সাংসদ শওকতকে দুই মাসের মধ্যে ৫ কোটি টাকা দিতে হবে
দুর্নীতি
দমন কমিশনের (দুদক) করা দুই মামলায় নীলফামারী-৪ আসনের জাতীয় পার্টির সাংসদ
মো. শওকত চৌধুরীকে দুই মাসের মধ্যে ৫ কোটি টাকা দিতে হবে। এতে ব্যর্থ হলে
তাঁর জামিন বাতিল হবে। আজ সোমবার দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল
ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ হাইকোর্টের রায়ের
বিরুদ্ধে সাংসদ শওকতের করা লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে এই আদেশ দেন। আদালতে
সাংসদ শওকতের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী নুরুল ইসলাম সুজন, এ এম আমিন
উদ্দিন ও শেখ ফজলে নূর তাপস। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম
খান। গত ২২ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ এক রায়ে শওকত চৌধুরীকে ৫০
দিনের মধ্য ২৫ কোটি টাকা ব্যাংকে জমা দিতে নির্দেশ দেন।
এতে ব্যর্থ হলে
নিম্ন আদালতে তাঁকে দেওয়া জামিন বাতিল হবে বলে উল্লেখ করেন আদালত।
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন
সাংসদ শওকত। ২৯ অক্টোবর হাইকোর্টের রায় স্থগিত হয়। এর ধারাবাহিকতায় সাংসদ
শওকতের আবেদনটি গত ১২ নভেম্বর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য
ওঠে। সেদিন আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩
ডিসেম্বর শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। পাশাপাশি নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে
বলেন। এদিকে রায় স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে দুদক একটি আবেদন করে। দুই
আবেদনের ওপর গতকাল রোববার শুনানি শেষে আজ আদেশ দেন আপিল বিভাগ। পরে আদেশের
বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি বলেন,
দুদকের করা দুই মামলায় সাংসদ শওকত চৌধুরীকে দুই মাসের মধ্যে ৫ কোটি টাকা
জমা দিতে বলেছেন আদালত। না হলে তাঁর জামিন বাতিল হবে। শওকত চৌধুরীর
বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক থেকে ১২০ কোটি টাকারও বেশি আত্মসাতের
অভিযোগে একটি মামলা রয়েছে দুদকের। তাঁর বিরুদ্ধে সোয়া কোটি টাকা আত্মসাতের
অভিযোগে আরেকটি মামলাও রয়েছে দুদকের। মামলার এজাহারে বলা হয়, যমুনা এগ্রো
কেমিক্যাল কোম্পানি ও যমুনা এগ্রো কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড নামের দুটি
প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ব্যাংকটির
বংশাল শাখা থেকে ৯৩ কোটি কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ২৩১ টাকা আত্মসাৎ করে। পরে
সুদে-আসলে সেটা দাঁড়ায় ১২০ কোটি ৯ লাখ ৮০ হাজার ৯৯০ টাকা। প্রতিষ্ঠান দুটির
মালিক শওকত চৌধুরী। অনুসন্ধান সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক থেকে জালিয়াতির
জন্য নানা কৌশল নেয় প্রতিষ্ঠান দুটি। ভুয়া মেয়াদি আমানত (এফডিআর) দেখিয়ে
তার বিপরীতে ঋণ নেওয়া, বিটিআরসির একটি হিসাবকে জাল কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে
নিজেদের দেখিয়ে ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলনসহ নানা প্রক্রিয়ায় ওই অর্থ
আত্মসাৎ করা হয়।
No comments