ভিপি নুরের ওপর হামলা, ছাত্রীরা লাঞ্ছিত: ছাত্রকে পিটিয়ে রক্তাক্ত
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় হল সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চাওয়া এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে
রক্তাক্ত করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে
লাঞ্ছিত হয়েছেন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর। তাকে দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা
হয়। এ সময় প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে। ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে উর্দু বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ফরিদ
হাসানের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে হল প্রাধ্যক্ষকে
স্মারকলিপি দিতে গিয়ে হামলার শিকার হন নুর। গতকাল সন্ধ্যা পৌনে ৬টা ও সোয়া
৭টার দিকে দুই দফা এ হামলা হয়। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের
ওপর ডিম ছুড়ে মারেন। হলটিতে ভিপি নুরসহ কয়েকজনকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় প্রায়
দেড় ঘণ্টা।
লাঞ্ছিত করা হয় প্রতিবাদী ছাত্রীদের। ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হন ভিপি নুরের সঙ্গে থাকা কয়েকজন।
হামলায় আহত তিনজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনার বিচার চেয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান। রাত ৮টার দিকে শামসুন্নাহার হল সংসদের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি বলেন, আমরা এ ঘটনার বিচার চাই। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবো। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষার্থী এস এম হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি দিতে যান। মিছিল নিয়ে হলের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে ছাত্রলীগ তাদের বাধা দেয়। এক পর্যায়ে হল অফিসে স্মারকলিপি দিয়ে ফেরার পথে হল গেটে প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
এ সময় তারা উপস্থিত ছাত্রীদেরসহ প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের ডিম ছুড়ে মারেন। গায়ে হাত দেয়া হয় ছাত্রীদের। অন্যদিকে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী ফরিদ হাসানকে তার কক্ষে পোশাক পরিবর্তন করতে নিয়ে গেলে ছাত্রলীগ নুরসহ সবাইকে অবরুদ্ধ করে রাখে। বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীর বলেন, আমরা প্রক্টর স্যারকে স্মারকলিপি দিয়ে এসএম হলে প্রাধ্যক্ষ স্যারকে স্মারকলিপি দিতে আসি। কিন্তু স্মারকলিপি দিয়ে হল গেটে এলে আমাদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায়। তারা আমাদের ওপর ডিম নিক্ষেপ করে।
ছাত্রী বোনদেরও তারা ছাড়েনি। ডিম ছুড়ে মেরেছে। কয়েকজনের গায়েও আঘাত করেছে। অন্যদিকে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরসহ কয়েকজন ফরিদ হাসানের কক্ষে তার পোশাক পরিবর্তন করতে নিয়ে গেলে তাদের সেখানে অবরুদ্ধ করে রাখে ছাত্রলীগ। ঘটনা জানতে পেরে ছুটে আসেন হলটির প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাহবুব জোয়ার্দারসহ কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক। এ সময় তারা ভিপি নুরসহ প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের প্রাধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে উভয়পক্ষের অভিযোগ শোনার পর প্রাধ্যক্ষ নিজ নিরাপত্তায় সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ভিপি নুরসহ অবরুদ্ধ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বাইরে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে বের হন। কিন্তু হল গেটে আবারো ছাত্রলীগ হামলা চালায়। আবারো ছুড়ে মারা হয় ডিম। ডিম বৃষ্টি থেকে রেহাই পাননি হল প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্রীরাও। এ সময় ছাত্রলীগ প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে ফুলার রোডে নিয়ে যায়।
লাঞ্ছিত করে ছাত্রীদের। ছাত্রীদের রক্ষা করতে গিয়ে ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হন কয়েকজন প্রতিবাদী ছাত্র। এখানে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শামসুন্নাহার হল সংসদের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি বলেন, ছাত্রলীগ আমাদের ওপর বাজেভাবে আক্রমণ করেছে। তারা আমাদের মেয়েদের ওপর হামলে পড়েছে। বারবার পেছন থেকে জামা ধরে টান মারছে। আমাদের সেফ করতে গিয়ে অনেকে আহত হয়েছেন। তার মধ্যে তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গুরুতর আহতরা হলেন- উম্মে হাবিবা বেনজীর, আতাউল্লাহ, হাবীবুল্লাহ বেলালী। তারা হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এদিকে এ ঘটনার বিচার চেয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন ভিপি নুরসহ প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন কয়েকটি হলে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও।
শিক্ষার্থীকে মেরে রক্তাক্ত করে ছাত্রলীগ: ১১ই মার্চ অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল সংসদে জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাওয়া শিক্ষার্থীকে মেরে রক্তাক্ত করেছে শাখা ছাত্রলীগ ও হল সংসদের নেতারা। সোমবার রাতে হলের ডাইনিং রুমে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম ফরিদ হাসান। তিনি উর্দু বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। আহত ফরিদের আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে ৩২টি সেলাই লেগেছে। তিনি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ফরিদ ছাত্রলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে শীর্ষ নেতাদের চাপে নির্বাচন থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতাসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনে ছাত্রলীগ।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতে তাকে মারধর করে হল ছাড়া করে ছাত্রলীগ। জানা গেছে, হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, সাবেক নেতা মিজানুর রহমান পিকুল ও হল সংসদের জিএস জুলিয়াস জিসারের নেতৃত্বে মারধর করা হয়। মারধরের আগে রাত ১০টায় ছাত্রলীগের হল কমিটির সভা ছিল। সভা থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফরিদ হাসানকে মারধর করে হল ছাড়া করা হয় বলে ছাত্রলীগের একটি অংশের অভিযোগ। তবে ফরিদকে মারধরে জড়িত থাকার বিষয় অস্বীকার করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও হল সংসদের জিএস। এদিকে ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এটি হলের বিষয়।
হল প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। আমরা হল প্রশাসনকে সহযোগিতা করবো। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, আমি রাত ১১টার দিকে রুমে ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন লাঠিসোটাসহ গিয়ে ডেকে মেসের ডাইনিংয়ে নিয়ে যায়। সেখানে হল ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, সাবেক নেতা মিজানুর রহমান পিকুল ও হল সংসদের জিএস জুলিয়াস সিজারসহ হল কমিটির প্রায় সবাই উপস্থিত ছিলেন। এ সময় উপস্থিত নেতারা ‘তোর সাহস তো কম নয়, এখনো হলে থাকিস’ এই বলে আমাকে ব্যাপক মারধর শুরু করে। সেখান থেকে মারতে মারতে হল গেটে নিয়ে গিয়ে বেরিয়ে যেতে বলে। এ সময় আমাকে কেউ হাসপাতালে নিয়ে যেতেও সাহস করেনি। পরে নিজে নিজেই হাসপাতালে গিয়েছি। ফরিদ জানান, হল সংসদ নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। তবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা তাকে শাসিয়ে ও হুমকি-ধমকি দিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বলেন। এক পর্যায়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন বলে জানান তিনি। মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে হল সংসদের জিএস জুলিয়াস সিজার বলেন, আমরা হল ছাত্র সংসদ সিদ্ধান্ত নিয়েছি কোনো মাদক ব্যবসায়ী ও শিবিরকে হলে থাকতে দেয়া হবে না। সে হিসেবে ফরিদের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রমাণিত। তাই আমরা তাকে ভদ্রভাবে হল ছেড়ে দিতে বলেছি। এ ক্ষেত্রে আমরা হল শাখা ছাত্রলীগের সহযোগিতা নিয়েছিলাম।
কারণ তারা হলে ক্রিয়াশীল। তিনি বলেন, আমরা তাকে মারধর করিনি। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করেছে বলে জানতে পেরেছি। হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল বলেন, আমার হলে যখন মিটিং করছিলাম তখন বাইরে হট্টগোলের শব্দ পেয়ে গিয়ে দেখি ফরিদকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মারধর করেছে। এর সঙ্গে আমার সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি তাকে মারধরের আগে দেখিওনি। আর সে ছিল হলের বাইরে। সপ্তাহখানেক আগে মাদক সংশ্লিষ্টতার কারণে তার রুম হল প্রশাসন সিলগালা করেছে। এদিকে মারধরের খবর শুনে সকালে ফরিদকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে দেখতে যান ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর ও সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। এ বিষয়ে নুরুল হক নুর বলেন, আমরা আগে থেকেই বলে আসছি, হলে অছাত্র যারা থাকে তারাই নিয়মিত ছাত্রদের নির্যাতন করে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে তার ন্যায়বিচার প্রাপ্তির জন্য আমাদের যা করা লাগে তাই করবো।
লাঞ্ছিত করা হয় প্রতিবাদী ছাত্রীদের। ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হন ভিপি নুরের সঙ্গে থাকা কয়েকজন।
হামলায় আহত তিনজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনার বিচার চেয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান। রাত ৮টার দিকে শামসুন্নাহার হল সংসদের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি বলেন, আমরা এ ঘটনার বিচার চাই। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবো। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষার্থী এস এম হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি দিতে যান। মিছিল নিয়ে হলের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে ছাত্রলীগ তাদের বাধা দেয়। এক পর্যায়ে হল অফিসে স্মারকলিপি দিয়ে ফেরার পথে হল গেটে প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
এ সময় তারা উপস্থিত ছাত্রীদেরসহ প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের ডিম ছুড়ে মারেন। গায়ে হাত দেয়া হয় ছাত্রীদের। অন্যদিকে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী ফরিদ হাসানকে তার কক্ষে পোশাক পরিবর্তন করতে নিয়ে গেলে ছাত্রলীগ নুরসহ সবাইকে অবরুদ্ধ করে রাখে। বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীর বলেন, আমরা প্রক্টর স্যারকে স্মারকলিপি দিয়ে এসএম হলে প্রাধ্যক্ষ স্যারকে স্মারকলিপি দিতে আসি। কিন্তু স্মারকলিপি দিয়ে হল গেটে এলে আমাদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায়। তারা আমাদের ওপর ডিম নিক্ষেপ করে।
ছাত্রী বোনদেরও তারা ছাড়েনি। ডিম ছুড়ে মেরেছে। কয়েকজনের গায়েও আঘাত করেছে। অন্যদিকে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরসহ কয়েকজন ফরিদ হাসানের কক্ষে তার পোশাক পরিবর্তন করতে নিয়ে গেলে তাদের সেখানে অবরুদ্ধ করে রাখে ছাত্রলীগ। ঘটনা জানতে পেরে ছুটে আসেন হলটির প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাহবুব জোয়ার্দারসহ কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক। এ সময় তারা ভিপি নুরসহ প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের প্রাধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে উভয়পক্ষের অভিযোগ শোনার পর প্রাধ্যক্ষ নিজ নিরাপত্তায় সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ভিপি নুরসহ অবরুদ্ধ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বাইরে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে বের হন। কিন্তু হল গেটে আবারো ছাত্রলীগ হামলা চালায়। আবারো ছুড়ে মারা হয় ডিম। ডিম বৃষ্টি থেকে রেহাই পাননি হল প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্রীরাও। এ সময় ছাত্রলীগ প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে ফুলার রোডে নিয়ে যায়।
লাঞ্ছিত করে ছাত্রীদের। ছাত্রীদের রক্ষা করতে গিয়ে ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হন কয়েকজন প্রতিবাদী ছাত্র। এখানে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শামসুন্নাহার হল সংসদের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি বলেন, ছাত্রলীগ আমাদের ওপর বাজেভাবে আক্রমণ করেছে। তারা আমাদের মেয়েদের ওপর হামলে পড়েছে। বারবার পেছন থেকে জামা ধরে টান মারছে। আমাদের সেফ করতে গিয়ে অনেকে আহত হয়েছেন। তার মধ্যে তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গুরুতর আহতরা হলেন- উম্মে হাবিবা বেনজীর, আতাউল্লাহ, হাবীবুল্লাহ বেলালী। তারা হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এদিকে এ ঘটনার বিচার চেয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন ভিপি নুরসহ প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন কয়েকটি হলে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও।
শিক্ষার্থীকে মেরে রক্তাক্ত করে ছাত্রলীগ: ১১ই মার্চ অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল সংসদে জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাওয়া শিক্ষার্থীকে মেরে রক্তাক্ত করেছে শাখা ছাত্রলীগ ও হল সংসদের নেতারা। সোমবার রাতে হলের ডাইনিং রুমে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম ফরিদ হাসান। তিনি উর্দু বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। আহত ফরিদের আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে ৩২টি সেলাই লেগেছে। তিনি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ফরিদ ছাত্রলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে শীর্ষ নেতাদের চাপে নির্বাচন থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতাসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনে ছাত্রলীগ।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতে তাকে মারধর করে হল ছাড়া করে ছাত্রলীগ। জানা গেছে, হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, সাবেক নেতা মিজানুর রহমান পিকুল ও হল সংসদের জিএস জুলিয়াস জিসারের নেতৃত্বে মারধর করা হয়। মারধরের আগে রাত ১০টায় ছাত্রলীগের হল কমিটির সভা ছিল। সভা থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফরিদ হাসানকে মারধর করে হল ছাড়া করা হয় বলে ছাত্রলীগের একটি অংশের অভিযোগ। তবে ফরিদকে মারধরে জড়িত থাকার বিষয় অস্বীকার করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও হল সংসদের জিএস। এদিকে ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এটি হলের বিষয়।
হল প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। আমরা হল প্রশাসনকে সহযোগিতা করবো। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, আমি রাত ১১টার দিকে রুমে ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন লাঠিসোটাসহ গিয়ে ডেকে মেসের ডাইনিংয়ে নিয়ে যায়। সেখানে হল ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, সাবেক নেতা মিজানুর রহমান পিকুল ও হল সংসদের জিএস জুলিয়াস সিজারসহ হল কমিটির প্রায় সবাই উপস্থিত ছিলেন। এ সময় উপস্থিত নেতারা ‘তোর সাহস তো কম নয়, এখনো হলে থাকিস’ এই বলে আমাকে ব্যাপক মারধর শুরু করে। সেখান থেকে মারতে মারতে হল গেটে নিয়ে গিয়ে বেরিয়ে যেতে বলে। এ সময় আমাকে কেউ হাসপাতালে নিয়ে যেতেও সাহস করেনি। পরে নিজে নিজেই হাসপাতালে গিয়েছি। ফরিদ জানান, হল সংসদ নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। তবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা তাকে শাসিয়ে ও হুমকি-ধমকি দিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বলেন। এক পর্যায়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন বলে জানান তিনি। মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে হল সংসদের জিএস জুলিয়াস সিজার বলেন, আমরা হল ছাত্র সংসদ সিদ্ধান্ত নিয়েছি কোনো মাদক ব্যবসায়ী ও শিবিরকে হলে থাকতে দেয়া হবে না। সে হিসেবে ফরিদের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রমাণিত। তাই আমরা তাকে ভদ্রভাবে হল ছেড়ে দিতে বলেছি। এ ক্ষেত্রে আমরা হল শাখা ছাত্রলীগের সহযোগিতা নিয়েছিলাম।
কারণ তারা হলে ক্রিয়াশীল। তিনি বলেন, আমরা তাকে মারধর করিনি। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করেছে বলে জানতে পেরেছি। হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল বলেন, আমার হলে যখন মিটিং করছিলাম তখন বাইরে হট্টগোলের শব্দ পেয়ে গিয়ে দেখি ফরিদকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মারধর করেছে। এর সঙ্গে আমার সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি তাকে মারধরের আগে দেখিওনি। আর সে ছিল হলের বাইরে। সপ্তাহখানেক আগে মাদক সংশ্লিষ্টতার কারণে তার রুম হল প্রশাসন সিলগালা করেছে। এদিকে মারধরের খবর শুনে সকালে ফরিদকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে দেখতে যান ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর ও সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। এ বিষয়ে নুরুল হক নুর বলেন, আমরা আগে থেকেই বলে আসছি, হলে অছাত্র যারা থাকে তারাই নিয়মিত ছাত্রদের নির্যাতন করে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে তার ন্যায়বিচার প্রাপ্তির জন্য আমাদের যা করা লাগে তাই করবো।
No comments