিকারের পক্ষে সম্ভবত এবারই প্রথম সক্রিয় প্রতিক্রিয়া জানালেন সু চি। গতকাল সোমবার ইয়াঙ্গুনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, নীতিটি বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না তা তিনি নিশ্চিত করতে পারছেন না। দুই সন্তান নীতি ছাড়াও বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে রাখাইনের দুই এলাকা বুথিডাউং ও মাউনডাউয়ে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই দুটি শহরের ৯৫ শতাংশ বাসিন্দাই মুসলিম। সরকারি এক কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এক সপ্তাহ আগে এসব পদক্ষেপ কার্যকর হয় বলে জানান রাখাইন রাজ্যের মুখপাত্র উইন মিয়াং। তিনি শনিবার জানান, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা প্রশমন এবং সংখ্যালঘু মুসলমানদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধে পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এই কমিশনকে। সহিংসতা এড়াতে নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যা দ্বিগুণ করারও পরামর্শ দিয়েছে কমিশন। উইন মিয়াং বলেন, রাখাইনদের চেয়ে রোহিঙ্গা মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১০ গুণ বেশি। অতিরিক্ত জনসংখ্যাই অস্থিরতার কারণ। তিনি বলেন, বহুবিবাহ ও দুটির বেশি সন্তান ঠেকাতেই এই আইন করা হয়েছে। রাজ্যের মুসলিম-অধ্যুষিত দুটি এলাকায় ইতিমধ্যে আইনটির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রাখাইন কর্তৃপক্ষের এই জনসংখ্যানীতিকে ‘জঘন্য অমানবিক’ বলে অভিহিত করেছে হিউমান রাইটস ওয়াচ। প্রতিষ্ঠানটি এই নীতিকে ‘সম্পূর্ণ মানবাধিকার পরিপন্থী’ বলে অভিহিত করেছে।
No comments