পড়ার খরচের বিনিময়ে ইয়াবা ব্যবসা!
মামুন।
বয়স ২০। পিতা নৈশপ্রহরী। ঝালমুড়ি বিক্রি করেন বড় ভাই। মা অন্যের বাসায় কাজ
করেন। এমনই কষ্টের টাকায় সন্তানকে ঢাকায় পড়াশুনা করাচ্ছেন তারা। মামুন
পড়ছে রাজধানীর বিএফ শাহীন কলেজে। কিন্তু তার দারিদ্রতার দুর্বলতাকে ব্যবহার
করেছে পলাতক ইয়াবা সম্রাট ইয়াছিন আরাফাত (২৮)। শুধু মামুন নয়। কক্সবাজারের
সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের নিজ গ্রাম হ্নীলা থেকে ঢাকায় পড়তে আসা বহু গরিব
মেধাবী ছাত্রকে পড়াশোনার খরচ দিয়ে ঢাকায় ইয়াবা পাচার ও বিক্রিতে ব্যবহার
করে আসছিল ইয়াছিন। গত রোববার রাতে সে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের
(পিবিআই) হাতে গ্রেপ্তার হয়। আর গতকাল সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন
ম্যাজিস্ট্রেট এ.কে.এম মঈন উদ্দীন ছিদ্দিকের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তা স্বীকার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র উপ- পরিদর্শক (এসআই) মো. জুয়েল মিয়া তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির কথা উল্লেখ করে বলেন, ইয়াছিনের বাড়ির কাছেই নাফ নদ। নাফ নদ পার হলেই মিয়ানমার। সেখান থেকে ইয়াবা নিয়ে তা কয়েকগুণ লাভে শিক্ষার্থী ও স্বল্প শিক্ষিত বেকার যুবকদের দিয়ে বাস ও বিমানে ঢাকায় পাঠাতো। মামুন ধরা পড়ার পনের দিন আগেও ইয়াছিন ঢাকায় ১০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেটের চালান পাঠায়। সে এভাবে কোটি কোটি টাকার বহু চালান পাচার ও বিক্রি করেছে। গত সোমবার দুপুরের দিকে আদালতে নেয়া হলে সে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তার অপরাধ স্বীকার করে। তার আরো দু’সহযোগী শরীফ ও মাসুমকে ধরার চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।
পিবিআই ও ইয়াছিনের জবানবন্দি সূত্রে জানা যায়, ইয়াবা সম্রাট হিসেবে পরিচিত ইয়াছিন আরাফাতের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফে। নাফ নদের কাছে হ্নীলা গ্রামে। তার পিতার নাম জালাল আহম্মেদ। হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে। এরপর ২০০৬ সালে ঢাকায় আসে। শাহজাহানপুরে থাকতো। জড়িয়ে পড়ে হুন্ডির ব্যবসায়।
তিন বছর পর ২০০৯ সালে আবার গ্রামে চলে যায়। জড়িয়ে পড়ে ইয়াবা ব্যবসায়। প্রায় এক দশকের ইয়াবা ব্যবসায় মাদক সাম্রাজ্যে জায়গা করে নেয়। কোটি কোটি টাকার নিষিদ্ধ ইয়াবা ঢাকায় পাচার করে। এক পর্যায়ে ইয়াবা পাচার ও বিক্রিতে বেছে নেয় ঢাকায় পড়াশোনার জন্য আসা গ্রামের মেধাবী ছাত্রদের। তাদের কাছে দানবীর সেজে প্রথমে তাদের মেস ভাড়া ও পড়াশোনার খরচ দিতো। পরে তাদের দিয়ে টেকনাফ থেকে ইয়াবার চালান ঢাকায় পাঠাতো। মেসে রাখা হতো। তাদের দিয়ে বিক্রি করা হতো।
টেকনাফ থেকে ইয়াছিনের পাঠানো ইয়াবার চালানসহ গত ১৬ই মে সাতরাস্তা এলাকায় র্যাবের কাছে ধরা পড়ে বিএফ শাহীন কলেজের ছাত্র মামুন। তার কাছে ৪৩ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। যার অবৈধ বাজার মূল্য ১ কোটি ৭২ লাখ টাকা। চালানটি পরবর্তী ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য মামুনকে দেয়ার কথা ছিল ১ লাখ টাকা। ওই চালানে আসে ১ লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট। মামুনের আগে ওই চালানে ইয়াছিনের পাঠানো আরো ৫৭ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট নাবিস্কোতে অপর একজনের হাতে ডেলিভারি দেয়া হয়। মামুন ধরা পড়ার পর ওই ঘটনায় মামলা হয় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায়। সেই মামলার তদন্তভার পড়ে পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক মো. জুয়েল মিয়ার হাতে।
তদন্ত ও মামুনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বিবিআই ঢাকা মেট্রোর একটি দল গত রোববার রাতে রাজধানী থেকে টেকনাফের হ্নীলায় গিয়ে ইয়াছিন আরাফাতকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাকে ঢাকায় আনা হয়। গতকাল দুপুরে নেয়া হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সে স্বীকার করে। সে আরো বেশ কয়েকটি মামলার আসামি।
নিজ এলাকা থেকে পড়াশোনার জন্য গিয়ে ঢাকায় অবস্থান করা গরিব, অসহায় ও মেধাবী ছাত্রীদের টার্গেট করে সে তার ইয়াবা পাচার ও বিক্রির ব্যবসা গড়ে তোলে। এছাড়া তার দলে নিয়েছে স্বল্প শিক্ষিত বেকার যুবকদেরকেও। এসব কথা সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে স্বীকার করে।
জবানবন্দিতে ইয়াছিন আরাফাত বলে, ‘মামুন আমাদের গ্রামের ছোট ভাই ও পরিচিত। সে বিএফ শাহীন কলেজে পড়াশোনা করে। তার কলেজের বেতন বাকি পড়ায় মাঝে মাঝে সহযোগিতা করতাম।’ এভাবেই তাকে সহযোগিতার করার নামে ধীরে ধীরে ইয়াবা ব্যবসায় জড়ানোর কথা স্বীকার করে। একইভাবে মামুন ছাড়া আরো বেশকিছু ছাত্র ও স্বল্পশিক্ষিত বেকার যুবকদের দলে নিয়ে তাদের দিয়ে এই নিষিদ্ধ ব্যবসা চালিয়ে নিচ্ছে বলে জানায়।
পিবিআই ঢাকা মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ মানবজমিনকে বলেন, গ্রামের গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীরা ঢাকায় পড়াশোনার খরচ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খান। তাদের সে অসহায়ত্বকে পুঁজি করে উপকারের নামে ইয়াবা ব্যবসায় জড়াতো ইয়াছিন। বহু শিক্ষার্থী দিয়ে কোটি কোটি টাকার বড় বড় চালান বহন ও বিক্রি করেছে। এই ইয়াবা সম্রাটের সঙ্গে জড়িত অন্যদেরকেও গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান তিনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র উপ- পরিদর্শক (এসআই) মো. জুয়েল মিয়া তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির কথা উল্লেখ করে বলেন, ইয়াছিনের বাড়ির কাছেই নাফ নদ। নাফ নদ পার হলেই মিয়ানমার। সেখান থেকে ইয়াবা নিয়ে তা কয়েকগুণ লাভে শিক্ষার্থী ও স্বল্প শিক্ষিত বেকার যুবকদের দিয়ে বাস ও বিমানে ঢাকায় পাঠাতো। মামুন ধরা পড়ার পনের দিন আগেও ইয়াছিন ঢাকায় ১০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেটের চালান পাঠায়। সে এভাবে কোটি কোটি টাকার বহু চালান পাচার ও বিক্রি করেছে। গত সোমবার দুপুরের দিকে আদালতে নেয়া হলে সে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তার অপরাধ স্বীকার করে। তার আরো দু’সহযোগী শরীফ ও মাসুমকে ধরার চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।
পিবিআই ও ইয়াছিনের জবানবন্দি সূত্রে জানা যায়, ইয়াবা সম্রাট হিসেবে পরিচিত ইয়াছিন আরাফাতের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফে। নাফ নদের কাছে হ্নীলা গ্রামে। তার পিতার নাম জালাল আহম্মেদ। হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে। এরপর ২০০৬ সালে ঢাকায় আসে। শাহজাহানপুরে থাকতো। জড়িয়ে পড়ে হুন্ডির ব্যবসায়।
তিন বছর পর ২০০৯ সালে আবার গ্রামে চলে যায়। জড়িয়ে পড়ে ইয়াবা ব্যবসায়। প্রায় এক দশকের ইয়াবা ব্যবসায় মাদক সাম্রাজ্যে জায়গা করে নেয়। কোটি কোটি টাকার নিষিদ্ধ ইয়াবা ঢাকায় পাচার করে। এক পর্যায়ে ইয়াবা পাচার ও বিক্রিতে বেছে নেয় ঢাকায় পড়াশোনার জন্য আসা গ্রামের মেধাবী ছাত্রদের। তাদের কাছে দানবীর সেজে প্রথমে তাদের মেস ভাড়া ও পড়াশোনার খরচ দিতো। পরে তাদের দিয়ে টেকনাফ থেকে ইয়াবার চালান ঢাকায় পাঠাতো। মেসে রাখা হতো। তাদের দিয়ে বিক্রি করা হতো।
টেকনাফ থেকে ইয়াছিনের পাঠানো ইয়াবার চালানসহ গত ১৬ই মে সাতরাস্তা এলাকায় র্যাবের কাছে ধরা পড়ে বিএফ শাহীন কলেজের ছাত্র মামুন। তার কাছে ৪৩ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। যার অবৈধ বাজার মূল্য ১ কোটি ৭২ লাখ টাকা। চালানটি পরবর্তী ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য মামুনকে দেয়ার কথা ছিল ১ লাখ টাকা। ওই চালানে আসে ১ লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট। মামুনের আগে ওই চালানে ইয়াছিনের পাঠানো আরো ৫৭ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট নাবিস্কোতে অপর একজনের হাতে ডেলিভারি দেয়া হয়। মামুন ধরা পড়ার পর ওই ঘটনায় মামলা হয় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায়। সেই মামলার তদন্তভার পড়ে পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক মো. জুয়েল মিয়ার হাতে।
তদন্ত ও মামুনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বিবিআই ঢাকা মেট্রোর একটি দল গত রোববার রাতে রাজধানী থেকে টেকনাফের হ্নীলায় গিয়ে ইয়াছিন আরাফাতকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাকে ঢাকায় আনা হয়। গতকাল দুপুরে নেয়া হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সে স্বীকার করে। সে আরো বেশ কয়েকটি মামলার আসামি।
নিজ এলাকা থেকে পড়াশোনার জন্য গিয়ে ঢাকায় অবস্থান করা গরিব, অসহায় ও মেধাবী ছাত্রীদের টার্গেট করে সে তার ইয়াবা পাচার ও বিক্রির ব্যবসা গড়ে তোলে। এছাড়া তার দলে নিয়েছে স্বল্প শিক্ষিত বেকার যুবকদেরকেও। এসব কথা সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে স্বীকার করে।
জবানবন্দিতে ইয়াছিন আরাফাত বলে, ‘মামুন আমাদের গ্রামের ছোট ভাই ও পরিচিত। সে বিএফ শাহীন কলেজে পড়াশোনা করে। তার কলেজের বেতন বাকি পড়ায় মাঝে মাঝে সহযোগিতা করতাম।’ এভাবেই তাকে সহযোগিতার করার নামে ধীরে ধীরে ইয়াবা ব্যবসায় জড়ানোর কথা স্বীকার করে। একইভাবে মামুন ছাড়া আরো বেশকিছু ছাত্র ও স্বল্পশিক্ষিত বেকার যুবকদের দলে নিয়ে তাদের দিয়ে এই নিষিদ্ধ ব্যবসা চালিয়ে নিচ্ছে বলে জানায়।
পিবিআই ঢাকা মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ মানবজমিনকে বলেন, গ্রামের গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীরা ঢাকায় পড়াশোনার খরচ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খান। তাদের সে অসহায়ত্বকে পুঁজি করে উপকারের নামে ইয়াবা ব্যবসায় জড়াতো ইয়াছিন। বহু শিক্ষার্থী দিয়ে কোটি কোটি টাকার বড় বড় চালান বহন ও বিক্রি করেছে। এই ইয়াবা সম্রাটের সঙ্গে জড়িত অন্যদেরকেও গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান তিনি।
No comments