বিচারকদের শৃংখলাবিধি: গেজেট প্রকাশে ফের সময়
অধস্তন
আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃংখলা বিধিমালার গেজেট প্রকাশ করতে ফের এক
সপ্তাহের সময় পেল সরকার। মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার
নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ সময় দেন। জানা যায়, ১৯৯৯ সালের
২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ) ১২ দফা নির্দেশনা
দিয়ে রায় দেয়া হয়। ওই রায়ে নিন্ম আদালতের বিচারকদের জন্য আলাদা শৃংখলা
বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। সে ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগের নির্দেশনার
পর ২০১৫ সালের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃংখলাবিধি প্রস্তুত করে
সুপ্রিমকোর্টে পাঠায়। কিন্তু গত বছরের ২৮ আগস্ট খসড়ার বিষয়ে আপিল বিভাগ
বলেন, সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল)
বিধিমালার হুবহু অনুরূপ, যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী। এরপর
সুপ্রিমকোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা তৈরি করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। একই
সঙ্গে গত বছরের ৬ নভেম্বরের মধ্যে তা গেজেট আকারে প্রণয়ন করে আদালতকে
জানাতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি
জেনারেল এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি জানাতে ব্যর্থ হন। এরপরও দু’দফায় সময় দেয়ার
পর গেজেট জারি না করায় গত বছরের ৮ ডিসেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে ১২
ডিসেম্বর আদালতে হাজির করতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দেয়া হয়।
তবে দুই
সচিব হাজির হওয়ার একদিন আগে ওই শৃংখলা বিধিমালার গেজেট আকারে প্রকাশের
প্রয়োজনীয়তা নেই বলে রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন উল্লেখ করে আইন
মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ১২ ডিসেম্বর দুই সচিব হাজির
হলে রাষ্ট্রপতিকে ভুল বোঝানো হয়েছে উল্লেখ করে আপিল বিভাগ ১৫ জানুয়ারির
মধ্যে বিধিমালার গেজেট আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন। সেই নির্ধারিত দিনে
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ফের চার সপ্তাহের সময় আবেদন
করেন। পরে আদালত ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় মঞ্জুর করেন। এরপর আবারও সময়
আবেদন করলে আজ ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেন আপিল বিভাগ। কিন্তু অধস্তন
আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃংখলা সংক্রান্ত পৃথক বিধিমালা প্রণয়ন করে গেজেট
প্রকাশে সরকারের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ১২ ফেব্রুয়ারি আবারও
সময় চাইলে এই সংক্রান্ত বিষয়ে সরকার কি সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সময় ক্ষেপণের
ব্যাখ্যা ১৩ ফেব্রুয়ারি সোমবারে মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। এ
সংক্রান্ত বিষয়ে সরকার আবার সময় চাইলে শেষবারের মতো ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত
সময় দেন আপিল বিভাগ। এরপর আবারো সময় প্রার্থনা করলে আদালত ১৪ মার্চের মধ্যে
গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। কিন্তু তাতেও ব্যর্থ হলে সরকারের আবেদনে
উষ্মা প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগ বলেন, ‘রাষ্ট্রের কাছে ব্যক্তির
চেয়ে প্রতিষ্ঠান বড়। এটিকে রক্ষা করতে হবে। গেজেট জারি না করে বিচার
বিভাগকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে।’ সেসময় আদালত আদালত দুই সপ্তাহ সময় মঞ্জুর
করেন। সর্বশেষ আজ এক সপ্তাহের সময় পেল সরকার।
No comments