রোগীর সেবাই মাকসুদুরের নেশা
রোগীকে
সুস্থ করে তুলতে বা বাঁচাতে শুধু চিকিৎসকেরই ভূমিকা থাকে না। এতে জোরালো
ভূমিকা রাখেন নার্স, আয়া ও ওয়ার্ড বয়রাও। তবে, সবার শুরুতে অবদান থাকে একজন
অ্যাম্বুলেন্স চালকের। তার কারণেই একজন আশঙ্কাজনক রোগীর দ্রুত চিকিৎসা
করার সুযোগ পান চিকিৎসক ও নার্স। এদের মধ্যে অন্যতম বরগুনা জেনারেল
হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. মাকসুদুর রহমান (৪১)। মাকসুদের বাড়ি
ভোলার মনপুরা উপজেলার আন্দিরপাড় এলাকায়। ২০০৪ সালে স্বাস্থ্য বিভাগের একজন
অ্যাম্বুলেন্স চালক হিসেবে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দেন।
এরপর দীর্ঘ ১৫ বছরের চাকরি জীবনে তিনি চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন ভোলার
সিভিল সার্জন অফিস, দৌলতখান ও তজুমুদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
এরপর পাঁচ বছর আগে বদলি হন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে। এরপর থেকে বরগুনার
রোগীদের উন্নত চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন তিনি।
সম্প্রতি এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. মাকসুদুর রহমানের। তিনি বলেন, একজন মুমূর্ষু রোগীকে উন্নত চিকিৎসা সেবা পাইয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও অবদান রয়েছে আমাদের। আমাদের সামান্য এ অবদানের জন্য যখন একজন রোগী আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন তখন পৃথিবীতে এর থেকে ভালো লাগার বিষয় আমার কাছে আর নেই। দীর্ঘ চাকরি জীবনে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন তিনি। হয়েছেন অনেক হৃদয়বিদারক ঘটনারও সাক্ষী। আবার রোগী পরিবহন করতে গিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখিও হয়েছিলেন দু’দুবার।
মাকসুদ বলেন, বছর খানেক আগে বরগুনার বাবুগঞ্জ এলাকার অসুস্থ এক কিশোরীকে নিয়ে বরিশাল যাচ্ছিলেন তিনি। ১২-১৩ বছরের মেয়েটিকে হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে উঠানোর সময়ই অসুস্থ মেয়েটির মুখ দেখে মায়ায় জড়িয়ে যান তিনি। মনে মনে ভাবেন, ‘না জানি মেয়েটির কত না কষ্টই হচ্ছে। আমারওতো এমন একটি সন্তান আছে।’ এমনটি ভাবতে ভাবতে আঁকাবাঁকা আর ভাঙা রাস্তা দিয়ে বরগুনার গৌরীচন্না পর্যন্ত সবেমাত্র পৌঁছেছে তার অ্যাম্বুলেন্স। এর পরপরই হঠাৎ করে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে মেয়েটি। এরপর তিনি গাড়ি থামিয়ে মেয়েটিকে নিজ হাতে অক্সিজেন পড়িয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো যায়নি মেয়েটিকে। তার মৃত্যুর বিষয়টি স্বজনদের আগেই বুঝে ফেলেছিলেন তিনি। তখনই শুরু করেন হাউমাউ করে কান্না। তার কান্না দেখে কাঁদা শুরু করেন মেয়েটির স্বজনরাও। এরপর জড়ো হয় আশপাশের মানুষ।
মাকসুদুর রহমান জানান, বছর তিনেক আগে একবার প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যে এক মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে বরিশাল যাচ্ছিলেন তিনি। ঝড়ের তীব্রতায় যখন পথ দেখা দুষ্কর, তখনও বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে চলছিল তার অ্যাম্বুলেন্স। পথিমধ্যে অ্যাম্বুলেন্সটি যখন মহিষকাটা এলাকায় পৌঁছে, তখনই একটি মাঝারি আকারের গাছ উপড়ে পড়ে অ্যাম্বুলেন্সের উপর। এতে অ্যাম্বুলেন্সটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গাড়িতে থাকা রোগী ও তার স্বজনরা অক্ষত থাকলেও মাথায় গুরুতর আঘাত পান তিনি। পরে ঝড় থামলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় অ্যাম্বুলেন্সের উপর থেকে গাছ সরিয়ে আহতাবস্তায় অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী পৌঁছে দেন তিনি। তিনি বলেন, বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল থেকে বরগুনা-বাকেরগঞ্জ সড়ক হয়ে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বরিশাল যেতে হয়। কখনো কখনো দিনে দু’বার বরিশাল যেতে হয় আমাকে। ঝড় বৃষ্টি, সকাল দুপুর নেই, কখনো কখনো গভীর রাতেও রোগী নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হয়। তবে, আমার যখনই ডাক পড়ে, কখনই অনীহা প্রকাশ করি না। যত কষ্টই হোক, একজন মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে বেরিয়ে পড়ি।
ব্যক্তিগত জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক মাকসুদ রহমান। ১১ বছর বয়সী ছেলের নাম আবু বকর ছিদ্দিক আর সাত বছর বয়সী মেয়ের নাম বিবি আছিয়া। তারা দু’জনেই বরগুনার একটি শিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত।
সম্প্রতি এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. মাকসুদুর রহমানের। তিনি বলেন, একজন মুমূর্ষু রোগীকে উন্নত চিকিৎসা সেবা পাইয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও অবদান রয়েছে আমাদের। আমাদের সামান্য এ অবদানের জন্য যখন একজন রোগী আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন তখন পৃথিবীতে এর থেকে ভালো লাগার বিষয় আমার কাছে আর নেই। দীর্ঘ চাকরি জীবনে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন তিনি। হয়েছেন অনেক হৃদয়বিদারক ঘটনারও সাক্ষী। আবার রোগী পরিবহন করতে গিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখিও হয়েছিলেন দু’দুবার।
মাকসুদ বলেন, বছর খানেক আগে বরগুনার বাবুগঞ্জ এলাকার অসুস্থ এক কিশোরীকে নিয়ে বরিশাল যাচ্ছিলেন তিনি। ১২-১৩ বছরের মেয়েটিকে হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে উঠানোর সময়ই অসুস্থ মেয়েটির মুখ দেখে মায়ায় জড়িয়ে যান তিনি। মনে মনে ভাবেন, ‘না জানি মেয়েটির কত না কষ্টই হচ্ছে। আমারওতো এমন একটি সন্তান আছে।’ এমনটি ভাবতে ভাবতে আঁকাবাঁকা আর ভাঙা রাস্তা দিয়ে বরগুনার গৌরীচন্না পর্যন্ত সবেমাত্র পৌঁছেছে তার অ্যাম্বুলেন্স। এর পরপরই হঠাৎ করে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে মেয়েটি। এরপর তিনি গাড়ি থামিয়ে মেয়েটিকে নিজ হাতে অক্সিজেন পড়িয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো যায়নি মেয়েটিকে। তার মৃত্যুর বিষয়টি স্বজনদের আগেই বুঝে ফেলেছিলেন তিনি। তখনই শুরু করেন হাউমাউ করে কান্না। তার কান্না দেখে কাঁদা শুরু করেন মেয়েটির স্বজনরাও। এরপর জড়ো হয় আশপাশের মানুষ।
মাকসুদুর রহমান জানান, বছর তিনেক আগে একবার প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যে এক মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে বরিশাল যাচ্ছিলেন তিনি। ঝড়ের তীব্রতায় যখন পথ দেখা দুষ্কর, তখনও বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে চলছিল তার অ্যাম্বুলেন্স। পথিমধ্যে অ্যাম্বুলেন্সটি যখন মহিষকাটা এলাকায় পৌঁছে, তখনই একটি মাঝারি আকারের গাছ উপড়ে পড়ে অ্যাম্বুলেন্সের উপর। এতে অ্যাম্বুলেন্সটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গাড়িতে থাকা রোগী ও তার স্বজনরা অক্ষত থাকলেও মাথায় গুরুতর আঘাত পান তিনি। পরে ঝড় থামলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় অ্যাম্বুলেন্সের উপর থেকে গাছ সরিয়ে আহতাবস্তায় অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী পৌঁছে দেন তিনি। তিনি বলেন, বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল থেকে বরগুনা-বাকেরগঞ্জ সড়ক হয়ে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বরিশাল যেতে হয়। কখনো কখনো দিনে দু’বার বরিশাল যেতে হয় আমাকে। ঝড় বৃষ্টি, সকাল দুপুর নেই, কখনো কখনো গভীর রাতেও রোগী নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হয়। তবে, আমার যখনই ডাক পড়ে, কখনই অনীহা প্রকাশ করি না। যত কষ্টই হোক, একজন মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে বেরিয়ে পড়ি।
ব্যক্তিগত জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক মাকসুদ রহমান। ১১ বছর বয়সী ছেলের নাম আবু বকর ছিদ্দিক আর সাত বছর বয়সী মেয়ের নাম বিবি আছিয়া। তারা দু’জনেই বরগুনার একটি শিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত।
No comments