দুই সপ্তাহ ধরে খালেদার সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না স্বজনরা
দুই
সপ্তাহ ধরে বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার
স্বজনরা সাক্ষাৎ করতে পারছেন না। জিয়া অরফারেজ ট্রাস্ট মামলায় তাকে
কারাগারে নেয়ার পর থেকে প্রতি সপ্তাহেই তার সঙ্গে একবার সাক্ষাতের সুযোগ
পেতেন স্বজনরা। কারাগারে খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লেও স্বজনদের সঙ্গে এ
সাক্ষাৎ অব্যাহত ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ৩০শে জুন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাদের
সর্বশেষ সাক্ষাৎ হয়। কিন্তু তারপর থেকে আর সাক্ষাৎ মিলছে না। প্রথমবার
কোনো কারণ ছাড়াই সাক্ষাতের সিডিউল বাতিল করা হয়। কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি
সাপেক্ষে শনিবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার বড় বোন সেলিনা ইসলামসহ পরিবারের ৫
সদস্য দেখা করতে যান। কিন্তু তাদের অভ্যর্থনা কক্ষে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়ে
রেখে কারা কর্মকর্তারা না করে দেন। তারা জানান, অসুস্থতার কারণে বিএনপি
চেয়ারপারসন দোতলা থেকে নেমে আসতে পারছেন না তাই দেখা হবে না। ওদিকে
কারাগারে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরাও তার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছেন না। এ
ঘটনাকে স্বাভাবিকভাবে দেখছে না বিএনপি। দলটির তরফে অভিযোগ করা হয়েছে,
কারাগারে প্রাপ্য ডিভিশন পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া। সাক্ষাতের প্রতিবন্ধকতার
সৃষ্টির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার খবর জানতে দেয়া হচ্ছে না।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা ঘোষণার পর আদালত ৮ই ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠান। তারপর থেকেই তিনি কারাবন্দি রয়েছেন পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডে কেয়ার সেন্টারে। কারাগারে নেয়ার পর তিনি স্নায়ুবিক ব্যথায় ভুগছেন। সার্ভাইকাল স্পনডাইলোসিস রোগের ভয়াবহতার কারণে তার বাম হাত ও বাম পা ফুলে যায়। ইতিপূর্বে তাঁর দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করায় তিনি একজন বিশেষ পরিচর্যা সাপেক্ষ রোগী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ জটিল নানা রোগে আক্রান্ত। কারাগারে নেয়ার পর প্রতিরাতে তার কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। লাল হয়ে যায় ডান চোখ। তিনি ঠিকমতো হাঁটা-চলাও করতে পারছেন না। কিন্তু এত কিছুর পরও বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার উদ্যোগ নেয়নি সরকার। বিএনপি’র তরফে বারবার দাবির ও শান্তিপূর্ণ নানা কর্মসূচি পালনের পর সরকারি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল টিম গঠন করে কারা কর্তৃপক্ষ। খালেদা জিয়ার প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ৭ই এপ্রিল তাকে নেয়া হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে। সেখানে তার কয়েকটি এক্স-রে করা হলেও বিশেষায়িত কোনো চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়নি। এরপর বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তির মাধ্যমে তার বিশেষায়িত চিকিৎসার দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। তারই অংশ হিসেবে তারা বারবার আবেদন করেছেন কারা কর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডিআইজি প্রিজনের সঙ্গে সাক্ষাতও করেছেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে পালন করেছেন নানা কর্মসূচি। এমন পরিস্থিতিতে ৫ই জুন কারাগারে মাথা ঘুরে পড়ে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসা বিদ্যায় যেটিকে টিআইএ (ট্রানজিয়েন্ট স্কিমিক অ্যাটাক) বলে জানান চিকিৎসকরা। এরপর তাকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়ার দাবিটি জোরালো হয়। একই দাবিতে সর্বশেষ ৯ই জুলাই ঢাকাসহ সারা দেশে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
১২ই জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছিলেন, কারাবিধি লঙ্ঘন করে ১১দিন ধরে পরিবারের লোকজনসহ কাউকেই দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। কারাবন্দি হিসেবে খালেদা জিয়ার যে সাংবিধানিক অধিকার পাওয়ার কথা সেটি থেকেও তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কারাবিধি অনুযায়ী খালেদা জিয়ার সঙ্গে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের দেখা না করতে দেয়া তার এবং বিএনপি নেতৃবৃন্দের প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘন। কারাবিধি উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেছিলেন, খালেদা জিয়া কারাবিধির ৬১৭ বিধি অনুসারে ডিভিশন-১ প্রাপ্ত হন। আর ডিভিশন-১ প্রাপ্ত বন্দির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য কারাবিধির সপ্তদশ অধ্যায়ে (বিধি-৬৬৩-৬৮১) বর্ণিত অধিকারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার রাজনৈতিক সহকর্মী-বন্ধুবান্ধবের সাক্ষাৎকারের বিষয়টিও বিশদভাবে বলা আছে। এছাড়া খালেদা জিয়া তার সাজার মামলায় জামিনে আছেন তাই তাকে সাজাপ্রাপ্ত বন্দি নয়, বিচারাধীন মামলায় বন্দি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। সে হিসেবেও কারাবিধির সপ্তবিংশ অধ্যায়ে (বিধি-৯০৯-৯১০) অনুসারে তিনি প্রথম শ্রেণির ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি। সেখানেও তার রাজনৈতিক সহকর্মী-বন্ধুদের সাক্ষাতের অধিকার বিধি-৬৮২তে দেয়া আছে। সেদিন বিএনপি মহাসচিব আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিলেন, আমরা আশঙ্কা করছি- খালেদা জিয়াকে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে কিনা।
বিএনপি মহাসচিবের সে ব্রিফিংয়ের পর কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে ১৪ই জুলাই খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান তার বড় বোন সেলিনা ইসলামসহ পরিবারের সদস্যরা। বিকাল ৫টার দিকে তারা কারাগারে প্রবেশ করে প্রায় একঘণ্টা অপেক্ষা পর বেরিয়ে আসেন। পুরো সময়টা তারা অপেক্ষায় ছিলেন কারাগারের ভেতরে ভিজিটিং রুমে। কারাগার থেকে বেরিয়ে সেলিনা ইসলাম গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, সাক্ষাতের অনুমতি মিললেও খালেদা জিয়া অসুস্থতার কারণে নিচে নামতে না পারায় দেখা হয়নি। যতটুকু জেনেছি, খালেদা জিয়া জ্বরে ভুগছেন, তার শরীরের ব্যথা রয়েছে। যার কারণে তিনি দোতলা থেকে নেমে নিচতলায় আসতে পারেননি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আগে উপরে গিয়ে তার (খালেদা জিয়ার) রুমের পাশে করিডোরে দেখা করতাম। কিন্তু আজকে সে অসুস্থ জানানো হলেও আমাদের উপরে যেতে দেয়নি। আমরা তার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার খবর জানতে না দেয়ার জন্যই তার সঙ্গে সাক্ষাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত গতকাল এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে কতটুকু অসুস্থ সে খবরও জানতে দিচ্ছে না কারা কর্তৃপক্ষ। তার পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাৎ করতে গেলে তাদের দোতলায় যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। আসলে কারা কর্তৃৃপক্ষ দেশনেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে শুধু উদাসীনই নয়, সরকারের নির্দেশে কোনো ভয়ঙ্কর মাস্টারপ্ল্যানের দিকে এগুচ্ছে কী না তা নিয়ে জনমনে এক বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী বন্দির সামাজিক মর্যাদা বিবেচনায় জেলার সাক্ষাতের দিনক্ষণ নির্ধারণ করেন। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দেশের সবচেয়ে বড় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
তিনি একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনাপ্রধানের স্ত্রী। সর্বোপরি একজন সত্তরোর্ধ্ব বয়স্ক অসুস্থ নারী। সে অনুযায়ী তার স্বজন, পরিবারের সদস্য, আইনজীবী ও চিকিৎসকরা প্রতি সপ্তাহে দেখা পাওয়ার কথা। কিন্তু সরকার ও কারা কর্তৃপক্ষ তার কিছুই গ্রাহ্য করছে না। স্বজনদের যেমন সাক্ষাতের সুযোগ দিচ্ছে না, তেমনি আমরা আইনজীবী এবং তার চিকিৎসকরাও সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছি না।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা ঘোষণার পর আদালত ৮ই ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠান। তারপর থেকেই তিনি কারাবন্দি রয়েছেন পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডে কেয়ার সেন্টারে। কারাগারে নেয়ার পর তিনি স্নায়ুবিক ব্যথায় ভুগছেন। সার্ভাইকাল স্পনডাইলোসিস রোগের ভয়াবহতার কারণে তার বাম হাত ও বাম পা ফুলে যায়। ইতিপূর্বে তাঁর দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করায় তিনি একজন বিশেষ পরিচর্যা সাপেক্ষ রোগী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ জটিল নানা রোগে আক্রান্ত। কারাগারে নেয়ার পর প্রতিরাতে তার কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। লাল হয়ে যায় ডান চোখ। তিনি ঠিকমতো হাঁটা-চলাও করতে পারছেন না। কিন্তু এত কিছুর পরও বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার উদ্যোগ নেয়নি সরকার। বিএনপি’র তরফে বারবার দাবির ও শান্তিপূর্ণ নানা কর্মসূচি পালনের পর সরকারি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল টিম গঠন করে কারা কর্তৃপক্ষ। খালেদা জিয়ার প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ৭ই এপ্রিল তাকে নেয়া হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে। সেখানে তার কয়েকটি এক্স-রে করা হলেও বিশেষায়িত কোনো চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়নি। এরপর বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তির মাধ্যমে তার বিশেষায়িত চিকিৎসার দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। তারই অংশ হিসেবে তারা বারবার আবেদন করেছেন কারা কর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডিআইজি প্রিজনের সঙ্গে সাক্ষাতও করেছেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে পালন করেছেন নানা কর্মসূচি। এমন পরিস্থিতিতে ৫ই জুন কারাগারে মাথা ঘুরে পড়ে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসা বিদ্যায় যেটিকে টিআইএ (ট্রানজিয়েন্ট স্কিমিক অ্যাটাক) বলে জানান চিকিৎসকরা। এরপর তাকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়ার দাবিটি জোরালো হয়। একই দাবিতে সর্বশেষ ৯ই জুলাই ঢাকাসহ সারা দেশে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
১২ই জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছিলেন, কারাবিধি লঙ্ঘন করে ১১দিন ধরে পরিবারের লোকজনসহ কাউকেই দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। কারাবন্দি হিসেবে খালেদা জিয়ার যে সাংবিধানিক অধিকার পাওয়ার কথা সেটি থেকেও তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কারাবিধি অনুযায়ী খালেদা জিয়ার সঙ্গে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের দেখা না করতে দেয়া তার এবং বিএনপি নেতৃবৃন্দের প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘন। কারাবিধি উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেছিলেন, খালেদা জিয়া কারাবিধির ৬১৭ বিধি অনুসারে ডিভিশন-১ প্রাপ্ত হন। আর ডিভিশন-১ প্রাপ্ত বন্দির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য কারাবিধির সপ্তদশ অধ্যায়ে (বিধি-৬৬৩-৬৮১) বর্ণিত অধিকারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার রাজনৈতিক সহকর্মী-বন্ধুবান্ধবের সাক্ষাৎকারের বিষয়টিও বিশদভাবে বলা আছে। এছাড়া খালেদা জিয়া তার সাজার মামলায় জামিনে আছেন তাই তাকে সাজাপ্রাপ্ত বন্দি নয়, বিচারাধীন মামলায় বন্দি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। সে হিসেবেও কারাবিধির সপ্তবিংশ অধ্যায়ে (বিধি-৯০৯-৯১০) অনুসারে তিনি প্রথম শ্রেণির ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি। সেখানেও তার রাজনৈতিক সহকর্মী-বন্ধুদের সাক্ষাতের অধিকার বিধি-৬৮২তে দেয়া আছে। সেদিন বিএনপি মহাসচিব আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিলেন, আমরা আশঙ্কা করছি- খালেদা জিয়াকে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে কিনা।
বিএনপি মহাসচিবের সে ব্রিফিংয়ের পর কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে ১৪ই জুলাই খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান তার বড় বোন সেলিনা ইসলামসহ পরিবারের সদস্যরা। বিকাল ৫টার দিকে তারা কারাগারে প্রবেশ করে প্রায় একঘণ্টা অপেক্ষা পর বেরিয়ে আসেন। পুরো সময়টা তারা অপেক্ষায় ছিলেন কারাগারের ভেতরে ভিজিটিং রুমে। কারাগার থেকে বেরিয়ে সেলিনা ইসলাম গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, সাক্ষাতের অনুমতি মিললেও খালেদা জিয়া অসুস্থতার কারণে নিচে নামতে না পারায় দেখা হয়নি। যতটুকু জেনেছি, খালেদা জিয়া জ্বরে ভুগছেন, তার শরীরের ব্যথা রয়েছে। যার কারণে তিনি দোতলা থেকে নেমে নিচতলায় আসতে পারেননি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আগে উপরে গিয়ে তার (খালেদা জিয়ার) রুমের পাশে করিডোরে দেখা করতাম। কিন্তু আজকে সে অসুস্থ জানানো হলেও আমাদের উপরে যেতে দেয়নি। আমরা তার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার খবর জানতে না দেয়ার জন্যই তার সঙ্গে সাক্ষাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত গতকাল এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে কতটুকু অসুস্থ সে খবরও জানতে দিচ্ছে না কারা কর্তৃপক্ষ। তার পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাৎ করতে গেলে তাদের দোতলায় যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। আসলে কারা কর্তৃৃপক্ষ দেশনেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে শুধু উদাসীনই নয়, সরকারের নির্দেশে কোনো ভয়ঙ্কর মাস্টারপ্ল্যানের দিকে এগুচ্ছে কী না তা নিয়ে জনমনে এক বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী বন্দির সামাজিক মর্যাদা বিবেচনায় জেলার সাক্ষাতের দিনক্ষণ নির্ধারণ করেন। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দেশের সবচেয়ে বড় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
তিনি একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনাপ্রধানের স্ত্রী। সর্বোপরি একজন সত্তরোর্ধ্ব বয়স্ক অসুস্থ নারী। সে অনুযায়ী তার স্বজন, পরিবারের সদস্য, আইনজীবী ও চিকিৎসকরা প্রতি সপ্তাহে দেখা পাওয়ার কথা। কিন্তু সরকার ও কারা কর্তৃপক্ষ তার কিছুই গ্রাহ্য করছে না। স্বজনদের যেমন সাক্ষাতের সুযোগ দিচ্ছে না, তেমনি আমরা আইনজীবী এবং তার চিকিৎসকরাও সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছি না।
No comments