আমি একটা নীল নয়না চাই!
‘আমি একটা নীল নয়না চাই, যার গায়ের রং ধূসর, গড়নে হালকা-পাতলা, জাতিতে ইয়াজিদি, বিনিময়ে যে কোনো মূল্য মেটাব’Ñ ইসলামিক স্টেটের (আইএস) যৌনদাসী ক্রয়-বিক্রয় হাটে এভাবেই নিজের মতো দাসীর বায়না দিচ্ছেন এক ক্রেতা। ইরাক-সিরিয়ার আইএস মুল্লুকের যৌন হাটগুলোতে এমন দৃশ্য এখন হরহামেশাই চোখে পড়ে। দাস বাজারগুলোতে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে হরদমে চলছে এ রমরমা ব্যবসা। সম্প্রতি এ বর্বর জঙ্গিগোষ্ঠীর হাত থেকে পালিয়ে এসেছেন ইয়াজিদি তরুণী জিনান (১৮)। ২০১৪ সালে এ গোষ্ঠীর হাতে বন্দি হওয়ার পর থেকে যেসব লোমহর্ষক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন তা তার রচিত ‘দায়েস’স স্লেভ’ নামক বইয়ে তিনি বর্ণনা করেছেন। এই বইয়ে বর্ণিত একটি ঘটনাই এটা। ফরাসি সাংবাদিক থিয়েরি ওবেরলের সহযোগিতায় রচিত বইটি শুক্রবার প্যারিস থেকে প্রকাশ করা হবে। বুধবার এ খবর প্রকাশ করেছে এএফপি। অপহরণ, অত্যাচার, ধর্ষণ নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে এ জঙ্গিদের। জিনান তার বইটিতে বলেন, যৌনদাসী হিসেবে নারীদের ক্রয়-বিক্রয় ব্যবসায় রামরাজত্বের লীলায় মেতে আছে আইএস। সম্প্রতি এ ব্যবসা বেশ জমজমাট। আর সুন্দরী,
লাবণ্যময়ী, অপরূপ আকর্ষণীয় মেয়েদের বিশেষ ভোক্তা হল সিরিয়া, তুরস্ক ও উপসাগরীয় রাষ্ট্রের ক্রেতারা। সামান্য একটি পিস্তল বা ১৫০ ডলারের বিনিময়ে হয় একটি শ্যামাঙ্গিনী। ঘৃণ্য ও জঘন্য এসব অপকর্মের মাধ্যমেই যুদ্ধের পুঁজি জোগার করছে আইএস। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ললনাদের বিক্রি করা হয় উপসাগরীয় দেশগুলোর ক্রেতাদের কাছে। আইএসের ‘যৌন হাটের’ এক ক্রেতা এ কথা বলছিল বলে তিনি বইটিতে উল্লেখ করেছেন। আইএসের হাতে বন্দিদশায় একটি ঘরে আটকে আরও অনেক মেয়েদের অমানুষিক অত্যাচার করা হয়। জোর করে ধর্মান্তরের চেষ্টা করে তারা। অস্বীকার করলে প্রহার ও শেকল বাঁধা অবস্থায় রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা হতো। পান করানো হতো গ্লাসে ইঁদুর মরা ডোবানো পানি। এমনকি বৈদ্যুতিক শক দেয়ারও হুমকি দেয়া হতো। এসব অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে জিনান এখন ইরাকের কুর্দিস্তানে একটি ইয়াজিদি আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। খুঁজে পেয়েছে তার স্বামীকে। এখন তার একটাই প্রার্থনা, একটাই কামনা, একটাই অভিশাপ- আইএস যেন ধ্বংস হয়!
No comments