চীনা ধনীরা ভিন্ন পণ্য খুঁজছেন
* পছন্দের পরিবর্তন।
* আজকের ধনী তরুণ ক্রেতারা ‘মান’, ‘ভিন্নতা’ ও ‘শিল্পনৈপুণ্য’ নিয়ে বেশি মাথা ঘামাচ্ছেন।
* ছোট কোম্পানি এসব চাহিদা পূরণ করছে।
* আজকের ধনী তরুণ ক্রেতারা ‘মান’, ‘ভিন্নতা’ ও ‘শিল্পনৈপুণ্য’ নিয়ে বেশি মাথা ঘামাচ্ছেন।
* ছোট কোম্পানি এসব চাহিদা পূরণ করছে।
কয়েক
বছর ধরে চীনের বিলাসদ্রব্যের ক্রেতাদের রুচিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে।
বড় বড় কোম্পানির পণ্যের প্রতি তাদের এখন আর আকর্ষণ নেই। তাদের আকর্ষণ এখন
দামি, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত বুটিক পণ্যের প্রতি। এসব পণ্যই এখন
বিলাসবহুল কেনাকাটার প্রতীক হয়ে উঠেছে। চীনা দৈনিক ডেইলি জিং সূত্রে এই খবর
পাওয়া গেছে।
বাজারই এই পরিবর্তনের নিয়ামক শক্তি। ব্যাপারটা হলো, ক্রেতাদের বয়স যেমন কমে গেছে, তেমনি তাদের রুচিও পরিশীলিত হচ্ছে। এক দশক আগেও বিলাসদ্রব্যের ক্রেতারা গুসি ও প্রাদার পণ্যের পার্থক্য নিয়ে মাথা ঘামাত। আর আজকের ধনী তরুণ ক্রেতারা ‘মান’, ‘ভিন্নতা’ ও ‘শিল্পনৈপুণ্য’ নিয়ে বেশি মাথা ঘামাচ্ছে। আর এর ভিত্তিতেই সুনির্দিষ্ট ক্রেতার চাহিদা পূরণকারী ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের ব্র্যান্ড ভাবমূর্তি তৈরি করছে।
হংকংভিত্তিক পেডার গ্রুপের মার্চেন্ডাইজিং পরিচালক সারা ওং জিংকে বলেন, ‘চীনা ক্রেতারা খুবই পরিবর্তনকামী। তারা নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছে। ফলে দুনিয়ার চল সম্পর্কে এরা অবগত। রীতি অনুযায়ী তাদের বড় বড় কোম্পানির প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে তারা নতুন, অনন্য ও প্রাসঙ্গিক ব্র্যান্ডের দিকে ঝুঁকছে।
এ রকম বেশ কিছু ব্র্যান্ড চীনে ব্যাপক কাটতি পেয়েছে। মার্কিন স্কিন কেয়ার কোম্পানি এরনো লাসজলো ঠিক সে রকম একটি ব্র্যান্ড। কোম্পানিটি ৯৩ বছরের পুরোনো হরেও চীনের বাজারে তাদের প্রবেশ মাত্র পাঁচ বছর আগে। চীনের বেশ কয়েকটি সুপারশপে এখন তাদের কাউন্টার আছে। তাদের পণ্য খুবই উঁচু মানের হওয়ায় চীনা ক্রেতারা এখন এই ব্র্যান্ডের পণ্য ডাকনামে ডাকতে শুরু করেছে।
লাসজলোর প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ক্রিস্টি ওয়াটসন জিংকে বলেন, ছোট কোম্পানি হওয়ার কারণেই লাসজলো চীনে সফর হয়েছে। তাঁর ভাষ্য, ‘আপনি যত ছোট হবেন, মানুষের সঙ্গে জনে জনে কথা বলার সুযোগ তত বেশি পাবেন। নির্দিষ্ট কিছু পণ্য উৎপাদন করার কারণে ক্রেতাদের মূল গুরুত্ব দেওয়ার বেলায় বড় কোম্পানির চেয়ে আপনাকে ভালো করতে হবে। এ ছাড়া আপনাকে নিয়োগও দিতে হবে সেভাবে, যাতে কর্মীরা ক্রেতাদের বিশেষ অভিজ্ঞতার স্বাদ দিতে পারেন। এ ছাড়া ক্রেতার শক্তি বলেও একটা ব্যাপার আছে। ক্রেতারাই আমাদের সবচেয়ে বড় শুভেচ্ছা দূত। যেদিন থেকে তাঁরা আমাদের আবিষ্কার করেন, সেদিন থেকে তাঁরা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অংশীদার হয়ে যান।’
এ লক্ষ্যে এসব কোম্পানি ক্রেতাদের সঙ্গে আলাপচারিতার মাধ্যমে বিপণন করে থাকে এবং তাদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে। এ ছাড়া তারা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ মতামত নির্ধারণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে। তারা আবার কোম্পানির পক্ষে চীনের সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেয়। ক্রিস্টি ওয়াটসন আরও বলেন, ‘কৌশল হিসেবে এটি ডিজিটাল মাধ্যমই প্রথম ব্যবহার করে থাকে। অফলাইনেও আমরা ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করি।’ এই কৌশল যথেষ্ট সফল বলেই মন্তব্য করেন ওয়াটসন। লাসজলোর ৬০ শতাংশ রাজস্ব আসছে এসব টিমল নামের একটি সুপারশপ থেকে। এ ছাড়া ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য তারা আরও মলে কাউন্টার খোলার কথা ভাবছে।
পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বুটিক হ্যান্ডব্যাগ ব্র্যান্ড ওয়েলডেনও চীনে একই কায়দায় ক্রেতাদের কাছে পরিচিত নাম হয়ে উঠেছে। ক্রেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগের পাশাপাশি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারেও তারা পারদর্শিতা দেখিয়েছে।
ওয়েলডেন ২০১৭ সালে চীনের অনলাইন বিক্রয় কেন্দ্র তাওবাও গ্লোবাল প্ল্যাটফর্মে পণ্য বিক্রি করতে শুরু করে। ৪০ হাজার গ্রাহকের কাছে এই প্ল্যাটফর্মের পণ্য সরাসরি প্রদর্শিত হয়। চীনের ফ্যাশন কোম্পানি অ্যান্ড লুক্সে ইনকরপোরেশন, মার্ক ইউয়ান ও জোয়ে ঝাং ওয়েলডেনকে বাছাই করে। ওয়েলডেনের প্রতিষ্ঠাতা স্যান্ডি ফ্রেইসেন বলেন, ‘পুরো ব্যাপারটা আমার বাসাতেই সম্পন্ন হয়েছে। ক্রেতারা আমাদের কোম্পানি ও পণ্যের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পেরেছেন। পণ্যের মান ও কার্যকারিতার কারণে দুই দিনের মধ্যে তারা তিন লাখ ডলারের ব্যাগ বিক্রি করে। এর মধ্যে ৮ লাখ ৮ হাজার মানুষ তাদের পণ্য দেখে এবং ৪০ লাখ ৬ হাজার মানুষ তাদের পণ্যে লাইক দেয়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, নতুন বা ছোট ব্র্যান্ডগুলোর সফল হতে গেলে এখন এই কৌশলেই যেতে হবে। বড় কোম্পানির পক্ষে যা করা সম্ভব নয়, তাদের ঠিক সেটাই করতে হবে। তবে বিপণন প্রক্রিয়ার মধ্যে এই কৌশল বিচক্ষণতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে।
বাজারই এই পরিবর্তনের নিয়ামক শক্তি। ব্যাপারটা হলো, ক্রেতাদের বয়স যেমন কমে গেছে, তেমনি তাদের রুচিও পরিশীলিত হচ্ছে। এক দশক আগেও বিলাসদ্রব্যের ক্রেতারা গুসি ও প্রাদার পণ্যের পার্থক্য নিয়ে মাথা ঘামাত। আর আজকের ধনী তরুণ ক্রেতারা ‘মান’, ‘ভিন্নতা’ ও ‘শিল্পনৈপুণ্য’ নিয়ে বেশি মাথা ঘামাচ্ছে। আর এর ভিত্তিতেই সুনির্দিষ্ট ক্রেতার চাহিদা পূরণকারী ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের ব্র্যান্ড ভাবমূর্তি তৈরি করছে।
হংকংভিত্তিক পেডার গ্রুপের মার্চেন্ডাইজিং পরিচালক সারা ওং জিংকে বলেন, ‘চীনা ক্রেতারা খুবই পরিবর্তনকামী। তারা নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছে। ফলে দুনিয়ার চল সম্পর্কে এরা অবগত। রীতি অনুযায়ী তাদের বড় বড় কোম্পানির প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে তারা নতুন, অনন্য ও প্রাসঙ্গিক ব্র্যান্ডের দিকে ঝুঁকছে।
এ রকম বেশ কিছু ব্র্যান্ড চীনে ব্যাপক কাটতি পেয়েছে। মার্কিন স্কিন কেয়ার কোম্পানি এরনো লাসজলো ঠিক সে রকম একটি ব্র্যান্ড। কোম্পানিটি ৯৩ বছরের পুরোনো হরেও চীনের বাজারে তাদের প্রবেশ মাত্র পাঁচ বছর আগে। চীনের বেশ কয়েকটি সুপারশপে এখন তাদের কাউন্টার আছে। তাদের পণ্য খুবই উঁচু মানের হওয়ায় চীনা ক্রেতারা এখন এই ব্র্যান্ডের পণ্য ডাকনামে ডাকতে শুরু করেছে।
লাসজলোর প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ক্রিস্টি ওয়াটসন জিংকে বলেন, ছোট কোম্পানি হওয়ার কারণেই লাসজলো চীনে সফর হয়েছে। তাঁর ভাষ্য, ‘আপনি যত ছোট হবেন, মানুষের সঙ্গে জনে জনে কথা বলার সুযোগ তত বেশি পাবেন। নির্দিষ্ট কিছু পণ্য উৎপাদন করার কারণে ক্রেতাদের মূল গুরুত্ব দেওয়ার বেলায় বড় কোম্পানির চেয়ে আপনাকে ভালো করতে হবে। এ ছাড়া আপনাকে নিয়োগও দিতে হবে সেভাবে, যাতে কর্মীরা ক্রেতাদের বিশেষ অভিজ্ঞতার স্বাদ দিতে পারেন। এ ছাড়া ক্রেতার শক্তি বলেও একটা ব্যাপার আছে। ক্রেতারাই আমাদের সবচেয়ে বড় শুভেচ্ছা দূত। যেদিন থেকে তাঁরা আমাদের আবিষ্কার করেন, সেদিন থেকে তাঁরা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অংশীদার হয়ে যান।’
এ লক্ষ্যে এসব কোম্পানি ক্রেতাদের সঙ্গে আলাপচারিতার মাধ্যমে বিপণন করে থাকে এবং তাদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে। এ ছাড়া তারা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ মতামত নির্ধারণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে। তারা আবার কোম্পানির পক্ষে চীনের সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেয়। ক্রিস্টি ওয়াটসন আরও বলেন, ‘কৌশল হিসেবে এটি ডিজিটাল মাধ্যমই প্রথম ব্যবহার করে থাকে। অফলাইনেও আমরা ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করি।’ এই কৌশল যথেষ্ট সফল বলেই মন্তব্য করেন ওয়াটসন। লাসজলোর ৬০ শতাংশ রাজস্ব আসছে এসব টিমল নামের একটি সুপারশপ থেকে। এ ছাড়া ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য তারা আরও মলে কাউন্টার খোলার কথা ভাবছে।
পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বুটিক হ্যান্ডব্যাগ ব্র্যান্ড ওয়েলডেনও চীনে একই কায়দায় ক্রেতাদের কাছে পরিচিত নাম হয়ে উঠেছে। ক্রেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগের পাশাপাশি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারেও তারা পারদর্শিতা দেখিয়েছে।
ওয়েলডেন ২০১৭ সালে চীনের অনলাইন বিক্রয় কেন্দ্র তাওবাও গ্লোবাল প্ল্যাটফর্মে পণ্য বিক্রি করতে শুরু করে। ৪০ হাজার গ্রাহকের কাছে এই প্ল্যাটফর্মের পণ্য সরাসরি প্রদর্শিত হয়। চীনের ফ্যাশন কোম্পানি অ্যান্ড লুক্সে ইনকরপোরেশন, মার্ক ইউয়ান ও জোয়ে ঝাং ওয়েলডেনকে বাছাই করে। ওয়েলডেনের প্রতিষ্ঠাতা স্যান্ডি ফ্রেইসেন বলেন, ‘পুরো ব্যাপারটা আমার বাসাতেই সম্পন্ন হয়েছে। ক্রেতারা আমাদের কোম্পানি ও পণ্যের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পেরেছেন। পণ্যের মান ও কার্যকারিতার কারণে দুই দিনের মধ্যে তারা তিন লাখ ডলারের ব্যাগ বিক্রি করে। এর মধ্যে ৮ লাখ ৮ হাজার মানুষ তাদের পণ্য দেখে এবং ৪০ লাখ ৬ হাজার মানুষ তাদের পণ্যে লাইক দেয়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, নতুন বা ছোট ব্র্যান্ডগুলোর সফল হতে গেলে এখন এই কৌশলেই যেতে হবে। বড় কোম্পানির পক্ষে যা করা সম্ভব নয়, তাদের ঠিক সেটাই করতে হবে। তবে বিপণন প্রক্রিয়ার মধ্যে এই কৌশল বিচক্ষণতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে।
No comments