পাহাড় ধসে তিন জেলায় নিহত বেড়ে ১৩৫
কয়েকদিনের টানা বর্ষণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে পাহাড় ধসে নিহত বেড়ে ১৩৫ জন হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে রাঙ্গামাটিতে সড়কের ওপর ধসে পড়া পাহাড়ের মাটি সরাতে গিয়ে চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন দুই কর্মকর্তাসহ ৪ সেনা সদস্য। টানা বর্ষণে পাহাড়ের মাটি নরম হওয়ায় সেখানে বসবাসকারীদের ওপর মাটি ধসে পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জিএম আবদুল কাদের বুধবার সকালে টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেন, পাহাড় ধসের ঘটনায় ১৩৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রাঙ্গামাটিতে ১০১ জন, চট্টগ্রামে ২৭ জন, বান্দরবানে ৬ এবং খাগড়াছড়িতে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
রাঙ্গামাটি : ভারি বর্ষণে পাহাড় ধসে মাটিচাপায় রাঙ্গামাটি শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় বুধবার সকাল পর্যন্ত ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালে ১৪ জনের মরদেহ নেয়া হয় এবং বিকালে ওই দু’জনের মরদেহ উদ্ধার করে রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এছাড়া জেলার বিলাইছড়ি উপজেলায় পাহাড় ধসে মাটিচাপায় ২ জনের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন ডা. সহীদ তালুকদার। এছাড়া কাপ্তাইয়ের রাইখালীর কারিগরপাড়ায় ৪ জন এবং কাউখালী উপজেলায় সর্বশেষ ২১ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করে স্থানীয় সূত্র। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। এদিকে মানিকছড়িতে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটি অপসারণের সময় ৪ সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়। তারা হলেন- মেজর মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, ক্যাপ্টেন মো. তানভীর সালাম শান্ত, কর্পোরাল মোহাম্মদ আজিজুল হক ও সৈনিক মো. শাহীন আলম। এদিকে আইএসপিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসে উদ্ধার কার্যক্রম চলাকালে দুই সেনা কর্মকর্তাসহ চারজন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে জেলার মানিকছড়িতে একটি পাহাড় ধসে মাটি ও গাছ পড়ে যায়। এতে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মানিকছড়ি আর্মি ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। বেলা ১১টার দিকে ওই স্থানে পাহাড়ের একটি বড় অংশ উদ্ধারকারী দলের ওপর ধসে পড়ে। এতে উদ্ধারকর্মীরা মূল সড়ক থেকে ৩০ ফিট নিচে পড়ে যান। এ ঘটনায় নিহত ওই চারজনসহ ১০ জন সেনা সদস্য আহত হন। কাপ্তাই রাইখালীর কারিগরপাড়ায় নিহত ৪ জনের তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেলেও তাৎক্ষণিকভাবে নাম পাওয়া যায়নি। এছাড়া সিভিল সার্জন ডা. সহীদ তালুকদার বিলাইছড়িতে ২ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করলেও তাদের নাম জানাতে পারেননি। আগের দিন সোমবার রাঙ্গামাটি শহরের পুলিশ লাইন এলাকায় এক শিশু এবং কাপ্তাইয়ের নতুন বাজারে এক শিশু পাহাড়ের মাটিচাপায় মারা যায়। জেলা প্রশাসন থেকে শহরসহ জেলায় মোট ৩৫ জনের নিহতের তালিকা পাওয়া গেছে বলে জানান নেজারত ডেপুটি কালেক্টর তাপস দাশ।
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দু’টি ইউনিয়নে পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় ঘুমন্ত অবস্থায় মাটিচাপা পড়ে চার পরিবারের ২৭ জন নিহত হয়েছে। রাজানগর ও ইসলামপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল হোসেন পাহাড় ধসে ২৭ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, ঘুমন্ত অবস্থায় সোমবার মধ্যরাতে রাজানগর ইউনিয়নের ঠাকুরঘোনা মইন্যার টেক এলাকায় পাহাড় ধসে কাঁচাঘর চাপা পড়ে মারা গেছেন নজরুল ইসলাম (৪০), তার স্ত্রী আসমা আকতার (৩৫), তাদের ছেলে ননাইয়া (১৫) ও মেয়ে সাথী আকতার (১৯)। একই ইউনিয়নের বালুখালী এলাকায় মারা গেছেন ইসমাইল (৪২), তার স্ত্রী মনিরা খাতুন (৩৭), তাদের দুই মেয়ে ইছামিন (৮) ও ইভামনি (৪)। একই উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নে মাটিচাপায় প্রাণ হারিয়েছেন সুজন (২৪) তার স্ত্রী মুন্নি (১৯), মুন্নির অপর তিন বোন জ্যোৎস্না (১৮), শাহনূর আকতার (১৫) ও পালু (১২)। তাদের পিতার নাম মোহাম্মদ সেলিম। চন্দনাইশ: মঙ্গলবার ভোররাতে উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ধোপাছড়ি ইউনিয়নের শামুকছড়ি ও ছনবনিয়া এলাকায় পৃথক ঘটনায় দুই পরিবারের চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছনবনিয়া এলাকার পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত একটি আদিবাসী পরিবারের কাঁচা ঘরের ওপর মাটি চাপা পড়ে। এতে মেকো ইয়াং খেয়াং (৫০) তার মেয়ে মেমো ইয়াং খেয়াং (১৩), কেউছা ইয়াং খেয়াং (১০) নিহত হয়। আহত হয় সানুউ ইয়াং খেয়াং ও সোউ খেয়াং। প্রায় একই সময়ে শামুকছড়ি এলাকায় মাটিচাপা পড়ে নিহত হয় আজগর আলীর মেয়ে মাহিয়া (৩)। চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফর রহমান ধোপাছড়ির শামুক ছড়ি ও ছনবনিয়া এলাকায় পাহাড় ধসে দুই পরিবারের চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন যুগান্তরকে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী মঙ্গলবার বিকালে যুগান্তরকে জানান, রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পাহাড় ধসে আহতদের চিকিৎসা দিতে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
বান্দরবান: মঙ্গলবার ভোররাতে প্রবল বর্ষণে বান্দরবান জেলা শহরের অদূরে লেমুঝিরি ও কালাঘাটা এলাকায় পাহাড় ধসে মা-মেয়েসহ তিন পরিবারের ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে লেমুঝিরি এলাকায় নিজের ঘরেই মাটিচাপা পড়ে মারা গেছেন শ্রমিক নুরুল আলমের স্ত্রী কামরুন্নাহার (৪০) ও তার মেয়ে সুফিয়া বেগম (৮) । কালাঘাটা এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় মারা গেছেন রেবা ত্রিপুরা (২২) নামে একজন। একই এলাকায় আরেক পরিবারের তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এরা হচ্ছে মিঠু বড়ুয়া (৫), বোন শুভ বড়ুয়া (৪) এবং লতা বড়ুয়া (৭)। তারা তিন ভাইবোন। পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। ঘনটাস্থল পরিদর্শন করেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক। বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, জেলার বিভিন্ন স্থানে ৪০টি অস্থায়ী বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব এলাকায় দুর্গতদের মাঝে শুকনা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বান্দরবানে পাহাড় ধসে যে তিন পরিবারের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে ওই পরিবারগুলো দরিদ্র। ঘরের কর্তারা সবাই শ্রমজীবী মানুষ। জীবিকার কারণেই তারা পাহাড়ের পাদদেশে ঘর করে বসবাস করে আসছিল। সারা দেশে ভূমিহীনদের মাঝে সরকারি খাসভূমি বন্দোবস্তি দেয়া হলেও তিন পার্বত্য জেলায় স্থানীয় কঠোর আইনের কারণে ভূমি বন্দোবস্তি প্রদান বন্ধ ২৫ বছর ধরেই। ফলে বাধ্য হয়েই জেলার বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৩০ হাজার ভূমিহীন পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস করছে। এদিকে খাগড়াছড়ি জেলায় পাহাড় ধসে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
রাঙ্গামাটি : ভারি বর্ষণে পাহাড় ধসে মাটিচাপায় রাঙ্গামাটি শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় বুধবার সকাল পর্যন্ত ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালে ১৪ জনের মরদেহ নেয়া হয় এবং বিকালে ওই দু’জনের মরদেহ উদ্ধার করে রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এছাড়া জেলার বিলাইছড়ি উপজেলায় পাহাড় ধসে মাটিচাপায় ২ জনের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন ডা. সহীদ তালুকদার। এছাড়া কাপ্তাইয়ের রাইখালীর কারিগরপাড়ায় ৪ জন এবং কাউখালী উপজেলায় সর্বশেষ ২১ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করে স্থানীয় সূত্র। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। এদিকে মানিকছড়িতে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটি অপসারণের সময় ৪ সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়। তারা হলেন- মেজর মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, ক্যাপ্টেন মো. তানভীর সালাম শান্ত, কর্পোরাল মোহাম্মদ আজিজুল হক ও সৈনিক মো. শাহীন আলম। এদিকে আইএসপিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসে উদ্ধার কার্যক্রম চলাকালে দুই সেনা কর্মকর্তাসহ চারজন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে জেলার মানিকছড়িতে একটি পাহাড় ধসে মাটি ও গাছ পড়ে যায়। এতে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মানিকছড়ি আর্মি ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। বেলা ১১টার দিকে ওই স্থানে পাহাড়ের একটি বড় অংশ উদ্ধারকারী দলের ওপর ধসে পড়ে। এতে উদ্ধারকর্মীরা মূল সড়ক থেকে ৩০ ফিট নিচে পড়ে যান। এ ঘটনায় নিহত ওই চারজনসহ ১০ জন সেনা সদস্য আহত হন। কাপ্তাই রাইখালীর কারিগরপাড়ায় নিহত ৪ জনের তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেলেও তাৎক্ষণিকভাবে নাম পাওয়া যায়নি। এছাড়া সিভিল সার্জন ডা. সহীদ তালুকদার বিলাইছড়িতে ২ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করলেও তাদের নাম জানাতে পারেননি। আগের দিন সোমবার রাঙ্গামাটি শহরের পুলিশ লাইন এলাকায় এক শিশু এবং কাপ্তাইয়ের নতুন বাজারে এক শিশু পাহাড়ের মাটিচাপায় মারা যায়। জেলা প্রশাসন থেকে শহরসহ জেলায় মোট ৩৫ জনের নিহতের তালিকা পাওয়া গেছে বলে জানান নেজারত ডেপুটি কালেক্টর তাপস দাশ।
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দু’টি ইউনিয়নে পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় ঘুমন্ত অবস্থায় মাটিচাপা পড়ে চার পরিবারের ২৭ জন নিহত হয়েছে। রাজানগর ও ইসলামপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল হোসেন পাহাড় ধসে ২৭ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, ঘুমন্ত অবস্থায় সোমবার মধ্যরাতে রাজানগর ইউনিয়নের ঠাকুরঘোনা মইন্যার টেক এলাকায় পাহাড় ধসে কাঁচাঘর চাপা পড়ে মারা গেছেন নজরুল ইসলাম (৪০), তার স্ত্রী আসমা আকতার (৩৫), তাদের ছেলে ননাইয়া (১৫) ও মেয়ে সাথী আকতার (১৯)। একই ইউনিয়নের বালুখালী এলাকায় মারা গেছেন ইসমাইল (৪২), তার স্ত্রী মনিরা খাতুন (৩৭), তাদের দুই মেয়ে ইছামিন (৮) ও ইভামনি (৪)। একই উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নে মাটিচাপায় প্রাণ হারিয়েছেন সুজন (২৪) তার স্ত্রী মুন্নি (১৯), মুন্নির অপর তিন বোন জ্যোৎস্না (১৮), শাহনূর আকতার (১৫) ও পালু (১২)। তাদের পিতার নাম মোহাম্মদ সেলিম। চন্দনাইশ: মঙ্গলবার ভোররাতে উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ধোপাছড়ি ইউনিয়নের শামুকছড়ি ও ছনবনিয়া এলাকায় পৃথক ঘটনায় দুই পরিবারের চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছনবনিয়া এলাকার পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত একটি আদিবাসী পরিবারের কাঁচা ঘরের ওপর মাটি চাপা পড়ে। এতে মেকো ইয়াং খেয়াং (৫০) তার মেয়ে মেমো ইয়াং খেয়াং (১৩), কেউছা ইয়াং খেয়াং (১০) নিহত হয়। আহত হয় সানুউ ইয়াং খেয়াং ও সোউ খেয়াং। প্রায় একই সময়ে শামুকছড়ি এলাকায় মাটিচাপা পড়ে নিহত হয় আজগর আলীর মেয়ে মাহিয়া (৩)। চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফর রহমান ধোপাছড়ির শামুক ছড়ি ও ছনবনিয়া এলাকায় পাহাড় ধসে দুই পরিবারের চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন যুগান্তরকে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী মঙ্গলবার বিকালে যুগান্তরকে জানান, রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পাহাড় ধসে আহতদের চিকিৎসা দিতে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
বান্দরবান: মঙ্গলবার ভোররাতে প্রবল বর্ষণে বান্দরবান জেলা শহরের অদূরে লেমুঝিরি ও কালাঘাটা এলাকায় পাহাড় ধসে মা-মেয়েসহ তিন পরিবারের ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে লেমুঝিরি এলাকায় নিজের ঘরেই মাটিচাপা পড়ে মারা গেছেন শ্রমিক নুরুল আলমের স্ত্রী কামরুন্নাহার (৪০) ও তার মেয়ে সুফিয়া বেগম (৮) । কালাঘাটা এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় মারা গেছেন রেবা ত্রিপুরা (২২) নামে একজন। একই এলাকায় আরেক পরিবারের তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এরা হচ্ছে মিঠু বড়ুয়া (৫), বোন শুভ বড়ুয়া (৪) এবং লতা বড়ুয়া (৭)। তারা তিন ভাইবোন। পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। ঘনটাস্থল পরিদর্শন করেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক। বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, জেলার বিভিন্ন স্থানে ৪০টি অস্থায়ী বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব এলাকায় দুর্গতদের মাঝে শুকনা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বান্দরবানে পাহাড় ধসে যে তিন পরিবারের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে ওই পরিবারগুলো দরিদ্র। ঘরের কর্তারা সবাই শ্রমজীবী মানুষ। জীবিকার কারণেই তারা পাহাড়ের পাদদেশে ঘর করে বসবাস করে আসছিল। সারা দেশে ভূমিহীনদের মাঝে সরকারি খাসভূমি বন্দোবস্তি দেয়া হলেও তিন পার্বত্য জেলায় স্থানীয় কঠোর আইনের কারণে ভূমি বন্দোবস্তি প্রদান বন্ধ ২৫ বছর ধরেই। ফলে বাধ্য হয়েই জেলার বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৩০ হাজার ভূমিহীন পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস করছে। এদিকে খাগড়াছড়ি জেলায় পাহাড় ধসে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
No comments