মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শিবিরে ‘ভীতিকর অবস্থা’
মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে উদ্বাস্তু শিবিরগুলোর ‘ভীতিকর অবস্থা’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের একজন শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিক৷ দুই বছর আগে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় গৃহহীন হাজার হাজার রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন৷ খবর এএফপির৷ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ২০১২ সালে বৌদ্ধ-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতায় প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ গৃহহীন হন৷ ওসব গৃহহীন মানুষ এখন রাখাইন রাজ্যের বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে করুণ অবস্থায় বসবাস করছে৷ এদের বেশির ভাগই সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সদস্য৷ ভয়াবহ ওই সহিংসতায় অন্তত ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল যাদের বেিশর ভাগই রোহিঙ্গা মুসলমান৷ অনেকে তখন প্রাণ ভয়ে সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে৷ জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব কায়ুং-ওহা কাং বলেন, ‘রাখাইনের উদ্বাস্তু শিবিরগুলোতে আমি মানবিক দুর্ভোগের যে চিত্র দেখেছি, তা আগে কখনো দেখিনি৷ সেখানে নারী, পুরুষ ও শিশুরা ভীতিকর পরিবেশে বাস করছে৷ তাদের চলাফেরায় প্রচণ্ড কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে৷ স্বাধীনভাবে তাদের চলাফেরার সুযোগ নেই৷ ওই শিবিরগুলোর মতো অবস্থা রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতেও৷
জাতিসংঘের শীর্ষ পর্যায়ের এই কর্মকর্তা গত সপ্তাহে মিয়ানমার সফর করেন৷ মিয়ানমারে গতকাল বুধবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি জানান, রাখাইন রাজ্যের উদ্বাস্তু শিবিরগুলোর বেশির ভাগ মানুষ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানি ও স্যানিটেশনসহ বিভিন্ন মৌলিক সুবিধা যা পাচ্ছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই নগণ্য৷ হাজার হাজার রোহিঙ্গার মধ্যে স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন জরুরি ত্রাণ কার্যক্রম চালানো ফ্রান্সভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসকে (এমএসএফ) গত মার্চে রাখাইন থেকে বহিষ্কার করে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ৷ এ ছাড়া গত মাসে দেশটির বৌদ্ধ চরমপন্থীরা মুসলমানদের প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে বিভিন্ন বিদেশি ত্রাণ সংস্থার কার্যালয়ে হামলা চালায়৷ এতে সংস্থাগুলো তাদের কর্মীদের প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়৷ পরিস্থিতি শান্ত হলেও মাত্র ৬০ শতাংশ সংস্থা সেখানে ফিরেছে বলে জাতিসংঘ জানায়৷ ত্রাণ সংস্থাগুলোর হামলাকারী ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা কাং৷ তিনি বলেন, প্রচণ্ড কড়াকড়ির কারণে রাখাইনের হাজার হাজার লোক মাছ ধরা, চাষাবাদ করা বা গ্রাম্য বাজারগুলোতে যেতে পারে না৷
No comments