নির্বাক মানবতা
শিশুটির
বয়স হতে পারে বছর খানেক। কিংবা তার চেয়ে কিছুদিন বেশি। বাঁ দিকে উপুড় হয়ে
চোখ বুজে শুয়ে আছে শুভ্র এক শিশু। গায়ে ভেজা লাল শার্ট, নেভি-ব্লু হাফ
প্যান্ট আর পা জোড়ায় ছোট্ট জুতা। দেখে মনে হবে ঘুমিয়ে আছে। চারপাশে খেলা
করছে পবিত্র এক আভা। কিন্তু বাস্তবে এ এক ভিন্ন দৃশ্য। তার নিথর প্রাণহীন
দেহের চারপাশে সমুদ্রের ঢেউ আছড়ে পড়ছে। তার মাথা খানিকটা ডেবে গেছে সৈকতের
বালিতে। এই শিশুটিই ভূ-মধ্যসাগরে ডুবে যাওয়া ১২ জন ইউরোপগামী
অভিবাসন-প্রত্যাশীর একজন। বিশাল সমুদ্রেরও হয়তো নিজের ভেতর তাকে ধারণ করতে
বুক কাঁপছিল। এজন্যই ঢেউয়ের তোড়ে সৈকতে ঠেলে দিয়েছে তার দেহকে। আর শিশুটির
এমন ছবিই ছড়িয়ে পড়েছে তুরস্কের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাকে অভিহিত করা
হচ্ছে ‘ভাসমান ধ্বংসপ্রাপ্ত মানবতা’র প্রতিচ্ছবি হিসেবে। বৃটেনের বেশির ভাগ
সংবাদপত্রের প্রধান শিরোনাম এ ছবিটিকে ঘিরে। এ খবর দিয়েছে সিএনএন ও
আল-জাজিরা।
কেউ বলছেন, তাদের আশা ছিল, এ ছোট্ট ছেলেটির নিস্তেজ শরীরের ছবিটির কারণে ইউরোপগামী শরণার্থীদের স্রোত মোকাবিলার উপায় নিয়ে চলমান বিতর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবিক বাঁক নেবে। চোখে আঙ্গুল দিয়ে রাজনীতিকদের ব্যর্থতা দেখিয়ে দেবে ছবিটি। আত্ম-ব্যর্থতায় দগ্ধ হবে কিছুটা মানবিক হবেন দোর্দণ্ড প্রতাপশালীরা। কিন্তু অচিরেই তারা বুঝেছেন, আশা কুহকিনী বৈ অন্য কিছু নয়। এজন্যই হয়তো প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের শিরোনাম- ‘এ ছবিগুলোও যদি ইউরোপকে পাল্টাতে না পারে, তবে কি পারবে?’।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের উপ-পরিচালক নাদিম হওরি ছবিটিকে বলছেন, ‘গা ছমছমে’। আসলেই তাই। এ ছবি হয়তো অনেকদিন তাড়িয়ে বেড়াবে বিশ্বজুড়ে অসংখ্যা মানবতাবাদীকে। নাদিমের মতে, এটিই সামগ্রিক ব্যার্থতার সবচেয়ে সপষ্ট প্রতিবিম্ব। তুরস্কের বুরহান আকমান শুধু লিখেছেন, গোটা পৃথিবীর জন্য একরাশ লজ্জা। আমি ছবিটিতে শুধু মানুষ দেখছি, মানবতার ছোঁয়া দেখছি না।
লন্ডনের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রথম পৃষ্ঠাজুড়ে ছেপেছে হতভাগা এ শিশুর ছবি। সেখানে ক্যাপশন আকারে মাত্র চারটি লাইন লেখা হয়েছে। এতে লেখা হয়েছে ‘সামবডিজ চাইল্ড’। এতে ওই শিশুটিকে সিরিয়ান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তুরস্ক থেকে গ্রিস যাওয়ার পথে পরিবারের সঙ্গে সে ডুবে মারা গেছে। ইউরোপে প্রবেশ করতে মানবতার সঙ্কট বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে ডেইলি এক্সপ্রেস লিখেছে, ‘মানবিক এ সঙ্কটের জন্য ইইউ দায়ী’। মেট্রো পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠাজুড়ে শিশুটির ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, একজন উদ্ধারকর্মী শিশুটিকে দুই হাতে কোলে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। শিরোনামে বলা হয়েছে- ‘ইউরোপ তাকে বাঁচাতে পারেনি’। দ্য টাইমসেও প্রায় একই রকম ছবি ছাপা হয়েছে। এর শিরোনাম ‘ইউরোপ ডিভাইডেড’। ডেইলি মেইলও একই কাজ করেছে। এর শিরোনাম ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের শিকার ছোট্ট শিশু’। দ্য সানের শিরোনাম ‘জীবন এবং মৃত্যু’। ডেইলি মিররের শিরোনাম ‘অসহনীয়’। দ্য গার্ডিয়ানের শিরোনাম ‘হতাশাজনক, নিষ্ঠুরতায় ইউরোপে শরণার্থী সঙ্কট’।
শিশুটির নাম জানা যায়নি। কেউ জানে না, তার যাত্রা শুরু হয়েছিল কোথা থেকে। তবে তুরস্কের মুগলা প্রদেশের গভর্নরের কার্যালয় বলেছে, একদল সিরিয়ান শরণার্থীদের সঙ্গে ছিল শিশুটি। দুইটি নৌকায় করে তারা ভূ-মধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে গ্রিক দ্বীপ কোসে পৌঁছতে চেয়েছিলেন। নৌকার কয়েকজনকে উদ্ধার করতে পেরেছে তুরস্কের উদ্ধারকারী দল। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই দলের ২ পুরুষ ও ১ শিশু নিখোঁজ। প্রসঙ্গত, ভূমধ্যসাগর পার হয়ে ইউরোপে পাড়ি জমাতে গিয়ে কেবল এ বছরই মারা গেছে ২৬০০ জনেরও বেশি। বিশ্বে এ বছর যত অভিবাসী বা অভিবাসন-প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে, গড়ে তাদের চার জনের তিন জনই মারা গেছেন ভূ-মধ্যসাগরে। গত বছরের (২২২৩) চেয়ে এ বছর মৃত্যুর পরিমাণ ২০ শতাংশ বেশি। এদের কেউ ডুবে গেছেন অতল সমুদ্রে। কেউবা মারা গেছেন পদপিষ্ট হয়ে। কেউ আবার নৌকার ইঞ্জিনের ধোঁয়ায় নিঃশ্বাস নিতে না পেরে। নাম না জানা ওই শিশুটিও হয়তো এদের কোনো এক দলের হবে।
কেউ বলছেন, তাদের আশা ছিল, এ ছোট্ট ছেলেটির নিস্তেজ শরীরের ছবিটির কারণে ইউরোপগামী শরণার্থীদের স্রোত মোকাবিলার উপায় নিয়ে চলমান বিতর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবিক বাঁক নেবে। চোখে আঙ্গুল দিয়ে রাজনীতিকদের ব্যর্থতা দেখিয়ে দেবে ছবিটি। আত্ম-ব্যর্থতায় দগ্ধ হবে কিছুটা মানবিক হবেন দোর্দণ্ড প্রতাপশালীরা। কিন্তু অচিরেই তারা বুঝেছেন, আশা কুহকিনী বৈ অন্য কিছু নয়। এজন্যই হয়তো প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের শিরোনাম- ‘এ ছবিগুলোও যদি ইউরোপকে পাল্টাতে না পারে, তবে কি পারবে?’।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের উপ-পরিচালক নাদিম হওরি ছবিটিকে বলছেন, ‘গা ছমছমে’। আসলেই তাই। এ ছবি হয়তো অনেকদিন তাড়িয়ে বেড়াবে বিশ্বজুড়ে অসংখ্যা মানবতাবাদীকে। নাদিমের মতে, এটিই সামগ্রিক ব্যার্থতার সবচেয়ে সপষ্ট প্রতিবিম্ব। তুরস্কের বুরহান আকমান শুধু লিখেছেন, গোটা পৃথিবীর জন্য একরাশ লজ্জা। আমি ছবিটিতে শুধু মানুষ দেখছি, মানবতার ছোঁয়া দেখছি না।
লন্ডনের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রথম পৃষ্ঠাজুড়ে ছেপেছে হতভাগা এ শিশুর ছবি। সেখানে ক্যাপশন আকারে মাত্র চারটি লাইন লেখা হয়েছে। এতে লেখা হয়েছে ‘সামবডিজ চাইল্ড’। এতে ওই শিশুটিকে সিরিয়ান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তুরস্ক থেকে গ্রিস যাওয়ার পথে পরিবারের সঙ্গে সে ডুবে মারা গেছে। ইউরোপে প্রবেশ করতে মানবতার সঙ্কট বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে ডেইলি এক্সপ্রেস লিখেছে, ‘মানবিক এ সঙ্কটের জন্য ইইউ দায়ী’। মেট্রো পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠাজুড়ে শিশুটির ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, একজন উদ্ধারকর্মী শিশুটিকে দুই হাতে কোলে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। শিরোনামে বলা হয়েছে- ‘ইউরোপ তাকে বাঁচাতে পারেনি’। দ্য টাইমসেও প্রায় একই রকম ছবি ছাপা হয়েছে। এর শিরোনাম ‘ইউরোপ ডিভাইডেড’। ডেইলি মেইলও একই কাজ করেছে। এর শিরোনাম ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের শিকার ছোট্ট শিশু’। দ্য সানের শিরোনাম ‘জীবন এবং মৃত্যু’। ডেইলি মিররের শিরোনাম ‘অসহনীয়’। দ্য গার্ডিয়ানের শিরোনাম ‘হতাশাজনক, নিষ্ঠুরতায় ইউরোপে শরণার্থী সঙ্কট’।
শিশুটির নাম জানা যায়নি। কেউ জানে না, তার যাত্রা শুরু হয়েছিল কোথা থেকে। তবে তুরস্কের মুগলা প্রদেশের গভর্নরের কার্যালয় বলেছে, একদল সিরিয়ান শরণার্থীদের সঙ্গে ছিল শিশুটি। দুইটি নৌকায় করে তারা ভূ-মধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে গ্রিক দ্বীপ কোসে পৌঁছতে চেয়েছিলেন। নৌকার কয়েকজনকে উদ্ধার করতে পেরেছে তুরস্কের উদ্ধারকারী দল। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই দলের ২ পুরুষ ও ১ শিশু নিখোঁজ। প্রসঙ্গত, ভূমধ্যসাগর পার হয়ে ইউরোপে পাড়ি জমাতে গিয়ে কেবল এ বছরই মারা গেছে ২৬০০ জনেরও বেশি। বিশ্বে এ বছর যত অভিবাসী বা অভিবাসন-প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে, গড়ে তাদের চার জনের তিন জনই মারা গেছেন ভূ-মধ্যসাগরে। গত বছরের (২২২৩) চেয়ে এ বছর মৃত্যুর পরিমাণ ২০ শতাংশ বেশি। এদের কেউ ডুবে গেছেন অতল সমুদ্রে। কেউবা মারা গেছেন পদপিষ্ট হয়ে। কেউ আবার নৌকার ইঞ্জিনের ধোঁয়ায় নিঃশ্বাস নিতে না পেরে। নাম না জানা ওই শিশুটিও হয়তো এদের কোনো এক দলের হবে।
No comments