বিশেষ কমিটির প্রধানকেও বরখাস্ত করতে চান ট্রাম্প
মার্কিন নির্বাচনে রুশ সংযোগ তদন্তে গঠিত বিশেষ কমিটির প্রধান রবার্ট মুলারকেও বরখাস্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ক্রিস্টোফার রুডি এ কথা জানিয়েছেন। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন রক্ষণশীল রুশ সংযোগ তদন্তকাজে মুলারের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ট্রাম্পকে মুলারের ভূমিকা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান দলের সাবেক স্পিকার নিউটজ গিংরিচ। রুডি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশেষ কমিটির টুটি টেনে ধরার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। তবে হোয়াইট হাউস জানায়, এ ইস–্যতে ট্রাম্পের সঙ্গে রুডির কোনো আলোচনা হয়নি। খবর বিবিসির। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রাশিয়ার সম্ভাব্য প্রভাব এবং ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের সঙ্গে মস্কোর কথিত যোগাযোগ নিয়ে তদন্ত পরিচালনায় বিশেষ কমিটির দায়িত্ব পান সাবেক এফবিআই প্রধান রবার্ট মুলার। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে তাকে এ পদে বসান মার্কিন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রুড রোসেস্টেইন। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন মুলার। তবে তাকে বরখাস্ত করা নিয়ে গুঞ্জন সত্য হলে নতুন করে বিতর্কে জড়াবেন ট্রাম্প। তদন্তকাজে হস্তক্ষেপের অভিযোগ ও এফবিআই পরিচালক জেমস কমিকে বরখাস্ত করা নিয়ে বর্তমানে চাপের মধ্যে রয়েছেন তিনি।
কমির বরখাস্তের পরই মুলারকে প্রধান করে নতুন বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। মুলারের নিয়োগ প্রাথমিকভাবে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক উভয় দল থেকে বেশ প্রশংসিত হয়েছিল। তবে প্রেসিডেন্টের কিছু রক্ষণশীল মিত্ররা বলেছিলেন, ট্রাম্প শিগগিরই তাকে বরখাস্ত করবেন। প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান দলের সাবেক স্পিকার গিংরিচ এক টুইট বার্তায় বলেন, মুলারের অবস্থানটি বিবেচনা করার সময় এসেছে। প্রভাবশালী রেডিও হোস্ট মার্ক লেভিন বলেন, মুলারকে পদত্যাগ করা উচিত। রক্ষণশীল ভাষ্যকার অ্যান কাউল্টার টুইটারে বলেন, ট্রাম্প এ তদন্তে জড়িত নেই- কমির এ কথা নিশ্চিত করার পর কেন আমাদের বিশষ তদন্ত কমিটির প্রয়োজন রয়েছে? অবশ্য মুলারকে বরখাস্ত করার কোনো এখতিয়ার ট্রাম্পের নেই। এজন্য তার নিয়োগকারী রোসেস্টেইনকে অবহিত করতে হবে। রুডির এ মন্তব্যে বিস্মিত হয়েছে হোয়াইট হাউস। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি শন স্পাইসার এক বিবৃতিতে জানান, এ ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে রুডির কোনো আলোচনা হয়নি। এ বিষয়ে শুধু ট্রাম্প ও তার অ্যাটর্নি জেনারেলের কথা বলার অনুমতি রয়েছে। নিউজ ম্যাক্স মিডিয়ার প্রধান নির্বাহী রুডি বলেন, এখানে কিছু সমস্যা রয়েছে বলে মনে হয়েছে। আমি জানি, ট্রাম্প এ বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছেন। কয়েকদিন আগে তিনি আমার সঙ্গে বিশেষ তদন্ত কমিটির প্রধানের নাম উচ্চারণ করেছিলেন। আমি মনে করি এখানে কোনো সমস্যা রয়েছে। এ গুঞ্জনের খবরে ডেমোক্রেটিক দলের জ্যেষ্ঠ সিনেটর অ্যাডাম বি স্কিফ বলেন, যদি ট্রাম্প মুলারকে বরখাস্ত করেন তাহলে কংগ্রেস পুনরায় তাকে বিশেষ কাউন্সিলে নিয়োগ দেবে। তাই আমাদের সময় নষ্ট করো না।’
সিনেট শুনানিতে জেফ সেশন্স : রুশ সংযোগ ও জেমস কমির বরখাস্ত হওয়ার বিষয়ে মঙ্গলবার মার্কিন সিনেটের গোয়েন্দা কমিটির কাছে সাক্ষ্য দেয়ার কথা রয়েছে মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশন্সের। ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসনে নিয়োগ পাওয়া এই কর্মকর্তা প্রথমবারের মতো সিনেট শুনানিতে অংশ নিতে যাচ্ছেন। গত সপ্তাহে সিনেট শুনানিতে ট্রাম্প সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন কমি। এরপরই শুনানিতে যোগ দেয়ার কথা ঘোষণা করেন সেশন্স। এক চিঠিতে সেশন্স বলেন, ‘এসব বিষয়ে যথাযথ ফোরামে আমার কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছি। এ ব্যাপারে সিনেট গোয়েন্দা কমিটিই যথাযথ ফোরাম। কেননা রুশ সংযোগের ব্যাপারে এ ফোরাম তদন্ত পরিচালনা করছে এবং সব ধরনের প্রাসঙ্গিক ও গোপনীয় তথ্যে তাদের হাত রয়েছে।’ সেশন্সের সাক্ষ্য দেয়ার এ ঘোষণায় এটাই বুঝা যাচ্ছে, রুশ সংযোগের মেঘ ট্রাম্পের কর্মসূচি থেকে খুব সহজে সরছে না।
No comments