বিয়ের দুই ঘণ্টার মধ্যেই পারভীনকে ছেড়ে যায় রফিকুল by তামান্না মোমিন খান
চার
বছর প্রেম ভালোবাসার পর রফিকুল ইসলামকে আপন করে পান পারভীন পাটোয়ারী।
কিন্তু চার বছরের প্রেম ভালোবাসা ভেঙে যায় বিয়ের মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে।
অজুহাত পারভীন দেখতে ভালো নয়। তাই নববধূকে রেখে চলে যায় রফিকুল। পারভীন
জানান, রফিকুল ও সে সম্পর্কে মামাতো ফুফাতো ভাইবোন। ছোট বেলা খুব একটা দেখা
হতো না তাদের। পারভীন চাঁদপুরে গ্রামের বাড়ি গেলেই শুধু দেখা হতো। রফিকুল
এইচএসসি পাস করে চাকরির জন্য পারভীনদের রূপগঞ্জের বাসায় আসেন। সেখানেই
থাকতে থাকেন। পারভীনের বাবা লিনডি গ্রুপে চাকরি করেন। সেখানেই রফিকুলকে
চাকরি দেন পারভীনের বাবা। ২০১১ সাল থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে
ওঠে। সে সময় পারভীন পড়তেন কুমিল্লা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে। পারভীনের পড়ার
সময় একাধিকবার কুমিল্লা যায় রফিকুল। এ ছাড়া তাদের দু’জনের প্রতিদিন ফোনে
কথা হতো। প্রেমের কথা জানাজানি হলে পরিবারের সম্মতিতেই ২০১৫ সালের ২১শে
মার্চ বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের দুই ঘণ্টার মধ্যেই পারভীনদের বাড়ি থেকে বের হয়ে
যায় রফিকুল। বিয়ের দুই দিন পর্যন্ত রফিকুলের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
পারভীন ও তার পরিবার বহু চেষ্টা করেও তাকে ফোনে পায়নি। পারভীনের
শ্বশুর-শাশুড়ি তাকেই বউ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। দুইদিন পর পারভীনের ফোন
ধরে রফিকুল। সে পারভীনকে বলে তার মুখের সার্জারি করিয়ে তাকে সুন্দরী হতে
হবে। তাতেও রাজি হয় পারভীন। অনেক টাকা খরচ করে লেজার ট্রিটমেন্ট করায় সে।
এতে কোনো উপকার পায়নি সে। বরং লেজার ট্রিটমেন্টের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়
পারভীনের চুল পড়ে যায়। পারভীন বলেন, রফিকুলকে কাছে পেতে সবধরনের চেষ্টা
করেছি। বিয়ের আড়াই বছর পর রফিকুল একদিন আমাকে ফোন দিয়ে জানায় আবার বিয়ে
করেছে। আমি যেন তাকে মুক্তি দিই। পারভীন বলেন, ওর দ্বিতীয় বিয়ের কথা শুনে
আমি রফিকুলের সঙ্গে সংসার না করার সিদ্ধান্ত নিই। আমার শ্বশুর মারা যাওয়ার
আগে আমাদের বাড়িতে এসে বলেন, তোকেই আমরা ছেলের বউ হিসেবে জানি। কিন্তু আমার
ছেলে কেন এমন করতেছে তা আমরা জানি না। গত বছর আমি নারী নির্যাতন সেলে
রফিকুলের বিরুদ্ধে ভরণ-পোষণ না দেয়া এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করি।
২০১৭ সালের ৩১শে অক্টোবর প্রথম শুনানি হয়। পর পর তিনবার শুনানিতেই হাজির
হয়নি রফিকুল। পরে পুলিশ পাঠিয়ে তাকে আনা হয় নারী নির্যাতন সেলে। সে এখন
আমাকে আবার ঘরে তোলার প্রস্তাব দিচ্ছে। আমাকে রূপগঞ্জে রাখবে আর তার
দ্বিতীয় বউকে গ্রামে। কিন্তু আমি জানি, অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্যই সে এসব কথা
বলছে। অভিযোগ তুলে নিলেই সে আমার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ রাখবে না। বিয়ের
পর সংসার কি সেটা আমি বুঝিনি। শুধু কষ্টই করছি। এখন আমার শুধু একটাই চাওয়া,
আমাকে আড়াই বছরের ভরণ-পোষণসহ আমার দেনমোহরের সাড়ে তিন লাখ টাকা যেনো সে
পরিশোধ করে। আমি আমার মতো, সে তার মতো থাকবে।
No comments