পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিট: কর্মশালার নামে লুট by ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
পরিবার
পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিট অনিয়মে ভর করেছে। এখানে নয়ছয় করে
বিভিন্ন কর্মশালার নামে কোটি কোটি টাকা উত্তোলন করে সংশ্লিষ্ট শাখার
কর্মকর্তা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অনিয়মের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের
দৃষ্টিতে এসেছে। মন্ত্রী ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ
দিয়েছেন।
জানা যায়, স্কুল-মাদ্রাসা শিক্ষকদের বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কিশোর-কিশোরীর প্রজনন স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে অবহিতকরণ বিষয়ে কর্মশালার আয়োজন করার কথা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিটের। এরই অংশ হিসেবে আইইসি অপারেশনাল প্ল্যানের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশের উপজেলা পর্যায়ে ৪৮৬টি কর্মশালা পরিচালনা করার কথা। এ জন্য বরাদ্দও ছিল ৭ কোটি টাকা। যদিও আইইএম ইউনিটের পরিচালকের বিচক্ষণতায় এসব কর্মশালা হয়েছে। তবে তা বাস্তবে নয়; কাগজে কলমে।
অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিটের পরিচালক আশরাফুন্নেছা তার দুরদর্শীতার মাধ্যমে কর্মশালা না করেই এই টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীদের। এক্ষেত্রে তিনি কর্মশালার নামে কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল এবং ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে সব টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ এসেছে।
অধিকাংশ বিল ভাউচারের প্রতিষ্ঠানেরই কোন অস্তিত্ব নেই। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিটে সম্প্রতি অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানে দুদক কর্মকর্তারা দেখেন, গত অর্থ বছরে উপজেলা পর্যায়ে ৪৮৬টি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে তথ্য দেখানো হয়েছে। কিন্তু এসব কর্মশালার বিল-ভাউচার পর্যালোচনায় অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। অভিযানে দুদক কর্মকর্তারা আরো দেখেন-আমদানি-রপ্তানিকারকের লাইসেন্সধারী ‘সুকর্ন ইন্টারন্যাশনাল কোং’ এবং ‘মেসার্স রুহী এন্টারপ্রাইজ’ নামে দু’টি প্রতিষ্ঠানকে বিজ্ঞাপন প্রচারের কাজ দেয়া হয়েছে। দরপত্রের শর্ত লংঙ্ঘন করে এ দুটি প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার বিল দেয়া হয়েছে বলে দুদক দলের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এসব বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানের অনুমতি চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী আ খ ম মহিউল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত দল প্রাথমিক তদন্তে এসেছিল। তারা কিছু কাগজপত্র চেয়েছেন। আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে পুরো মাত্রায় সব ধরনের সহযোগিতা করতে নির্দেশ দিয়েছি। অভিযোগ যেহেতু এসেছে তাই ডেফিনেটলি বিষয়টি দেখতে হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আইইএম ইউনিট সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বিভিন্ন জেলা উপজেলায় ৪৮৬টি কর্মশালার নামে কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল এবং ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে সব টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। কর্মশালার ব্যয়বাবদ তিনি যে সব বিল ভাউচার ব্যবহার করেছেন তার বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেরই কোন অস্তিত্ব নেই। কর্মশালায় ব্যবহারের জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে কোন ধরনের টেন্ডার বা কোটেশন ছাড়াই কিছু ব্যাগ, কলম, প্যাড ক্রয় করে আইইএম ইউনিট। তিনটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আইইএম পরিচালকের মৌখিক নির্দেশের ভিত্তিতে এসব পণ্য সরবরাহ করে। যেখানে ব্যাগের জন্য ৩৭০ টাকা এবং কলম ও প্যাড যথাক্রমে ১০ ও ২০ টাকা মূল্য নির্ধারন করা হয়। অথচ বিল ভাউচারে ব্যাগের দাম দেখানো হয়েছে ১ হাজার ৫০ টাকা, প্যাড ৭০ টাকা এবং কলম ৮০ টাকা। এছাড়া কর্মশালায় রিসোর্স পার্সনদের সম্মানী ভাতা আয়করসহ ১ হাজার ৬৮০ টাকা, স্থানীয় সমন্বয়কারীদের সম্মানী আয়করসহ ১ হাজার টাকা, অংশ্রগহণকারীদের ভাতা বাবদ ৭শ’ টাকা দেখিয়ে উত্তোলন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে আরো দেখা গেছে, মৌলভীবাজারে অনুষ্ঠিত কর্মশালার জন্য ‘মেসার্স আচল পেপার, স্টেশনারী এন্ড লাইব্রেরী’ থেকে ব্যাগ, প্যাড কলম কেনা হয়েছে। যার ঠিকানা স্টেশন রোড, মৌলভীবাজার। ক্যাশ মেমোতে ক্রেতার নাম ঠিকানা লেখা হয়েছে, ‘পরিচালক আইইএম এবং প:প: অধি, ঢাকা’। এছাড়া ‘সাম্পান রেস্টুরেন্ট এন্ড ক্যাটেরিং’ নামে একটি ক্যাশ মেমোতে ক্রেতার একই ঠিকানা ব্যবহার করে আপ্যায়ন উদ্বোধনী ও আপ্যায়ন সমাপনী নামে বিল করা হয়েছে। কিন্তু কোন পণ্যের নাম সেখানে নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মৌলভীবাজারে স্টেশন রোড নামে কোন সড়ক নেই। এমনকি ‘মেসার্স আচল পেপার, স্টেশনারী এন্ড লাইব্রেরী’ ‘সাম্পান রেস্টুরেন্ট এন্ড ক্যাটেরিং’ নামে কোন প্রতিষ্ঠানও নেই।
একই ঘটনা ঘটেছে দেশের প্রায় বেশিরভাগ উপজেলায়। মাত্র ৩ দিনে ময়মনসিংহ বিভাগের চারটি জেলার ৩৩টি উপজেলায় কর্মশালা সম্পন্ন করা হয়েছে। বাস্তবে যা অসম্ভব। উপজেলা পর্যায়ে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের সম্মানী প্রদানের তালিকার নাম ও স্বাক্ষর ঢাকা অফিসে বসেই ইচ্ছেমতো বসিয়ে এসব টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা জানান, কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের ব্যাগ প্রদানের জন্য কেন্দ্রীয় ভাবেও ব্যাগ কেনেন পরিচালক আশরাফুন্নেসা। তবে কোন ধরনের টেন্ডার বা কোটেশন ছাড়াই তিনজন সরবরাহকারীকে তিনি ব্যাগ প্রদানের জন্য মৌখিক নির্দেশ দেন। তার প্রেক্ষিতে উইমেক্স ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, জারিন এন্টারপ্রাইজ এবং এমআর এন্টারপ্রাইজ যথাক্রমে ৮ হাজার, ৩ হাজার ৪’শ এবং ২ হাজার ব্যাগ সরবরাহ করে। কিন্তু ৩৭০ টাকা থেকে ৪শ’ টাকায় ব্যাগ সরবরাহ করলেও তিনি সরবরাহকারীদের অর্ধেক টাকা পরিশোধ করলেও বাকী টাকা দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে কোন কাজ না করেই ৪৮টি কোটেশনের মাধ্যমে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন আশরুফুন্নেসা। যার কোন নথিপত্র নেই। ভুয়া কার্যাদেশ তৈরি করে বিলের সঙ্গে সংযুক্ত করে এসব বিল এজি অফিস থেকে পাশ করানো হয়েছে। যদিও সরকারি নিয়মানুযায়ী একজন পরিচালক বছরে ৬টির বেশি কোটেশন করার কোন নিয়ম নেই।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নিজের ভাগ্নের প্রতিষ্ঠান ময়মনসিংহের রুহি এন্টারপ্রাইজের ট্রেড লাইসেন্সে ‘আমদানিকারক’ উল্লেখ থাকলেও তিনি অধিদপ্তরের শর্ত ভঙ্গ করে এই প্রতিষ্ঠানকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রচারের কাজ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে দরপত্রে উল্লিখিত ৩ বছরের অভিজ্ঞতার শর্তও মানা হয়নি। তেমনিভাবে কাজ দিয়েছেন নিজের চাচাতো ভাইয়ের ময়মনসিংহের প্রতিষ্ঠান সুকর্ণ ইন্টারন্যাশনালকে। ভাগ্নে ও চাচাতো ভাইয়ের প্রতিষ্ঠান নামে হলেও মূলতঃ ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার এই দুটি কাজ তিনি নিজেই করছেন। বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে দরপত্রে উলিখিত শর্তও ভঙ্গ করেছে এই দুটি প্রতিষ্ঠান। সূত্র জানায়, শিক্ষা ক্যাডার থেকে প্রশাসন ক্যাডারে আসা এই কর্মকর্তা ইতিপূর্বে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। দুর্নীতির কারণে তাকে সেই সময় ওএসডি করা হয়। সার্বিক বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (আইইএম) আশরাফুন্নেছার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মার্কেটে। কথা বলতে পারবো না।
জানা যায়, স্কুল-মাদ্রাসা শিক্ষকদের বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কিশোর-কিশোরীর প্রজনন স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে অবহিতকরণ বিষয়ে কর্মশালার আয়োজন করার কথা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিটের। এরই অংশ হিসেবে আইইসি অপারেশনাল প্ল্যানের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশের উপজেলা পর্যায়ে ৪৮৬টি কর্মশালা পরিচালনা করার কথা। এ জন্য বরাদ্দও ছিল ৭ কোটি টাকা। যদিও আইইএম ইউনিটের পরিচালকের বিচক্ষণতায় এসব কর্মশালা হয়েছে। তবে তা বাস্তবে নয়; কাগজে কলমে।
অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিটের পরিচালক আশরাফুন্নেছা তার দুরদর্শীতার মাধ্যমে কর্মশালা না করেই এই টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীদের। এক্ষেত্রে তিনি কর্মশালার নামে কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল এবং ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে সব টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ এসেছে।
অধিকাংশ বিল ভাউচারের প্রতিষ্ঠানেরই কোন অস্তিত্ব নেই। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিটে সম্প্রতি অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানে দুদক কর্মকর্তারা দেখেন, গত অর্থ বছরে উপজেলা পর্যায়ে ৪৮৬টি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে তথ্য দেখানো হয়েছে। কিন্তু এসব কর্মশালার বিল-ভাউচার পর্যালোচনায় অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। অভিযানে দুদক কর্মকর্তারা আরো দেখেন-আমদানি-রপ্তানিকারকের লাইসেন্সধারী ‘সুকর্ন ইন্টারন্যাশনাল কোং’ এবং ‘মেসার্স রুহী এন্টারপ্রাইজ’ নামে দু’টি প্রতিষ্ঠানকে বিজ্ঞাপন প্রচারের কাজ দেয়া হয়েছে। দরপত্রের শর্ত লংঙ্ঘন করে এ দুটি প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার বিল দেয়া হয়েছে বলে দুদক দলের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এসব বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানের অনুমতি চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী আ খ ম মহিউল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত দল প্রাথমিক তদন্তে এসেছিল। তারা কিছু কাগজপত্র চেয়েছেন। আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে পুরো মাত্রায় সব ধরনের সহযোগিতা করতে নির্দেশ দিয়েছি। অভিযোগ যেহেতু এসেছে তাই ডেফিনেটলি বিষয়টি দেখতে হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আইইএম ইউনিট সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বিভিন্ন জেলা উপজেলায় ৪৮৬টি কর্মশালার নামে কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল এবং ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে সব টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। কর্মশালার ব্যয়বাবদ তিনি যে সব বিল ভাউচার ব্যবহার করেছেন তার বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেরই কোন অস্তিত্ব নেই। কর্মশালায় ব্যবহারের জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে কোন ধরনের টেন্ডার বা কোটেশন ছাড়াই কিছু ব্যাগ, কলম, প্যাড ক্রয় করে আইইএম ইউনিট। তিনটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আইইএম পরিচালকের মৌখিক নির্দেশের ভিত্তিতে এসব পণ্য সরবরাহ করে। যেখানে ব্যাগের জন্য ৩৭০ টাকা এবং কলম ও প্যাড যথাক্রমে ১০ ও ২০ টাকা মূল্য নির্ধারন করা হয়। অথচ বিল ভাউচারে ব্যাগের দাম দেখানো হয়েছে ১ হাজার ৫০ টাকা, প্যাড ৭০ টাকা এবং কলম ৮০ টাকা। এছাড়া কর্মশালায় রিসোর্স পার্সনদের সম্মানী ভাতা আয়করসহ ১ হাজার ৬৮০ টাকা, স্থানীয় সমন্বয়কারীদের সম্মানী আয়করসহ ১ হাজার টাকা, অংশ্রগহণকারীদের ভাতা বাবদ ৭শ’ টাকা দেখিয়ে উত্তোলন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে আরো দেখা গেছে, মৌলভীবাজারে অনুষ্ঠিত কর্মশালার জন্য ‘মেসার্স আচল পেপার, স্টেশনারী এন্ড লাইব্রেরী’ থেকে ব্যাগ, প্যাড কলম কেনা হয়েছে। যার ঠিকানা স্টেশন রোড, মৌলভীবাজার। ক্যাশ মেমোতে ক্রেতার নাম ঠিকানা লেখা হয়েছে, ‘পরিচালক আইইএম এবং প:প: অধি, ঢাকা’। এছাড়া ‘সাম্পান রেস্টুরেন্ট এন্ড ক্যাটেরিং’ নামে একটি ক্যাশ মেমোতে ক্রেতার একই ঠিকানা ব্যবহার করে আপ্যায়ন উদ্বোধনী ও আপ্যায়ন সমাপনী নামে বিল করা হয়েছে। কিন্তু কোন পণ্যের নাম সেখানে নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মৌলভীবাজারে স্টেশন রোড নামে কোন সড়ক নেই। এমনকি ‘মেসার্স আচল পেপার, স্টেশনারী এন্ড লাইব্রেরী’ ‘সাম্পান রেস্টুরেন্ট এন্ড ক্যাটেরিং’ নামে কোন প্রতিষ্ঠানও নেই।
একই ঘটনা ঘটেছে দেশের প্রায় বেশিরভাগ উপজেলায়। মাত্র ৩ দিনে ময়মনসিংহ বিভাগের চারটি জেলার ৩৩টি উপজেলায় কর্মশালা সম্পন্ন করা হয়েছে। বাস্তবে যা অসম্ভব। উপজেলা পর্যায়ে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের সম্মানী প্রদানের তালিকার নাম ও স্বাক্ষর ঢাকা অফিসে বসেই ইচ্ছেমতো বসিয়ে এসব টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা জানান, কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের ব্যাগ প্রদানের জন্য কেন্দ্রীয় ভাবেও ব্যাগ কেনেন পরিচালক আশরাফুন্নেসা। তবে কোন ধরনের টেন্ডার বা কোটেশন ছাড়াই তিনজন সরবরাহকারীকে তিনি ব্যাগ প্রদানের জন্য মৌখিক নির্দেশ দেন। তার প্রেক্ষিতে উইমেক্স ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, জারিন এন্টারপ্রাইজ এবং এমআর এন্টারপ্রাইজ যথাক্রমে ৮ হাজার, ৩ হাজার ৪’শ এবং ২ হাজার ব্যাগ সরবরাহ করে। কিন্তু ৩৭০ টাকা থেকে ৪শ’ টাকায় ব্যাগ সরবরাহ করলেও তিনি সরবরাহকারীদের অর্ধেক টাকা পরিশোধ করলেও বাকী টাকা দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে কোন কাজ না করেই ৪৮টি কোটেশনের মাধ্যমে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন আশরুফুন্নেসা। যার কোন নথিপত্র নেই। ভুয়া কার্যাদেশ তৈরি করে বিলের সঙ্গে সংযুক্ত করে এসব বিল এজি অফিস থেকে পাশ করানো হয়েছে। যদিও সরকারি নিয়মানুযায়ী একজন পরিচালক বছরে ৬টির বেশি কোটেশন করার কোন নিয়ম নেই।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নিজের ভাগ্নের প্রতিষ্ঠান ময়মনসিংহের রুহি এন্টারপ্রাইজের ট্রেড লাইসেন্সে ‘আমদানিকারক’ উল্লেখ থাকলেও তিনি অধিদপ্তরের শর্ত ভঙ্গ করে এই প্রতিষ্ঠানকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রচারের কাজ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে দরপত্রে উল্লিখিত ৩ বছরের অভিজ্ঞতার শর্তও মানা হয়নি। তেমনিভাবে কাজ দিয়েছেন নিজের চাচাতো ভাইয়ের ময়মনসিংহের প্রতিষ্ঠান সুকর্ণ ইন্টারন্যাশনালকে। ভাগ্নে ও চাচাতো ভাইয়ের প্রতিষ্ঠান নামে হলেও মূলতঃ ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার এই দুটি কাজ তিনি নিজেই করছেন। বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে দরপত্রে উলিখিত শর্তও ভঙ্গ করেছে এই দুটি প্রতিষ্ঠান। সূত্র জানায়, শিক্ষা ক্যাডার থেকে প্রশাসন ক্যাডারে আসা এই কর্মকর্তা ইতিপূর্বে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। দুর্নীতির কারণে তাকে সেই সময় ওএসডি করা হয়। সার্বিক বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (আইইএম) আশরাফুন্নেছার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মার্কেটে। কথা বলতে পারবো না।
No comments