ঐতিহাসিক ঘটনা, পাকিস্তান সিনেটে নির্বাচিত হিন্দু নারী
পাকিস্তান
সিনেটে প্রথমবারের মতো এক হিন্দু নারী নির্বাচিত হয়েছেন। এটিকে সংবাদ
মাধ্যমের খবরে ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। পাকিস্তান সিনেটে
প্রথম হিন্দু দলিত নারী হিসেবে কৃষ্ণা কুমারী কোলহির পা রাখাকে এভাবেই
ব্যাখ্যা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কোনো মুসলিম অধ্যুষিত দেশের সিনেটে
এই প্রথম কোনো হিন্দু নারীর জায়গা হলো বলেই মনে করা হচ্ছে। বিলওয়াল
ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিটি) সদস্য তিনি।
সিন্ধু
প্রদেশ থেকে তিনি নির্বাচনে জিতেছিলেন। আসনটি নারীদের জন্য সংরক্ষিত ছিল।
তবে কোনো হিন্দু রমণীকে সেই জায়গা ছেড়ে দেয়া, নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক
বুদ্ধিমত্তারই পরিচয়। পাশাপাশি এখন যেহেতু তিনি সিনেটে জায়গা করে নিয়েছেন,
তাই নয়া ইতিহাসের সঙ্গী হলো পিপলস পার্টিও। অথচ জীবনটা তো এরকম ছিল না।
কৃষক পরিবারের সন্তান কৃষ্ণ কুমারী। যখন তিনি তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী, তখনই
ভাগ্যের বিপর্যয়। এক ভূমিমালিকের প্রাইভেট জেলে তাকে ও তার পরিবারের বাকি
সদস্যদের বন্দি করা হয়। বছর তিনেক ছিল সেই বন্দিদশা। পরে মুক্ত হয়ে আবার
পায়ের নিচে মাটি খোঁজার চেষ্টা করে পরিবারটি। পড়াশোনাও চলতে থাকে কৃষ্ণা
কুমারীর। কিন্তু আবারো ধাক্কা। মোটে ১৬ বছর বয়সেই তার বিয়ে হয়। সে সময়
ক্লাস নাইনে পড়তেন তিনি। যদিও ভাগ্যক্রমে বিয়ের পরও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে
পেরেছিলেন। ২০১৩ সালে সিন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর
ডিগ্রি পান। এই সময় থেকেই রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি। সমাজকর্মী হিসেবে কাজ
শুরু করেন পিপলস পার্টির হয়ে। থর অঞ্চলে পিছিয়ে পড়া দলিতদের হয়ে শুরু করেন
তার কর্মকাণ্ড। এমনিতে তার রক্তে বইছে স্বাধীনতা সংগ্রামীর ঐতিহ্য। সেই
ধারা মেনেই দলিতদের হয়ে সংগ্রাম শুরু করেন। স্বীকৃতি এলো এই ঐতিহাসিক
পদক্ষেপে।
No comments