কিশোরগঞ্জে আট বছরে বজ্রপাতে নিহত ১২০ by আশরাফুল ইসলাম
কিশোরগঞ্জে
২০১১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গত সাত বছরে বজ্রপাতে ১০৮ জনের প্রাণহানির
ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া চলতি বছরের ৩রা মে পর্যন্ত বজ্রপাতে আরো ১২ জনের
প্রাণহানির ঘটেছে। এই আট বছরে মোট ১২০ জনের প্রাণহানি ছাড়াও অন্তত
সহস্রাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। মানবজমিন-এর নিজস্ব অনুসন্ধানে এই
পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। তবে হতাহতের এই সংখ্যা আরো বেশি বলে ধারণা করা
হচ্ছে। হাওর অধ্যুষিত এই জেলায় বৃষ্টির সঙ্গে নিয়মিত বজ্রপাতে এই হতাহতের
ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বছরওয়ারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৩ ও ২০১৬ সালে এ জেলায় বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ওই দুই বছরে ২২ জন করে মোট ৪৪ জন নিহত হওয়া ছাড়াও অসংখ্য মানুষ বজ্রপাতের শিকার হয়ে আহত হন। এছাড়া ২০১৭ সালে ১৮ জন, ২০১১ সালে ১৬ জন, ২০১৫ সালে ১৩ জন, ২০১২ সালে ১০ জন এবং ২০১৪ সালে ৭ জন বজ্রপাতে নিহত হন।
উপজেলাওয়ারি হিসেবে দেখা গেছে, জেলার মধ্যে বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে ইটনা উপজেলায়। ২০১১ সাল থেকে এই পর্যন্ত ইটনায় উপজেলায় বজ্রপাতে মোট ২৪ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এরপরে রয়েছে নিকলী উপজেলা। নিকলী উপজেলায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে ১৯ জনের। এরপরে মিঠামইন উপজেলায় বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন ১৫ জন। অষ্টগ্রাম উপজেলায় ১৪ জন। করিমগঞ্জ উপজেলায় নিহত হয়েছেন ১০ জন, বাজিতপুর উপজেলায় নিহত হয়েছেন ৯ জন, তাড়াইল উপজেলায় মারা গেছেন ৭ জন। কটিয়াদী উপজেলায় প্রাণহানি হয়েছে ছয় জনের। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় বজ্রপাতে মারা গেছেন পাঁচ জন। পাকুন্দিয়া উপজেলায় মারা গেছেন চারজন। হোসেনপুর উপজেলায় বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। কুলিয়ারচর ও ভৈরব উপজেলায় দুইজন করে মোট চারজন বজ্রপাতে মারা গেছেন।
অনুসন্ধান ও গবেষণা দেখা গেছে, জেলার সম্পূর্ণ হাওর অধ্যুষিত উপজেলাগুলো হচ্ছে- ইটনা, অষ্টগ্রাম, মিঠামইন ও নিকলী। বজ্রপাতের প্রাণহানির ঘটনা সেখানেই বেশি ঘটছে। এছাড়া করিমগঞ্জ, কটিয়াদী, বাজিতপুর, তাড়াইল, ভৈরব ও কুলিয়ারচর উপজেলার অংশবিশেষ হাওর এলাকায় অবস্থিত। সেসব স্থানেও বজ্রপাতে মানুষ হতাহত হচ্ছে। বজ্রপাতে হতাহতদের বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে হাওরে ধান কাটতে গিয়ে, ধান সংগ্রহ করতে গিয়ে, জমিতে কাজ করতে গিয়ে কিংবা মাছ ধরতে গিয়ে। ফলে বজ্রপাত ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে হাওরের কৃষক, কৃষি শ্রমিক এবং জেলেদের মাঝে। এবারের বোরো মৌসুমে ধান কাটার শ্রমিক সংকটের পেছনে বজ্রপাত ভীতি কাজ করেছে বলে কৃষক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
চলতি বছরে ব্রজপাতে কিশোরগঞ্জ জেলায় মোট ১২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তাদের মধ্যে মিঠামইনে পাঁচজন, বাজিতপুরে দুইজন এবং ইটনা, অষ্টগ্রাম, পাকুন্দিয়া, নিকলী ভৈরবে একজন করে মারা গেছেন। এর মধ্যে ভৈরবে গত ৩০শে মার্চ ভবানীপুর গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে আলমগীর (২৫), মিঠামইনে গত ৫ই কাটখাল গ্রামের হযরত আলীর ছেলে দ্বীন ইসলাম (৩৫) ও নয়ানগর গ্রামের আলতাব আলীর ছেলে আহম্মদ আলী (৪৫), ইটনায় গত ১১ই এপ্রিল দীঘিরপাড় পাথারহাটির আলী মিয়ার স্ত্রী দেলোয়ারা আক্তার (২২), অষ্টগ্রামে গত ১৭ই এপ্রিল বড়াইচর গ্রামের হেলিম মিয়ার ছেলে ঈমান হোসেন (১২), বাজিতপুরে গত ২২শে এপ্রিল নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টার আব্দুল মজিদের ছেলে মো. আব্দুর রাশিদ (৩৫) ও বাজিতপুর উপজেলার বাহেরবালি গ্রামের ছামেদ মিয়ার ছেলে তৌহিদ মিয়া (২৭), মিঠামইনে গত ২২শে এপ্রিল বৈরাটি ইউনিয়নের ভুরভুড়ি গ্রামের ফরহাদ চৌধুরীর স্ত্রী রূপচাঁন বেগম (৬০), মিঠামইনেই গত ২৪শে এপ্রিল রহমান (৫৫) ও আলীম উদ্দিন (৪০), পাকুন্দিয়ায় গত ২৬শে এপ্রিল পাটুয়াভাঙ্গা দকদিগা গ্রামের আশরাফ উদ্দিনের ছেলে জসিম উদ্দিন (৩৫) এবং সর্বশেষ গত ২রা মে নিকলীতে দামপাড়া ইউনিয়নের শেখ নবীনপুর গ্রামের নীল মামুদের ছেলে মো. আলী আকবর (৩৫) মারা যান।
এদিকে ক্রমাগত বজ্রপাতের ঘটনা বাড়তে থাকায় ২০১৬ সালের ১৭ই মে বজ্রপাতকে ‘দুর্যোগ’ হিসেবে ঘোষণা দেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। বজ্রপাতে নিহতের পরিবার ও আহতদের সরকারিভাবে অনুদান সহায়তাও দেয়া হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে তেমন প্রচারণা না থাকায় বজ্রপাতে নিহতদের পরিবার ও আহতদের অনেকেই এই সরকারি অনুদান সহায়তা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ কারণে বজ্রপাতে হতাহতের সঠিক পরিসংখ্যানও প্রশাসনের কাছে পাওয়া যায় না।
তবে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামীল জানান, বজ্রপাতে কোন নিহতের খবর পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দিচ্ছে। এছাড়া বজ্রপাত থেকে রক্ষায় গণসচেতনতামূলক কর্মসূচি হিসেবে এক মাস আগে থেকে মাইকিং করে প্রচারণা, লিফলেট বিতরণ, মসজিদে আলোচনা ও গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বজ্রপাত প্রতিরোধ কর্মসূচির আওতায় এ জেলায় ইতিমধ্যে ১৬ হাজার ১৫০টি তালগাছের চারা লাগানো হয়েছে এবং এ বছর আরো লাগানো হবে বলেও তরফদার মো. আক্তার জামীল জানান।
বছরওয়ারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৩ ও ২০১৬ সালে এ জেলায় বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ওই দুই বছরে ২২ জন করে মোট ৪৪ জন নিহত হওয়া ছাড়াও অসংখ্য মানুষ বজ্রপাতের শিকার হয়ে আহত হন। এছাড়া ২০১৭ সালে ১৮ জন, ২০১১ সালে ১৬ জন, ২০১৫ সালে ১৩ জন, ২০১২ সালে ১০ জন এবং ২০১৪ সালে ৭ জন বজ্রপাতে নিহত হন।
উপজেলাওয়ারি হিসেবে দেখা গেছে, জেলার মধ্যে বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে ইটনা উপজেলায়। ২০১১ সাল থেকে এই পর্যন্ত ইটনায় উপজেলায় বজ্রপাতে মোট ২৪ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এরপরে রয়েছে নিকলী উপজেলা। নিকলী উপজেলায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে ১৯ জনের। এরপরে মিঠামইন উপজেলায় বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন ১৫ জন। অষ্টগ্রাম উপজেলায় ১৪ জন। করিমগঞ্জ উপজেলায় নিহত হয়েছেন ১০ জন, বাজিতপুর উপজেলায় নিহত হয়েছেন ৯ জন, তাড়াইল উপজেলায় মারা গেছেন ৭ জন। কটিয়াদী উপজেলায় প্রাণহানি হয়েছে ছয় জনের। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় বজ্রপাতে মারা গেছেন পাঁচ জন। পাকুন্দিয়া উপজেলায় মারা গেছেন চারজন। হোসেনপুর উপজেলায় বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। কুলিয়ারচর ও ভৈরব উপজেলায় দুইজন করে মোট চারজন বজ্রপাতে মারা গেছেন।
অনুসন্ধান ও গবেষণা দেখা গেছে, জেলার সম্পূর্ণ হাওর অধ্যুষিত উপজেলাগুলো হচ্ছে- ইটনা, অষ্টগ্রাম, মিঠামইন ও নিকলী। বজ্রপাতের প্রাণহানির ঘটনা সেখানেই বেশি ঘটছে। এছাড়া করিমগঞ্জ, কটিয়াদী, বাজিতপুর, তাড়াইল, ভৈরব ও কুলিয়ারচর উপজেলার অংশবিশেষ হাওর এলাকায় অবস্থিত। সেসব স্থানেও বজ্রপাতে মানুষ হতাহত হচ্ছে। বজ্রপাতে হতাহতদের বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে হাওরে ধান কাটতে গিয়ে, ধান সংগ্রহ করতে গিয়ে, জমিতে কাজ করতে গিয়ে কিংবা মাছ ধরতে গিয়ে। ফলে বজ্রপাত ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে হাওরের কৃষক, কৃষি শ্রমিক এবং জেলেদের মাঝে। এবারের বোরো মৌসুমে ধান কাটার শ্রমিক সংকটের পেছনে বজ্রপাত ভীতি কাজ করেছে বলে কৃষক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
চলতি বছরে ব্রজপাতে কিশোরগঞ্জ জেলায় মোট ১২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তাদের মধ্যে মিঠামইনে পাঁচজন, বাজিতপুরে দুইজন এবং ইটনা, অষ্টগ্রাম, পাকুন্দিয়া, নিকলী ভৈরবে একজন করে মারা গেছেন। এর মধ্যে ভৈরবে গত ৩০শে মার্চ ভবানীপুর গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে আলমগীর (২৫), মিঠামইনে গত ৫ই কাটখাল গ্রামের হযরত আলীর ছেলে দ্বীন ইসলাম (৩৫) ও নয়ানগর গ্রামের আলতাব আলীর ছেলে আহম্মদ আলী (৪৫), ইটনায় গত ১১ই এপ্রিল দীঘিরপাড় পাথারহাটির আলী মিয়ার স্ত্রী দেলোয়ারা আক্তার (২২), অষ্টগ্রামে গত ১৭ই এপ্রিল বড়াইচর গ্রামের হেলিম মিয়ার ছেলে ঈমান হোসেন (১২), বাজিতপুরে গত ২২শে এপ্রিল নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টার আব্দুল মজিদের ছেলে মো. আব্দুর রাশিদ (৩৫) ও বাজিতপুর উপজেলার বাহেরবালি গ্রামের ছামেদ মিয়ার ছেলে তৌহিদ মিয়া (২৭), মিঠামইনে গত ২২শে এপ্রিল বৈরাটি ইউনিয়নের ভুরভুড়ি গ্রামের ফরহাদ চৌধুরীর স্ত্রী রূপচাঁন বেগম (৬০), মিঠামইনেই গত ২৪শে এপ্রিল রহমান (৫৫) ও আলীম উদ্দিন (৪০), পাকুন্দিয়ায় গত ২৬শে এপ্রিল পাটুয়াভাঙ্গা দকদিগা গ্রামের আশরাফ উদ্দিনের ছেলে জসিম উদ্দিন (৩৫) এবং সর্বশেষ গত ২রা মে নিকলীতে দামপাড়া ইউনিয়নের শেখ নবীনপুর গ্রামের নীল মামুদের ছেলে মো. আলী আকবর (৩৫) মারা যান।
এদিকে ক্রমাগত বজ্রপাতের ঘটনা বাড়তে থাকায় ২০১৬ সালের ১৭ই মে বজ্রপাতকে ‘দুর্যোগ’ হিসেবে ঘোষণা দেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। বজ্রপাতে নিহতের পরিবার ও আহতদের সরকারিভাবে অনুদান সহায়তাও দেয়া হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে তেমন প্রচারণা না থাকায় বজ্রপাতে নিহতদের পরিবার ও আহতদের অনেকেই এই সরকারি অনুদান সহায়তা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ কারণে বজ্রপাতে হতাহতের সঠিক পরিসংখ্যানও প্রশাসনের কাছে পাওয়া যায় না।
তবে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামীল জানান, বজ্রপাতে কোন নিহতের খবর পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দিচ্ছে। এছাড়া বজ্রপাত থেকে রক্ষায় গণসচেতনতামূলক কর্মসূচি হিসেবে এক মাস আগে থেকে মাইকিং করে প্রচারণা, লিফলেট বিতরণ, মসজিদে আলোচনা ও গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বজ্রপাত প্রতিরোধ কর্মসূচির আওতায় এ জেলায় ইতিমধ্যে ১৬ হাজার ১৫০টি তালগাছের চারা লাগানো হয়েছে এবং এ বছর আরো লাগানো হবে বলেও তরফদার মো. আক্তার জামীল জানান।
No comments