খতনা জটিলতায় রোহিঙ্গা ছেলেশিশুরা by কাফি কামাল
খতনা
জটিলতায় পড়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নেয়া লাখো ছেলেশিশু।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগই মুসলিম। হাজার হাজার বছর ধরে
খতনা সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত রয়েছে মুসলিম সমাজে। বাংলাদেশে এ সংস্কৃতি
মুসলমানি নামে খ্যাত। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা এ সংস্কৃতিকে স্বীকৃতি
দিয়েছে স্বাস্থ্যকর ও বিজ্ঞানসম্মত বলে। কিন্তু রোহিঙ্গা শরণার্থী
ক্যাম্পগুলোতে খতনাবিহীন বেড়ে উঠছে লাখো শিশু।
১২-১৪ বছর বয়স হলেও খতনা সম্পন্ন হয়নি বহু রোহিঙ্গা শিশুর। ক্যাম্পগুলোতে অন্ন-বস্ত্র-স্বাস্থ্য ও বাসস্থান নিয়ে কাজ করছেন সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক নানা সংস্থা। কিন্তু ছেলেশিশুদের খতনার কোনো উদ্যোগ নেই তাদের। স্থায়ী প্রশাসনের একটি অস্থায়ী নির্দেশনায় আটকে আছে খতনার ব্যাপারে বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক কয়েকটি সংস্থার উদ্যোগ। ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা সেবা নিয়ে কাজ করেন এমন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মতে, যথাযথ বয়সে ছেলেশিশুদের খতনা সম্পন্ন না হলে একদিকে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে অন্যদিকে দেখা দেয় সামাজিক সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পুরুষের খতনা এইচআইভি বা এইডস প্রতিরোধে একটি কার্যকর ভূমিকা রাখে, এটি আংশিক সুরক্ষা দেয়। যেসব দেশে খতনার হার বেশি, সেসব দেশে এইডসের হার তুলনামূলক কম।
সরজমিন উখিয়ার বালুখালী, কুতুপালং (নতুন ক্যাম্প), ময়নারঘোনা ও নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু জিরোপয়েন্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী শতাধিক ছেলেশিশুর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তাদের বেশিরভাগেরই খতনা হয়নি। ময়নারঘোনা ক্যাম্পের বাসিন্দা আবদুস শুক্কুর বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে আমরা পরিবারের সদস্যদের দুবেলা খাবার ও মাথাগোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করতেই ব্যস্ত ছিলাম।
এখন চাল-ডাল মিলছে কিন্তু সেগুলোর রান্নার জ্বালানি মিলছে না। খাবার পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। টয়লেট ও গোসলের সমস্যা তীব্র। পরিবারের কোনো না কোনো সদস্যের রোগবালাই লেগেই আছে। ক্যাম্পের জীবনে এর বাইরে ভাবার সুযোগ কোথায়? আমাদের ছেলেশিশুদের খতনা প্রয়োজন।
কিন্তু হাজামের (স্থানীয় কবিরাজ) মাধ্যমে ছাড়া সেটা সম্পন্ন করা ছাড়া এখানে তো সরকারি বা বেসরকারিভাবে তার কোনো উদ্যোগ নেই। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, এদেশে আশ্রয় নেয়া বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অস্ত্র-বস্ত্র ও বাসস্থান নিশ্চিতকরণেই মনোযোগ নিবদ্ধ রয়েছে বাংলাদেশ সরকারসহ বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর। খতনার মতো বিষয়গুলো খুব বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে না। সরকারি-বেসরকারিভাবে দেয়া হচ্ছে না খতনা সেবা। নানা সময়ে ২০-৫০ জন করে শিশুর খতনা সম্পন্ন করেছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা। তারই ধারাবাহিকতায় মালয়েশিয়ান ফিল্ড হাসপাতাল খৎনার একটি উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু একটি শিশুর খৎনায় অতিরিক্ত রক্তপাত ত্রুটির অভিযোগ তুলে শিশুটির পরিবার।
এতে পুরো উদ্যোগটি বন্ধ রাখার একটি অস্থায়ী নির্দেশ দেয় স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু পরে এ ব্যাপারে নতুন কোন নির্দেশনা আসেনি। রোহিঙ্গা পরিবারগুলোর প্রধানরা কোনো রকমভাবে নিজেদের সন্তানদেরকে খতনা করিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ অভিভাবক অর্থের অভাবে তাদের সন্তানদের খতনা করাতে পারছেন না।
বালুখালী ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প, মেটারনাল, চাইল্ড হেলথ অ্যান্ড প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ক ও ড্যাব মহাসচিব প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে শিশু রয়েছে অন্তত ৪ লাখ। যার বেশিরভাগই ছেলে শিশু। মুসলিম ধর্মাবলম্বী এসব ছেলে শিশুর খতনা করানো প্রয়োজন। খতনা করালে শিশুদের মূত্রপথের সংক্রমণ প্রতিরোধ হয়। যৌনবাহিত রোগের ঝুঁকি কমে। বেশিদিন খতনা না করালে নানাধরনের রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি যেমন রয়েছে তেমনি সৃষ্টি হবে একধরনের সামাজিক সমস্যা।
তিনি বলেন, আমরা একবার শিশুদের খতনা করানোর উদ্যোগ নিয়েছিলাম। প্রতিদিন একশ করে ছেলেশিশুকে খতনা করানোর লক্ষ্য নিয়ে সে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কয়েক মাস আগে স্থানীয় প্রশাসনের অস্থায়ী একটি নির্দেশনার কারণে সেটার বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে যখন স্থানীয় প্রশাসন ওই নির্দেশনাটি দিয়েছিল তখন তা সঠিকই ছিল।
কারণ ব্লিডিং ডিজঅর্ডার থাকে অনেক শিশুর। আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবনের পর খৎনা করালে অতিরিক্ত রক্তপাত বা অন্যান্য সমস্যা তেমন হয় না। তখনও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করার করার ক্ষেত্রে ফিল্ড লেভেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার তেমন সুযোগ-সুবিধা ছিল না। এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ বেড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত নতুন নির্দেশনা না পাওয়া ও অন্যকোন সংস্থা এ ব্যাপারে উদ্যোগ না নেয়ায় আমরাও সেটা বন্ধ রেখেছি। কিন্তু রোহিঙ্গা ছেলে শিশুদের খৎনার ব্যাপারে সবারই এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করি।
১২-১৪ বছর বয়স হলেও খতনা সম্পন্ন হয়নি বহু রোহিঙ্গা শিশুর। ক্যাম্পগুলোতে অন্ন-বস্ত্র-স্বাস্থ্য ও বাসস্থান নিয়ে কাজ করছেন সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক নানা সংস্থা। কিন্তু ছেলেশিশুদের খতনার কোনো উদ্যোগ নেই তাদের। স্থায়ী প্রশাসনের একটি অস্থায়ী নির্দেশনায় আটকে আছে খতনার ব্যাপারে বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক কয়েকটি সংস্থার উদ্যোগ। ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা সেবা নিয়ে কাজ করেন এমন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মতে, যথাযথ বয়সে ছেলেশিশুদের খতনা সম্পন্ন না হলে একদিকে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে অন্যদিকে দেখা দেয় সামাজিক সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পুরুষের খতনা এইচআইভি বা এইডস প্রতিরোধে একটি কার্যকর ভূমিকা রাখে, এটি আংশিক সুরক্ষা দেয়। যেসব দেশে খতনার হার বেশি, সেসব দেশে এইডসের হার তুলনামূলক কম।
সরজমিন উখিয়ার বালুখালী, কুতুপালং (নতুন ক্যাম্প), ময়নারঘোনা ও নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু জিরোপয়েন্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী শতাধিক ছেলেশিশুর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তাদের বেশিরভাগেরই খতনা হয়নি। ময়নারঘোনা ক্যাম্পের বাসিন্দা আবদুস শুক্কুর বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে আমরা পরিবারের সদস্যদের দুবেলা খাবার ও মাথাগোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করতেই ব্যস্ত ছিলাম।
এখন চাল-ডাল মিলছে কিন্তু সেগুলোর রান্নার জ্বালানি মিলছে না। খাবার পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। টয়লেট ও গোসলের সমস্যা তীব্র। পরিবারের কোনো না কোনো সদস্যের রোগবালাই লেগেই আছে। ক্যাম্পের জীবনে এর বাইরে ভাবার সুযোগ কোথায়? আমাদের ছেলেশিশুদের খতনা প্রয়োজন।
কিন্তু হাজামের (স্থানীয় কবিরাজ) মাধ্যমে ছাড়া সেটা সম্পন্ন করা ছাড়া এখানে তো সরকারি বা বেসরকারিভাবে তার কোনো উদ্যোগ নেই। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, এদেশে আশ্রয় নেয়া বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অস্ত্র-বস্ত্র ও বাসস্থান নিশ্চিতকরণেই মনোযোগ নিবদ্ধ রয়েছে বাংলাদেশ সরকারসহ বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর। খতনার মতো বিষয়গুলো খুব বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে না। সরকারি-বেসরকারিভাবে দেয়া হচ্ছে না খতনা সেবা। নানা সময়ে ২০-৫০ জন করে শিশুর খতনা সম্পন্ন করেছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা। তারই ধারাবাহিকতায় মালয়েশিয়ান ফিল্ড হাসপাতাল খৎনার একটি উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু একটি শিশুর খৎনায় অতিরিক্ত রক্তপাত ত্রুটির অভিযোগ তুলে শিশুটির পরিবার।
এতে পুরো উদ্যোগটি বন্ধ রাখার একটি অস্থায়ী নির্দেশ দেয় স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু পরে এ ব্যাপারে নতুন কোন নির্দেশনা আসেনি। রোহিঙ্গা পরিবারগুলোর প্রধানরা কোনো রকমভাবে নিজেদের সন্তানদেরকে খতনা করিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ অভিভাবক অর্থের অভাবে তাদের সন্তানদের খতনা করাতে পারছেন না।
বালুখালী ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প, মেটারনাল, চাইল্ড হেলথ অ্যান্ড প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ক ও ড্যাব মহাসচিব প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে শিশু রয়েছে অন্তত ৪ লাখ। যার বেশিরভাগই ছেলে শিশু। মুসলিম ধর্মাবলম্বী এসব ছেলে শিশুর খতনা করানো প্রয়োজন। খতনা করালে শিশুদের মূত্রপথের সংক্রমণ প্রতিরোধ হয়। যৌনবাহিত রোগের ঝুঁকি কমে। বেশিদিন খতনা না করালে নানাধরনের রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি যেমন রয়েছে তেমনি সৃষ্টি হবে একধরনের সামাজিক সমস্যা।
তিনি বলেন, আমরা একবার শিশুদের খতনা করানোর উদ্যোগ নিয়েছিলাম। প্রতিদিন একশ করে ছেলেশিশুকে খতনা করানোর লক্ষ্য নিয়ে সে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কয়েক মাস আগে স্থানীয় প্রশাসনের অস্থায়ী একটি নির্দেশনার কারণে সেটার বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে যখন স্থানীয় প্রশাসন ওই নির্দেশনাটি দিয়েছিল তখন তা সঠিকই ছিল।
কারণ ব্লিডিং ডিজঅর্ডার থাকে অনেক শিশুর। আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবনের পর খৎনা করালে অতিরিক্ত রক্তপাত বা অন্যান্য সমস্যা তেমন হয় না। তখনও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করার করার ক্ষেত্রে ফিল্ড লেভেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার তেমন সুযোগ-সুবিধা ছিল না। এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ বেড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত নতুন নির্দেশনা না পাওয়া ও অন্যকোন সংস্থা এ ব্যাপারে উদ্যোগ না নেয়ায় আমরাও সেটা বন্ধ রেখেছি। কিন্তু রোহিঙ্গা ছেলে শিশুদের খৎনার ব্যাপারে সবারই এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করি।
No comments