ডিমের সুসময়
ডিম
খেতে যাঁরা পছন্দ করেন, তাঁদের এখন সুসময়। বাজারে ফার্মের ডিমের দাম কমে
এখন ডজনপ্রতি ৭০ টাকায় নেমেছে। একই সঙ্গে কমেছে হাঁস ও দেশি মুরগির ডিমের
দামও। ডিমের দাম কমলেও বাজারে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা
বেড়েছে। গত সপ্তাহে পাইকারি বাজারে চিনির দর বেড়েছিল, তার প্রভাব পড়েছে
খুচরা বাজারে। অন্যদিকে দেশি পেঁয়াজের দামও কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৬০ টাকায়
উঠেছে। অন্যান্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। দেশের বাজারে দীর্ঘ সময় ধরেই
ডিমের দাম কম। এ সপ্তাহে তা আরও কমেছে। এর আগে গত ডিসেম্বর মাসে ডিমের দাম এ
পর্যায়ে নেমে এসেছিল। বিক্রেতারা বলছেন, দাম এভাবে কমে যাওয়ার কারণ বাড়তি
উৎপাদন। দেশে এখন ছোট-বড় খামারে দৈনিক যে পরিমাণ ডিম উৎপাদিত হয়, যা
চাহিদার তুলনায় বেশি বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ঢাকার কারওয়ান বাজারের খুচরা
ব্যবসায়ীরা গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতি ডজন ফার্মের লাল ডিম বিক্রি করেন ৭০
টাকা দরে। অন্যদিকে দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিম বিক্রি হয় ১২০ টাকা ডজন। ছোট
বাজার ও পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানে সাধারণত দাম কিছুটা বেশি হয়। কারওয়ান
বাজারের কিচেন মার্কেটের সামনের ডিম বিক্রেতা আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে
বলেন, পাইকারি বাজারে এখন ডিমের দাম কম। তেজগাঁওয়ের আড়তে গতকাল প্রতি ১০০টি
ফার্মের ডিম ৪৬৫ টাকা দরে বিক্রি হয়, যা গত সপ্তাহে ৪৮৫ টাকার মতো ছিল।
স্থানীয় আড়ত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হানিফ মিয়া বলেন, মাস দেড়েক আগে
১০০টি ডিমের দাম ৫৪০-৫৫০ টাকায় উঠেছিল। এরপর থেকেই কমছে। তিনি বলেন, দাম
কমে যাওয়ার বড় কারণ সরবরাহ বেশি। এখন বিদেশ থেকে এসেই গ্রামের মানুষেরা
মুরগির খামার করছে। এতে উৎপাদন অনেক বেশি হচ্ছে। তিনি বলেন, কৃত্রিম ডিমের
একটা অপপ্রচারও আছে। এসব কারণেও বাজার পড়তি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের
হিসাবে, দেশে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৬ কোটি ডিম উৎপাদিত হয়। ছয় বছর
আগে ২০০৯-১০ অর্থবছরে ডিমের উৎপাদন ছিল ৫৭৪ কোটি। ভোক্তা অধিকার সংগঠন
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) হিসাবে, ২০০৯ সালে প্রতি
হালি ডিমের গড় দাম ছিল ২৮ টাকা। ২০১৬ সালে এ দাম দাঁড়ায় ৩৪ টাকায়। ২০১৭
সালে আবার তা কমে ৩২ টাকায় নামে। গত সপ্তাহে ঢাকার পাইকারি বাজারে চিনির দর
কেজিতে দুই টাকার মতো বেড়েছিল। খুচরা পর্যায়ে বৃদ্ধি সেটার প্রভাব বলে
দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। দেশি পেঁয়াজের কেজিপ্রতি দর ৫ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা
হয়েছে। অবশ্য ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বাড়েনি। বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি
৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে নতুন দেশি রসুন এসেছে, কেজিপ্রতি দর
৭০-৮০ টাকা। আর চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা কেজি দরে। সবজির দর
এখন কম। প্রতি কেজি শীতের সবজি ২০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আলু
মিলছে ২০ টাকা কেজি দরে। সব মিলিয়ে সবজির বাজারে স্বস্তি আছে। আটা, মসুর
ডাল, ভোজ্যতেল, লবণ, মুরগি, গরুর মাংসসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের
দামে বিশেষ কোনো হেরফের হয়নি। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ
(টিসিবি) বলছে, চিনির দাম খুচরা বাজারে ২-৩ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি ৫৫-৫৮
টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
No comments