র্যাবের বিরুদ্ধে অপহরণ-খুনের অভিযোগ তদন্তে কমিটি
নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে অপহরণ ও খুনের ঘটনায় র্যাব সদস্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। র্যাবের পক্ষ থেকে আজ সোমবার ওই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এটিএম হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, তদন্ত কমিটির সদস্য চারজন। র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আফতাফ আহমেদকে ওই তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে লিংক রোড ধরে ঢাকায় যাওয়ার পথে অপহূত হন সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম এবং তাঁর চার সহযোগী। প্রায় একই সময়ে একই সড়ক থেকে গাড়িচালকসহ অপহূত হন আইনজীবী চন্দন সরকার। তিন দিন পর গত ৩০ এপ্রিল একে একে ছয়জনের এবং পরদিন ১ মে আরেকজনের লাশ পাওয়া যায় শীতলক্ষ্যা নদীতে। নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম গতকাল রোববার র্যাবের বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, নজরুলকে র্যাব তুলে নিয়ে হত্যা করেছে। এর জন্য আরেক কাউন্সিলর নূর হোসেনসহ কয়েকজনের কাছ থেকে ছয় কোটি টাকা নিয়েছেন র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা। নারায়ণগঞ্জের রাইফেল ক্লাবে গতকাল রোববার সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করেন শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদ চেয়ারম্যান। এ সময় নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সাংসদ শামীম ওসমান সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শহীদুল ইসলাম বলেন, 'কাউন্সিলর নূর হোসেন ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়ার কাছ থেকে ছয় কোটি টাকা নিয়ে র্যাব আমার জামাতা নজরুলসহ সাতজনকে খুন করেছে। ২৭ এপ্রিল দুপুরে যখন নজরুলকে দুটি গাড়িতে করে অপহরণ করা হয়, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন আমাদের জানিয়েছেন, দুটি মাইক্রোবাসে করে ওদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।' আপনি কী করে নিশ্চিত হলেন যে তাঁরা র্যাবের সদস্য? উত্তরে তিনি বলেন, র্যাব-১১ লেখা একটি গাড়ি সকাল থেকেই সেখানে ছিল। শহীদুল বলেন, 'ঘটনার পরপরই আমরা বিষয়টি এমপি শামীম ওসমানকে জানাই। শামীম ওসমান আমাকে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে র্যাব-১১-এর সিও তারেক সাঈদের সঙ্গে দেখা করতে বলেন। আমি সেখানে গেলে সিও আমাকে কয়েক ঘণ্টা আটকে রেখে নানা রকম জিজ্ঞাসাবাদ করেন।'
শহীদুলের ব্যবসায়ী ছেলে সাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, 'আমরা বিকেল পাঁচটা-সাড়ে পাঁচটা নাগাদ র্যাবে পৌঁছাই। কিন্তু আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। রাত নয়টায় র্যাবের সিও আমাদের দেখা দেন। তিনি এ সময় আমাদের বলেন, শামীম ওসমানের সঙ্গে আপনাদের কি কোনো ঝামেলা আছে? আপনারা শামীম ওসমানের কাছে যান। এরপর আমরা রাতে শামীম ওসমানের সঙ্গে রাইফেল ক্লাবে দেখা করতে যাই। তিনি আমাদের সামনেই নানা জায়গায় ফোন করেন।' অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, কেউ অভিযোগ করলেই তা সত্য হয়ে যায় না। ঘটনাটি খুবই স্পর্শকাতর। এখনো তদন্ত চলছে। তদন্ত আগে শেষ হোক, তারপর সব জানা যাবে। এর আগে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই ঘটনার পর সেনাবাহিনীতে ফেরত যাওয়া র্যাবের সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
পুলিশকে কেন ঘটনা জানালেন না? এ প্রশ্ন করা হলে গতকাল শহীদুল ইসলাম বলেন, 'অপহরণের ঘটনার পরদিন আমি র্যাব-১১-এর সিও, মেজর জাহাঙ্গীর, মেজর রানা এবং নূর হোসেন, ইয়াসিনসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করতে পুলিশ সুপারের কাছে যাই। কিন্তু পুলিশ সুপার আমাকে বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিলে মামলা হালকা হয়ে যাবে। এরপর তাঁরা ছয়জন আসামির নাম বাদ দিতে বললে আমরা সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দিই।' মামলার এজাহার লেখার কাজটি করেছিলেন সাইদুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, 'এসপি ও ডিসি ফতুল্লা থানার ওসিকে মামলা নিতে বলে দেন। আমরা দুপুরে থানায় যাই। কিন্তু পুলিশ মামলা লিখতে লিখতে রাত ১০টা বাজিয়ে দেয়।' শহীদুল ও তাঁর ছেলে সাইদুল দুজনেই অভিযোগ করেন, মামলা হলেও পুলিশ কোথাও অভিযান চালায়নি। অভিযান চালালে অবশ্যই নজরুলকে জীবিত উদ্ধার করা যেত।
সাংসদ শামীম ওসমানের সামনেই নজরুলের শ্বশুর র্যাবের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন। পরে একই স্থানে শামীম ওসমান বলেন, 'প্রশাসনের অনেকেই অপরাধের সঙ্গে জড়িত। আমি বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী এটা জানেন না।' তিনি বলেন, 'পুলিশের দারোগা যদি অপরাধ করে, আইজির ওপর তা বর্তায় না। সমস্ত বাহিনী সেই দায় বহন করে না। তাই আমি মনে করি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ যদি জড়িত হয়ে থাকে, তাহলে তা তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।' এরপর বিকেলে রাইফেল ক্লাব থেকে সিদ্ধিরগঞ্জে নজরুল স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় শামীম ওসমান বলেন, 'এই হত্যায় নূর হোসেন জড়িত। এর আগে ইকবাল এক কোটি টাকায় র্যাবকে দিয়ে নজরুলকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। আমি গিয়ে তাকে বাঁচিয়ে নিয়ে এসেছি। কাজেই এ ঘটনায় ইকবালও জড়িত। মামলার অপর আসামি হাসু হলো বোবা ডাকাত। যাদের নামে মামলা হয়েছে, তারা সবাই জড়িত। তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করতে হবে।'
নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীরাও এ ঘটনার সঙ্গে র্যাব জড়িত বলে দাবি করেছেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, নজরুলের সঙ্গে আইনজীবী চন্দনের কোনো দিন দেখাও হয়নি। কিন্তু সেদিন চন্দন সরকার হয়তো দেখে ফেলেছিলেন কারা নজরুলকে অপহরণ করেছে। আর এ কারণে তাঁকেও হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারী কারা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'চন্দন সরকার নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা র্যাবের কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর ব্যাপারে জানার চেষ্টা করি। কিন্তু র্যাব আমাদের ঢুকতেই দেয়নি। র্যাবই এ কাজ করেছে। জড়িতদের বদলি করলেই হবে না, খুনের অভিযোগে তাদের বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।'
শহীদুলের ব্যবসায়ী ছেলে সাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, 'আমরা বিকেল পাঁচটা-সাড়ে পাঁচটা নাগাদ র্যাবে পৌঁছাই। কিন্তু আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। রাত নয়টায় র্যাবের সিও আমাদের দেখা দেন। তিনি এ সময় আমাদের বলেন, শামীম ওসমানের সঙ্গে আপনাদের কি কোনো ঝামেলা আছে? আপনারা শামীম ওসমানের কাছে যান। এরপর আমরা রাতে শামীম ওসমানের সঙ্গে রাইফেল ক্লাবে দেখা করতে যাই। তিনি আমাদের সামনেই নানা জায়গায় ফোন করেন।' অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, কেউ অভিযোগ করলেই তা সত্য হয়ে যায় না। ঘটনাটি খুবই স্পর্শকাতর। এখনো তদন্ত চলছে। তদন্ত আগে শেষ হোক, তারপর সব জানা যাবে। এর আগে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই ঘটনার পর সেনাবাহিনীতে ফেরত যাওয়া র্যাবের সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
পুলিশকে কেন ঘটনা জানালেন না? এ প্রশ্ন করা হলে গতকাল শহীদুল ইসলাম বলেন, 'অপহরণের ঘটনার পরদিন আমি র্যাব-১১-এর সিও, মেজর জাহাঙ্গীর, মেজর রানা এবং নূর হোসেন, ইয়াসিনসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করতে পুলিশ সুপারের কাছে যাই। কিন্তু পুলিশ সুপার আমাকে বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিলে মামলা হালকা হয়ে যাবে। এরপর তাঁরা ছয়জন আসামির নাম বাদ দিতে বললে আমরা সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দিই।' মামলার এজাহার লেখার কাজটি করেছিলেন সাইদুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, 'এসপি ও ডিসি ফতুল্লা থানার ওসিকে মামলা নিতে বলে দেন। আমরা দুপুরে থানায় যাই। কিন্তু পুলিশ মামলা লিখতে লিখতে রাত ১০টা বাজিয়ে দেয়।' শহীদুল ও তাঁর ছেলে সাইদুল দুজনেই অভিযোগ করেন, মামলা হলেও পুলিশ কোথাও অভিযান চালায়নি। অভিযান চালালে অবশ্যই নজরুলকে জীবিত উদ্ধার করা যেত।
সাংসদ শামীম ওসমানের সামনেই নজরুলের শ্বশুর র্যাবের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন। পরে একই স্থানে শামীম ওসমান বলেন, 'প্রশাসনের অনেকেই অপরাধের সঙ্গে জড়িত। আমি বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী এটা জানেন না।' তিনি বলেন, 'পুলিশের দারোগা যদি অপরাধ করে, আইজির ওপর তা বর্তায় না। সমস্ত বাহিনী সেই দায় বহন করে না। তাই আমি মনে করি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ যদি জড়িত হয়ে থাকে, তাহলে তা তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।' এরপর বিকেলে রাইফেল ক্লাব থেকে সিদ্ধিরগঞ্জে নজরুল স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় শামীম ওসমান বলেন, 'এই হত্যায় নূর হোসেন জড়িত। এর আগে ইকবাল এক কোটি টাকায় র্যাবকে দিয়ে নজরুলকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। আমি গিয়ে তাকে বাঁচিয়ে নিয়ে এসেছি। কাজেই এ ঘটনায় ইকবালও জড়িত। মামলার অপর আসামি হাসু হলো বোবা ডাকাত। যাদের নামে মামলা হয়েছে, তারা সবাই জড়িত। তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করতে হবে।'
নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীরাও এ ঘটনার সঙ্গে র্যাব জড়িত বলে দাবি করেছেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, নজরুলের সঙ্গে আইনজীবী চন্দনের কোনো দিন দেখাও হয়নি। কিন্তু সেদিন চন্দন সরকার হয়তো দেখে ফেলেছিলেন কারা নজরুলকে অপহরণ করেছে। আর এ কারণে তাঁকেও হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারী কারা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'চন্দন সরকার নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা র্যাবের কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর ব্যাপারে জানার চেষ্টা করি। কিন্তু র্যাব আমাদের ঢুকতেই দেয়নি। র্যাবই এ কাজ করেছে। জড়িতদের বদলি করলেই হবে না, খুনের অভিযোগে তাদের বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।'
No comments