শীত বিদায়ের চাপ সবজির বাজারে
বিদায়
নিয়েছে শীত মওসুম। মার্চের প্রথম সপ্তাহে এসে আবহাওয়া ক্রমেই উত্তপ্ত
হচ্ছে। পাল্লা দিয়ে উত্তাপ বাড়ছে সবজির বাজারেও। শীত বিদায়ের চাপ পড়েছে
সবজির বাজারেও। খুচরা বাজারে এখন সস্তায় মিলছে কেবল আলু, টমেটো এবং ডিম।
চালের বাজার তো প্রায় সারা বছরই উত্তপ্ত। নতুন করে কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে
সবধরনের চালের দাম। বাজারে আমদানি করা ভারতীয় চালের স্বল্পতা, মিল মালিকদের
কারসাজি এবং পরিবহন খরচ বৃদ্ধির অজুহাতে দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। আগামী
বোরো মওসুমের আগে চালের দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন
সংশ্লিষ্টরা। গতকাল রাজধানী ঢাকার কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা
যায়, প্রতি কেজি গুটি স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা দরে। যা এক
সপ্তাহ আগে ছিল ৪১ থেকে ৪৩ টাকা। বিআর-২৮ মানভেদে ৪৮ থেকে ৫২ টাকা,
মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৪ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা এবং পোলাও চাল বিক্রি
হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে। সবজি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শীত শেষ হতে না
হতেই রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বাজারে কেবল
আলু এবং টমেটোর দাম কম। আলু পাওয়া যাচ্ছে ১৩ থেকে ১৫ টাকায়। টমেটোর কেজি ১০
থেকে ২০ টাকা। ২৫ টাকায় কেনা যাচ্ছে এক হালি ডিম। অন্য সব পণ্যের দামই
বাড়তি। বিক্রেতারা বলছেন, শীত চলে গেছে, এখন সবজির দাম একটু বাড়বেই। খুচরা
বাজারে গতকাল প্রতিটি লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার পিস ৬০ টাকা,
করলার কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, প্রতিটি ফুলকপি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, পাতাকপি ২৫
থেকে ৩০ টাকা, খিরার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বেগুন
৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচাকলার হালি ৩০ টাকা, ঝিঙ্গা ও চিচিঙ্গার কেজি ৮০ থেকে
১০০ টাকাদরে বিক্রি হয়। বিভিন্ন পর্যায়ের ক্রেতা-বিক্রেতার সাথে কথা বলে
জানা যায়, গত বছরের এপ্রিল মাস থেকেই অস্থিতিশীল রয়েছে দেশের চালের বাজার।
এক দুই টাকা করে বাড়তে বাড়তে চালের দাম এখন প্রায় ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।
এরই মধ্যে একটা বড় মওসুম চলে গেলেও চালের বাজারে কোনো সুসংবাদ আসেনি।
ব্যবসায়ীদের মতে, দাম কমার জন্য ক্রেতাদের অপো করতে হবে আগামী বোরো মওসুম
পর্যন্ত। অন্য দিকে গত ছয় মাস ধরেই আলোচনায় রয়েছে পেঁয়াজ। ৩০ টাকা থেকে
বাড়তে বাড়তে ১৬০ টাকায় উঠেছিল। আবার নামতে নামতে ৫০ থেকে ৫৫-তে ঠেকেছে।
কিন্তু পেঁয়াজ নিয়ে মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা এখনো কাটেনি। তাদের বক্তব্য,
পেঁয়াজের এখন ভরা মওসুম চলছে। অন্যান্য বছর এ সময়ে এক কেজি পেঁয়াজ বিক্রি
হতো ১৫ থেকে ২০ টাকায়। এবার এখনো ৫০ টাকা। বাজার ঘুরে দেখা যায়, আদার কেজি
৯০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, দেশী নতুন রসুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং
আমদানি করা বড় রসুন ১২০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি
আমদানি করা মশুরের ডাল ৮০ থেকে ৮৫ এবং দেশী মশুরের ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা
দরে বিক্রি হচ্ছে। মুগ ডাল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, ছোলার ডাল ৯০ থেকে ১১০ টাকা,
সয়াবিন তেলের লিটার ১০০ থেকে ১০৮ টাকা এবং চিনির কেজি ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়
বিক্রি করতে দেখা যায়। মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০
থেকে ৩৫০ টাকা, কাতলা ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা,
সিলভার কার্প ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, পাঙ্গাশ ১১০ থেকে ১৫০ টাকা, টেংরা ৮০০
টাকা, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ও দেশী মাগুর ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি
হচ্ছে। এ ছাড়া প্রকারভেদে চিংড়ি ৪০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায়, ইলিশের কেজি
(মাঝারি) ১০০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা, প্রতি পিস ইলিশ (ওজন ৫০০ গ্রাম) বিক্রি
হচ্ছে ৪০০ টাকা দরে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকা,
লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, দেশী মুরগি প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা,
পাকিস্তানি লাল মুরগি কেজি প্রতি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি কেজি গরুর গোশত ৪৭০ থেকে ৪৯০ টাকা এবং খাসির গোশত ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়
বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের ডিমের হালি ২৫ থেকে ২৬ টাকা এবং হাঁসের ডিম বিক্রি
হয় ৪৮ থেকে ৫২ টাকা হালি দরে।
No comments