নারায়ণগঞ্জে সাত খুন: ৩২ দিনের রিমান্ড শেষে সাঈদের স্বীকারোক্তি- নূর হোসেনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভারত
(র্যাব–১১–এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদকে গতকাল আদালতে হাজির করা হয় l প্রথম আলো) নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় র্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ গতকাল বুধবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন৷ পুলিশ একে একে ছয় দফায় ৩২ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর তিনি সাত খুনের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করলেন৷ গতকাল সকাল আটটার দিকে কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে তাঁকে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কে এম মহিউদ্দিনের আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে সাত খুনের ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় দায়ের করা দুটি মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে বেলা সাড়ে তিনটায় তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এদিকে সাত খুনের মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভারত৷ গতকাল চিঠির মাধ্যমে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানিয়ে তাঁর সম্পর্কে আরও তথ্য চাওয়া হয়েছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ আদালতে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন এবং হত্যাকাণ্ডের পূর্ণ বিবরণ দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এর আগে র্যাবের অন্য দুই সাবেক কর্মকর্তা মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার এম এম রানা সাত খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
সাঈদকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারের পর প্রথমে পাঁচ দিন, প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনকে হত্যার ঘটনায় দ্বিতীয় দফায় আটদিন, একই মামলায় তৃতীয় দফায় পাঁচ দিন, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ দুজনকে হত্যার মামলায় চতুর্থ দফায় পাঁচ দিন, ৯ জুন পঞ্চম দফায় পাঁচ দিন এবং সর্বশেষ ষষ্ঠ দফায় ১৪ জুন চার দিনের রিমান্ডে নেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
নূর হোসেন সম্পর্কে তথ্য চেয়েছে ভারত
কূটনৈতিক প্রতিবেদক ও কলকাতা প্রতিনিধি জানান, ইন্টারপোলের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার (রেড এলার্ট নোটিশ) ভিত্তিতে কলকাতায় গ্রেপ্তার করা হয় নূর হোসেনকে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, ভারত নূর হোসেনের ব্যাপারে আরও কিছু তথ্য চেয়েছে। সরকার এখন সেসব তথ্য সংগ্রহ করছে। নূর হোসেনকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনতে সরকার সচেষ্ট রয়েছে বলেও জানান তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, নূর হোসেনকে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে ফেরত আনার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর ব্যাপারে ভারত গতকাল আরও তথ্য চেয়েছে। দিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশনে গতকাল একটি চিঠি পাঠিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব তথ্য পাঠানোর অনুরোধ জানায়।
তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার নূর হোসেনের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে কলকাতার উপ হাই কমিশনকে কিছু জানায়নি৷ জানতে চাইলে কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ হাই কমিশনার আবিদা ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণত বাংলাদেশের কোনো নাগরিক পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হলে তা জানানোর কথা রাজ্য সরকারের। কিন্তু নূর হোসেন গ্রেপ্তারের ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি৷
ঢাকায় ভারতীয় এক কূটনীতিক গতকাল বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ প্রতিবেদককে জানান, নূর হোসেন বাংলাদেশ থেকে পালানোর পর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ইন্টারপোল। ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাওয়ার পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন রাজ্যকে বিষয়টি অবহিত করে। এরই ভিত্তিতে কলকাতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে নূর হোসেনকে।
পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নূর হোসেনের মতো পলাতক অপরাধীদের ফেরানোর জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি রয়েছে। এর মধ্যে বহিঃসমর্পণ চুক্তিই হচ্ছে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার সবচেয়ে ভালো পথ। তাই এ চুক্তির আওতায় তাঁকে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে তা ভারতের কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তবে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে চুক্তিটি সই হওয়ার পর এখনো এর আওতায় দুই দেশের কোনো অপরাধীকে হস্তান্তর করা হয়নি।
নূর হোসেনকে ফেরত আনার দাবি: কলকাতায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার নূর হোসেনকে দ্রুত দেশে ফেরত আনার দাবিতে কাল নারায়ণগঞ্জের আদালতপাড়া এলাকায় আইনজীবীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন আইনজীবী নেতা জাকির হোসেন, মশিউর রহমান প্রমুখ।
সাখাওয়াত হোসেন সমাবেশে বলেন, নূর হোসেন দেশে এলে সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও সাংসদ গডফাদারদের নাম বলে দিতে পারেন। এ কারণে তাঁকে দেশে ফেরত আনার ব্যাপারের সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। তিনি অবিলম্বে নূর হোসেনকে কলকাতা থেকে ফেরত এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান।
এদিকে সাত খুনের মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভারত৷ গতকাল চিঠির মাধ্যমে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানিয়ে তাঁর সম্পর্কে আরও তথ্য চাওয়া হয়েছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ আদালতে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন এবং হত্যাকাণ্ডের পূর্ণ বিবরণ দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এর আগে র্যাবের অন্য দুই সাবেক কর্মকর্তা মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার এম এম রানা সাত খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
সাঈদকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারের পর প্রথমে পাঁচ দিন, প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনকে হত্যার ঘটনায় দ্বিতীয় দফায় আটদিন, একই মামলায় তৃতীয় দফায় পাঁচ দিন, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ দুজনকে হত্যার মামলায় চতুর্থ দফায় পাঁচ দিন, ৯ জুন পঞ্চম দফায় পাঁচ দিন এবং সর্বশেষ ষষ্ঠ দফায় ১৪ জুন চার দিনের রিমান্ডে নেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
নূর হোসেন সম্পর্কে তথ্য চেয়েছে ভারত
কূটনৈতিক প্রতিবেদক ও কলকাতা প্রতিনিধি জানান, ইন্টারপোলের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার (রেড এলার্ট নোটিশ) ভিত্তিতে কলকাতায় গ্রেপ্তার করা হয় নূর হোসেনকে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, ভারত নূর হোসেনের ব্যাপারে আরও কিছু তথ্য চেয়েছে। সরকার এখন সেসব তথ্য সংগ্রহ করছে। নূর হোসেনকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনতে সরকার সচেষ্ট রয়েছে বলেও জানান তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, নূর হোসেনকে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে ফেরত আনার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর ব্যাপারে ভারত গতকাল আরও তথ্য চেয়েছে। দিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশনে গতকাল একটি চিঠি পাঠিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব তথ্য পাঠানোর অনুরোধ জানায়।
তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার নূর হোসেনের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে কলকাতার উপ হাই কমিশনকে কিছু জানায়নি৷ জানতে চাইলে কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ হাই কমিশনার আবিদা ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণত বাংলাদেশের কোনো নাগরিক পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হলে তা জানানোর কথা রাজ্য সরকারের। কিন্তু নূর হোসেন গ্রেপ্তারের ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি৷
ঢাকায় ভারতীয় এক কূটনীতিক গতকাল বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ প্রতিবেদককে জানান, নূর হোসেন বাংলাদেশ থেকে পালানোর পর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ইন্টারপোল। ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাওয়ার পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন রাজ্যকে বিষয়টি অবহিত করে। এরই ভিত্তিতে কলকাতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে নূর হোসেনকে।
পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নূর হোসেনের মতো পলাতক অপরাধীদের ফেরানোর জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি রয়েছে। এর মধ্যে বহিঃসমর্পণ চুক্তিই হচ্ছে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার সবচেয়ে ভালো পথ। তাই এ চুক্তির আওতায় তাঁকে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে তা ভারতের কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তবে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে চুক্তিটি সই হওয়ার পর এখনো এর আওতায় দুই দেশের কোনো অপরাধীকে হস্তান্তর করা হয়নি।
নূর হোসেনকে ফেরত আনার দাবি: কলকাতায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার নূর হোসেনকে দ্রুত দেশে ফেরত আনার দাবিতে কাল নারায়ণগঞ্জের আদালতপাড়া এলাকায় আইনজীবীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন আইনজীবী নেতা জাকির হোসেন, মশিউর রহমান প্রমুখ।
সাখাওয়াত হোসেন সমাবেশে বলেন, নূর হোসেন দেশে এলে সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও সাংসদ গডফাদারদের নাম বলে দিতে পারেন। এ কারণে তাঁকে দেশে ফেরত আনার ব্যাপারের সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। তিনি অবিলম্বে নূর হোসেনকে কলকাতা থেকে ফেরত এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান।
No comments