সমুদ্রে ট্রলার বিধ্বস্ত-ঝুঁকিপূর্ণ পথে প্রবাস যাত্রা নয়

মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে সমুদ্রে ট্রলার বিধ্বস্ত হয়ে প্রায় দুইশ'জন নিখোঁজ_ এমন একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে গতকাল মঙ্গলবারের সমকালে। কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে তারা দুর্গম সাগরপথে চলছিল বিদেশে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে। বিভিন্ন সূত্রের খবর_ এ ধরনের ঝুঁকি যারা গ্রহণ করে থাকে, তাদের বেশিরভাগ রোহিঙ্গা।


তারা অবৈধভাবে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে। আর এভাবে বিদেশে যেতে গিয়ে করছে নতুন অপরাধ। তাদের লক্ষ্য, মালয়েশিয়া কিংবা থাইল্যান্ডে পেঁৗছানো। সেখানে পেঁৗছতে পারলে কাজ মিলবেই_ এমন আশ্বাস দেয় দালালচক্র। এমনও ঘটে থাকে যে, দালালরা ট্রলারে বঙ্গোপসাগরে দীর্ঘ সময় ঘোরানোর পর রাতের আঁধারে কোনো দ্বীপ এলাকায় যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে কেটে পড়ে। সমুদ্রে ট্রলার বিকল হয়ে কিংবা ঝড়-বাদলে পড়ে জীবন বিপন্ন হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। ঈপ্সিত দেশে পেঁৗছানোর পর শুরু হয় নতুন শঙ্কা। কারণ তারা ওইসব দেশে প্রবেশ করেছে অবৈধভাবে। সর্বক্ষণ থাকতে হয় সন্ত্রস্ত। কখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। এমনটি ঘটলে কেবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিই বিপদে পড়ে না, দেশেরও বদনাম হয়। এ কারণেই সমস্যার মূলে হাত দেওয়া জরুরি। বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিশেষ করে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা থেকে যেহেতু প্রতারক-দালাল চক্র অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ পথে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে লোক প্রেরণ করে থাকে; প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত হবে এ রুট বন্ধে সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এভাবে যারা নানা দেশে গিয়ে অবৈধ হয়ে পড়ে, তাদের কারণে বাংলাদেশের শ্রমবাজারও বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
মালয়েশিয়ায় কাজের সন্ধানে যাওয়ার পথে ট্রলার বিধ্বস্ত হয়ে যারা বঙ্গোপসাগরে পড়েছে, তাদের পরিণতি কী হয়েছে_ সেটা
বলার উপায় নেই। তাদের কিছুসংখ্যক হয়তো মাছ ধরা ট্রলার বা নৌকায় ওঠার সুযোগ পেয়ে জীবন বাঁচাতে পেরেছে। অন্যদের হয়েছে সলিলসমাধি। কিন্তু এ তো ভালোভাবে বাঁচার পথ নয়। কেউ যেন তাদের এভাবে চরম ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিতে না পারে, সে বিষয়ে অবশ্যই সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখতে হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণের মধ্যেও এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রচার চালাতে হবে। সরকার যে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে_ সে বার্তাও কেবল মুখে নয়, কাজের মাধ্যমে দিয়ে যেতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.