পূর্ব ঘৌটা ছেড়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা
বিদ্রোহী
ও সরকারি বাহিনীর হামলার মুখে পূর্ব ঘৌটা ছেড়ে পালাচ্ছে অঞ্চলটির
অধিবাসীরা। গত প্রায় ৭ বছর ধরে সিরীয় বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ঘৌটা
চারদিক দিয়ে ঘিরে ফেলেছে সরকারি বাহিনী। জাতিসংঘের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি
অনুমোদনের পর হামলার ক্ষেত্রে পাঁচ ঘণ্টার ‘মানবিক বিরতি’ ঘোষণা করে
রাশিয়া। তা সত্ত্বেও বিদ্রোহীদের শেষ ঘাঁটিটির দখল নিতে অব্যাহতভাবে বিমান
হামলা চালাচ্ছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বাহিনী। স্থল অভিযানও শুরু
করেছে সরকারি সেনারা। অন্যদিকে এ এলাকায় সুড়ঙ্গে লুকিয়ে রয়েছে হাজার হাজার
বিদ্রোহী জঙ্গি। সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তারা। মাঝে
আটকা পড়েছে পূর্ব ঘৌটার ৪ লাখ অধিবাসী। এএফপি জানায়, অবরুদ্ধ শহর থেকে
অধিবাসীদের বের হওয়ার জন্য ‘মানবিক করিডোর’ তৈরি করা হলেও বের হতে পারছে না
তারা। বিদ্রোহীরাই তাদেরকে বের হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। বের হতে গেলেই
মানবিক করিডোরেই হামলা চালাচ্ছে তারা। এর মধ্যে যারাই একটু সুযোগ পাচ্ছে
নিজেদের শেষ সম্বলটুকু নিয়ে প্রাণপণে পালাচ্ছে। বৃহস্পতিবার পূর্ব ঘৌটার
উতায়া শহরে কিছু অধিবাসীর পালানোর দৃশ্য দেখা গেছে। এদিকে উভয় পক্ষের
হামলার কারণে ‘যুদ্ধবিরতি’র তৃতীয় দিন শুক্রবারও ওই এলাকায় কোনো ত্রাণ
সহায়তা পৌঁছায়নি। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ত্রাণ বোঝাই ৪০টি ট্রাক সেখানে
ঢোকার অপেক্ষায় রয়েছে।
বিমান হামলার কারণে খুব একটা লাভ হচ্ছে না বলে
জানিয়েছে জাতিসংঘ। বৃহস্পতিবার সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা বলেন, বেসামরিকদের
কাছে ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে আরও সময় প্রয়োজন। জাতিসংঘের
মানবাধিকার বিষয়ক পরামর্শক জ্যান এগল্যান্ড বলেন, ‘আপনারা সিরিয়ায় সাহায্য
করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। পূর্ব ঘৌটায় কোনো আন্তর্জাতিক আইনই মানা হচ্ছে না।’
এদিকে দামেস্কের ওপর চাপ আরও বাড়িয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। ব্রিটেনের
অনুরোধের পর পূর্ব ঘৌটার সংকটের ব্যাপারে শুক্রবার এক জরুরি বৈঠকে বসতে
যাচ্ছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশন হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল। দৃশ্যত
জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে সুর
আরও চড়া করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও জার্মানি। শুক্রবার এক ফোনালাপে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা
মার্কেল একমত হয়ে বলেছেন, পূর্ব ঘৌটার সহিংসতার জন্য সিরিয়ার সরকারকে
অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
No comments