ইভাঙ্কা ট্রাম্প ব্র্যান্ডের পোশাক কারখানার ভয়াবহ চিত্র -গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন
ইভাঙ্কা
ট্রাম্প ব্র্যান্ডের পোশাক কারখানাগুলোতে নানা অনিয়মের চিত্র সামনে এসেছে।
গার্ডিয়ানের বিশেষ এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড
ট্রাম্প কন্যার ফ্যাশন ব্রান্ড পণ্য নির্মাতা কারখানাগুলোর রূঢ় বাস্তবতা।
সেখানে চলছে নানা রকম অধিকার লঙ্ঘন। কর্মীদের গালি গালাজ করা হয়। চাপিয়ে
দেয়া হয় কাজের বোঝা। আর মজুরি এতো কম যে, সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে থাকারও
সামর্থ্য নেই এসব কারখানা শ্রমিকদের। নারী কর্মীরা ঋতুর সময় ছুটি না নিলে
বোনাসের প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ার সুবাংয়ের একটি কারখানায় এক ডজনের বেশি কর্মীর সঙ্গে কথা বলেছে গার্ডিয়ান। সেখানকার কর্মীরা বলছে, তারা এশিয়ার মধ্যে সবথেকে কম মজুরি পাচ্ছে। এছাড়া, উৎপাদন কাজের অসম্ভব টার্গেট দেয়া এবং ওভারটাইম মজুরি পরিশোধে গাফিলতির দাবি শোনা গেছে। ইভাঙ্কা ট্রাম্প ব্র্যান্ডের জুতা তৈরির কাজ হয়- চীনের এমন একটি কারখানায় সম্ভাব্য অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশি হেফাজতে লাপাত্তা হয়ে যায় একাধিক শ্রমিক অ্যাক্টিভিস্ট। ওই অ্যাক্টিভিস্টদের গ্র্রুপ দাবি করেছে যে তারা কারখানায় নানা ধরণের অধিকার লঙ্ঘণের ঘটনা জানতে পেরেছে। এর মধ্যে রয়েছে চীনের বৈধ সর্বনিম্ন মজুরির চেয়েও কম বেতন দেয়া, শ্রমিকদের ওপর ম্যানেজারদের গালিগালাজ, এবং নারী অধিকার লঙ্ঘন।
ইন্দোনেশিয়ার কারখানায় কিছু অভিযোগ একইরকম। যদিও, সুবাংয়ের কারখানাটিতে শ্রমিকদের মজুরি আরও কম।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এসব কারখানায় কাজ করা শ্রমিকদের ভাস্য উঠে এসেছে। সঙ্গত কারণে তাদের প্রকৃত নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে প্রতিবেদনে।
আলিয়া নামের এক শ্রমিক পশ্চিম জাভার সুবাংয়ে অবস্থিত পিটি বুমা অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি কারখানায় কাজ করে। পিটি বুমায় অন্যান্যা ব্র্যান্ডের পাশপাশি ইভাঙ্কা ট্রাম্প ব্র্যান্ডের পোশাক তৈরি হয়। আলিয়া ও তার স্বামী দুজনই পরিবারের জন্য উপার্জন করলেও, কখনই তাদের মাথা থেকে ঋণের বোঝা মেটে না। আলিয়া কয়েক বছর ধরে কাজ করে পিটি বুমায়। কিন্তু এর বিনিময়ে তার কপালে জুটেছে দু’রুমের অপরিচ্ছন্ন একটি বোর্ডিং হাউজ। মাসে ভাড়া ৩০ ডলার। আর সন্তানদের কয়েক ডজন ছবি দিয়ে সাজানো। কেননা, বাড়িতে বাচ্চাদের নিয়ে থাকার মতো যথেষ্ট অর্থ তাদের নেই। বাচ্চারা থাকে তাদের দাদীর সঙ্গে । মাসে একটি ছুটির দিনে একবার সন্তানদের গিয়ে দেখার সুযোগ পায় এ দম্পতি। মটোরসাইকেলের তেল ভরার অর্থ যোগাড় করতে পারলে তবেই সন্তানদের দেখতে যাওয়া হয়।
আলিয়ার স্বামী আহমাদ স্থানীয় আরেকটি গার্মেন্ট কারখানায় কাজ করে। তার স্ত্রী ও পিটি বুমা কারখানায় কাজ করা বেশিরভাগ শ্রমিকের মতো সেও একজন মুসলিম। আহমাদ বলেন, ‘ডনাল্ড ট্রাম্পের নীতিগুলো আমাদের পছন্দ না।’ আলিয়াকে যখন চাকুরিজীবী নারীদের নিয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্পের লেখা নতুন বইয়ের বিষয়ে জানানো হলো তখন হাসিতে ফেটে পড়লেন তিনি। আলিয়ার ভাস্য তিনি যদি নিজের সন্তানদের মাসে একবারের বেশি দেখতে পারতেন তাহলে সেটা হলো তার জন্য কাজ আর জীবনের ভারসাম্য। বুমায় বর্তমানে কর্মরত রয়েছে ২৭৫৯ জন কর্মী। এদের মধ্যে ইউনিয়নভুক্ত মোট কর্মীর সংখ্যা আনুমানিক ২০০। ইউনিয়নের বাইরে থাকা বেশিরভাগ বুমা কর্মীদের জন্য তাদের চাকরি হলো হাড়ভাঙা খাটনি সহ্য করার সামিল। এদের তিন চতুর্থাংশ নারী। অনেকেই সন্তানের মা। আলিয়ার মতো তারাও তাদের উপার্জনের প্রায় সবটা সন্তানদের পেছনে ব্যয় করে যাদের সঙ্গে নিয়ে থাকার সামর্থ্য তাদের নেই।
এমন আরেক কর্মী সিতা। বয়স ২৩। পিতা মাতা অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর কলেজে পড়ার পাঠ চুকাতে হয়। গত বছর থেকে বুমায় কাজ করা শুরু করে। গার্ডিয়ানকে তিনি জানান যে সাত মাস পূর্ণ হওয়ার পর শিগগিরই তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। সিতা বলেন, অতিরিক্ত ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে এটা প্রতিষ্ঠানের একটা ব্যবস্থা। চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে তিনি মেয়াদোত্তর কোন অর্থ পাবেন না। তিনি আরও বলেন, ‘আর সহ্য করতে পারছি না। প্রতিদিন বিনা মজুরিতে ওভারটাইম কাজ করে যাচ্ছি। সুবাং থেকে অন্যত্র চলে যেতে যান সিতা। কিন্তা তিনি জানেন না কোথায় যাবেন। চাকুরি পাওয়ার মতো পরিচিত কেউ নেই তার।
উল্লেখ্য, ইভাঙ্কা ট্রাম্প জানুয়ারি মাসে নিজের ব্র্যান্ড পরিচালনা করা থেকে সরে দাড়ান। তবে এখনও ওই ব্র্যান্ডের পণ্যগুলোতে তার নামেরই লেবেল রয়েছে।
বুমা কারখানার স্থায়ী কর্মীদের অবশ্য কিছু সুযোগ সুবিধা রয়েছে। মাতৃত্বকালীন তিন মাস সবেতন ছুটি, বাধ্যতামূলক ফেডারেল হেলথ ইনস্যুরেন্স এবং ঋতুকালে ছুটি না নিলে মাসে ১০.৫০ ডলার বোনাস।
বুমা কারখানার নানা অনিয়মের চিত্র পশ্চিম জাভার অপর কারখানাগুলোর সঙ্গে বহুলাংশে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে জানান ইন্দোনেশিয়ার ট্রেড ইউনিয়ন রাইটস সেন্টারের আন্ড্রিকো ওটাং। তিনি বলেন, ওভারটাইমের অর্থ দেয়া থেকে পরিত্রান পেতে অবাস্তব উৎপাদন টার্গেট দেয়ার চর্চা নিয়মিত হয়ে থাকে। এছাড়া হেয় প্রতিপন্ন করতে ‘পশু, গর্দভ আর বাঁদর’ বলে কটুক্তি করাও স্বাভাবিক চর্চা বলে উল্লেখ করেন তিনি। অনেক শ্রমিক জানান, রমজানের আগে কর্মী ছাটাই করার ঘটনা ঘটে প্রতিবছর। একমাস পর ফেল তাদের নিয়োগ দেয়া হয়। ঈদের বোনাস দেয়া থেকে বাচতে এই পন্থা অবলম্বন করে বুমা। সুবাংয়ের এসপিএসআই ইউনিয়নের রেতা টোটো সুনার্টের তথ্যমতে এ বছর মে মাসে রমজানের আগে ২৯০ জনকে ছাটাই করা হয়।
অলাভজনক ‘ফ্যাশন রেভোলিউশন’ এর প্রতিষ্ঠাতা ক্যারি সমার্স বলেন, ‘ইভাঙ্কা ট্রাম্প দাবি করেন কর্মজীবী নারীদের জন্য চুড়ান্ত গন্তব্য হলো তার প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এতে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে বিশ্বজুড়ে তার জন্য কারখানাগুলোতে যেসব নারী কাজ করেন, তাদের জন্য এটা প্রযোজ্য নয়।
গত এক বছরে ইভাঙ্কার ব্র্যান্ডের ভাগ্য খুলে গেছে। তার পিতার নির্বাচনী প্রচারণার সময় ইভাঙ্কা ব্র্যান্ডের মোট বিক্রি প্রায় ১৮ মিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পায়। তবে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেশ কিছু ডিপার্টমেন্টার স্টোর ইভাঙ্কার ব্র্যান্ড বাদ দিয়েছে। আর ইভাঙ্কার ব্র্যান্ডের এক্সক্লিুসিভ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জি-থ্রি গোপনে ইভাঙ্কা ট্রাম্প লেবেল লাগানো কিছু পন্যে ভিন্ন আরেকটি ব্র্যান্ডের লেবেল লাগিয়েছে।
ফাদলি নামে বুমা কারখানার একটি ওয়্যারহাউজের শ্রমিক যুক্তরাষ্ট্রগামী পন্যগুলোর প্রাইস ট্যাগ দেখে মন্তব্য করেন, ‘নামি ব্র্যান্ডের জন্য পোশাক তৈরি করতে পেরে আমি গর্বিত। কিন্তু আমি যেহেতু প্রাইস ট্যাগ দেখেছি, তাই আমার মনে প্রশ্ন জাগে, তারা কি আমাদের আর একটু বেশি অর্থ দিতে পারে না?’
এই প্রতিবেদনে উঠে আসা দাবিগেুলো নিয়ে পিটি বুমার কাছে মন্তব্য চেয়েছিল গার্ডিয়ান। কিন্তু, প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র সাফ জানিয়ে দেন শুধু তিনি না, বুমা জাকাতা বা বুমা সুবাংয়ের কেউই এ নিয়ে মন্তব্য করতে চান না। এ নিয়ে গার্ডিয়ান হোয়াইট হাউসের কাছেও মন্তব্য চেয়েছিল। কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেখান থেকে কোন জবাব মেলেনি। আর ইভাঙ্কা ট্রাম্প ব্র্যান্ডের জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান কোন প্রকার মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার সুবাংয়ের একটি কারখানায় এক ডজনের বেশি কর্মীর সঙ্গে কথা বলেছে গার্ডিয়ান। সেখানকার কর্মীরা বলছে, তারা এশিয়ার মধ্যে সবথেকে কম মজুরি পাচ্ছে। এছাড়া, উৎপাদন কাজের অসম্ভব টার্গেট দেয়া এবং ওভারটাইম মজুরি পরিশোধে গাফিলতির দাবি শোনা গেছে। ইভাঙ্কা ট্রাম্প ব্র্যান্ডের জুতা তৈরির কাজ হয়- চীনের এমন একটি কারখানায় সম্ভাব্য অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশি হেফাজতে লাপাত্তা হয়ে যায় একাধিক শ্রমিক অ্যাক্টিভিস্ট। ওই অ্যাক্টিভিস্টদের গ্র্রুপ দাবি করেছে যে তারা কারখানায় নানা ধরণের অধিকার লঙ্ঘণের ঘটনা জানতে পেরেছে। এর মধ্যে রয়েছে চীনের বৈধ সর্বনিম্ন মজুরির চেয়েও কম বেতন দেয়া, শ্রমিকদের ওপর ম্যানেজারদের গালিগালাজ, এবং নারী অধিকার লঙ্ঘন।
ইন্দোনেশিয়ার কারখানায় কিছু অভিযোগ একইরকম। যদিও, সুবাংয়ের কারখানাটিতে শ্রমিকদের মজুরি আরও কম।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এসব কারখানায় কাজ করা শ্রমিকদের ভাস্য উঠে এসেছে। সঙ্গত কারণে তাদের প্রকৃত নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে প্রতিবেদনে।
আলিয়া নামের এক শ্রমিক পশ্চিম জাভার সুবাংয়ে অবস্থিত পিটি বুমা অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি কারখানায় কাজ করে। পিটি বুমায় অন্যান্যা ব্র্যান্ডের পাশপাশি ইভাঙ্কা ট্রাম্প ব্র্যান্ডের পোশাক তৈরি হয়। আলিয়া ও তার স্বামী দুজনই পরিবারের জন্য উপার্জন করলেও, কখনই তাদের মাথা থেকে ঋণের বোঝা মেটে না। আলিয়া কয়েক বছর ধরে কাজ করে পিটি বুমায়। কিন্তু এর বিনিময়ে তার কপালে জুটেছে দু’রুমের অপরিচ্ছন্ন একটি বোর্ডিং হাউজ। মাসে ভাড়া ৩০ ডলার। আর সন্তানদের কয়েক ডজন ছবি দিয়ে সাজানো। কেননা, বাড়িতে বাচ্চাদের নিয়ে থাকার মতো যথেষ্ট অর্থ তাদের নেই। বাচ্চারা থাকে তাদের দাদীর সঙ্গে । মাসে একটি ছুটির দিনে একবার সন্তানদের গিয়ে দেখার সুযোগ পায় এ দম্পতি। মটোরসাইকেলের তেল ভরার অর্থ যোগাড় করতে পারলে তবেই সন্তানদের দেখতে যাওয়া হয়।
আলিয়ার স্বামী আহমাদ স্থানীয় আরেকটি গার্মেন্ট কারখানায় কাজ করে। তার স্ত্রী ও পিটি বুমা কারখানায় কাজ করা বেশিরভাগ শ্রমিকের মতো সেও একজন মুসলিম। আহমাদ বলেন, ‘ডনাল্ড ট্রাম্পের নীতিগুলো আমাদের পছন্দ না।’ আলিয়াকে যখন চাকুরিজীবী নারীদের নিয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্পের লেখা নতুন বইয়ের বিষয়ে জানানো হলো তখন হাসিতে ফেটে পড়লেন তিনি। আলিয়ার ভাস্য তিনি যদি নিজের সন্তানদের মাসে একবারের বেশি দেখতে পারতেন তাহলে সেটা হলো তার জন্য কাজ আর জীবনের ভারসাম্য। বুমায় বর্তমানে কর্মরত রয়েছে ২৭৫৯ জন কর্মী। এদের মধ্যে ইউনিয়নভুক্ত মোট কর্মীর সংখ্যা আনুমানিক ২০০। ইউনিয়নের বাইরে থাকা বেশিরভাগ বুমা কর্মীদের জন্য তাদের চাকরি হলো হাড়ভাঙা খাটনি সহ্য করার সামিল। এদের তিন চতুর্থাংশ নারী। অনেকেই সন্তানের মা। আলিয়ার মতো তারাও তাদের উপার্জনের প্রায় সবটা সন্তানদের পেছনে ব্যয় করে যাদের সঙ্গে নিয়ে থাকার সামর্থ্য তাদের নেই।
এমন আরেক কর্মী সিতা। বয়স ২৩। পিতা মাতা অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর কলেজে পড়ার পাঠ চুকাতে হয়। গত বছর থেকে বুমায় কাজ করা শুরু করে। গার্ডিয়ানকে তিনি জানান যে সাত মাস পূর্ণ হওয়ার পর শিগগিরই তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। সিতা বলেন, অতিরিক্ত ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে এটা প্রতিষ্ঠানের একটা ব্যবস্থা। চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে তিনি মেয়াদোত্তর কোন অর্থ পাবেন না। তিনি আরও বলেন, ‘আর সহ্য করতে পারছি না। প্রতিদিন বিনা মজুরিতে ওভারটাইম কাজ করে যাচ্ছি। সুবাং থেকে অন্যত্র চলে যেতে যান সিতা। কিন্তা তিনি জানেন না কোথায় যাবেন। চাকুরি পাওয়ার মতো পরিচিত কেউ নেই তার।
উল্লেখ্য, ইভাঙ্কা ট্রাম্প জানুয়ারি মাসে নিজের ব্র্যান্ড পরিচালনা করা থেকে সরে দাড়ান। তবে এখনও ওই ব্র্যান্ডের পণ্যগুলোতে তার নামেরই লেবেল রয়েছে।
বুমা কারখানার স্থায়ী কর্মীদের অবশ্য কিছু সুযোগ সুবিধা রয়েছে। মাতৃত্বকালীন তিন মাস সবেতন ছুটি, বাধ্যতামূলক ফেডারেল হেলথ ইনস্যুরেন্স এবং ঋতুকালে ছুটি না নিলে মাসে ১০.৫০ ডলার বোনাস।
বুমা কারখানার নানা অনিয়মের চিত্র পশ্চিম জাভার অপর কারখানাগুলোর সঙ্গে বহুলাংশে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে জানান ইন্দোনেশিয়ার ট্রেড ইউনিয়ন রাইটস সেন্টারের আন্ড্রিকো ওটাং। তিনি বলেন, ওভারটাইমের অর্থ দেয়া থেকে পরিত্রান পেতে অবাস্তব উৎপাদন টার্গেট দেয়ার চর্চা নিয়মিত হয়ে থাকে। এছাড়া হেয় প্রতিপন্ন করতে ‘পশু, গর্দভ আর বাঁদর’ বলে কটুক্তি করাও স্বাভাবিক চর্চা বলে উল্লেখ করেন তিনি। অনেক শ্রমিক জানান, রমজানের আগে কর্মী ছাটাই করার ঘটনা ঘটে প্রতিবছর। একমাস পর ফেল তাদের নিয়োগ দেয়া হয়। ঈদের বোনাস দেয়া থেকে বাচতে এই পন্থা অবলম্বন করে বুমা। সুবাংয়ের এসপিএসআই ইউনিয়নের রেতা টোটো সুনার্টের তথ্যমতে এ বছর মে মাসে রমজানের আগে ২৯০ জনকে ছাটাই করা হয়।
অলাভজনক ‘ফ্যাশন রেভোলিউশন’ এর প্রতিষ্ঠাতা ক্যারি সমার্স বলেন, ‘ইভাঙ্কা ট্রাম্প দাবি করেন কর্মজীবী নারীদের জন্য চুড়ান্ত গন্তব্য হলো তার প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এতে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে বিশ্বজুড়ে তার জন্য কারখানাগুলোতে যেসব নারী কাজ করেন, তাদের জন্য এটা প্রযোজ্য নয়।
গত এক বছরে ইভাঙ্কার ব্র্যান্ডের ভাগ্য খুলে গেছে। তার পিতার নির্বাচনী প্রচারণার সময় ইভাঙ্কা ব্র্যান্ডের মোট বিক্রি প্রায় ১৮ মিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পায়। তবে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেশ কিছু ডিপার্টমেন্টার স্টোর ইভাঙ্কার ব্র্যান্ড বাদ দিয়েছে। আর ইভাঙ্কার ব্র্যান্ডের এক্সক্লিুসিভ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জি-থ্রি গোপনে ইভাঙ্কা ট্রাম্প লেবেল লাগানো কিছু পন্যে ভিন্ন আরেকটি ব্র্যান্ডের লেবেল লাগিয়েছে।
ফাদলি নামে বুমা কারখানার একটি ওয়্যারহাউজের শ্রমিক যুক্তরাষ্ট্রগামী পন্যগুলোর প্রাইস ট্যাগ দেখে মন্তব্য করেন, ‘নামি ব্র্যান্ডের জন্য পোশাক তৈরি করতে পেরে আমি গর্বিত। কিন্তু আমি যেহেতু প্রাইস ট্যাগ দেখেছি, তাই আমার মনে প্রশ্ন জাগে, তারা কি আমাদের আর একটু বেশি অর্থ দিতে পারে না?’
এই প্রতিবেদনে উঠে আসা দাবিগেুলো নিয়ে পিটি বুমার কাছে মন্তব্য চেয়েছিল গার্ডিয়ান। কিন্তু, প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র সাফ জানিয়ে দেন শুধু তিনি না, বুমা জাকাতা বা বুমা সুবাংয়ের কেউই এ নিয়ে মন্তব্য করতে চান না। এ নিয়ে গার্ডিয়ান হোয়াইট হাউসের কাছেও মন্তব্য চেয়েছিল। কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেখান থেকে কোন জবাব মেলেনি। আর ইভাঙ্কা ট্রাম্প ব্র্যান্ডের জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান কোন প্রকার মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
No comments