নতুন করে ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা করছে সরকার by দীন ইসলাম
নতুন
করে ঢাকা শহরের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য
চারটি বেস লাইন ঠিক করা হয়েছে। ওই বেস লাইন অনুযায়ী কাজ শুরু করেছে ১৫
সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট
কর্মকর্তারা বলছেন, বেস লাইন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করলে আগের চেয়ে এ
সংখ্যা কয়েক গুণ ছাড়িয়ে যাবে। কারণ এর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর সমীক্ষা
সঠিকভাবে করা হয়নি। আগের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকার সঙ্গে ভবনগুলোর প্রকৃত
অবস্থা এবং তাতে বসবাসরত লোকের সংখ্যা সংক্রান্ত প্রকৃত কোনো তথ্য নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮শে জুন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের
সচিব শহিদউল্লাহ খন্দকারের সভাপতিত্বে ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর প্রকৃত
অবস্থা রিভিউ করতে উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি
করপোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, রাজউক কর্তৃক
চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বর্তমান সংখ্যা ৩২১টি। এর মধ্যে বাহ্যিক
পরিদর্শনে অতীব ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা ৩৫টি, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা
২২০টি, ভেঙে ফেলা হয়েছে ২৫টি, নতুনভাবে নির্মিত হয়েছে ২৮টি, ২০১০ সালে
জরিপে ছিল কিন্তু ২০১৬ সালে খুঁজে পাওয়া যায়নি ১৩টি। এসব ভবনকে নোটিশ করা
হয়েছে। সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধির বক্তব্যের পর ওই সভায় উপস্থিত
প্রতিনিধিরা বলেন, রাজউক কর্তৃক চিহ্নিত ৩২১টি ভবনের বাইরেও আরো ঝুঁকিপূর্ণ
ভবন থাকতে পারে। এছাড়া এর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করার সময় বেস লাইন
হিসেবে কি নির্ধারণ করা হয়েছে ওই বিষয়টিও জানা থাকা দরকার। একই সভায়
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রাশিদা বেগম বলেন,
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের সভায়
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে দুইটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মালিক ও কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভবনে বসবাসকারীদের সরিয়ে নেয়া।
এছাড়া চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে রাজউক বা সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধিরা
লাল রংয়ের সাইনবোর্ড লাগাবে। যাতে লেখা থাকবে ‘ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ ভবনে
বসবাস করা নিরাপদ নয়’। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে,
পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো নিয়ে আলোচনার পর মতামত দিতে ১৫ সদস্যের উচ্চ
পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও
ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে ও সদস্য সচিব রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন
নিয়ন্ত্রণ)। এ কমিটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ক্রাইটেরিয়া নির্ধারণ, ভবনগুলোর
প্রকৃত অবস্থা, সেখানে বসবাসরত লোকদের সংখ্যা নির্ধারণ, ভবনগুলোর
ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা নিরসন করতে কি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে ওই বিষয়ে মতামত
দেবে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, আপাতত এ
কমিটিকে তিন মাস সময় দেয়া হয়েছে।
No comments