ক + লা = খাব by আনিসুল হক
মা ফলেষু কদাচন। ফল নাকি সব সময় পাওয়া যায় না। ফলের আশা না করেই তাই কাজ করে যেতে হয়। কিন্তু গ্রীষ্মকালে ফলের আশা কি আমরা খানিকটা করতে পারি না? আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, আনারস, কলার এইটাই তো মৌসুম। ফল বাজারে পাওয়া যাবে, টাকা থাকলে দেশি-বিদেশি যেকোনো ফলই বাজার থেকে কিনে আনা যায়, এমনকি মাঘ মাসেও পাওয়া যায় আম! এটা যেমন সত্য, তেমনি সত্য বাজারে ফরমালিন ছাড়া ফল আদৌ পাওয়া যাবে কি না, এই সন্দেহ আমাদের যাবে না! আমি একবার ফল কিনতে গিয়ে বিক্রেতাকে বললাম, ভাই, আমাকে কেমিক্যাল ছাড়া ফল দেন। তিনি বললেন, কেমিক্যাল ছাড়া কোনো ফল আমার দোকানে নাই। ফল কিনতে গিয়ে বিক্রেতাদের কাছ থেকে নানা রকম অপমানকর কথা আমি বহুবার হজম করেছি, কোনো জবাব দেওয়ার চেষ্টা করিনি। একবার হলো কি, হাতিরপুল বাজারে পেঁপে কিনতে গেছি। পেঁপে একটা বাছলাম, বললাম, কত দাম। দোকানি জানালেন, ১৩০ টাকা। আমি ১০০ টাকায় রফা করলাম।
তখন তিনি বললেন, আপনি ইচ্ছা করলে কেজি হিসেবে কিনতে পারেন।
আমি বললাম, কত করে কেজি।
তিনি বললেন, ৬০ টাকা।
আমি বললাম, ৫০ টাকা করে কেজি দেন।
উনি বললেন, আচ্ছা।
এবার ওজন করে দেখা গেল, তিন কেজি। তিনি বললেন, দেন দেড় শ টাকা।
আমি হেসে আগের হিসাবে ১০০ টাকা দিলাম। উনি বললেন, না, আপনি তো আগের হিসাবে নেন নাই। ওজন করে নিতে চেয়েছেন। আপনাকে দেড় শ টাকাই দিতে হবে।
আমি হেসে বললাম, তাহলে তো আমি নেব না।
তিনি বললেন, আপনার মতো কাস্টোমারের কাছে আমি পেঁপে বেচি না।
আমি হেসে বললাম, ধন্যবাদ।
প্রায় ১০ বছর আগের ঘটনা। এখনো ভুলতে পারি না। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে মনে হয়, বেটা আমাকে অপমান করে নাই তো?
যা বলছিলাম, রাসায়নিক ছাড়া ফল কি এই বাংলাদেশে কেউ বিক্রি করে?
ফলের মৌসুমে আমাদের রাস্তার ধারে কতগুলো বিশেষ দোকান গড়ে ওঠে। তাতে বড় বড় ব্যানারে লেখা থাকে, কেমিক্যালমুক্ত আমের বিশাল মেলা। এর আগে একবার ভ্রাম্যমাণ আদালত এসব মেলায় অভিযান চালিয়ে দেখেছে, মোটেও এসব কেমিক্যালমুক্ত নয়। এদের চেয়ে তো আমার সেই ফল দোকানদার বেশি সৎ, যিনি আমাকে বলেছিলেন তাঁর দোকানে কেমিক্যালমুক্ত কোনো ফল নাই।
তাঁর কাছ থেকে ফল কিনে আমি গান গাইতে গাইতে ফিরব, আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান।
আর আপনি যদি কেমিক্যালমুক্ত দোকান থেকে কেমিক্যালযুক্ত ফল কেনেন, তখন আপনি কী বলবেন?
তখন আপনি আকবর আলি খানের লেখা পরার্থপরতার অর্থনীতি গ্রন্থের শুয়োরের বাচ্চাদের অর্থনীতি প্রবন্ধের সেই কাহিনিটা মনে করতে পারেন। যেখানে একজন ইংরেজ কর্তাকে এক ভারতীয় বলেছিল, আমলারা আছে দুই ধরনের, এক ধরনের হলো যারা ঘুষ খায় আর কাজ করে, আরেক দল আছে শুয়োরের বাচ্চা, ঘুষ নেয়, কিন্তু কাজটা করে দেয় না।
আম নিয়ে পুরান ঢাকার পুরোনো কৌতুক দুটো পর পর বলে নিই।
আমওয়ালা আমের ঝুড়ি মাথায় নিয়ে যাচ্ছে।
ক্রেতা: মিয়া, কী আম?
বিক্রেতা: ল্যাংড়া।
ক্রেতা: সত্যি কি তোমার আম ল্যাংড়া?
বিক্রেতা: আম যদি ল্যাংড়াই না হইব, তাইলে কি আর মাথায় কইরা বইয়া লইয়া যাই?
ক্রেতা বললেন, কী মিয়া, তোমার আম তো ছোট?
বিক্রেতা বললেন, আপনি শুধু আমার আমের বাইরেরটা দেখলেন। ভেতরটা দেখবেন না? আমার আমের আঁটি ছোট।
সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছিলেন, একই কৌতুকের বিদেশি সংস্করণ হলো, ‘কী জন, আপনি নাকি রোজ দেরি করে অফিসে আসেন।’ ‘স্যার, আপনি শুধু আমার আসাটা দেখবেন, যাওয়াটা দেখবেন না? আমি রোজ অফিস থেকে তাড়াতাড়ি চলে যাই।’
এখন তো রাসায়নিকের কারণে লিচুতে পোকা থাকে না। আগে আম আর লিচুতে খুব পোকা দেখা যেত। সাদা সাদা পোকা। বেশ নড়াচড়া করতে পারত। ওই সময় পোকা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় ছিল রাতের অন্ধকারে ফল খাওয়া। তখন আর ফলে পোকা থাকত না।
রবীন্দ্রনাথকে নাকি একবার গান্ধীজি বলেছিলেন, আপনি তেলে ভাজা খাচ্ছেন। আপনি জানেন, তেলে ভাজা মানে বিষ খাওয়া?
রবীন্দ্রনাথ তখন ঘোরতর বৃদ্ধ, হেসে বললেন, এই বিষ খেয়েই এত বছর বেঁচে আছি।
কাজেই ফরমালিন নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করে কী করবেন? এই ফরমালিন খেয়েই তো আমরা এত বছর বেঁচে আছি। তবে ফরমালিন আর রাসায়নিকে শরীরের অনেক ক্ষতি হয়। আজকাল খুব ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষজন, এর সঙ্গে নিশ্চয়ই আমাদের খাদ্যের একটা সম্পর্ক আছে। কাজেই আমাদের ফল উৎপাদককে বলি, ফল পাকানোর কেমিক্যাল কেন দেন? কাঁচা ফল কিনে আনব। অসুবিধা কী?
আর ফরমালিন যাঁরা দেন, তাঁদের বলি, দেবেন না।
আর যাঁরা ফলের গায়ে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন, তাঁদের বলি, কতটা কীটনাশক কত দিন আগে দেওয়া যাবে, তার একটা বিধিনিষেধ আছে, ওটা মেনে চলুন। গত বছর দিনাজপুরে গাছের নিচে পড়ে থাকা লিচু খেয়ে অনেক বাচ্চা মারা যাওয়ার খবর এসেছিল, মনে আছে?
আমি জানি, এইসব কথা কেউ শুনবে না। ফরমালিন ছাড়া আম কিনে ট্রাকে তুলে বাজারে আনার আগেই যদি পচে যায়, তখন লোকসানের টাকাটা কে দেবে ব্যাপারীকে? কাজেই এই সমস্যার একটা বৈজ্ঞানিক সমাধান আমাদের খুঁজতে হবে। উন্নত দেশগুলোয় ফল কীভাবে আনা-নেওয়া, বাজারজাত করা হয়! আমরা সেটা দেখে সেই প্রযুক্তি আমাদের ফলফলাদি শাকসবজিতে প্রয়োগ করতে পারি।
থাক। অনেক কথা হলো। কোত্থেকে কোথায় চলেও গেলাম। কথা হচ্ছিল কর্মফল নিয়ে। প্রবাদ আছে, যেমন কর্ম, তেমন ফল। স্কুলে যেমন বার্ষিক পরীক্ষার শেষে একটা করে ফল আমাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। প্রগ্রেস রিপোর্ট। আমাদের সরকারগুলোও পাঁচ বছর পরে একটা করে প্রগ্রেস রিপোর্ট হাতে পায়। নির্বাচনের ফল। কিন্তু নির্বাচনের ফলকেও প্রথমে কীটনাশক দিয়ে পোকামুক্ত করে কার্বাইড দিয়ে পাকিয়ে শেষে ফরমালিন দিয়ে স্থায়ী করা যায়। এটাকে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বলে। সেটা ১৯৮০-এর দশকে দেখেছি, ’৯০-এর পরে দু-একটা উপনির্বাচনে দেখেছি, কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে তা সম্ভব হয়নি। এবার কী হবে, তা নিয়েই যত কাণ্ড। আম আর ছালা দুটোই রেডি করা হচ্ছে, দেখা যাক, আম ও ছালার কোনটা কোন দিকে যায়।
অনেকেই নাকি গাছে কাঁঠাল দেখে গোঁফে তেল দিচ্ছে। অনেকেই নাকি বলছে, আর অন্যের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেতে দেওয়া হবে না। কেউ কেউ নাকি প্রস্তুত হচ্ছে, রথ দেখতে গিয়ে কলা বেচে আসবে। আমরা এত কথা বলব না।
শিক্ষিকা বললেন, বলো তো, ক আর ল আকারে লা। কী হয়?
ছাত্র উত্তর দিল: খাব।
আমরা কলা খাই। মনে মনে।
আর ওঁরা খান গোগ্রাসে। কী রকম খাওয়ার শব্দ হচ্ছে—শুনতে পাচ্ছেন? ওঁরা খাচ্ছেন। গোগ্রাসে গিলছেন। সেই শব্দ শোনা যাচ্ছে—খাই খাই, খাই খাই...
আনিসুল হক: সাহিত্যিক ওসাংবাদিক।
তখন তিনি বললেন, আপনি ইচ্ছা করলে কেজি হিসেবে কিনতে পারেন।
আমি বললাম, কত করে কেজি।
তিনি বললেন, ৬০ টাকা।
আমি বললাম, ৫০ টাকা করে কেজি দেন।
উনি বললেন, আচ্ছা।
এবার ওজন করে দেখা গেল, তিন কেজি। তিনি বললেন, দেন দেড় শ টাকা।
আমি হেসে আগের হিসাবে ১০০ টাকা দিলাম। উনি বললেন, না, আপনি তো আগের হিসাবে নেন নাই। ওজন করে নিতে চেয়েছেন। আপনাকে দেড় শ টাকাই দিতে হবে।
আমি হেসে বললাম, তাহলে তো আমি নেব না।
তিনি বললেন, আপনার মতো কাস্টোমারের কাছে আমি পেঁপে বেচি না।
আমি হেসে বললাম, ধন্যবাদ।
প্রায় ১০ বছর আগের ঘটনা। এখনো ভুলতে পারি না। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে মনে হয়, বেটা আমাকে অপমান করে নাই তো?
যা বলছিলাম, রাসায়নিক ছাড়া ফল কি এই বাংলাদেশে কেউ বিক্রি করে?
ফলের মৌসুমে আমাদের রাস্তার ধারে কতগুলো বিশেষ দোকান গড়ে ওঠে। তাতে বড় বড় ব্যানারে লেখা থাকে, কেমিক্যালমুক্ত আমের বিশাল মেলা। এর আগে একবার ভ্রাম্যমাণ আদালত এসব মেলায় অভিযান চালিয়ে দেখেছে, মোটেও এসব কেমিক্যালমুক্ত নয়। এদের চেয়ে তো আমার সেই ফল দোকানদার বেশি সৎ, যিনি আমাকে বলেছিলেন তাঁর দোকানে কেমিক্যালমুক্ত কোনো ফল নাই।
তাঁর কাছ থেকে ফল কিনে আমি গান গাইতে গাইতে ফিরব, আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান।
আর আপনি যদি কেমিক্যালমুক্ত দোকান থেকে কেমিক্যালযুক্ত ফল কেনেন, তখন আপনি কী বলবেন?
তখন আপনি আকবর আলি খানের লেখা পরার্থপরতার অর্থনীতি গ্রন্থের শুয়োরের বাচ্চাদের অর্থনীতি প্রবন্ধের সেই কাহিনিটা মনে করতে পারেন। যেখানে একজন ইংরেজ কর্তাকে এক ভারতীয় বলেছিল, আমলারা আছে দুই ধরনের, এক ধরনের হলো যারা ঘুষ খায় আর কাজ করে, আরেক দল আছে শুয়োরের বাচ্চা, ঘুষ নেয়, কিন্তু কাজটা করে দেয় না।
আম নিয়ে পুরান ঢাকার পুরোনো কৌতুক দুটো পর পর বলে নিই।
আমওয়ালা আমের ঝুড়ি মাথায় নিয়ে যাচ্ছে।
ক্রেতা: মিয়া, কী আম?
বিক্রেতা: ল্যাংড়া।
ক্রেতা: সত্যি কি তোমার আম ল্যাংড়া?
বিক্রেতা: আম যদি ল্যাংড়াই না হইব, তাইলে কি আর মাথায় কইরা বইয়া লইয়া যাই?
ক্রেতা বললেন, কী মিয়া, তোমার আম তো ছোট?
বিক্রেতা বললেন, আপনি শুধু আমার আমের বাইরেরটা দেখলেন। ভেতরটা দেখবেন না? আমার আমের আঁটি ছোট।
সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছিলেন, একই কৌতুকের বিদেশি সংস্করণ হলো, ‘কী জন, আপনি নাকি রোজ দেরি করে অফিসে আসেন।’ ‘স্যার, আপনি শুধু আমার আসাটা দেখবেন, যাওয়াটা দেখবেন না? আমি রোজ অফিস থেকে তাড়াতাড়ি চলে যাই।’
এখন তো রাসায়নিকের কারণে লিচুতে পোকা থাকে না। আগে আম আর লিচুতে খুব পোকা দেখা যেত। সাদা সাদা পোকা। বেশ নড়াচড়া করতে পারত। ওই সময় পোকা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় ছিল রাতের অন্ধকারে ফল খাওয়া। তখন আর ফলে পোকা থাকত না।
রবীন্দ্রনাথকে নাকি একবার গান্ধীজি বলেছিলেন, আপনি তেলে ভাজা খাচ্ছেন। আপনি জানেন, তেলে ভাজা মানে বিষ খাওয়া?
রবীন্দ্রনাথ তখন ঘোরতর বৃদ্ধ, হেসে বললেন, এই বিষ খেয়েই এত বছর বেঁচে আছি।
কাজেই ফরমালিন নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করে কী করবেন? এই ফরমালিন খেয়েই তো আমরা এত বছর বেঁচে আছি। তবে ফরমালিন আর রাসায়নিকে শরীরের অনেক ক্ষতি হয়। আজকাল খুব ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষজন, এর সঙ্গে নিশ্চয়ই আমাদের খাদ্যের একটা সম্পর্ক আছে। কাজেই আমাদের ফল উৎপাদককে বলি, ফল পাকানোর কেমিক্যাল কেন দেন? কাঁচা ফল কিনে আনব। অসুবিধা কী?
আর ফরমালিন যাঁরা দেন, তাঁদের বলি, দেবেন না।
আর যাঁরা ফলের গায়ে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন, তাঁদের বলি, কতটা কীটনাশক কত দিন আগে দেওয়া যাবে, তার একটা বিধিনিষেধ আছে, ওটা মেনে চলুন। গত বছর দিনাজপুরে গাছের নিচে পড়ে থাকা লিচু খেয়ে অনেক বাচ্চা মারা যাওয়ার খবর এসেছিল, মনে আছে?
আমি জানি, এইসব কথা কেউ শুনবে না। ফরমালিন ছাড়া আম কিনে ট্রাকে তুলে বাজারে আনার আগেই যদি পচে যায়, তখন লোকসানের টাকাটা কে দেবে ব্যাপারীকে? কাজেই এই সমস্যার একটা বৈজ্ঞানিক সমাধান আমাদের খুঁজতে হবে। উন্নত দেশগুলোয় ফল কীভাবে আনা-নেওয়া, বাজারজাত করা হয়! আমরা সেটা দেখে সেই প্রযুক্তি আমাদের ফলফলাদি শাকসবজিতে প্রয়োগ করতে পারি।
থাক। অনেক কথা হলো। কোত্থেকে কোথায় চলেও গেলাম। কথা হচ্ছিল কর্মফল নিয়ে। প্রবাদ আছে, যেমন কর্ম, তেমন ফল। স্কুলে যেমন বার্ষিক পরীক্ষার শেষে একটা করে ফল আমাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। প্রগ্রেস রিপোর্ট। আমাদের সরকারগুলোও পাঁচ বছর পরে একটা করে প্রগ্রেস রিপোর্ট হাতে পায়। নির্বাচনের ফল। কিন্তু নির্বাচনের ফলকেও প্রথমে কীটনাশক দিয়ে পোকামুক্ত করে কার্বাইড দিয়ে পাকিয়ে শেষে ফরমালিন দিয়ে স্থায়ী করা যায়। এটাকে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বলে। সেটা ১৯৮০-এর দশকে দেখেছি, ’৯০-এর পরে দু-একটা উপনির্বাচনে দেখেছি, কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে তা সম্ভব হয়নি। এবার কী হবে, তা নিয়েই যত কাণ্ড। আম আর ছালা দুটোই রেডি করা হচ্ছে, দেখা যাক, আম ও ছালার কোনটা কোন দিকে যায়।
অনেকেই নাকি গাছে কাঁঠাল দেখে গোঁফে তেল দিচ্ছে। অনেকেই নাকি বলছে, আর অন্যের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেতে দেওয়া হবে না। কেউ কেউ নাকি প্রস্তুত হচ্ছে, রথ দেখতে গিয়ে কলা বেচে আসবে। আমরা এত কথা বলব না।
শিক্ষিকা বললেন, বলো তো, ক আর ল আকারে লা। কী হয়?
ছাত্র উত্তর দিল: খাব।
আমরা কলা খাই। মনে মনে।
আর ওঁরা খান গোগ্রাসে। কী রকম খাওয়ার শব্দ হচ্ছে—শুনতে পাচ্ছেন? ওঁরা খাচ্ছেন। গোগ্রাসে গিলছেন। সেই শব্দ শোনা যাচ্ছে—খাই খাই, খাই খাই...
আনিসুল হক: সাহিত্যিক ওসাংবাদিক।
No comments